Everyday Stories

Everyday Stories Bangla language magazine about the health tips of baby and mother's RELATIONSHIP (সম্পর্ক)

১৩ বছরের মেয়ের 'পিরিয়ড' ইরেগুলার। বহুদিন ধরে পেট ব্যথার যন্ত্রনায় কান্নাকাটি। মা আমাকে বাঁচাও বলে আর্তনাদ। মা কী করলেন? ...
15/09/2025

১৩ বছরের মেয়ের 'পিরিয়ড' ইরেগুলার। বহুদিন ধরে পেট ব্যথার যন্ত্রনায় কান্নাকাটি। মা আমাকে বাঁচাও বলে আর্তনাদ। মা কী করলেন?

তার বাবার বাড়ির এক কবিরাজকে ব্যাপারটা জানালো। কবিরাজ সম্পর্কে মহিলার ভাই হয়।

এই কবিরাজ জানালো, 'মেয়েটার উপর জ্বীনের আছড়। তার চিকিৎসা করতে হবে।' শুরু হলো চিকিৎসা। কিন্তু মেয়ে সুস্থ হয় না।

এবার কবিরাজ জানালো, 'জ্বীনকে চিরতরে দূর করার সর্বশেষ একটাই উপায়। বড় কোন নদী পার হয়ে যেতে হবে। বড় কোন নদী পেরিয়ে গেলে সব সময় সাথে থাকা জ্বীন আর পিছু নিতে পারে না। ভয় পায়। এরপর সেই নদীর পানি দিয়ে গোসল করালে জ্বীন আর মেয়ের উপর ভর করতে পারবে না।'

মেয়ের মাকে বললো, আশেপাশে বড় নদী বলতে, যমুনা নদীই আছে।যমুনার পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে।

মেয়ের মা পড়লো বিপাকে। মেয়ের বাবা প্রবাসে থাকে। কবিরাজি চিকিৎসার কথা কেউ জানে না। সন্দেহ না করে তাই, মেয়েকে নানীর বাসায় কিছুদিন বেড়ানোর কথা বলে, মেয়েকে কবিরাজের সাথে যমুনা পেরোতে পাঠিয়ে দিলেন।

নিজে গেলেন না। সংসার ও অন্যান্য সন্তানের দেখাশোনা করতে হবে তাই। শ্বশুর শাশুড়ি যদি সন্দেহ করে? এই ভয়ে।

Guess what?
কবিরাজ মেয়েকে নিয়ে সেদিন ফেরার কথা বললেও আর ফিরেনি। ঢাকায় নিয়ে পালিয়ে এসেছে। সপ্তাহ খানেক ধরে মিসিং। পরে ঢাকা থেকে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। মেয়েটির সাথে কী বাজে ঘটনা ঘটেছে তা আর নাইবা বলি।

শাস্তি না দিয়ে ব্যাপারটা পুরোপুরিভাবে হজম করেছে মেয়ের মা এলাকায় জানাজানি ও মান সম্মানের ভয়ে। তারপরেও কী ঘটনা গোপন রাখা যায়?

এতক্ষণ যেই ঘটনাটা বললাম, সেটি প্রায় বিশ বছর আগের কথা। পরিচিত এক পরিবারের সাথে ঘটা।

(২)
ছবিতে যেই মা-মেয়েকে দেখছেন। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে ডান পাশের ছবিতে থাকা কবিরাজ মোবারক।

ঝাড়ফুঁক করার সুবাদে মোবারকের অবাধ যাতায়াত ছিলো সুমাইয়াদের বাসায়। ঠিক কী কারণে ঝাড়ফুঁক করতো। তা কোথাও পাইনি। কেউ জানলে বলবেন।

তো, গত ৮ সেপ্টেম্বর ঝাড়ফুঁকের সুবাদে ঐ বাসায় একবার ঢুকে মুবারক। এরপর পানি পড়া ছিটিয়ে চলে যায়। আবার এগারোটায় আসেন।

