13/05/2025
প্রযোজক নির্মাতা শিল্পী কলাকুশলীদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করা না গেলে বাংলা চলচ্চিত্র কোনদিনই আগাবে না। বেশ কয়েক বছর ধরে ফিল্ম ইন্ড্রাষ্টি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। প্রযোজকরা অনেক রিস্ক নিয়ে ইনভেস্ট করছে, নতুন অনেক প্রযোজক, নির্মাতা ও শিল্পী কলাকুশলীর সমন্বয়ে নতুন জোয়ার এসেছে, দরকার ন্যায্য হিস্যা নিশ্চিত করা। “চিরকাল” ধরে চলে আসা অন্যায্য সব অন্যায় এখনই সংস্কার না করা গেলে নতুন বাংলাদেশের রুপরেখার কোন মানে নেই। সকল খাতের সকল অন্যায্য দূর করে প্রযোজক পরিবেশক প্রদর্শক নির্মাতা শিল্পী কুলাকুশলীরা একসাথে হয়ে ন্যায্যতার ভিত্তিতে চলচ্চিত্র নির্মানই মুক্তির একমাত্র পথ।
স্টার সিনেপ্লেক্স, ব্লকবাস্টার সিনেমাস, লায়ন সিনেমাস, শ্যামলী, মধুমিতাসহ দেশের শীতাতপনিয়ন্ত্রিত সব প্রেক্ষাগৃহেই এসি রক্ষণাবেক্ষণের নামে কেটে নেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ। এটিকে ‘অন্যায্য’ বলছেন প্রযোজকেরা। বাংলাদেশের মাল্টিপ্লেক্সগুলো, বিশেষ করে স্টার সিনেপ্লেক্স, ৬০০ টাকার টিকিটে প্রায় ৩৮% অর্থ ‘এসি রক্ষণাবেক্ষণ’ নামে কেটে রাখে, যা ২২২ টাকা। এর পাশাপাশি ২৩% যায় সরকারের ভ্যাট ও মিউনিসিপ্যাল ট্যাক্সে। ফলে টিকিটের মাত্র ৩৯% থাকে অ্যাডমিশন ফি হিসেবে, যা থেকেই প্রদর্শক ও প্রযোজকের ভাগ হয়। বাস্তবে প্রযোজকের ভাগ হয় তারও ৬০%, অর্থাৎ পুরো টিকিটের দামে গড়ে তিনি পান ২৩% বা তারও কম। টিকিট বিক্রির অর্থের এই অসম বণ্টন ঠেকানোর জন্য স্টার সিনেপ্লেক্সকে এসি রক্ষণাবেক্ষণের নামে সার্ভিস চার্জ কমানোসহ তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন প্রযোজকেরা। ১০ মে চিঠিটি পাঠান আলফ আই স্টুডিওস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল। তিনি জানান, "পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে।" তবে এ সম্পর্কে হলমালিকদের মন্তব্য-এই সার্ভিস চার্জ নাকি প্রদর্শক সমিতি দ্বারা নির্ধারিত এবং এসি রক্ষণাবেক্ষণে খরচ নাকি একটু বেশিই হয়। ভারতে যেমন ১৫০ টাকার টিকিটে মাত্র ৪ টাকা সার্ভিস চার্জ নেওয়া হয়, বাংলাদেশে সেখানে ৬০০ টাকায় ২২২ টাকা নেওয়া হয়—যা অত্যন্ত অস্বাভাবিক ও প্রযোজকদের জন্য ক্ষতিকর। এই বিষয়টি অবহিত করা হলে স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের সারা বছর কনটেন্ট থাকে না। ভারতে সারা বছর কনটেন্ট আছে। আমাদের কনটেন্টের অভাব আছে, এটা আপনারা ভালো করেই জানেন।’ প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘আমাদের প্রস্তাবিত শেয়ার মানি রেশিও পেলে সারা বছর সিনেমা দিতে পারবেন প্রযোজকেরা। আমরা সিনেমাটাই বানাই। বড় বাজেটের সিনেমা বানিয়ে টাকা ওঠাব কীভাবে। আমরা কীভাবে টিকে থাকব?’ ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘বরবাদ’ ছবির প্রযোজক শাহরিন আক্তারও একই প্রশ্ন তুলেছেন।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো