31/10/2025
"স্ত্রী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েছিল… কিন্তু স্বামী প্রতিশোধ নেয়নি, নিজেকে বদলে ফেলেছিল"
নাম ছিল রমেশ।
একটা সরকারি দফতরের ঝাড়ুদার। ঝাঁট, পঁচা মোছা আর বাবুদের চা পৌঁছে দেওয়াই ছিল তার কাজ। কম শিক্ষিত, সোজা-সরল, মাথা নত করত না কিন্তু জীবন তাকে মাথা নিচু করিয়ে রেখেছিল।
স্ত্রী নিধি, একই দপ্তরে এক উচ্চপদে কর্মরত। লেখাপড়ায় তুখোড়, চালচলনে ঝকঝকে, স্বপ্নে ভরা চোখ। লোকেরা বলত, “ভাগ্যবান রমেশ, এমন অফিসার স্ত্রীর স্বামী হতে পেরেছে।”
শুরুর দিকে সব কিছু ঠিকই চলছিল।
রমেশের চোখে নিধি ছিল অহংকারের বিষয়। সে যখন নিধিকে চেয়ার টেনে বসতে দেখত, বুকটা গর্বে ভরে উঠত। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই গর্ব কেমন যেন ফিকে হয়ে গেল।
⛅ হাওয়া বদলাতে লাগল...
অফিসের এক শীর্ষকর্তা ছিলেন — সঞ্জীব সরকার।
নিধি রাত করে ফিরত, কখনও বলত “মিটিং ছিল”, কখনও বলত “আউটডোর ট্রিপ”। এমনকি অনেক সময় রাতেও বাড়ি ফিরত না।
রমেশ রাতে দরজা খুলে বসে থাকত — “আজ বুঝি ফিরবে?”
কিন্তু শুধু নীরবতা সাড়া দিত।
একদিন সাহস করে জিজ্ঞেস করল — "এত দেরি কেন নিধি?"
নিধি বলল: "তুমি বুঝবে না রমেশ। তুমি শুধু ঝাড়ুদার। আমার জগৎ আলাদা।"
রমেশ চুপ করে গেল… সরাসরি মাথা নিচু করেনি, কিন্তু বুকের ভিতরটা যেন ভারী হয়ে গেল।
🌃 এক সন্ধ্যা...
অফিসে এক ঘরে হঠাৎ করে ঢুকে পড়ল রমেশ। নিধি আর সঞ্জীব বসে ছিল খুব কাছাকাছি।
কোনো শব্দ হয়নি, কিন্তু চোখে সব বলে দিয়েছিল।
সেইদিনের পরদিন রমেশ অফিসে যায়নি। রাতে নিধি ফিরেছিল — কিছু বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু রমেশ শান্তভাবে বলেছিল:
“তোমার সম্পর্কটা নিয়ে আমার কষ্ট নেই… কিন্তু কষ্ট হয়েছে এই ভেবে, তুমি আমাকে এমন একজনের চেয়েও নিচে ভাবলে, যাকে আমি প্রতিদিন চা দিয়ে যাই।”
🌅 ছয় মাস পর...
রমেশ এখন অন্য শহরে চাকরি করছে — একই ধরনের কাজ। কিন্তু সে এখন খোলা চিঠির মতো নয়, বইয়ের পাতার মতো গুছিয়ে নিতে শিখেছে নিজেকে।
সে এখন ডিস্ট্যান্স কোর্সে বি.এ পড়ছে। নিজের জন্য, নিজের মতো করে।
আর নিধি?
সে আজও অফিসার, কিন্তু তার হেঁটে যাওয়ার ভঙ্গিতে সেই সম্মান আর নেই। সহকর্মীরা জানে — “রমেশ তাকে ছেড়ে গেছে, কিন্তু এক ফোঁটাও অপমান করেনি।”
💬 এই গল্পটা মনে করিয়ে দেয়:
মানুষের আসল মর্যাদা তার পদে নয়, তার আচরণে লুকিয়ে থাকে।
একটা সম্পর্ক ভালোবাসা দিয়ে নয়, গড়ে ওঠে পারস্পরিক সম্মান দিয়ে। আর যেখানে সম্মান নেই, সেখানে সম্পর্ক বেশি দূর টেকে না।
যারা সফলতার শিখরে উঠে অন্যকে তুচ্ছ ভাবে — তাদের বোঝা উচিত, ছোটো হওয়া মানে ছোট পদে থাকা নয়, ছোট মনোভাব রাখা।
যদি এই গল্পটা আপনাকে ছুঁয়ে যায়, কেউ একজন রমেশের মতো নীরবে ভেঙে না পড়ে — সেই আশায় একবার শেয়ার করে দিন।
সংগৃহীত