Amol Corner

Amol Corner Daily Amol | Zikir | Doa | Sunnah | Quran Tafsir | Hadish | Story of Prophets

13/10/2024

বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়ানো ইবাদত

বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, টর্নেডো তথা যাবতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীবাসীর প্রতি সতর্কবার্তা নিয়ে আসে। আল্লাহতায়ালা এসবের মাধ্যমে জগৎবাসীকে পরীক্ষা করে থাকেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ দুর্বিপাকে বিপর্যস্ত মানুষদের প্রতি সচ্ছল নিরাপদ মানুষদের কিছু দায়বদ্ধতা রয়েছে। আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে যাওয়া প্রতিটি বিবেকবান মানুষের অবশ্য কর্তব্য। ইসলামে রয়েছে এ ক্ষেত্রে অসাধারণ কার্যকরী দিকনির্দেশনা।

আর্তমানবতার সেবায় ইসলামের ভূমিকা সর্বাগ্রে। বিপদগ্রস্তের সাহায্য ও অসহায়ের সহযোগিতা করা ইসলামের মহৎ ও মৌলিক শিক্ষা।
প্রিয় নবী সা:কে আল্লাহতায়ালা মানবজাতির করুণাস্বরূপ পাঠিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা বলেন,

‘আমি আপনাকে সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।’ (সূরা আম্বিয়া-১০৭)

বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও তাদের সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দেওয়া বিবেকের দাবি ইসলামের শিক্ষা। টাকা-পয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, পানি, ওষুধসহ যার যা কিছু আছে তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যের বিপদে সাহায্যের হাত বাড়ানোর প্রতিদান ইসলামে সওয়াবের কাজ। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা বলেন,

‘যারা নিজেদের ধন-সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে তাদের দানের দৃষ্টান্ত হলো- যেমন একটি শস্যবীজ বপন করা হলো এবং তা থেকে সাতটি শীষ উৎপন্ন হয়েছে আর প্রত্যেক শীষে রয়েছে ১০০টি শস্যকণা। এমনিভাবে মহান আল্লাহতায়ালা যাকে চান তাকে প্রাচুর্যতা দান করেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় জ্ঞানময়। (আল কোরআন, সুরা বাকারা, আয়াত : ২৬১)।

প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
‘আল্লাহর বান্দা যতক্ষণ তার ভাইকে সাহায্য করবেন, মহান আল্লাহতায়ালা ততক্ষণ তাকে সাহায্য করতে থাকবেন। ’ (মুসলিম)।

এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, বান্দা যেভাবে ভাইয়ের বিপদের সাহায্যকারী হয়েছেন, মহান আল্লাহতায়ালা ও তার বিপদে দুনিয়া আখেরাতে উত্তম সাহায্যকারী হবেন। সাধ্যমতো মানবসেবায় নিজেকে উৎসর্গ করা সব ধর্ম ও মানবিকতার দৃষ্টিতে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। মানবসেবাই পরম ধর্ম। সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-

‘যে ব্যক্তি মানবসেবায় তার ভাইয়ের সঙ্গে চলে, ওই কাজ না করা পর্যন্ত আল্লাহতায়ালা ৭৫ হাজার ফেরেশতা দিয়ে তাকে ছায়াদান করেন। তারা তার জন্য রহমত ও মাগফিরাতের জন্য দোয়া করতে থাকেন। তার প্রত্যেক কদমে একটি গুনাহ মাফ হয় এবং একটি মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। (আত তারগিব)।

সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
‘তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়া করো। আকাশের মালিক আল্লাহতায়ালা তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (মুসতাদরাক আলাস সহিহাইন)।

সাহাবি হজরত উসামা ইবনে যায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
‘নিশ্চয়ই! মহান আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে। ’ (বুখারি ও মুসলিম)।

সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
‘মানুষের সেবা ও উপকারের জন্য মহান আল্লাহতায়ালা কিছু নিবেদিতপ্রাণ সৃষ্টি করেছেন। মানুষ বিপদে পড়লে তাদের শরণাপন্ন হয়। এসব রহম দিল ব্যক্তিরা আল্লাহর শাস্তি থেকে নিরাপদ থাকবে। (আত-তারগিব)।

যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় বিপদগ্রস্ত ও দুস্থ মানবতার কল্যাণের জন্য দান-খয়রাত, জাকাত-সদকা, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন না; সমাজের অসহায় বিপন্ন, বন্যাদুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্ত নিঃস্ব অর্ধাহারি-অনাহারি নিরন্ন গরিব মানুষের অভাব দূর, ক্ষুধা নিবারণ ও দারিদ্র্য বিমোচনের চেষ্টা করেন না; ত্রাণ ও পুনর্বাসনের কাজে অংশ নেয় না; তিনি কখনোই আল্লাহ ও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয়ভাজন হতে পারেন না।

তাই আসুন! আমরা আমাদের চারপাশে মানুষদের অসহায় বিপদগ্রস্ত দেখে পাশ কেটে চলে যাব না। তাদের দিকে এগিয়ে যাব। মানুষকে বিপন্ন রেখে তাদের দিক মুখ ফেরানোর পরিণাম খুবই ভয়াবহ। হজরত লোকমান তার ছেলেকে উপদেশ দিয়ে বলেছিলেন, ‘প্রিয় সন্তান! তুমি মানুষকে দেখে অহংকার কিংবা তাচ্ছিল্যভরে তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। ’

বন্যার আভাস পাওয়া মাত্রই সাধ্যানুসারে তাদের ত্রাণ পৌঁছাতে হবে। আমার দ্বারা যদি একজন বানভাসিরও উপকার হয় এটাই আমার স্বার্থকতা। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা ভাইবোনদের সরকারি সাহায্যের পাশাপাশি আমরা সবাই খাদ্যপানীয় অনুদান প্রদান করব, ইনশা আল্লাহ। মানুষের কষ্ট লাঘবে টাকাপয়সা, খাদ্য, বস্ত্র, পানি, ওষুধসহ যার যা কিছু আছে তা নিয়েই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্যাদুর্গতদের সাহায্যে এগিয়ে আসার এখনই সময়। পবিত্র কুরআন কারিমে এরশাদ হয়েছে-
‘তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি তথা তার আহবানে সাড়া দিয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে’। (সূরা দাহর : ৮)।

