24/09/2025
আশার আলো: প্রতিক্ষার পর প্রাপ্তির হাতছানি
লজ্জার লালিমা নুজাইফার মুখে খেলে গেল। নিজেকে সামলে নিয়ে সে শান্ত কণ্ঠে ওমরকে জিজ্ঞেস করল, ‘আচ্ছা, বলেন কী কথা হলো?’ ওমরের কণ্ঠ থেকে তখনো যেন আনন্দের রেশ ঝরে পড়ছিল। সে বলল, ‘আমার মনে হয় আন্টি আমাকে পছন্দ করেছেন। উনার কথাবার্তা সবকিছুই ইতিবাচক মনে হয়েছে। এখন হয়তো উনি উনার সিদ্ধান্ত নিবেন, বা তোমার আত্মীয়দের সাথে কথা বলবেন।’ আনন্দের আতিশয্যে ওমর অজান্তেই ‘তুমি’ সম্বোধন করে ফেলেছিল। সে নিজেকে শুধরে নিয়ে বলল, ‘সরি, আনন্দেতুমিকরে বলে ফেললাম। এই সময়টাতে আমাদের দুজনেরই ধৈর্য ধরতে হবে আর অনেক অনেক দোয়া করতে হবে। কী, পারবেন না দোয়া করতে?’ নুজাইফা দৃঢ় কণ্ঠে উত্তর দিল, ‘পারব না মানে, অবশ্যই পারব! মন প্রাণ দিয়ে দোয়া করব, যেন আল্লাহ সবকিছু সহজ করে দেন। আর একটা কথা বলতে চাই। আমি কিন্তু আপনাকে পর্দার আড়াল থেকে দেখেছি। আপনি অনেক সুদর্শন, মাশাআল্লাহ।’
কথাটা শুনে ওমর কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেল, তবে মনে মনে খুশিও হলো। সে বলল, আপনি তো আমাকে দেখেছেন। আমারও তো মন চায় আপনাকে দেখতে। কিন্তু যতই মন চাক, আমি আপনার পর্দা নষ্ট করব না। সবকিছু ঠিক হওয়ার পরে আপনাকে আমি দেখব, মন ভরে দেখব। কিন্তু ততদিন আমাদের দুজনকে ধৈর্য ধরতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবর দিন, ধৈর্য ধরার শক্তি দিন।এরপর কিছুটা ইতস্তত করে ওমর বলল,তবে আপনি যদি কিছু মনে না করেন, তাহলে আপনার একটা ছবি দিতে পারেন। সাহাবীরাও কিন্তু কাউকে বিয়ের জন্য পছন্দ করলে, সেই মেয়েকে দেখে নিতেন।এই কথাটি উল্লেখ করে ওমর যেন হাদিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরল। সহীহ মুসলিমের ১৪২৪ নম্বর হাদিসে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: যখন তোমাদের কেউ কোনো মহিলাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তখন যদি সে তাকে দেখে নেয়, তবে তা বিবাহকে দৃঢ় করার জন্য অধিকতর উপযুক্ত।
কথাটা শুনে ওমর কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেল, তবে মনে মনে খুশিও হলো। সে বলল, ‘আপনি তো আমাকে দেখেছেন। আমারও তো মন চায় আপনাকে দেখতে। কিন্তু যতই মন চাক, আমি আপনার পর্দা নষ্ট করব না। সবকিছু ঠিক হওয়ার পরে আপনাকে আমি দেখব, মন ভরে দেখব। কিন্তু ততদিন আমাদের দুজনকে ধৈর্য ধরতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবর দিন, ধৈর্য ধরার শক্তি দিন।’ ওমর কিছুটা ইতস্তত করে বলল, ‘আপনি চাইলে মাহরামসহ একবার দেখা দিতে পারেন কি? সাহাবিরাও কিন্তু কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে, সেই মেয়েকে দেখে নিতেন।’এই কথাটি উল্লেখ করে ওমর যেন হাদিসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরল। জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘যখন তোমাদের কেউ কোনো মহিলাকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তখন যদি সে তাকে দেখে নেয়, তবে তা বিবাহকে দৃঢ় করার জন্য অধিকতর উপযুক্ত।
নুজাইফা কিছুটা ভেবে বলল, ‘আচ্ছা, দেখি চিন্তা করে।’
বলেই সেদিনের মতো ফোন রেখে দিতে চাইল।
ওমর দ্রুত বলে উঠল, ‘আর হ্যাঁ, আরেকটা কথা!’