এবার সুমাইয়াকে রুমে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে মুবারক। তার মা টের পেয়ে বাঁধা দিলে, সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে রেখে, ওর মা তাহমিনা বেগমকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।

এরপর আবার সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সুমাইয়া বাঁধা দেয়। এতে রেগে গিয়ে সুমাইয়াকেও গলাটিপে হত্যা করে মুবারক।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীর মা-মেয়ের মৃত্যুর জন্য প্রথমেই দায়ী তার মা। তাদের অন্ধবিশ্বাস। যেই অন্ধবিশ্বাসকে পুঁজি করে মোবারকের মত লোকেরা এই ঘটনা ঘটাতে পারে।

অবাক করা বিষয়, গত দুই বছর ধরে মোবারক পলাতক। তার নামে মাদ্রাসার দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার নাকি মামলাও ছিলো। এই মোবারককে নিয়ে ৩ অগাস্ট একটি পেজ থেকে পোস্ট করেছিলো দেখলাম। আফসোস, এই পোস্টটি যদি সুমাইয়ার চোখে পড়তো। তাহলে হয়তো ওর পরিবার বেঁচে যেত।

অথচ দেখুন দুই বছর আগে পালিয়ে যাওয়া মোবারক ঠিকই পালিয়ে অন্য স্থানে বসতি গড়েছে এই দেশের ভঙ্গুর আইন ব্যবস্থার কারণে।

দেখুন আমি -
আমার কাছে ইসলাম বলতে, পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদিসের বাইরে আর কিছু নেই। আমি এর বাইরে আর কিছুই বিশ্বাস করতে ইচ্ছুক নই।

অনলাইন অফলাইনে আমি পীর, কবিরাজ, জ্বীন ভূতের আঁছড় ছাড়ানো , বান মারা, কাগজ পুড়াইয়া রুকাইয়া করা, কবর থেকে পুতুল উঠায়, কলাগাছে বান মারে। কত কী ধরণের ভিডিও দেখি। এসব কিছুই আমি বিশ্বাস করি না।

অন্তত যারা এই কাজগুলোকে জনকল্যানমূলক কাজ বলে বেড়ায় এবং এটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে ফেলেছে। আয় উপার্জনের জন্য। তারা ১০০% বাটপার।

আমি বা আমার পরিবার অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যাবো।

ইসলামের কোন কিছু না বুঝলে -
আমি শিক্ষিত হলে কুরআন হাদিসের কিতাব বের করে তা থেকে সমাধান দেখবো। তারপরেও না বুঝলে কিংবা পড়াশুনা না জানলে মসজিদের ইমাম সাহেবের/আলেমের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করবো। উনি এটার সুন্দর জবাব দিবেন।

আমি কেন কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিবো? আমি কেন পীরের মুরিদ হবো? মাথায় ঢুকে না।

২০২৫ সালে এসেও যদি আমরা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত থাকি। তাহলে আমাদের এই অন্ধবিশ্বাস ও ধর্মভীরুতার উপর ভর করেই ভন্ডরা ফুলেফেপে উঠবে।

আর আপনারাও এভাবে আর্থিক ও শারীরিকভাবে হবেন ক্ষতিগ্রস্থ। হারাবেন প্রাণ।
১৩ বছরের মেয়ের 'পিরিয়ড' ইরেগুলার। বহুদিন ধরে পেট ব্যথার যন্ত্রনায় কান্নাকাটি। মা আমাকে বাঁচাও বলে আর্তনাদ। মা কী করলেন?

