28/11/2025
শাহবাগে ‘গানের আর্তনাদ’ অনুষ্ঠানে ‘জুলাই মঞ্চের’ হামলা
বাউল আবুল সরকারকে গ্রেপ্তার এবং মানিকগঞ্জ ও ঠাকুরগাঁওয়ে বাউল শিল্পীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত ‘গানের আর্তনাদ’ অনুষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে রাজধানীর শাহবাগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের অভিযোগ, ‘জুলাই মঞ্চ’-এর কয়েকজন সদস্য এই হামলা চালিয়েছেন।
আয়োজকদের অভিযোগ: পূর্বপরিকল্পিত হামলা
ঘটনার বিষয়ে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সামি আবদুল্লাহ বলেন,
“জুলাই মঞ্চ ও উসমান হাদির ভোটের প্রচারের ‘কনসার্ট ফর ঢাকা’ অনুষ্ঠান থেকে কিছু লোক এসে আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত ছিল। কর্মসূচি শুরুর আগেই তারা বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হয়েছিল। তারা আমাদের প্রোগ্রামের ব্যানার ভাঙচুর করেছে।”
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী মিশকাত তানিশা অভিযোগ করেন,
“হামলাকারীদের একজন আমাকে জুতা খুলে মারার হুমকি দিয়েছে।”
আয়োজকের বক্তব্য: ব্যাকড্রপ ভাঙচুর, মাইকে চিৎকার
‘গানের আর্তনাদ’ অনুষ্ঠানের এক আয়োজক মার্জিয়া প্রভা বলেন,
“বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবি ও সারা দেশে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত আমাদের কর্মসূচিতে জুলাই মঞ্চ মব হামলা করেছে। তারা এসে মাইকে চিৎকার করে আবুল সরকারের নাম সরিয়ে দিতে বলে। আমাদের ব্যাকড্রপ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তবে আমাদের বন্ধুরা শক্তভাবে এই মব প্রতিহত করেছে, আমরা ভয় পাইনি। মশাল মিছিলের মাধ্যমে সারা বাংলায় বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদ ও আবুল সরকারের মুক্তির দাবি জানানো হবে।”
জুলাই মঞ্চের পাল্টা কর্মসূচি ও বক্তব্য
ঘটনার সময় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা’ এবং ‘জাতীয় সম্প্রীতি বিনষ্টে উদ্ভূত সাংস্কৃতিক চক্রান্ত প্রতিরোধে জুলাই সমাবেশ’ শীর্ষক আরেকটি কর্মসূচির আয়োজন করে জুলাই মঞ্চ।
সেখানে বক্তব্য দিতে গিয়ে মাসুম বিল্লাহ বলেন,
“আমরা পাশেই আমাদের কর্মসূচিতে ছিলাম এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি যেন ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকারীদের পক্ষে কোনো অনুষ্ঠান না করা হয়। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। এরা সবসময় মেয়েদের সামনে রেখে তেড়ে আসে। মেয়েরা নয়, আসলে এরাই সন্ত্রাসী এবং মেয়েদের সামনে রেখে আক্রমণ চালায়।”
জুলাই মঞ্চের এক আয়োজক মো. ওয়াসীর বলেন,
“আমরা বলেছিলাম, আপনারা বাউলদের পক্ষে আন্দোলন করুন, কিন্তু আবুল সরকারের নামটি বাদ দিন। তারা রাজি হয়নি। তাই আমরা তাদের বোঝাতে চেয়েছি—এখানে কোনো কালচারাল ফ্যাসিজম চলবে না।”