22/09/2025
ঢাকা থেকে ১৩১ কিলোমিটারের যাত্রা: নরসিংদীর পথে প্রথম অভিযান|NRD's Tour 097| 131 KM Journey from Dhaka: First Adventure to Narsingdi
Find this video as 4K on YouTube: https://youtu.be/6f5IsieFoug
ঢাকা থেকে নরসিংদী: জমিদারবাড়ির পথে” সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ পর্ব " ঢাকা থেকে ১৩১ কিলোমিটারের যাত্রা: নরসিংদীর পথে প্রথম অভিযান" আমি শেয়ার করব ২০২৫ সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৭ টা ৪৫ পর্যন্ত পুরো ভ্রমণের ভিডিওগ্রাফি ,সাথে বর্ণনা করব আমার ভ্রমণ গল্প।
আমার ৩০ বছরের জীবনে বাংলাদেশের ৫৩ টি জেলা ভ্রমণ করা শেষ হয়েছিল গত আগস্ট মাসে। যেহেতু নিজের একটি বাইক আছে তাই পরিকল্পনা করেছিলাম মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়বো নতুন জায়গায় এক্সপ্লোর করার জন্য। ঠিক সে ব্যাপারটা চিন্তা করেই গত শুক্রবার পরিকল্পনা করেছিলাম নরসিংদী জেলাটি ঘুরবো।
জীবনে প্রথমবারের মতো আমার এফ জেড এস ভার্সন ফোর বাইকটিকে নিয়ে একা ঢাকার বাইরে ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। এটি আমার জন্য ছিল একেবারেই ভিন্নধর্মী অভিজ্ঞতা। শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে যাত্রা শুরু করি আমার ৫৪তম জেলা নরসিংদীর উদ্দেশ্যে। গন্তব্য ছিল ঐতিহাসিক ঘোড়াশাল জমিদার বাড়ি।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা পূর্বাচল কালীগঞ্জ পার হয়ে প্রায় দেড় ঘন্টার মতো বাইক রাইড শেষে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে পৌঁছে যাই গন্তব্যে। জমিদার বাড়িটির চারপাশের নীরবতা, পুরোনো স্থাপত্য আর ইতিহাস যেন মুগ্ধ করে দিল মুহূর্তেই। প্রায় ২৫-৩০ মিনিট সেখানে সময় কাটিয়ে অনুভব করলাম এক টুকরো অতীতের আবেশ। ঘড়ির কাটাতে ঠিক তখন পাঁচটা দুই। ভেবে নিলাম আরো কিছু সময় পাওয়া যাবে নতুন এ আরেকটি জায়গা এক্সপ্লোর করা যায়।
এরপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম কাছেই আরেকটি দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার— ডাঙ্গা জমিদার বাড়ি। মাত্র ২৮ মিনিটের মোটরবাইক ভ্রমণে বিকেল ৫টা ২ এর দিকে পৌঁছে গেলাম সেখানে। ডাঙ্গা জমিদার বাড়ি যেটা স্থানীয়রা উকিল বাড়ি বা লক্ষণ সাহার জমিদার বাড়ি হিসেবে চিনে থাকে। অবাক করার মতো ব্যাপার হলো, জায়গাটিতে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। তরুণ-যুবক থেকে শুরু করে প্রবীণ পর্যন্ত নানা বয়সী মানুষ ভিড় জমিয়েছে কেবলমাত্র এই ঐতিহাসিক স্থাপনাটি দেখতে। প্রায় ৩৭ মিনিট সময় কাটিয়ে সুন্দর ফটো স্টেশন করে ভিডিও সেশন করে আমি তারপর বেরিয়ে পড়ি ঢাকার উদ্দেশ্যে। গুগল ম্যাপ বের করে দেখলাম ওই জায়গাটা থেকে ঢাকা মাত্র সাতাশ কিলোমিটার। আমি ব্যাপারটা একটু অবাক হয়েছিলাম কিন্তু তারপরেও সেভাবেই রওনা দেই। পথের মাঝখানে গিয়ে দেখি আমার পথ আরো বাড়ছে তার মানেই আমি ভুল পথে এগোচ্ছি। স্থানীয় একজন মোটরসাইকেল আরোহীর সাথে কথা বলে জানতে পারলাম আমি ভুল পথে এগোচ্ছি। আর তার কথামতো ডাঙ্গা জমিদার বাড়ি পার হয়ে আবার ঘোড়াশাল এর দিকে শীতলক্ষা নদী পার হয়ে বিসমিল্লাহ হোটেল নামে একটি হোটেলে গিয়ে পৌছালাম। সেখানে গিয়ে সন্ধ্যার নাস্তা সারলাম। মাত্র ১৫ মিনিট সেখানে সময় ব্যয় করে আবার রওনা দিলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যা সাতটা বাইশ মিনিটে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ঠিক ৭ঃ৪৫ এ গিয়ে আমি আমার বাসাতে গিয়ে পৌঁছায়। এই পুরো জার্নিটা তে আমার যেটা মনে হয়েছে কালীগঞ্জের এই রোগটা খুব আঁকাবাঁকা যার কারণে বাইকটা চালাতে গিয়ে অনেকটা মোটো জিপির মতো ফিল হয়েছে। তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হয়েছে আল্লাহ তাআলার রহমতে আমার মত একজন আনকোরা ড্রাইভার রাতের অন্ধকারে এরকম আঁকাবাঁকা পথে কিভাবে বাইক চালিয়েছে। সবকিছুই মহান আল্লাহ তায়ালার কারণে সম্ভব হয়েছে।
সবচেয়ে ভালো লেগেছে এই কারণে যে, এই জমিদার বাড়িগুলো ঘুরে দেখতে কোনো ধরনের প্রবেশ ফি লাগে না। ভ্রমণের একমাত্র খরচ হলো যাতায়াত ব্যয়। যেহেতু আমি বাইকে গিয়েছিলাম, তাই পুরো যাত্রায় আমাকে প্রায় ১৩১.৫০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে।
এই ভ্রমণ শেষে পূর্ণ হলো আমার বাংলাদেশের ৫৪তম জেলা ভ্রমণের স্বপ্ন। আমার এফ জেড এস ভার্সন ফোর বাইকটিকে নিয়ে এই প্রথম একা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার কাছে এক অমূল্য স্মৃতি হয়ে রইল। নিঃসন্দেহে, এটি জীবনের অন্যতম স্মরণীয় ভ্রমণ ছিল, যা আমাকে নতুন অনুপ্রেরণা দিয়েছে সামনে আরও অনেক জেলা ঘুরে দেখার।
#ডাঙ্গাজমিদারবাড়ি #নরসিংদীভ্রমণ #নরসিংদী
#ঘোড়াশালজমিদারবাড়ি #মনুমিয়াজমিদারবাড়ি