তার বাবার বাড়ির এক কবিরাজকে ব্যাপারটা জানালো। কবিরাজ সম্পর্কে মহিলার ভাই হয়।

এই কবিরাজ জানালো, 'মেয়েটার উপর জ্বীনের আছড়। তার চিকিৎসা করতে হবে।' শুরু হলো চিকিৎসা। কিন্তু মেয়ে সুস্থ হয় না।

এবার কবিরাজ জানালো, 'জ্বীনকে চিরতরে দূর করার সর্বশেষ একটাই উপায়। বড় কোন নদী পার হয়ে যেতে হবে। বড় কোন নদী পেরিয়ে গেলে সব সময় সাথে থাকা জ্বীন আর পিছু নিতে পারে না। ভয় পায়। এরপর সেই নদীর পানি দিয়ে গোসল করালে জ্বীন আর মেয়ের উপর ভর করতে পারবে না।'

মেয়ের মাকে বললো, আশেপাশে বড় নদী বলতে, যমুনা নদীই আছে।যমুনার পানি দিয়ে গোসল করাতে হবে।

মেয়ের মা পড়লো বিপাকে। মেয়ের বাবা প্রবাসে থাকে। কবিরাজি চিকিৎসার কথা কেউ জানে না। সন্দেহ না করে তাই, মেয়েকে নানীর বাসায় কিছুদিন বেড়ানোর কথা বলে, মেয়েকে কবিরাজের সাথে যমুনা পেরোতে পাঠিয়ে দিলেন।

নিজে গেলেন না। সংসার ও অন্যান্য সন্তানের দেখাশোনা করতে হবে তাই। শ্বশুর শাশুড়ি যদি সন্দেহ করে? এই ভয়ে।

Guess what?
কবিরাজ মেয়েকে নিয়ে সেদিন ফেরার কথা বললেও আর ফিরেনি। ঢাকায় নিয়ে পালিয়ে এসেছে। সপ্তাহ খানেক ধরে মিসিং। পরে ঢাকা থেকে পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে। মেয়েটির সাথে কী বাজে ঘটনা ঘটেছে তা আর নাইবা বলি।

শাস্তি না দিয়ে ব্যাপারটা পুরোপুরিভাবে হজম করেছে মেয়ের মা এলাকায় জানাজানি ও মান সম্মানের ভয়ে। তারপরেও কী ঘটনা গোপন রাখা যায়?

এতক্ষণ যেই ঘটনাটা বললাম, সেটি প্রায় বিশ বছর আগের কথা। পরিচিত এক পরিবারের সাথে ঘটা।

(২)
ছবিতে যেই মা-মেয়েকে দেখছেন। তাদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে ডান পাশের ছবিতে থাকা কবিরাজ মোবারক।

ঝাড়ফুঁক করার সুবাদে মোবারকের অবাধ যাতায়াত ছিলো সুমাইয়াদের বাসায়। ঠিক কী কারণে ঝাড়ফুঁক করতো। তা কোথাও পাইনি। কেউ জানলে বলবেন।

তো, গত ৮ সেপ্টেম্বর ঝাড়ফুঁকের সুবাদে ঐ বাসায় একবার ঢুকে মুবারক। এরপর পানি পড়া ছিটিয়ে চলে যায়। আবার এগারোটায় আসেন।

এবার সুমাইয়াকে রুমে একা পেয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে মুবারক। তার মা টের পেয়ে বাঁধা দিলে, সুমাইয়াকে এক ঘরে আটকে রেখে, ওর মা তাহমিনা বেগমকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।

এরপর আবার সুমাইয়াকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সুমাইয়া বাঁধা দেয়। এতে রেগে গিয়ে সুমাইয়াকেও গলাটিপে হত্যা করে মুবারক।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীর মা-মেয়ের মৃত্যুর জন্য প্রথমেই দায়ী তার মা। তাদের অন্ধবিশ্বাস। যেই অন্ধবিশ্বাসকে পুঁজি করে মোবারকের মত লোকেরা এই ঘটনা ঘটাতে পারে।

