24/10/2025
মানুষের মন অদ্ভুত জিনিস। কখনো তা যুক্তির কাছে হার মানে না, বরং নিজের এক অচেনা পথ বেছে নেয়। হুম, হয়তো সেখানেই জীবনের আসল নাটকটা ঘটে।
দু’দিনের আলাপে কাউকে পুরোপুরি না জেনেও আমরা কখনো কখনো ভীষণভাবে টান অনুভব করি। যেন মানুষটা কোথাও আগে দেখা—কোনো জন্মে, কোনো অসমাপ্ত কথায়। তার হাসির ভেতরে এমন এক শান্তি থাকে, যা বছরের পর বছরেও পাইনি কারো মধ্যে। তারপর ধীরে ধীরে কথায় কথায় দূরত্ব গলে যায়, সময়ের হিসেব হারিয়ে ফেলে মন।
শুরুতে কৌতূহল ছিল, পরে হয়ে গেল অভ্যাস। আর অভ্যাস একসময় রূপ নেয় আকাঙ্ক্ষায়।
এমন আকাঙ্ক্ষা, যা যুক্তি বোঝে না, ধর্ম মানে না, কেবল অনুভব চেনে।
কেউ কেউ বলে, এ যেন পাপ।
কিন্তু ভেবে দেখো—যদি দু’জন মানুষ একই মুহূর্তে একে অপরের ভিতর নিজের হারিয়ে যাওয়া অংশটা খুঁজে পায়, সেটা কি সত্যিই পাপ?
হয়তো না।
হয়তো ওটাই সেই স্বল্প সময়ের ‘বেঁচে থাকা’, যার জন্য এতদিন অপেক্ষা করেছিল তারা।
তারপর আসে ছোঁয়া—যা হয়তো হওয়া উচিত ছিল না, কিন্তু হয়ে যায়।
কেউ কাউকে জড়িয়ে ধরে, কেউ কেঁদে ফেলে। কারণ তারা জানে, এই মুহূর্তটাই শেষ।
আগামীকাল আবার বাস্তব ফিরে আসবে। দায়িত্ব, সম্পর্ক, সমাজ—সবকিছু এসে দাঁড়াবে বুকের ওপর পাথরের মতো।
তবুও তারা চায়, এই একটা বিকেল, এই একটা রাত, এই একটা স্মৃতি যেন থেকে যায়।
যাতে কোনো একদিন হঠাৎ বৃষ্টি নামলে মনে পড়ে,
কোনো এক রাতে ঘুম ভেঙে গেলে বুকের ভেতরটা হালকা কাঁপে।
যাতে রাস্তায় কেউ যদি হঠাৎ তার নাম ধরে ডাকে, তখন চোখের ভেতর ভিজে ওঠে কিছু পুরোনো আলো।
না, তারা একসাথে থাকবে না।
তারা সংসার গড়বে না।
কিন্তু তারা একে অপরের ভিতরে থেকে যাবে—যেভাবে একটা নরম কুসুম থাকে শক্ত খোলার ভিতর।
ভালোবাসা অনেক রকমের হয়।
কিছু ভালোবাসা স্থায়ী হয়, কিছু হয় না।
কিছু ভালোবাসা ঘর বাঁধে, কিছু শুধু একটা অচেনা বিকেলের মতো এসে ভিজিয়ে দিয়ে যায়—তবুও সারাজীবনের জন্য তার গন্ধ থেকে যায় শরীরের কোথাও।