17/06/2025
ফরিদপুর জেলা বিএনপির রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ২ জুন ফরিদপুর জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের সকল ইউনিট কমিটি বাতিল করে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। সেই অনুসারে ফরিদপুর জেলা বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি সকল কমিটি ভেঙে দিয়েছে।
গত শনিবার অনুষ্ঠিত জেলা আহ্বায়ক কমিটির জরুরি সভায় আগামী ১০ জুলাই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সভা থেকেই প্রতিটি উপজেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব গঠনের লক্ষ্যে উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব কমিটির সদস্যরা দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলাগুলোর সম্মেলন পরিচালনা করবেন।
কমিটি ভেঙে দেওয়ার খবরে তৃণমূল পর্যায়ে স্বস্তি ও আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে। বিশেষ করে কোতোয়ালি থানা বিএনপির পুরনো কমিটি বাতিল হওয়ায় অনেক এলাকায় সাধারণ কর্মীরা মিষ্টি বিতরণ করেছেন। তারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তাই এ সিদ্ধান্তে তারা সন্তুষ্ট।
ইতোমধ্যে বোয়ালমারীসহ কয়েকটি উপজেলায় এবং ফরিদপুর সদর উপজেলার কয়েকটি ওয়ার্ডে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যান্য উপজেলায়ও দ্রুত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।
তবে অনেক ত্যাগী নেতা-কর্মী আতঙ্কে রয়েছেন। তারা শঙ্কা প্রকাশ করেছেন, দীর্ঘদিন আন্দোলন, মামলা ও নির্যাতনের মুখোমুখি হয়ে যারা দল ধরে রেখেছেন, তাদের বাদ দিয়ে যদি সুবিধাবাদীরা নতুন কমিটিতে স্থান পায়, তাহলে দলের ক্ষতি হবে। তৃণমূলের অনেকেই অভিযোগ করছেন, ফরিদপুর জেলা বিএনপি এখন একাধিক গ্রুপে বিভক্ত, যাদের একটি সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, “কমিটি গঠনে কোনো পক্ষপাত থাকবে না। আমরা নিরপেক্ষভাবে, ত্যাগী ও কর্মীবান্ধব নেতাদের মূল্যায়ন করেই কমিটি গঠন করব।”
তৃণমূলের জোরালো দাবি, কোতোয়ালি বিএনপির নতুন কমিটিতে সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক পদে ফাত্তাউল ইসলাম ফাত্তাহকে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তাদের মতে, তিনি একজন সৎ, যোগ্য, সাহসী ও নির্লোভ নেতা যিনি সব সময় দলের কর্মীদের পাশে ছিলেন। সাধারণ কর্মীদের সঙ্গে তার যোগাযোগ এবং জনপ্রিয়তা তাকে একজন যোগ্য নেতৃত্বে পরিণত করেছে।
এছাড়াও জেলা কমিটিতে সভাপতি পদে সাবেক যুবদলের সহ-সভাপতি মাহাবুবুল হাসান পিংকু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে এ কে কিবরিয়া স্বপন অথবা সৈয়দ জুলফিকার হোসেন জুয়েলের নাম প্রস্তাব করেছেন অনেকে।
আগামী ১০ জুলাইয়ের সম্মেলন ঘিরে ফরিদপুরের বিএনপির রাজনীতিতে নতুন প্রত্যাশা, উত্তেজনা ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এখন দেখার বিষয়, তৃণমূলের প্রত্যাশা কতটা প্রতিফলিত হয় নতুন নেতৃত্বে।