অবাক করা বিষয়, গত দুই বছর ধরে মোবারক পলাতক। তার নামে মাদ্রাসার দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার নাকি মামলাও ছিলো। এই মোবারককে নিয়ে ৩ অগাস্ট একটি পেজ থেকে পোস্ট করেছিলো দেখলাম। আফসোস, এই পোস্টটি যদি সুমাইয়ার চোখে পড়তো। তাহলে হয়তো ওর পরিবার বেঁচে যেত।

অথচ দেখুন দুই বছর আগে পালিয়ে যাওয়া মোবারক ঠিকই পালিয়ে অন্য স্থানে বসতি গড়েছে এই দেশের ভঙ্গুর আইন ব্যবস্থার কারণে।

দেখুন আমি -
আমার কাছে ইসলাম বলতে, পবিত্র কুরআন ও সহিহ হাদিসের বাইরে আর কিছু নেই। আমি এর বাইরে আর কিছুই বিশ্বাস করতে ইচ্ছুক নই।

অনলাইন অফলাইনে আমি পীর, কবিরাজ, জ্বীন ভূতের আঁছড় ছাড়ানো , বান মারা, কাগজ পুড়াইয়া রুকাইয়া করা, কবর থেকে পুতুল উঠায়, কলাগাছে বান মারে। কত কী ধরণের ভিডিও দেখি। এসব কিছুই আমি বিশ্বাস করি না।

অন্তত যারা এই কাজগুলোকে জনকল্যানমূলক কাজ বলে বেড়ায় এবং এটাকে পেশা হিসেবে নিয়ে ফেলেছে। আয় উপার্জনের জন্য। তারা ১০০% বাটপার।

আমি বা আমার পরিবার অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যাবো।

ইসলামের কোন কিছু না বুঝলে -
আমি শিক্ষিত হলে কুরআন হাদিসের কিতাব বের করে তা থেকে সমাধান দেখবো। তারপরেও না বুঝলে কিংবা পড়াশুনা না জানলে মসজিদের ইমাম সাহেবের/আলেমের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করবো। উনি এটার সুন্দর জবাব দিবেন।

আমি কেন কবিরাজের কাছে চিকিৎসা নিবো? আমি কেন পীরের মুরিদ হবো? মাথায় ঢুকে না।

২০২৫ সালে এসেও যদি আমরা অন্ধবিশ্বাস ও কুসংস্কারে নিমজ্জিত থাকি। তাহলে আমাদের এই অন্ধবিশ্বাস ও ধর্মভীরুতার উপর ভর করেই ভন্ডরা ফুলেফেপে উঠবে।

আর আপনারাও এভাবে আর্থিক ও শারীরিকভাবে হবেন ক্ষতিগ্রস্থ। হারাবেন প্রাণ। #

13/09/2025

ছাত্র জীবনে একবার মুহসীন হলের টয়লেটে এক গরীব ছাত্রের কিছু টাকাসহ একটা মানিব্যাগ পেয়েছিলাম। মানিব্যাগটি নিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে কাউকে না পেয়ে নিজের কাছে রেখেছিলাম। কারণ ছাত্রদের হলে অহরহ টাকা,মানিব্যাগ, ল্যাপটপ, শার্ট,প্যান্ট, মোবাইল এমনকি আন্ডার ওয়্যার পর্যন্ত চুরি হয় ( হল থেকে এই লেখকের দুইটা মোবাইল, শার্ট এমনকি গরিবি আন্ডার ওয়্যারও চুরি হয়েছে), সেখানে এই মানিব্যাগ কোনো চোরের হাতে পরলে ছেলেটি বিপদে পরবে এই চিন্তায় মানিব্যাগটি নিয়ে এসে মুহসীন হলের লিফটের সামনে "একটা মানিব্যাগ পাওয়া গিয়েছে" বিজ্ঞাপন দেয়ার পরে সম্ভবত একদিন পরে ছেলেটি মানিব্যাগটি নিয়ে গিয়েছিলো। মানিব্যাগটি নেয়ার পরে ছেলেটি বলেছিলো যে এই কয়টা টাকাই তার সারা মাসের খরচ!!