আল্লাহ আরও এরশাদ করেন-
‘তাদের (বিত্তশালী) ধনসম্পদে অভাবগ্রস্তও বঞ্চিতদের অধিকার রয়েছে। (সূরা জারিয়াত : ১৯)।

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন-
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়াতে মানুষকে খাদ্য দান করেছে, কেয়ামতের দিন তাকে খাদ্য দান করা হবে। যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে পানি পান করিয়েছে, তাকে কেয়ামতের দিন পানি পান করানো হবে’। (আবু দাউদ : ১৩৪৬)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন-
‘অসুস্থ লোকের সেবা করো, ক্ষুধার্তকে অন্ন দাও এবং বন্দিকে মুক্ত করো। (বোখারি : ৫৬৪৯)।

হজরত রাসূল (সা.) আরো বলেন-
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখ-দুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন’। (মুসলিম : ২৫৬৬)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও এরশাদ করেন,
মোমিনরা পারস্পরিক ভালোবাসা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক দেহের মতো। দেহের কোনো অঙ্গ আঘাতপ্রাপ্ত হলে পুরো দেহ সে ব্যথা অনুভব করে’। (বোখারি : ৬০১১)।

তুলনামূলক বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করার বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা সর্বোচ্চ প্রতিদান দেবেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
‘যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মতো, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ। প্রতিটি শীষে রয়েছে একশ দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ (সূরা বাকারা-২৬১)

দরিদ্রক্লিষ্ট বনি আদম ও অসহায় নারীদের সাহায্য করতে প্রিয় নবী সা: অনেক বেশি উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিধবা ও অসহায়কে সাহায্যকারী ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য।’ তিনি আরো বলেন এবং সে ওই নামাজ আদায়কারীর মতো যার ক্লান্তি নেই এবং ওই রোজা পালনকারীর মতো, যার রোজায় বিরাম নেই।’ (বুখারি-৬০০৭)

অসহায়, পীড়িত, ক্ষুধার্ত-তৃষ্ণার্ত ও বিপদাক্রান্ত মানুষকে সহযোগিতা করলে আল্লাহ উভয় জগতে প্রতিদান দেবেন। আবু সাইদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল সা: বলেছেন,
‘যে মুমিন কোনো মুমিনের ক্ষুধা নিবারণ করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কেয়ামতের দিন জান্নাতের ফল খাওয়াবেন। যে মুমিন কোনো মুমিনের তৃষ্ণা দূর করেছে, আল্লাহ তায়ালা তাকে কেয়ামতের দিন মোহরাঙ্কৃত জান্নাতি সুধা থেকে পান করাবেন। যে মুমিন কোনো মুমিনকে বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতের উন্নতমানের সবুজ কাপড় পরাবেন। (তিরমিজি-২৩৮৬)

মানবসেবা, দুস্থদের সাহায্য ও অসহায়ের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ইসলামের বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা রয়েছে।

‘কেয়ামতের দিন নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা বলবেন, ‘হে আদম সন্তান, আমি অসুস্থ হয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমার শুশ্রƒষা করোনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার রব। আপনি তো বিশ্বজাহানের প্রতিপালক, কিভাবে আমি আপনার শুশ্রষা করব? তিনি বলবেন, ‘তুমি কি জানতে না যে, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, অথচ তুমি তার সেবা করোনি। তুমি কি জান না, যদি তুমি তার শুশ্রষা করতে তবে তুমি তার কাছেই আমাকে পেতে? হে আদম সন্তান, আমি তোমার কাছে খাবার চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে খাবার দাওনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার রব, আপনি তো বিশ্বজাহানের প্রতিপালক, কিভাবে আপনাকে আহার করাব?’ তিনি বলবেন, ‘তুমি কি জান না, আমার অমুক বান্দা তোমার কাছে খাবার চেয়েছিল, কিন্তু তুমি তাকে খাবার দাওনি। তুমি কি জান না যে, তুমি যদি তাকে খাবার খাওয়াতে আজ তা পেতে? ‘হে আদম সন্তান, তোমার কাছে আমি পানীয় চেয়েছিলাম, অথচ তুমি আমাকে পানীয় দাওনি।’ বান্দা বলবে, ‘হে আমার প্রভু, আপনি সমগ্র জগতের প্রতিপালক, কিভাবে আপনাকে পান করাব?’ তিনি বলবেন, ‘তোমার কাছে আমার অমুক বান্দা পানি চেয়েছিল, কিন্তু তাকে তুমি পান করাওনি। তাকে যদি পান করাতে, তবে নিশ্চয়ই আজ তা পেতে।’ (মুসলিম-৬৭২১)

আর্তমানবতার সেবায় ইসলামের ভূমিকা সর্বাগ্রে। ইসলাম এক্ষেত্রে জোর তাগিদ ও উৎসাহ দিয়েছে। বিপদগ্রস্তের সাহায্য ও অসহায়ের সহযোগিতা করা ইসলামের মহৎ ও মৌলিক শিক্ষা। মানবতাবোধ, সহমর্মিতা, স্বার্থহীন পরোপকার ও সহানুভূতি ইত্যাদি—ইসলামের বুনিয়াদি শিক্ষা।

বন্যা সৃষ্টিকর্তার এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ। হযরত নুহ আ. এর উম্মতদেরও আল্লাহ তায়ালা বন্যার প্লাবনে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। নুহ আ. এর কিশতির ঘটনা আজও ইতিহাসে উজ্জ্বল হয়ে আছে। নাফরমানি, সুদ, যেনা-ব্যাভিচার বেড়ে গেলে আল্লাহ তায়ালা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাধ্যমে বান্দাদের শাস্তি দিয়ে থাকেন। সতর্ক করেন পাপ পঙ্কিলতার। বন্যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও বন্যায় আক্রান্ত অসহায় মানুষদের সেবায় এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দিয়েছে ইসলাম। বিপদ আপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের চিরকালীন শিক্ষা। আর্ত মানবতার সেবায় মুসলিম শাসকরা রাতের আঁধারে ঘুরে ঘুরে অনাহারীদের মুখে খাবার জুটিয়েছেন। ইসলামের ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন মুসলিম শাসকরা।

