30/06/2025
গত ১২ই জুন রাতে আমার সাথে ঘটে যাওয়া কাহিনীঃকুমিল্লায় কিশোর গ্যাং- প্লীজ ছড়িয়ে দিন।
------------------------------------------------------------------
১২ই জুন,রোজ বৃহস্পতিবার, রাতঃ ১০:৪০মিনিট,
স্থানঃ পূবালী চত্ত্বর,কান্দিরপাড়,কুমিল্লা।
সিলেটের ট্রেন ধরবো রাত ১২:১২ এ। বাসা থেকে রওনা দিয়েছিলাম ৯ টার দিকে।প্রায় সময়ই রাতে যাওয়া আসা করি। বরুড়া থেকে সিএনজি করে কুমিল্লা পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড আসি।তারপর অটো করে কান্দিরপাড় নেমে ড্রাইভারের সাথে ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কি করি(২০ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা রাখছে।কারণঃ জাঙ্গালিয়ায় বাণিজ্যমেলার কারনে অনেক জ্যাম ছিলো তাই)।তখন রাত ১০:৩৫ বাজে। আমি অটো থেকে নেমে পূবালী চত্ত্বরে দাঁড়িয়ে মিশুক(ছোট অটো) ডাক দিয়ে বলি,মামা স্টেশন যাবেন?
মামা বললোঃ ৪০ টাকা।
আমি বললামঃনা মামা,৩০ টাকা দিবো।
মামাঃ আচ্ছা চলেন।
( একটু বলে রাখি,কান্দিরপাড়ে অটো থেকে নামার পর আমি দেখলাম ১০-১২ জন আমার বয়সী ১৯/২০/২০)১/২২/২৩ বছরের টোকাই পুলাপাইন যারা কান্দিরপাড় থাকে,পূবালী চত্ত্বরে ব্যাংকের পাশের সিঁড়িতে বসে আছে।)
সময় তখন ১০:৪০ বাজে।আমি অটোতে উঠার সাথে সাথে ওরা আমার অটো ঘেরাও করে নেয়।এবং আমার দুপাশে দুজন ছোট চাকু/ছুরি ধরে রাখে।বাকিরা ব্যাগ+পকেট খুঁজতে থাকে। রাত বেশি হওয়ায় গাড়ি/মানুষজন কম ছিলো।তারপর তারা ঘড়ি,মোবাইল,চার্জার,জুতা(bata),মানিব্যাগ নিয়ে যায়। সময় নিছে সর্বোচ্চ ৪০-৫০ সেকেন্ড।তারপর তারা দৌঁড়িয়ে কিছু ছেলে কান্দিরপাড় টাউন হলের দিকে,কিছু হার্ট বিল্ডিং এর দিকে চলে যায়।আমি দেরি না করে কান্দিরপাড় পুলিশ ফাঁড়িতে চলে যাই।তারপর আমার কলেজ+ ভার্সিটির পরিচয় দিয়ে তাদের কাছে অভিযোগ জানাই। আমি তাদেরকে বর্ননা দিয়েছিলাম ছিনতাইকারীদের সম্পর্কে। তারা তখন বুঝতে পারে কারা করতে পারে এই কাজ।তারপর কিশোর গ্যাং এর লিডার শরিফ,ওরে কল দিয়ে ফোনটা উদ্ধার করার চেষ্টা করে। আমি পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানাই। কারণ তারা ২/৩ ঘন্টার মধ্যে আমার ফোনটি উদ্ধার করেছে। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
তারপর আমি আমার চাচার বাসায় চলে যাই।
সকালে গিয়ে ফোনটা নিয়ে আসি।শুধু ফোনটা ফেরত পেয়েছি। তারা সিম গুলো রেখে দিয়েছে।বাকি জিনিসগুলোও ছিনতাইকারীরা ফেরত দেয় নি।
পুলিশের কাছে যখন অভিযোগ জানাই,তখন তারা বলেছে,কিশোর গ্যাং এর জ্বালায় তারা অতিষ্ঠ। কান্দিরপাড় নাকি থাকা যায় না। সবগুলো টোকাই পুলাপাইন এসবের সাথে জড়িত। তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন এ্যাকশান নেয়া হচ্ছে না কেন?
ঢাকা,কুমিল্লা সহ কয়েকটা এরিয়াতে এসব কিশোর গ্যাং এর সন্ত্রাসী আক্রমন অনেক বেশি। কয়েকদিন আগেও কুমিল্লার একটা ভিডিওতে দেখলাম,কুমিল্লাতে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা সরাসরি মিছিল করতেছে।তাহলে তাদের থেকে জনগন মুক্তি পাবে কিভাবে যদি কোন এ্যাকশান নেয়া না হয়।
কুমিল্লার টমছমব্রীজ,সালাউদ্দিন, কান্দিরপাড়, স্টেশন,শাসনগাছা,ঝাউতলা এসব এরিয়াতে চলাচল করার সময় একটু সাবধানতা অবলম্বন করবেন।
কুমিল্লায় কিশোর গ্যাং এর মাত্রা অতিরিক্ত।
অতএব, স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দের কাছে আমার আবেদন,দ্রুত এই ধরনের সন্ত্রাস বাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশান নিয়ে কুমিল্লা শহরকে জনগনের জন্য নিরাপদ করে তোলার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে আইনগত ভাবে এ্যাকশান নেন।
নিবেদক,
মোঃ সাজ্জাদ হোসেন
সাবেক শিক্ষার্থী- কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ(HSC-২০২২ ব্যাচ)
ও
বর্তমান শিক্ষার্থী- শাহ্জালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,সিলেট ( Department of political Studies)।
বিঃদ্রঃ নিচের ছবিটি সেই ছিনতাইকারীদের মধ্যে একজন। কারণ যখন আমার ফোন নিয়েছিলো,তখন হয়তো ফোনের ক্যামেরা চেক করার জন্য একটি ছবি তুলে। কিন্তু,ফোন লক থাকার কারনে ছবিটি ডিলিট করতে পারে নি। আমি যখন ফোনটি হাতে পাই,তখন দেখি ছবিটি তোলা হয়েছে ১১:০৪ এর দিকে(ফোন নেয়ার ২৪ মিনিট পর)। আর ছবির লোকেশান দেখাচ্ছে -C5RG+57R,Cumilla। গুগল অনুসারে,এটার লোকেশান হলো কুমিল্লা ইপিজেড এরিয়ার আশেপাশে।