আজ ঠিক আমিও Chartered secretary কোর্সের পরীক্ষা দিতে গিয়ে এক সাবজেক্ট পরীক্ষা শেষে টয়লেটে মানিব্যাগ রেখে এসে আরেক সাবজেক্টের পরীক্ষা দিতে বসেছিলাম। কাছে যে মানিব্যাগ নেই এটা খেয়ালই ছিলোনা! মানিব্যাগে ৫,৫০০ টাকা, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিলো। পরীক্ষা শুরুর মিনিট দশেক পরে পরীক্ষার রুমে এসে একজন জিজ্ঞেস করলো এই মানিব্যাগটি কার! আলহামদুলিল্লাহ, মানিব্যাগের ভিতরে থাকা কোনো কিছুই খোয়া যায়নি। ভালো মানুষ এখনো দুনিয়ায় আছে।

মুহসীন হলের ঐ ছাত্রের মানিব্যাগে সম্ভবত ৮০০/৯০০ টাকা ছিলো। আজ মনে হলো উপরওয়ালা ঐ ঘটনার প্রতিদান দিলেন! কোনো মানুষ যদি কাউকে ঠকায় বা কারো হক নষ্ট করে, তাহলে তার টাকা-পয়সা যে কোন পথে উড়ে যাবে তা সে কল্পনাও করতে পারবেনা। আর যদি কেউ কারো হক নষ্ট না করে, তাহলে তাকে উপরওয়ালা এমন জায়গা থেকে দিবেন যা সে কল্পনাও করতে পারবেনা।।

© Jaminur Rahman Sumon

10/09/2025

ভাবুন তো, কেউ একটা চাকরি পেলো, বেতন আগের থেকে দ্বিগুণ হলো।
প্রথমে মনে হবে জীবন পাল্টে গেছে—নতুন ফোন, নতুন ফ্ল্যাট, হয়তো গাড়িও। কয়েক মাস পরেই এগুলো নরমাল হয়ে যায়।
তখন আবার নতুন শখ জাগে—আরও দামি গাড়ি, আরও বড় ফ্ল্যাট। ফলে আয় যতই বাড়ে, খরচও তার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়ে। আর সুখ আবার আগের জায়গাতেই ফিরে আসে।
অর্থনীতির ভাষায় এটাকে বলা হয়" Hedonic treadmill"
এক ভদ্রলোকের যে স্যালারি পায় তা দিয়ে চলতে পারে না, হিমশিম খাচ্ছে; এখন তিনি যুক্তি পেশ করছেন কেন উনার স্ত্রী কে কাজে আনা প্রয়োজন। দুইজন মিলেমিশে ইনকাম করলে অভাব-অনটন ঘুচে যাবে এই ধারণা উনার৷
কিন্তু আদতে সেরকম হয়ে ওঠে না৷Daniel Kahneman দেখিয়েছেন, আয় বছরে একটা সীমা পর্যন্ত সুখ বাড়াতে সাহায্য করে। কিন্তু তার পরের আয় সুখে তেমন প্রভাব ফেলে না, বরং খরচ, তুলনা আর চাপ বাড়ায়।
অনেকটা নতুন জিনিস হাতে পেলে সাময়িক আনন্দ থাকে কিন্তু দ্রুত তা বেসলাইন-এ নেমে যায়।
মানুষের স্বভাব হলো “resource accumulation”—অর্থাৎ বেশি রিসোর্স সংগ্রহ করে বেঁচে থাকা। এজন্য মানুষ সবসময় আরও চায়।
কিন্তু এই প্রবণতা সীমাহীন—যত পাওয়া যায়, ততই আরও চাই। ফলে সমাজে অশান্তি, প্রতিযোগিতা, ভোগবাদ বাড়তে থাকে।
স্বামী-স্ত্রীর জব সেক্টর ভিন্ন, দুইজনের মনস্তত্ত্ব ও ভিন্ন; কিন্তু দুইজনের একজন যদি অপরজনের জব সেক্টরে ঢুকার চেষ্টা করে এতে করে সৃষ্টি হয় এন্ট্রপির।
মানুষের পরিবার গঠন আসলে ইভালুশনারি স্ট্রেটেজি যাতে নারী-পুরুষ নির্দিষ্ট ভূমিকা নিয়ে কাজ করে।
নারী সন্তান ধারণ ও প্রতিপালনে বেশি সক্ষম, আর পুরুষ রিসোর্স গ্যাদারিং এ বেশি প্রবণ। সমাজ যখন এই প্রাকৃতিক ভারসাম্য ভেঙে দেয়, তখন পরিবারের ভাঙন, ডিভোর্স, সন্তানহীনতা বাড়ে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যখন নারী দ্বিগুণ চাপ (বাহিরের কাজ + ঘরের কাজ) বহন করে, তখন স্ট্রেস,ইনফার্টেলিটি,ডিপ্রেশন মারাত্মকভাবে বেড়ে যায়।
অতিব্যস্ততার কারণে নারীর দেহই ক্ষতি হচ্ছে৷ পুরুষের চেয়ে স্ট্রেসে থাকা একজন নারীর শারীরিক ক্ষতি বেশি হয়, মানসিক অসুখও বেশি হয়।
আবার, দ্বিগুণ ইনকামের পরিবারে অনেক সময় প্যারাডক্স দেখা যায়—অর্থ বেশি, কিন্তু সেটিস্ফেকশন কম। কারণ দুজনই ব্যস্ত, সন্তান অবহেলিত, সম্পর্ক দুর্বল।
যেসব দেশে ব্যাপকভাবে নারী কর্মশক্তি কাজে নামিয়েছে, সেখানে আজ পরিবারভিত্তিক সংকট সবচেয়ে তীব্র যেমন সিংগেল প্যারেন্ট ফ্যামিলি, অবিবাহিত জীবন, ডিভোর্স রেইট, সন্তান জন্মের হার কমে যাওয়া।