কোনো মুসলমানই বিপদগ্রস্ত মানুষকে দেখে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারে না। বিপদগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া অশেষ নেকির কাজ। হাদিস শরিফে দুনিয়াতে ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত মানুষকে অন্ন ও বস্ত্র দানের পরকালীন প্রতিদান ঘোষণা করে রাসুল সা. বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য দুনিয়াতে মানুষকে খাদ্য দান করেছে, কেয়ামতের দিন তাকে খাদ্য দান করা হবে। যে আল্লাহকে খুশি করার জন্য মানুষকে পানি পান করিয়েছে, তাকে কেয়ামতের দিন পানি পান করানো হবে। যে মানুষকে বস্ত্র দান করেছে, তাকে কেয়ামতের দিন বস্ত্র পরিধান করিয়ে তার লজ্জা নিবারণ করা হবে।’ (আবু দাউদ)।

ভারী বর্ষণ ও অতিবৃষ্টির সময় পড়ার সুন্নত দোয়া
হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) অধিক বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের সময় এই দোয়া পড়তেন,
হে আল্লাহ! এই ঝড়, তুফান ও ভারী বর্ষণ আমাদের আশপাশ থেকে সরিয়ে নিন, দয়া করে আমাদের ওপর ঝড়, তুফান ও ভারী বর্ষণ দেবেন না। হে আল্লাহ, এই ভারী বর্ষণ দিন টিলা-পর্বতে, উঁচু ভূমিতে, উপত্যকায়, বনভূমি ও চারণ ভূমিতে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।
সংগৃহীত

11/06/2024

৭০টি ছোট আমল যাতে রয়েছে বহু ফজিলত

আমল: ১
প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুণ –

আশহাদু আল্লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারীকা লাহূ ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহূ

এতে জান্নাতের ৮টি দরজার যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৩৪

আমল: ২
প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে আয়াতুল কুরসি পাঠ করুণ এতে মৃত্যুর সাথে সাথে জান্নাতে যেতে পারবেন। সহিহ নাসাই, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ৯৭২।

আমল: ৩
প্রত্যেক ফরজ সলাত শেষে ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ৩৩ বার আল্লাহু আকবার এবং ১ বার (লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর) পাঠ করুণ এতে আপনার অতীতের সব পাপ ক্ষমা হয়ে যাবে। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ১২২৮।

সেই সাথে জাহান্নাম থেকেও মুক্তি পেয়ে যাবেন কেননা দিনে ৩৬০ বার এই তাসবিহগুলো পড়লেই জাহান্নাম থেকে মুক্ত রাখা হয় আর এভাবে ৫ ওয়াক্তে ৫০০ বার পড়া হচ্ছে। সহিহ মুসলিম, মিশকাত হাদিস নং- ১৮০৩) ।

আমল: ৪
প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করুণ এতে কবরের শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। সহিহ নাসাই, সহিহ তারগিব, হাকিম হাদিস নং- ৩৮৩৯, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ১১৪০।

আমল: ৫
রাসুল (সাঃ)-এর উপর সকালে ১০ বার ও সন্ধ্যায় ১০ বার দরুদ পড়ুন এতে আপনি নিশ্চিত রাসুল (সাঃ)-এর সুপারিশ পাবেন। তিবরানি, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৬৫৬ ।

আমল: ৬
সকালে ১০০ বার ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি পরলে সৃষ্টিকুলের সমস্ত মানুষ থেকে বেশী মর্যাদা দেওয়া হবে। সহিহ আবু দাউদ, হাদিস নং- ৫০৯১। হজরত জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,

‘যে ব্যক্তি ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম ওয়া বিহামদিহি’ পাঠ করে, তার জন্য জান্নাতে একটি খেজুরগাছ রোপণ করা হয়। (তিরমিজি : ৩৪৬৪)

আমল: ৭
সকালে ১০০ বার ও সন্ধ্যায় ১০০ বার সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পাঠ করলে কিয়ামতের দিন তার চেয়ে বেশী সওয়াব আর কারো হবে না। সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ২৬৯২।

আমল: ৮
সকালে ও বিকালে ১০০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০০ বার আলহামদুলিল্লাহ্, ১০০ বার আল্লাহু আকবার এবং ১০০ বার লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর পাঠ করলে অগণিত সওয়াব হবে। নাসাই, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৬৫১।

আমল: ৯
বাজারে প্রবেশ করে-

লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু য়্যুহয়ী ওয়া য়্যুমীতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা য়্যামূত, বিয়াদিহিল খাইরু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর

পাঠ করুণ এতে ১০ লক্ষ পুণ্য হবে, ১০ লক্ষ পাপ মোচন হবে, ১০ লক্ষ মর্যাদা বৃদ্ধি হবে এবং জান্নাতে আপনার জন্য ১ টি গৃহ নির্মাণ করা হবে। তিরমিজি, হাদিস নং- ৩৪২৮,৩৪২৯।

আমল: ১০
বাড়িতে সালাম দিয়ে প্রবেশ করুণ এতে আল্লাহ তা’লা নিজ জিম্মাদারিতে আপনাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ইবনু হিব্বান, হাদিস নং- ৪৯৯, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৩১৬।

আমল: ১১
জামাতে ইমামের প্রথম তাকবীরের সাথে ৪০ দিন সলাত আদায় করুন এতে আপনি নিশ্চিত জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেয়ে যাবেন। তিরমিজি, সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ৭৪৭, সহিহ তারগিব, হাদিস নং- ৪০৪)।

আমল:১২
প্রতিমাসের আয়ের একটা অংশ এতিমখানা বা মসজিদ মাদ্রাসা বা গরিব-দুখি, বিধবা ও দুস্থদের মাঝে দান করবেন হোক সেটা অতি অল্প এতে আপনি আল্লাহ তা’লার কাছে জিহাদকারির সমতুল্য হবেন। সহিহ বুখারি, হাদিস নং- ৬০০৭।

আমল: ১৩
মহিলারা ৪টি কাজ করবেন,

১: ৫ ওয়াক্ত সলাত,
২: রমজানের সিয়াম,
৩: লজ্জাস্থানের হেফাজত,
৪: স্বামীর আনুগত্য করুণ এতে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন। সহিহ ইবনু হিব্বান, হাদিস নং- ৪১৬৩ ।

আমল: ১৪
মসজিদে ফজরের সলাত আদায় করে বসে দোয়া জিকির পাঠ করুণ এবং সূর্য উঠে গেলে ২ রাকাত চাস্তের সলাত আদায় করুণ এতে প্রতিদিন নিশ্চিত কবুল ১ টি হজ্জ ও উমরার সওয়াব পাবেন। তিরমিজি, তারগিব হাদিস নং- ৪৬১।