‘জি বলেন,’ নুজাইফা জানতে চাইল।
‘আপনার বানানো ফালুদাটা অসম্ভব মজা হয়েছিল। আর আপনি যে আমার প্রিয় খাবারটা বানিয়েছেন এজন্য আপনাকে জাযাকাল্লাহ।
এর বিনিময় ইনশাআল্লাহ আপনাকে বাসর ঘরে দিব।’ ওমরের এই কথা শুনে নুজাইফা লজ্জায় লাল হয়ে গেল।
দিন গড়াতে থাকল, সপ্তাহ পেরিয়ে গেল, নুজাইফার মা তখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাননি। ওমর আর নুজাইফা দুজনেই অস্থির মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করতে থাকে। তারা আশা ছাড়ে না, সবর করে। তারা জানে আল্লাহ অবশ্যই সবরের পুরস্কার দিবেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।’
এই আয়াত যেন তাদের মনে এক গভীর বিশ্বাস আর প্রশান্তি এনে দেয়, প্রতিটি প্রার্থনায় তাদের সংকল্প আরও দৃঢ় হয়। তারা বুঝতে পারে, আল্লাহর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত এবং তাতেই রয়েছে সর্বোচ্চ কল্যাণ।
নুজাইফার মা ওমরের ব্যাপারে গভীরভাবে ভাবতে লাগলেন। প্রথম দিনেই তাকে পছন্দ হয়েছিল, তবুও তিনি কেবল প্রথম দেখায় মুগ্ধ হয়েই থেমে যাননি। তিনি ওমরের এলাকায় লোক লাগিয়ে তার সম্পর্কে আরও খোঁজ খবর নেন। দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর তিনি জানতে পারেন ওমর খুবই ভালো একটি ছেলে— ঈমানদার, ধার্মিক এবং পরোপকারী। এই তথ্যগুলো জানার পরে নুজাইফার মা ওমরের প্রতি আরও বেশি সন্তুষ্ট হন। এরপর তিনি তার আত্মীয়দের সাথে এবং নুজাইফার মামার সাথে কথা বলেন। প্রথমে নুজাইফার মামা রাজি হতে চাইছিলেন না, কারণ তারা চাইছিলেন নুজাইফাকে নিজেদের ঘরেই রাখতে, অর্থাৎ পরিবারের মধ্যেই বিয়ে দিতে। কিন্তু নুজাইফার মা যখন ওমর সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করলেন এবং এটাও জানালেন যে ওমর আর নুজাইফা দুজন দুজনকে পছন্দ করে, তখন নুজাইফার মামা কিছুটা রাজি হন। তিনি চান ওমর যেন তার পরিবার নিয়ে তাদের বাসায় আসে এবং একটি আনুষ্ঠানিক পরিচয় পর্ব হয়ে যায়।
নুজাইফার মা তাদের এই সিদ্ধান্ত নুজাইফাকে জানান। খবরটি শুনে নুজাইফা যেন এক বুক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল। ঘরে এসেই সে প্রথমে শোকরিয়া হিসেবে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে। আল্লাহর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানায়, কারণ তার দীর্ঘদিনের সবর এবং দোয়া আজ ফলপ্রসূ হতে চলেছে। এরপর সে দেরি না করে ওমরকে ফোন দেয়।
‘আপনি কি ব্যস্ত?’ নুজাইফা জানতে চাইল।
‘না তো,’ জানায় ওমর।