বাংলাদেশেও দেখা যাচ্ছে, যেসব মধ্যবিত্ত পরিবারে স্ত্রী বাইরে কাজ করে, সেখানে কনফ্লিক্ট ও ভ্যালুস ক্রাইসিস অনেক বেড়ে যাচ্ছে।
অনেকে প্রশ্ন করে বা অবাক হয় হুজুরদের বেতন এতো কম, তাও উনারা দিব্বি চলে যাচ্ছেন। অনেকের অনেক গুলো বাচ্চা তাও সুখে-শান্তিতে চলছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিশাল বড় রকমের ঝামেলা হয় না, ডিভোর্স রেইট তুলনামূলক ভাবে অনেক কম কিন্তু কিভাবে?
সোজা উত্তর হচ্ছে, " বরকত"৷ উনাদের আয়ে, জীবনে বরকত আছে৷
বরকত হলো এমন এক গুণ, যা সংখ্যাগত কম হলেও স্থায়ী তৃপ্তি ও পরিতৃপ্তি দেয়।
“যদি তোমরা আল্লাহভীরু হও তবে আল্লাহ তোমাদের জন্য এমন রাস্তা খুলে দেবেন যেখান থেকে তোমরা ধারণাও করতে পারবে না।” (সূরা তালাক ৬৫:২-৩)।
ইসলামী কালচার দেখলে দেখা যায়—স্ত্রী ঘরে থাকলে, পর্দা রক্ষা করলে, স্বামী যদি কষ্ট করেও হালাল উপার্জন করে, সেই উপার্জনে বরকত নেমে আসে। ফলে অল্প টাকায়ও কাজ চলে যায়।
আর হারাম উপার্জন করলে, স্বামী দাইয়্যুস হলে স্বামী-স্ত্রী মিলে কোটি টাকা উপার্জন করলেও সুকুন আসে না, মনে প্রশান্তি আসে না, বারেবারে মনে হবে কি যেন নেই জীবনে। এইটা দরকার, ওইটা দরকার। আর এই করতে করতে, আফসোসে, গ্লানিতে জীবন চলে যায়৷
স্বামী যদি অভাব দূর করার অজুহাতে স্ত্রীকে এই পরিবেশে ঠেলে দেয়, তবে সে মূলত নিজের দায় এড়িয়ে যাচ্ছে।
“স্ত্রীকেও ইনকাম করতে দিলে সংসারের অভাব-অনটন ঘুচে যাবে, সুখ-সমৃদ্ধি আসবে”—এটা আসলে আধুনিক ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি।
ইসলাম বলে, বরকতই হলো প্রকৃত সমাধান। স্ত্রীকে রক্ষা করা, তাকে ঘরে সম্মান দেওয়া, নিজের দায়িত্ব কাঁধে নেওয়া এটাই স্বামীসুলভ মহত্ত্ব।
বিজ্ঞানও প্রমাণ করে নারী-পুরুষের প্রাকৃতিক ভূমিকা অস্বীকার করলে পরিবার ও সমাজে অশান্তি বাড়ে।