আমল:১৫
প্রতিটি ভালো কাজ ডান দিক দিয়ে বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা।

আমল: ১৬
ঘুম থেকে উঠে ঘুমের দুয়া পড়া ।

আমল: ১৭
বাথরুমে যেতে দুয়া পড়ে বাম পা দিয়ে প্রবেশ করা, বের হওয়ার সময় ডান পা দিয়ে বের হয়ে দুয়া পড়া।

আমল:১৮
ওযুর পূর্বে মিসওয়াক করার অভ্যাস করা। -ওযুর শুরুতে এবং শেষে হাদিসে বর্ণিত দুয়া পড়া।

আমল: ১৯
ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ডান পা দিয়ে দুয়া পড়ে বের হওয়া এবং প্রবেশের সময়ও ডান পা দিয়ে প্রবেশ করে সালাম দেয়া। যদিও ঘরে কেউ না থাকুক না কেন সালাম দেয়া সুন্নাহ, আল্লাহর হুকুম। যদি ঘরে কেউ নাকে তবে এই সালাম ঘরের ফিরিশতাদের জন্য।

আমল: ২০
মসজিদে ডান পা দিয়ে দরুদ ও দুয়া পড়ে ঢুকা এবং বাম পা দিয়ে দরুদ ও দুয়া পড়ে বের হওয়া।

আমল : ২১
রাস্তার ডানপাশে চলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা। না পারলে ভিন্ন কথা।

আমল: ২২
ফরজ সালাত শেষে হাদিসে বর্ণিত যিকির, দুয়ার আমল করা। ফজর ও মাগরিবের পর সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পড়া, তিন ক্বুল পড়ে শরীর দম করা, ইত্ত্যাদি হাদিসে বর্ণিত আমল করা।

আমল: ২৩
আযানের জবাব দেয়া, আযানের পর হাদিসে বর্ণিত দুয়া পড়া। (হাত উত্তোলন না করে) -চলতে ফিরতে ছোট বড় সকলকে সালাম দেয়া। সালাম দিয়ে কথা শুরু ও শেষ করা। শুদ্ধভাবে সালাম দেয়া।

আমল: ২৪
জামা ও জুতা পরার সময় ডান দিক পরা এবং খোলার সময় বামদিকে আগে খুলা। সম্ভব হলে হাদিসে বর্ণিত দুয়া মুখস্থ করে আমলের অভ্যাস করা।

আমল: ২৫
পানি খাওয়ার সময় ৬টি সুন্নত ভালোভাবে মেনে খাওয়ার চেষ্টা করা।

আমল: ২৬
ভাত বা যেকোন খাবার খাওয়ার সময় সমতল জায়গায় বসে দস্তরখানা বিছিয়ে বিসমিল্লাহ বলে দুয়া পড়ে খাওয়া, কিছু পরে গেলে তুলে ধুয়ে খাওয়া, খাওয়া শেষে আলহামদুলিল্লাহ্‌ পড়া।

আমল: ২৭
ঘুমানোর আগে সূরা মূলক তিলাওয়াত করা, তিন ক্বুল (ইখলাস, ফালাক্ব, নাস) পড়ে তিনবার শরীর দম করা, ঘুমের দুয়া পড়া, আয়াতুল কুরসী পড়া, সূরা কাফিরুন পড়ে ডান কাত হয়ে শোয়া।

আমল: ২৮
ঘুমের মাঝখানে কোন খারাপ স্বপ্ন দেখলে উঠে বামপাশে তিনবার থু থু ফেলা এবং আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রজিম পড়ে আল্লাহর কাছে শয়তানের হাত থেকে পানাহ চাওয়া।

আমল: ২৯
আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা :

‘‘কেউ যদি চায় যে তার মূলধন বৃদ্ধি করা হোক এবং বয়স দীর্ঘ করা হোক, তবে তাকে বল সে যেন আত্নীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।’’

আমল: ৩০
২টি পবিত্র হারামে (মক্কা ও মাদীনা) সলাত পড়া :

‘‘আমার এই মাসজিদে সালাত পড়া অন্য কোথাও ১ হাজার বার সালাত পড়ার চেয়েও উত্তম, শুধুমাত্র মাসজিদুল হারাম ছাড়া এবং মসজিদুল হারাম এ সলাত পড়া অন্য কোথাও একশ হাজার বার সালাত পড়ার চেয়ে উত্তম।’’

আমল : ৩১
জামা’আতে সালাত পড়া-

‘‘জামা’আতে সালাত পড়া একাকী সালাত পড়ার চাইতে ২৭ গুন বেশী মর্যাদার।’’

আমল: ৩২
ইশা এবং ফজর জামা’আতে পড়া :

‘‘যে ব্যক্তি ইশার সালাত জামা’আতে পড়ল সে যেন অর্ধেক রাত ইবাদাত করল। আর যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামা’আতে পড়ল সে যেন পুরো রাত ইবাদাত করল।’’

আমল: ৩৩
নফল সালাত বাসায় পড়া :

‘‘ফরজ সালাত ছাড়া মানুষের সালাতের মধ্যে সেই সালাত উৎকৃষ্ট, যা সে ঘরে পড়ে।’’

আমল: ৩৪
জুম’আর দিনের ইবাদাতগুলো পালন করা :

‘‘যে জুমু’আহর দিনে গোসল করে , তারপর প্রথম খুৎবার পূর্বেই উপস্থিত থাকে, পায়ে হেটেঁ আসে, ইমামের কাছে বসে এবং মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শুনে ও কোন কথা না বলে — তাহলে প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে একবছর সালাত পড়া ও রোজা রাখার সমান সাওয়াব পাবে।’’ (আহল-আস-সুনান)

হযরত আউস ইবনে আউস আসসাকাফি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি,

‘যে ব্যক্তি জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করবে, অতঃপর কোনো রকম যানবাহনে না চড়ে হেঁটে আগে আগে মসজিদে যাবে, ইমামের নিকটবর্তী বসবে, চুপ থাকবে এবং অনর্থক কথা বলা থেকে বিরত থাকবে, তবে তার জন্য বাড়ি থেকে মসজিদ পর্যন্ত প্রতি কদমে এক বছরের রোজা ও কিয়ামুল লাইলের সওয়াব লেখা হবে। (আবু দাউদ : ৩৪৫)

