19/02/2025
ইস্তিগফার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দশটি বিষয়:
[১] ইস্তিগফার হাত তুলে দু‘আ করার মাধ্যমেও করা যায় আবার হাত না তুলে ইস্তিগফারের বাক্যগুলো পাঠ করেও করা যায়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অন্তরে অনুশোচনা ও অনুতাপ থাকা।
[২] ইস্তিগফারের জন্য অজুর প্রয়োজন নেই। তবে, হাত তুলে দু‘আর মাধ্যমে ইস্তিগফার করতে চাইলে, আগে অজু করে নিলে মনোযোগ, একাগ্রতা ও খুশু-খুজু (বিনয় ও একাগ্রতা) তৈরি হয়।
[৩] হেঁটে-হেঁটে অথবা দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়ে, নিঃশব্দে অথবা সশব্দে (খুব জোরে সীমালঙ্ঘন না করে)—সর্বাবস্থায় ইস্তিগফার করা যায়। ইস্তিগফারের ক্ষেত্রে কোনো সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।
[৪] ইস্তিগফার যেকোনো সময় করা যায়। (তবে ইসতিগফারের জন্য রয়েছে কিছু শ্রেষ্ঠ সময় ও মুহূর্ত। সেই আলোচনা পরে আসবে—ইনশাআল্লাহ)
[৫] ইস্তিগফার শুধু নিজের জন্যই নয়, মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনসহ যেকোনো জীবিত বা মৃত মুসলিমের জন্যই করা যায়। [দেখুন: সুরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪১]
[৬] কোনো ক|ফির অথবা মুশ'রিকের জন্য ইস্তিগফার করা ইসলামে নিষিদ্ধ। নবিজির চাচা আবু তালিব সারাজীবন তাঁর ভাতিজার জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছেন, কিন্তু ঈমান আনার সৌভাগ্য লাভ করেননি। তার মৃত্যুর সময় নবিজি আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করছিলেন। তখন আয়াত অবতীর্ণ হয়—‘‘নবি ও মুমিনদের উচিত নয় যে, তারা মু'শরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে—যদিও তারা নিকটাত্মীয় হয়—যখন তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামি।’’ [সুরা তাওবাহ, আয়াত: ১১৩]
[৭] কুরআন-হাদিসে ইস্তিগফারের জন্য যেসব শব্দ এসেছে, সেগুলোর বাইরেও অন্য যেকোনো উপযুক্ত শব্দ বা বাক্য দিয়ে ইস্তিগফার করা যায়। এমনকি যেকোনো ভাষায় ইস্তিগফার করা যায়। কারণ ইস্তিগফার মানেই হলো, আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। তবে, কুরআন-হাদিসে উল্লিখিত ইস্তিগফারের বাক্যগুলোর মর্যাদা ও নেকি অনেক বেশি। এগুলো কবুল হওয়ারও অধিক সম্ভাবনা রাখে। [বিস্তারিত জানতে দেখুন: রাহে বেলায়াত, ড. আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর; ৯৬-১০৪ পৃষ্ঠা]
[৮] দিনে-রাতে যতবার ইচ্ছা ইস্তিগফার করা যায়। নির্দিষ্ট সংখ্যক পড়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে, যেসকল হাদিসে স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট সংখ্যায় পড়ার কথা এসেছে, সেগুলো সেভাবে পড়াই নিয়ম। যেমন: প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে তিন বার ইস্তিগফার পড়া। [ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ: ১২২১]
[৯] নারীদের মাসিক পিরিয়ড অবস্থায় (অধিকাংশ আলিমের মতে) কুরআন পড়া নিষেধ থাকলেও, এসময় ইস্তেগফার, দরূদ, জিকির দু 'আ ইত্যাদি আমল করতে কোন বাধা-নিষেধ নেই। এ বিষয়ে আলেমগণ একমত।
[১০] সিজদায় ইস্তেগফার পড়া যাবে। কারণ ইস্তেগফার এক ধরনের দু 'আ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদারত অবস্থায়ও ইস্তেগফার পড়েছেন।
[ইমাম বুখারি, আস-সহিহ :৭৯৪ ]