হেলিকপ্টারতুতো ভাই-বোন
09/09/2025

হেলিকপ্টারতুতো ভাই-বোন

কিছু প্রাপ্তি অমূল্য..!বাচ্চাদুটির মায়ের নাম শারমিন। দীর্ঘ ১৪ বছরের বিবাহিত জীবন। কিন্তু সন্তানের অভাবে কেটেছে অনেক বিনি...
09/09/2025

কিছু প্রাপ্তি অমূল্য..!
বাচ্চাদুটির মায়ের নাম শারমিন। দীর্ঘ ১৪ বছরের বিবাহিত জীবন। কিন্তু সন্তানের অভাবে কেটেছে অনেক বিনিদ্র রজনী । গ্রামের মানুষের তেতো কথায় ক্ষত- বিক্ষত হয়েছেন বহুবার ।
বহু চেষ্টার পর(বিভিন্ন সিনিয়র ম্যাডামদের চিকিৎসায়) অবশেষে গত বছর সে কনসিভ করলো ।

কনসিভ করার পর উনি একবার গিয়েছিলেন ঐ ম্যাডামের কাছে যার কাছে তিনি লাস্ট ২ বছর ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ম্যাডাম তাকে বলেছিলেন - আপনার এত জার্নি করে এতদূর আসতে হবে না।আপানার জন্য জার্নি মারাত্মক ঝুঁকি। আপনি আপনার বাসার কাছাকাছি কোন ডাক্তারের তত্বাবধানে থাকবেন।
ব্যাস, বাসার কাছে এত এত ডাক্তার থাকতেও উনি খুঁজে পেলেন আমাকে ।
শুরু হল নতুন অধ্যায় ! এমনিতেই ১৪ বছর পর কনসিভ করেছেন তারমধ্যে তার ছিলো না এমন কোন কিছু নেই ।
GDM(প্রেগনেন্সি রিলেটেড ডায়বেটিস), PIH ( প্রেগনেন্সি ইনডিউজড হাইপারটেনশন)এবং এত কিছুর পরও আবার টুইন! আমি যেন এক অকুল পাথারে..!

বেশ কয়েক বার রেফার্ড করে দিয়েছিলাম । যায় তো নাই ই আবার আমাকে বেশ হুমকিও দিয়েছিলেন। হুমকি বলা ঠিক হলো না,বলা উচিত ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল ।
তার এই কমপ্লিকেটেড মাতৃত্বের জার্নিতে সে তো কষ্ট করেছেন নি:সন্দেহে সাথে আমিও কম করিনি !