আমল: ৩৫
দোহার (ইশরাক) সালাত পড়া :-

‘‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামা’আতের সাথে পড়ে, তারপর সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত আল্লাহর যিকর করে, তারপর দু’ রাকাআত সালাত পড়ে, সে যেন হজ্জ এবং ওমরাহর সাওয়াব পূর্ণ করল।

আমল: ৩৬
ইলমের জন্য মাসজিদে যাওয়া :-

‘‘যে দুনিয়াবি কোন কারন ছাড়া দ্বীনি ইলম শিখা বা শিখানোর উদ্দেশ্যে মাসজিদে যায়, সে ঐ ব্যক্তির মত যে তার হজ্জ পূর্ণ করেছে।’’

আমল: ৩৭
রমজানে ওমরাহ পালন করা :- ‘‘রমজানে ওমরাহ করা আমার সাথে হজ্জ করার সমান।’’

আমল: ৩৮
মাসজিদে ফরজ সালাত আদায় করা :-

‘‘যে ব্যক্তি নিজের গৃহ থেকে পবিত্রতা অর্জন করে (অজু ও প্রয়োজনে গোসলও করে) আল্লাহর গৃহের মধ্য থেকে কোন একটি গৃহের দিকে যায়, আল্লাহর ফরজের মধ্য থেকে কোন একটি ফরজ আদায় করার উদ্দেশ্যে, তার একটি পদক্ষেপে একটি গুনাহ ক্ষমা করা হয় এবং অন্য পদক্ষেপটি তার একটি মর্যাদা উন্নত করে।’’

আমল: ৩৯
জামা’আতে প্রথম সারিতে দাড়ানোর চেষ্টা করা :-

‘‘রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রথম সারির জন্য ৩ বার এবং দ্বিতীয় সারির জন্য ১ বার ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।’’

আমল: ৪০
মাদীনার মাসজিদুল কুবায় সালাত পড়া :-

‘‘যে ব্যক্তি ঘর থেকে নিজেকে পবিত্র করে, তারপর মাসজিদুল কু’বায় আসে এবং সালাত পড়ে, সে যেন ওমরাহর সাওয়াব পেল।’’

আমল:৪১
আযানের জবাব দেয়া :-

‘‘যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তার পুনরাবৃত্তি করে যাও। যখন আযান শেষ হয় তখন (দোয়া) চাও, তোমাকে দেয়া হবে।’’

আমল: ৪২
রমজানের এবং শাওয়ালের রোজা রাখা :-

‘‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখলো, তারপর শাওয়ালের ৬টি রোজা রাখলো সে যেন এক বছর রোজা রাখলো।’’

আমল: ৪৩
প্রত্যেক মাসে ৩টি রোজা রাখা :-

‘‘প্রত্যেক মাসে ৩টি রোজা রাখা সারা বছর রোজা রাখার সমান।’’

আমল: ৪৪
রোজাদার ব্যক্তিকে ইফতারি করানো :-

‘‘যে ব্যক্তি কোন রোজাদারকে ইফতার করায় সে তার (রোজাদার) সমান প্রতিদান পায়, কিন্তু এর ফলে রোজাদারের প্রতিদানের মধ্যে কোন কমতি হবে না।’’

আমল: ৪৫
লাইলাতুল ক্বদরে ইবাদাত করা :-

‘‘মর্যাদাপূর্ণ এ রাতটি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম’’।

আমল: ৪৬
জিহাদ :-

‘‘একজন ব্যক্তির আল্লাহর পথে জিহাদের সারিতে দাড়ানো, ৬০ বছর ইবাদাতের চেয়েও উত্তম।’’

আমল: ৪৭
রিবাত (রাত জেগে ইবাদাত করা) :-

‘‘একদিন ও একরাত স্বদেশের (মুসলিম দেশের সীমান্ত, যেখানে শত্রুর হামলার আশংখা আছে) সীমান্ত পাহারা দেয়া এক মাস ধরে রোজা রাখা ও রাতে ইবাদাত করার চাইতে বেশী মূল্যবান। এ অবস্থায় যদি সে মারা যায় তাহলে যে কাজ সে করে যাচ্ছিল, মারা যাবার পরও তা তার জন্য জারী থাকবে। তার রিযকও জারী থাকবে এবং কবরের পরীক্ষা থেকেও সে থাকবে সুরক্ষিত।

আমল: ৪৮
জিলহজ্জ এর প্রথম ১০ দিন বেশী বেশী ইবাদাত করা :-

‘‘এমন কোন দিন নেই যেদিনে কৃত আমল এসব দিন অর্থাৎ যুল হিজ্জা এর প্রথম ১০দিনের নেক আমলের মত আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়।’’ সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলেন, ‘‘ইয়া রসূলুল্লাহ! আল্লাহর পথে জিহাদের মত (নেকী) আমল ও কি নয়?’’ তিনি বললেন: ‘‘না, আল্লাহর পথে জিহাদের মত (নেকী) আমলও নয়। তবে যে ব্যক্তি তাদের জান ও মাল নিয়ে আল্লাহর পথে বের হল এবং এর কোনটা নিয়েই আর ফিরে আসল না সে ছাড়া।’’

আমল:৪৯
কুরআনের সূরাগুলো বার বার তিলাওয়াত করা :

‘কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ’ কুরআনের এক তৃতীয়াংশ এবং ‘কুল ইয়া আইযুহাল কাফিরুন’ কুরআনের চার ভাগের এক ভাগ।’’’

আমল: ৫০
ইসতিগফার করা :

‘‘যে ব্যক্তি ঈমানদার নারী পুরুষের জন্য ইসতিগফার করে, আল্লাহ প্রত্যেকের জন্য ১টি করে নেক আমল লিখে দেন। রিয়াদুস সালেহিন

আমল: ৫১
মানুষের প্রয়োজন পূরণ করা :

‘‘ যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করে, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূর্ণ করে দেন। যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাইয়ের কোন অসুবিধা (বিপদ) দূর করে দেয়, আল্লাহ এর বিনিময়ে কিয়ামাতের দিন তার কষ্ট ও বিপদের অংশ বিশেষ দূর করে দিবেন।’’

আমল:৫২
যিকর :

‘‘সুবহানালা-হি ওয়াল হামদু লিলা-হি, ওয়ালা ইলা-হা ইলালাহ-হু আলাহু আকবার’’ এই কালিমাগুলো বলা, সূর্য যে সমস্ত জিনিসের ওপর উদিত হয়, সেই সমুদয় জিনিসের অপেক্ষা অধিকতর প্রিয়।’