নুজাইফার ফোন পেয়েই ওমর বুঝতে পারে হয়তো কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার বুকটা ধুকধুক করতে থাকে। কী বলবে নুজাইফা? আন্টি কি তাকে মেনে নিয়েছে? তার স্বপ্ন কি সত্যি হবে? তাদের দুজনের এতদিনের দোয়া কি আল্লাহ কবুল করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ? তাদের সবরের ফল পাওয়ার সময় কি হয়েছে? এই প্রশ্নগুলো ওমরের মনে বিদ্যুতের মতো ঝলকে ওঠে। প্রতিটি সেকেন্ড যেন একটি নতুন আশার প্রদীপ জ্বেলে দিচ্ছিল তার হৃদয়ে।
ভালো খবর: আশার সুউচ্চ মিনার
ওমরের হৃদয় তখন উত্তেজনার এক অনির্বচনীয় স্পন্দনে কাঁপছিল। ‘কী বলেছেন আন্টি, একটু খুলে বলেন,’ তার কণ্ঠে অধৈর্য আর আশার এক মিশ্র সুর ফুটে উঠল। নুজাইফা, যার কণ্ঠস্বর মুহূর্তেই পৃথিবীর সব সুরকে ম্লান করে দিয়েছিল, শান্ত অথচ আনন্দ-মথিত কণ্ঠে বলল, ‘আপনার বাবা-মাকে নিয়ে আমাদের বাসায় আসতে বলেছেন মা।’ এই কয়েকটি শব্দই যেন ওমরের কানে বেজে উঠল এক অপার্থিব সুরের মতো, যা বহু প্রতীক্ষিত ছিল।
আলহামদুলিল্লাহ! আলহামদুলিল্লাহ! কৃতজ্ঞতায় তার বুক ভরে গেল। ‘সত্যি বলছেন?’ সে যেন নিজের কানকেও বিশ্বাস করতে পারছিল না, এ যেন মরুযাত্রীর কাছে হঠাৎ এক মরুদ্যানের সন্ধান পাওয়ার আনন্দ। এই কথাটা শোনার জন্য সে কত দিন, কত প্রহর অধীর আগ্রহে বসে ছিল! তার স্বপ্নের রানীকে সে পাবে, নিজের করে পাবে– এ ভাবনাতেই ওমর আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। তার ভেতরের যত আবেগ, যত ভালোবাসা, যা এতদিন সে নিজের গভীরে সযত্নে লুকিয়ে রেখেছিল, তা যেন এখন বাঁধ ভাঙার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। এই পবিত্র মুহূর্তে, ওমরের মনে হলো, সময় হয়েছে এই সুপ্ত অনুভূতিগুলোকে প্রকাশ করার।
এক দৃঢ় সংকল্প নিয়ে ওমর বলল, ‘অবশ্যই আমি আসব, ইনশাআল্লাহ। বাবা-মাকে নিয়েই আসব। সবার সামনে আপনার হাত ধরে আপনাকে পরিপূর্ণ মর্যাদা আর ইজ্জতের সাথে আমার ঘরে বউ করে নিয়ে আসব।’ ওমর কখনো তার আবেগের কোনো কথা নুজাইফাকে সরাসরি বলেনি, কিন্তু নুজাইফা ঠিকই বুঝতে পারছিল, ওমর তাকে কতটা ভালোবাসে। এই ভালোবাসা ছিল স্বচ্ছ নদীর মতো, যেখানে ছলনার কোনো ছাপ ছিল না; এটি ছিল তাকওয়ার আবরণে মোড়া এক পবিত্র বন্ধন, যা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথ ধরে এগিয়ে চলে। তাদের এই অনুভূতি যেন আল্লাহর অশেষ রহমতেরই এক নিদর্শন, যেখানে হারাম ভালোবাসা থেকে দূরে থেকে তারা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করেছে।
নুজাইফা তার আনন্দ চেপে রেখে বলল, ‘সামনের জুম্মার দিন যদি আপনার বড় কোনো কাজ না থাকে, তাহলে আমাদের বাসায় আপনার দাওয়াত।’
