08/07/2025
বাবা মাকে যে চারটি কথা বলবেন না।
বাবা-মা আমাদের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। তাঁদের সাথে আমাদের সম্পর্কটা গভীর বিশ্বাস আর ভালোবাসার উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। তবে কিছু বিষয় আছে যা তাঁদের না বলাই ভালো, কারণ এতে তাঁদের কষ্ট হতে পারে বা অনর্থক দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। এখানে এমন চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হলো:
১. আপনার ব্যক্তিগত আর্থিক সমস্যা বা ঋণের বোঝা
যদি আপনি নিজের আর্থিক সমস্যা বা কোনো বড় ঋণের বোঝায় জর্জরিত থাকেন, তাহলে প্রথমেই বাবা-মাকে জানানো উচিত নয়। কারণ এতে তাঁদের মনে দুশ্চিন্তা বাড়বে এবং তাঁরা অসহায় বোধ করতে পারেন। বরং, চেষ্টা করুন নিজে সমস্যা সমাধানের একটি পথ খুঁজে বের করতে। যদি একান্তই প্রয়োজন হয়, তাহলে যখন আপনার একটি সমাধান পরিকল্পনা তৈরি থাকবে, তখন তাঁদের সাথে খোলাখুলি আলোচনা করতে পারেন, কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে তাঁদের অযথা চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।
২. আপনার সঙ্গীর ব্যক্তিগত সমস্যা
আপনার জীবনসঙ্গীর কোনো ব্যক্তিগত সমস্যা, যেমন - তাঁর পরিবারের সাথে সম্পর্ক, স্বাস্থ্যগত সমস্যা বা কর্মজীবনের কোনো প্রতিবন্ধকতা, সরাসরি আপনার বাবা-মাকে না বলাই ভালো। কারণ এতে তাঁদের মনে আপনার সঙ্গীর সম্পর্কে ভুল ধারণা তৈরি হতে পারে বা অনর্থক জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি হতে পারে। এই ধরনের বিষয়গুলো আপনার এবং আপনার সঙ্গীর মধ্যেই আলোচনা ও সমাধানের চেষ্টা করা উচিত।
৩. পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আপনার সম্পর্কের টানাপোড়েন
পরিবারের অন্য কোনো সদস্যের (যেমন: ভাইবোন, চাচা-মামা) সাথে আপনার যদি কোনো ব্যক্তিগত মতবিরোধ বা মনোমালিন্য থাকে, তবে তা সরাসরি বাবা-মাকে না বলাই ভালো। কারণ এতে তাঁরা উভয় পক্ষের প্রতিই সহানুভূতিশীল হতে পারেন এবং বিষয়টি তাঁদের জন্য মানসিক কষ্টের কারণ হতে পারে। পারিবারিক বিবাদগুলো যতটা সম্ভব নিজেরা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। যদি একান্তই জটিল হয়ে পড়ে, তবে তাঁদের জানানোর আগে পরিস্থিতিটা ভালোভাবে বিশ্লেষণ করে নিন।
৪. আপনার কিছু ব্যক্তিগত মানসিক চাপ বা ছোটখাটো হতাশা
জীবনের পথচলায় আমাদের সবারই কমবেশি মানসিক চাপ বা হতাশা আসে। যদি এটি গুরুতর কিছু না হয়, তাহলে প্রথমেই বাবা-মাকে না জানিয়ে নিজে সামলানোর চেষ্টা করুন। তাঁরা আপনার দুশ্চিন্তায় উদ্বিগ্ন হতে পারেন। তবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা আপনার দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে, তাহলে অবশ্যই তাঁদের সাথে আলোচনা করুন এবং তাঁদের সহযোগিতা চান। কিন্তু ছোটখাটো, ক্ষণিকের হতাশা তাঁদের না জানানোই ভালো।
মনে রাখবেন, এই বিষয়গুলো না জানানোর অর্থ তাঁদের থেকে কিছু গোপন করা নয়, বরং তাঁদের মানসিক শান্তি বজায় রাখা এবং অপ্রয়োজনীয় দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখা। তবে যেকোনো গুরুতর সমস্যায় অবশ্যই তাঁদের সাথে খোলামেলা কথা বলতে দ্বিধা করবেন না। তাঁরা সবসময় আপনার পাশে থাকবেন।