আমল: ৫৩

‘‘আল্লাহ কি তোমাদের জন্য ইশার সালাত জামা’আতে পড়া হজ্জের সমান এবং ফজরের সালাত জামা’আতে পড়া ওমরাহর সমান করেন নি’’ এবং ‘‘যে ফরজ সালাত জামা’আতে পড়ার জন্য হেঁটে যায়, তা হজ্জের সমান এবং যে নফল সালাত পড়ার জন্য হেঁটে যায়, তার সাওয়াব নফল ওমরাহর সমান।’’ (সহীহ আল জামি: ৬৪৩২)

আমল: ৫৪

‘‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামা’আতের সাথে পড়ে, তারপর সূর্য ওঠার আগ পর্যন্ত আলাহর যিকর করে, তারপর দু’ রাকাআত সালাত পড়ে, সে যেন হজ্জ এবং ওমরাহর সওয়াব পূর্ণ করল।

আমল: ৫৫

হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি তোমার নিকট কঠিন দুরবস্থা (অল্প ধনে জনের আধিক্য), দুর্ভাগ্যের নাগাল, মন্দ ভাগ্য এবং দুশমন-হাসি থেকে রক্ষা কামনা করছি। (মুসলিম)

আমল: ৫৬
অন্য হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, ‘হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন,

দুটি বাক্য এমন রয়েছে, যা বলা সহজ, আমলের পাল্লায় অনেক ভারী, আর আল্লাহর কাছেও অধিক পছন্দনীয়। সেটি হলো, ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম।’ (বুখারি : ৬৪০৬)

আমল: ৫৭
সাদকায়ে জারিয়াহ :

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যখন মানুষ মারা যায়, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়; কিন্তু তিনটি জিনিস বন্ধ হয় না- সাদকায়ে জারিয়াহ, ওই ইলম, যা দ্বারা মানুষ উপকৃত হয়; সুসন্তান, যে তার মৃত বাবার জন্য দোয়া করে। (তিরমিজি : ১৩৭৬)

আমল: ৫৮
সুরা ইখলাছের ফজিলত :

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা কি কেউ প্রতি রাতে কোরআন মাজীদের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াত করতে অক্ষম? তাহলে সে প্রতি রাতে সুরা ইখলাছ পড়বে। তাহলে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতের সাওয়াব পাওয়া যাবে।’ (মুসনাদে আহমদ : ২৩৫৫৪)

আমল: ৫৯
গোপনে নফল পড়ার ফজিলত :-
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জনসম্মুখের তুলনায় লুকিয়ে নফল নামাজ পড়ার মধ্যে ২৫ গুণ বেশি সাওয়াব।

আমল:৬০
মানুষের উপকার করার ফজিলত :-
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজনে কিছুক্ষণ সময় দেওয়া আমার কাছে এক মাস মসজিদে ইতেকাফ করার চেয়েও বেশি পছন্দনীয়।’ (আল মু’জামুল কাবির : ১৩৬৪৬)

আমল : ৬১
আমলের নিয়তেও সাওয়াব মেলে :-
রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি রাতে শয়নকালে এই নিয়ত করে যে সে রাতে উঠে নামাজ পড়বে; কিন্তু প্রচণ্ড ঘুমের কারণে সকাল হয়ে যায়, তাহলে সে তার নিয়ত অনুযায়ী নামাজের সওয়াব পাবে। আর ঘুমটা আল্লাহর পক্ষ থেকে তার জন্য সদকাস্বরূপ হবে। (নাসায়ি : ১৭৮৭)

আমল: ৬২
রোগী দেখার ফজিলত :-
রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুসলমান ভাইয়ের রোগের খোঁজখবর নেয়, আল্লাহ সত্তর হাজার ফেরেশতাকে তার মাগফিরাতের দোয়ায় নিযুক্ত করে দেন। সে দিনের যে সময়ই তা করবে, ফেরেশতারা সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করবে। আর রাতের যে সময়ই করবে, ফেরেশতারা ফজর পর্যন্ত তার জন্য দোয়া করবে।’ (মুসনাদে আহমদ : ৯৫৫)

আমল: ৬৩
বিশুদ্ধ নিয়ত :-
নিয়ত অর্থ সংকল্প। এটি মনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি আমল। প্রত্যেক কাজ, তা দ্বীনী কাজ হোক কিংবা দুনিয়াবী, শুরুতেই নিয়তকে শুদ্ধ করা কর্তব্য। সব কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করার সংকল্পই হচ্ছে বিশুদ্ধ নিয়ত। হাদিসে আছে, হজরত উমর ইবনে খাত্তাব (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করিম (সা.) কে বলতে শুনেছি,

নিশ্চয়ই সব আমল নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। আর প্রত্যেক ব্যক্তি তাই পাবে যার নিয়ত সে করবে। অতএব যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূলের উদ্দেশ্যে হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের জন্যই হবে। আর যে দুনিয়া লাভের জন্য কিংবা কোনো নারীকে বিয়ের উদ্দেশ্যে হিজরত করবে তার হিজরত উক্ত বিষয়ের জন্যই হবে, যার জন্য সে হিজরত করেছিল। -সহিহ বোখারি, হাদিস- ১; সহিহ মুসলিম হাদিস- ১৯০৭

আমল: ৬৪
আবু যার (রা:) থেকে রেওয়ায়েত করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ-

তিন ব্যক্তির সাথে রোজ কিয়ামতে আল্লাহ পাক কথা বলবেন না। তাদের দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না। তাদেরকে পবিত্র করবেন না। আর তদের জন্য রয়েছে ভীষণ আযাব। রেওয়ায়েতকারী বলেন তিনি এ আয়াতটি তিনবার পড়লেন । আবু যার (রা:) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ (সঃ), তারা কারা? তিনি বললেন, তারা হলো: যে ব্যক্তি টাখনুর নিচে কাপড় ঝুলিয়ে পড়ে , যে ব্যক্তি দান করে খোটা দেয় এবং যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে মাল বিক্রি করে। (মুসলিম-ঈমান পর্ব:১৯৫)