মা-ও অবশ্য আপনাকে ফোন দিবেন। ওমর সাথে সাথে উত্তর দিল, ‘আচ্ছা ঠিক আছে, আমি আপনার দাওয়াত কবুল করলাম। আর হ্যাঁ, আপনার ফালুদাটা খুবই মজা হয়েছিল। যদি কষ্ট না হয়...।’ ওমরের কথা শেষ না হতেই নুজাইফা মিষ্টি হেসে উত্তর দিয়ে দিল, ‘কষ্ট হবে না। আমি আপনার জন্য আবার ফালুদা বানিয়ে রাখব।’ নুজাইফার এই স্বতঃস্ফূর্ততায় ওমর হেসে উঠল। কী সুন্দর সেই হাসির শব্দ! নুজাইফা বিমোহিত হয়ে গেল, যেন এক অলৌকিক সুর তার কানে বাজছে, যা হৃদয়ের গভীরে এক অপার্থিব শান্তি এনে দেয়। ওমর হেসে বলল, ‘আপনি দেখি আমার মাইন্ড রিডার হয়ে গেছেন!’
‘নুজাইফা?’ ওমর ডাকল। তার কণ্ঠে তখন এক অজানা আকুতি।
‘জি,’ নুজাইফার কণ্ঠে মৃদু কম্পন, যেন হৃদয়ের তারে কেউ আলতো করে ছুঁয়ে গেছে।
‘অনেক দিনের মনের ভিতর রাখা একটা আবদার করব।’ ওমর ইতস্তত করল, এইবার যেন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের পালা।
অবশ্যই করেন,নুজাইফা সাড়া দিল, তার কৌতূহল বাড়তে থাকল।
এখন তো মোটামুটি আমাদের বিয়ে ঠিক।ওমরের কণ্ঠে আশ্বাসের সুর।
জি ইনশাআল্লাহ।নুজাইফার উত্তর, যেখানে ছিল আল্লাহর উপর অগাধ বিশ্বাস।
আপনি তো আমাকে দেখেছেন।
জ্বি দেখেছি।
আমারও তো মন চায় আপনাকে দেখতে। এটা আমি আপনাকে আগেও একবার বলছিলাম। আর এটা সুন্নত, বিয়ের আগে মেয়ে দেখে নেওয়া।ওমর পুনরায় হাদিসের প্রসঙ্গ টানল, যা তাদের সম্পর্কের ইসলামিক ভিত্তি আরও সুদৃঢ় করে তুলছিল। সহিহ মুসলিমের ১৪২৪ নম্বর হাদিসে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিবাহের প্রস্তাব দেয়, তখন সম্ভব হলে তার এমন কিছু বৈশিষ্ট্য যেন দেখে নেয়, যা তাকে বিয়েতে আগ্রহী করে তোলে।এই হাদিসটি যেন তাদের পবিত্র ভালোবাসার এক অনবদ্য দলিল, যা শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী তাদের পথকে আলোকিত করছিল। এটি প্রমাণ করে যে, ইসলাম আবেগ বা অনুভূতিকে অস্বীকার করে না, বরং এটিকে সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার নির্দেশনা দেয়।
নুজাইফা বুঝতে পারল ওমরের মনের কথা।আচ্ছা বুঝতে পেরেছি। আপনি আমাকে দেখতে চাচ্ছেন।
হ্যাঁ, আপনাকে আমি দেখতে চাচ্ছি।ওমরের কণ্ঠে স্পষ্টতা।
আচ্ছা, আমি যদি আপনার মনের মতো না হই? বা আপনি যেরকম পছন্দ করেন, সেরকম যদি না হই?নুজাইফার কণ্ঠে সামান্য দ্বিধা এবং এক ধরনের অনিশ্চয়তা, যা প্রতিটি মেয়ের মনেই থাকে যখন সে নিজেকে প্রথমবার তার ভালোবাসার মানুষের সামনে উপস্থাপন করে।