আমল: ৬৫
হযরত নবী করিম (সা.) বলেছেন, কোনো সৎ কাজকেই কখনো তুচ্ছ জ্ঞান করবে না। যদিও তা হয় তোমার ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাত। -সহিহ মুসলিম, কারণ এই ধরনের সহজ আমলের মধ্যেও অনেক সময় নিহিত থাকে অনেক প্রাপ্তি ও পুরষ্কার। হাদিস শরিফে এমন অনেক আমলের বর্ণনা পাওয়া যায়, যা করতে সহজ, কিন্তু এর বিশাল প্রাপ্তি ও পুরষ্কারের কথা নবী করিম (সা.) ঘোষণা করেছেন।

আমল: ৬৬
আন-নওয়াস বিন সাম’আন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “উত্তম চরিত্র হচ্ছে নেকী, আর গোনাহ্ তাকে বলে যা তোমার মনকে সংশয়ের মধ্যে ফেলে এবং তা লোকে জানুক তা তুমি অপছন্দ কর।”

আমল: ৬৭
আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ

যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন জানাবাত গোসলের ন্যায় গোসল করে এবং সালাতের জন্য আগমন করে সে যেন একটি উট কুরবানী করল। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে সে যেন একটি গাভী কুরবানী করল। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে সে যেন একটি শিং বিশিষ্ট দুম্বা কুরবানী করল। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করল। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করল সে যেন একটি ডিম কুরবানী করল। পরে ইমাম যখন খুত্‌বা দেয়ার জন্য বের হন তখন মালাইকা (ফেরেশতাগণ) যিক্‌র শ্রবণের জন্য উপস্থিত হয়ে থাকে। সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৮৮১

আমল: ৬৮
রাসূল (সা:) বলেন….

“অন্ধকারের মধ্যে যাহারা মসজিদে বেশী বেশী যাতায়ত করে, কিয়ামতের দিনের জন্য তাহাদেরকে পূর্ণ নূরের সুসংবাদ শুনাও।” —(আল হাদীস

আমল: ৬৯
হযরত আবু হুরাইরহ রাদিয়াল্লহু আ’নহু হইতে বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লহ সাল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন,

(যখন) কোন বান্দা অন্তরের এখলাসের সহিত, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে, তখন এই কালিমার জন্য নিশ্চিতরূপে আসমানের দরজাসমূহ খুলিয়া দেওয়া হয়। এমনকি এই কালিমা সোজা আরশ পর্যন্ত পৌঁছিয়া যায়। অর্থাৎ সাথে সাথেই কবুল হইয়া যায়। তবে শর্ত হইল, যদি এই কালিমা পাঠকারী কবীরা গুনাহ হইতে বাঁচিয়া থাকে। (তিরমিযী)

আমল: ৭০
ভালো কাজ মন্দ কাজকে মুছে দেয়। আবূ যার জুনদুব বিন জুনাদাহ্ এবং আবূ আব্দুর রহমান মু’আয বিন জাবাল রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা হতে বর্ণিত আছে, তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

“তুমি যেখানে যে অবস্থায় থাক না কেন আল্লাহকে ভয় কর এবং প্রত্যেক মন্দ কাজের পর ভাল কাজ কর, যা তাকে মুছে দেবে; আর মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার কর।”

সংগৃহীত

For More Visit: amolcorner.com

14/04/2024

শাওয়ালের ৬ রোজা

শাওয়ালের রোজা রাখা ফরজ না, এটি মোস্তাহাব এবং একটি নফল ইবাদত। তবে এতে রয়েছে অসংখ্য অগণিত সওয়াব। হাদিসে প্রিয় নবী সা. শাওয়াল মাসের প্রথম দিকে, মধ্যভাগে বা শেষাংশে নির্দিষ্ট করে রোজা রাখার কথা বলেননি। আবার রোজা ছয়টি লাগাতার রাখার নির্দেশনাও হাদিসে দেখা যাচ্ছে না। তাই বিজ্ঞ ফিকহবিদ ও আলিমগণের অভিমত হলো শাওয়াল মাসের প্রথম দিন অর্থাৎ ঈদুল ফিতরের দিনটি বাদ দিয়ে মাসের যেকোনো ছয়দিনে রোজা রাখলেই উল্লিখিত সওয়াব লাভ করা যাবে। হযরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এই রোজা রাখতেন এবং সাহাবিদের রাখার নির্দেশ দিতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,

যারা রমজানে রোজা পালন করবে এবং শাওয়ালে আরও ছয়টি রোজা রাখবে, তারা যেন পূর্ণ বছরই রোজা পালন করল। (সহিহ মুসলিম)

হজরত উবাইদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একদিন রাসুলকে (সা.) জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি কি সারা বছর রোজা রাখতে পারব? তখন রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন,

তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে। কাজেই তুমি সারা বছর রোজা না রেখে রমজানের রোজা রাখো এবং রমজানের পরবর্তী মাস শাওয়ালের ছয় রোজা রাখ, তাহলেই তুমি সারা বছর রোজা রাখার সওয়াব পাবে। (তিরমিজি: ১/১৫৩৪)

এ বিষয়ে ইমাম নববি বলেন, রমজান মাস ২৯ বা ৩০ দিনের হয়ে থাকে। রমজানের ৩০টি রোজা ও শাওয়ালের ৬টি রোজা মিলে মোট ৩৬টি রোজা হয়। আল্লাহ তাআলার কোরআনে বলেছেন,

"কেউ কোনো নেক আমল করলে, তাকে তার দশ গুণ সওয়াব প্রদান করা হবে।"- (সুরা আনআম ১৬০)

সেই হিসাবে ৩৬টি রোজায় ১০গুণ সওয়াব পেলে ৩৬০ দিন বা পুরো বছর রোজা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়। যাদের ভাংতি রোজা আছে, অসুস্থতা কিংবা অন্য কোর কারণে রমজানের রোজা অপূর্ণ থাকে, তাদের জন্য নিয়ম ও করণীয় হলো শাওয়াল মাসে তাদের ভাংতি রোজাগুলো আগে পূর্ণ করে নেবে। তারপর তারা শাওয়ালের ৬ রোজা পালন করবে।

হাদিসে আছে, যখন কোনো বান্দার আমল আল্লাহতায়ালা কবুল করেন, তখন তাকে অন্য আরও নেক আমলের তওফিক দেন। এই রোজাগুলো রাখতে পারা রমজানের রোজা কবুল হওয়ার নিদর্শন।