ওমর দৃঢ়তার সাথে বলল,দেখেন, আমি আপনার ধার্মিকতা, ঈমান, আমল—এগুলো দেখে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছি। আমার কাছে আপনার বাহ্যিক সৌন্দর্যের চেয়ে আপনার ভেতরের সৌন্দর্যই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার কণ্ঠ শুনে সর্বপ্রথম আপনার প্রতি ভালো লাগা কাজ করেছে। এজন্যই আসলে মেয়েদের কণ্ঠের একটি নিজস্বতা আছে, যা অপ্রয়োজনে আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারে এবং এই বিষয়ে আমাদের দ্বীনের নির্দেশনা রয়েছে। (এখানে উল্লেখ্য, যদিও কুরআন ও হাদিসে সরাসরি 'কণ্ঠের পর্দা' শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি, তবে নারীদেরকে অপরিচিত পুরুষদের সাথে কথা বলার সময় কণ্ঠস্বরকে কোমল না করার এবং অনাকাঙ্ক্ষিত আকর্ষণ এড়াতে সাবধানতা অবলম্বনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এটি গল্পের সাহিত্যিক ও ভাবগত আবেদন ধরে রাখার জন্য রাখা হয়েছে।)
আর আপনি দেখতে কেমন, সেটা আপনাকে দেখার পরেই বলি।ওমরের এই কথা নুজাইফার মনে এক গভীর প্রশান্তি এনে দিল। সে বুঝতে পারল, ওমরের ভালোবাসার ভিত্তি কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং তার দ্বীনদারী এবং পবিত্রতা।
নুজাইফা কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,আচ্ছা ঠিক আছে। আমি আপনাকে আমার একটা ছবি দিচ্ছি। কিন্তু সেটা এখন দেখবেন না। আমি দিয়ে রাখব। পরে আপনি দেখবেন।এটা ছিল নুজাইফার পক্ষ থেকে এক নীরব সম্মতি, তার নির্ভরতা এবং ওমরের প্রতি তার আস্থার প্রতীক।
আচ্ছা ঠিক আছে, আপনি যা বলবেন তাতেই আমি রাজি,ওমর হাসিমুখে সম্মতি জানাল। তার হৃদয় তখন এক অজানা পুলকে ভরে গেছে। কথা শেষ করে ওমর অফলাইনে চলে যায়।
নুজাইফা তখন একটি হিজাব পরা শুধু চেহারার ছবি ওমরকে পাঠাল। ছবিটি ছিল সরল, পবিত্র এবং তার আত্মিক সৌন্দর্যেরই প্রতিচ্ছবি। এটি কোনো সাধারণ ছবি ছিল না, এটি ছিল দুটি হৃদয়ের মাঝে সেতু বন্ধনের এক নতুন প্রতিশ্রুতি, যা আল্লাহর রহমতে সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। তাদের এই যাত্রা যেন দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের দিকে এক অবিচল পথচলা, যেখানে রয়েছে রাসুলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনুসরণ, সাহাবায়ে কেরামের জীবনের অনুপ্রেরণা এবং প্রতিটি পদক্ষেপে আল্লাহর নির্দেশনা। এই পবিত্র ভালোবাসার গল্প যেন প্রতিটি বিশ্বাসী হৃদয়ে আশার প্রদীপ জ্বেলে দেয়, মনে করিয়ে দেয় যে, ধৈর্যের ফল সবসময়ই সুমিষ্ট হয়।
’
#চলবে
বই : শেষ যুগের দম্পতি
দাজ্জালের ফিতনার বিপরীতে—আদর্শ দাম্পত্য জীবন গড়ার পথ।
লেখক : রুহ মাহমুদ
#বাংলাইসলামমিক #বাংলাদেশ