ছয় রোজা রাখার নিয়ম

শাওয়ালের ছয় রোজা ঈদের পরদিন থেকেই রাখা যায়। আর এই ছয় রোজা রাখতে হবে শাওয়াল মাসের মধ্যেই। কারণ শাওয়াল মাসের ফজিলত পেতে হলে এই মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। এই রোজাগুলো একটানা রাখতে হবে না। বিরতি দিয়েও এই ছয় রোজা রাখা যাবে। ঈদের পর দিন থেকেই রোজা রাখা শুরু করতে পারেন। শাওয়ালের ছয় রোজার সঙ্গে রমজানের কাজা রোজা আদায় হবে না। উভয় রোজাই আলাদা আলাদা রাখতে হবে। প্রথমে রমজানের কাজা রোজা রাখতে হবে, তারপর ছয় রোজা রাখবে।

অর্থাৎ যার যেভাবে সুবিধা সেভাবে শাওয়াল মাসের মধ্যেই ছয় রোজা শেষ করবেন।

ছয় রোজার উপকারিতা

এ রোজা ফরজ নামাজের পর সুন্নতে মোয়াক্কাদার মতো। যা ফরজ নামাজের অসম্পূর্ণতাকে পূর্ণ করে। অনুরূপভাবে শাওয়ালের ছয় রোজা রমজানের ফরজ রোজার অসম্পূর্ণতাকে সম্পূর্ণ করে এবং তাতে কোনো ত্রুটি থাকলে তা দূর করে।

প্রত্যেক সুস্থ-সবল ব্যক্তির উচিত শাওয়াল মাসের ফজিলতপূর্ণ ছয়টি রোজা রেখে পূর্ণ এক বছর রোজা রাখার সমান সওয়াব হাসিল করে মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্য লাভে ধন্য হওয়া। কোনো মুমিন নারী-পুরুষ যদি তার অপর কোনো ভাই-বোনকে এই রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন এবং সে যদি তার পরামর্শে রোজা রাখেন, তবে উদ্বুদ্ধকারীও সওয়াব পাবেন। উল্লেখ্য, কেউ নফল রোজা রেখে ভেঙে ফেললে তার কাজা আদায় করা ওয়াজিব। (সংগৃহীত)

Please Let us know your feedback about the page.
14/04/2024

Please Let us know your feedback about the page.

13/04/2024

নামাজ পড়ার সময় সুরা আগে-পরে হলে

ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে সুরা বা কিরাত পড়া মাকরুহ। তবে অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না। কিরাতের ধারাবাহিকতা রক্ষা করার বিধান শুধু ফরজ নামাজের ক্ষেত্রে। নফলের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য নয়। ‘দুররুল মুখতার’ গ্রন্থে বলা হয়েছে, ‘নফল নামাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে পড়া মাকরুহ নয়।’ মাকরুহ হলে শাস্তি পেতে হবে না, তবে এ ধরনের কাজ এড়িয়ে যাওয়া উচিত।

নামাজের রাকাতগুলোতে সুরা পড়ার ক্ষেত্রে মৌলিক কয়েকটি কথা স্মরণ রাখলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। যেমন সুরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সুরা পড়বেন। অথবা প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, দ্বিতীয় রাকাতে দুই সুরা ছেড়ে দিয়ে তার পরের সুরা পড়া। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কুরাইশ পড়া যায়। অথবা প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দুই সুরা (মাউন, কাউসার) বাদ দিয়ে সুরা কাফিরুন পড়া যায়।

সুরা আগে-পরে পড়া

সুরা ফাতিহা পড়ার পর প্রথম রাকাতে যে সুরা পড়বেন, পরের রাকাতে তার পরবর্তী সুরা পড়বেন। কিন্তু প্রথম রাকাতে কোনো সুরা পড়ে পরের রাকাতে তার আগের কোনো সুরা পড়া মাকরুহ।

প্রথম সুরা শুরু করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন সেই সুরার পর পরের রাকাতে পড়ার মতো কোনো সুরা থাকে। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা হুমাজাহ পড়া মাকরুহ। কারণ, এতে কোরআনের সুরার ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। তবে এমনটা ভুলক্রমে ফেললে সমস্যা নেই।

উল্টোপাল্টা পড়া

সুরা ফাতিহা পড়ার পর সুরা মেলানোর ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতে বড় কোনো সুরার মাঝখান থেকে কিছু অংশ পড়া এবং এরপরের রাকাতে আরেক সুরার মাঝখান থেকে পড়া উত্তম নয়। উত্তম হলো বড় সুরার যেখান থেকে শুরু করা হয়েছে, সেখান থেকেই তা ধারাবাহিকভাবে পড়ে নামাজ শেষ করা। এ ক্ষেত্রেও ভুলে উল্টাপাল্টা হয়ে গেলে সমস্যা নেই। তবে ইচ্ছা করে এমন করা যাবে না।

এক সুরা বাদ দিয়ে আরেক সুরা পড়া

এক সুরা পড়ার পর মাঝখানে এক সুরা বাদ দিয়ে পরের সুরা পড়া মাকরুহ। তবে দুই সুরা বাদ দিয়ে পরের সুরা পড়াতে কোনো সমস্যা নেই। যেমন প্রথম রাকাতে সুরা ফিল পড়ার পর দ্বিতীয় রাকাতে সুরা কুরাইশ বাদ দিয়ে সুরা মাউন পড়া মাকরুহ। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সুরা কাউসার বা কাফিরুন বা এরপরের সুরাগুলো পড়া যায়। তবে ভুলে এমন হলে সমস্যা নেই।

সুরার অংশবিশেষ পড়া

সুরা নাসের আয়াতসংখ্যা ৬। কেউ এর প্রথম অংশ দিয়ে এক রাকাত পড়ে বাকি অংশ দিয়ে দ্বিতীয় রাকাতে পড়তে চাইলে খেয়াল রাখতে হবে, যেন কমপক্ষে তিন আয়াত পরিমাণ তিলাওয়াত করা হয়। তিন আয়াতের সীমা হলো কমপক্ষে ৩০ হরফ। কেউ যদি সুরা নাসের মতো করে নামাজ পড়ে, তবে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে। তবে উত্তম হলো পূর্ণ সুরা তিলাওয়াত করা।

কেউ কেউ ব্যতিক্রম সুরা পড়াকে মাকরুহ বলেন, আবার কেউ ধারাবাহিকতা রক্ষা করাকে ওয়াজিব বলেন। তবে এসবের যা-ই হোক না কেন, সবার নামাজই হবে।

সংগৃীত

Address

Dhaka

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Amol Corner posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share