অনেক রাত গেছে রাত ৩ টায় তার ফোন..
পেট ব্যথা , হা পা কাঁপে , বাচ্চার নড়া চড়া টের পাচ্ছে না , ঘুম আসছে না , বুকে প্রচন্ড ব্যাথা , পেট শক্ত হয়ে আছে , গলা বুক জ্বালা করছে ইত্যাদি হাজারটা সমস্যা।
তাকে কাউন্সিলিং করে , প্রয়োজনীয় কিছু উপদেশ দিয়ে ঘুমাতে বলতাম । কিন্তু আমার আর ঘুম আসতো না । আল্লাহ্ আল্লাহ্ করতে রাত পার করতাম । পরেরদিন চেম্বারে তাকে দেখে বাচ্চার কন্ডিশন দেখে আশ্বস্ত হতাম ।

দীর্ঘ ৯ মাস ১৪ দিন আমাকে এই পরিমাণ প্যারা দিয়ে উনারা পৃথিবীতে এসে আমাকে উদ্ধার করলেন ।
প্রথম যখন ওদের কোলে নিলাম সেই অনুভূতি প্রকাশ করার ভাষা নেই । আমার একবারো মনে হয় নি ওরা আমার রক্তের কেউ না ।

এখন ইনাদের বয়স ৬ মাস । ইনারা মাঝে মাঝে আমাকে দেখতে আসেন । আসলেই তাদের কোলে নিতে হবে , নাহলে গাল ফুলান । তাও একসাথে দুজনকেই নিতে হবে , এক সাথে দু জন কে না নিলে যদি আদর কম বেশি হয়ে যায় ।

শারমিন এখন অনেক সুখী । দীর্ঘ ১৪ বছর পর আল্লাহ্ পাক তাকে সন্তান দিয়েছেন। তাও একসাথে একটি ছেলে আর একটি মেয়ে । আলহামদুলিল্লাহ্ !

চোখে উপচে ভরা ভালবাসা নিয়ে শারমিন যখন বলে-ম্যাডাম দোয়া করবেন আমার মেয়েটা যেন আপনার মত ডাক্তার হয়....!

বিশ্বাস করেন এত এত ‘অপ্রাপ্তিতে’ ভরা আমার ডাক্তারি জীবনটাকেও বড্ড মধুময় মনে হয়...!

®ফাহমিদা মাহবুবা

আমরা আক্ষেপ করে সবাই বলি চাকরি ছেড়ে দিবো। কিন্তু বাস্তবে ৫৯ এর আগে কেউ চাকরি ছাড়তে পারেনা। গুটি কয়েক যারা পারে, আমি তাদে...
07/09/2025

আমরা আক্ষেপ করে সবাই বলি চাকরি ছেড়ে দিবো। কিন্তু বাস্তবে ৫৯ এর আগে কেউ চাকরি ছাড়তে পারেনা। গুটি কয়েক যারা পারে, আমি তাদের জাতীয় বীর বলি।
কারণ আমার জীবনের একমাত্র স্বপ্ন চাকরি ছেড়ে দেয়া 🥱

জনাব মুন্সি বেল্লাল, সহকারী আইন কর্মকর্তা (গ্রেড-৯) চাকরির শেষ কর্মদিবস পার করলেন আজ। এর পূর্বে উনি নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের প্রসিকিউশন অফিসার (গ্রেড-৯) ছিলেন, কোন জাহাজ দুর্ঘটনা হলেই তার সাক্ষাৎকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের সাবেক মেধাবী
শিক্ষার্থী আমার প্রিয় অনুজ একজন সাদা মনের মানুষ।

সারাদিন সবার সাথে হাহাহিহি করতেছে, শুক্র-শনি মানেই ট্যুর করছি, বাড়িতে গিয়ে আন্টিকে নিয়ে দারুণ সময় কাটাচ্ছে, সহধর্মিণীকে নিয়ে ছুটির দিনে মোটরসাইকেলে স্টারে নাস্তা করতে যাচ্ছে (স্টারে নাস্তা করতে একদিন আমার সাথে দেখা), সন্তানদের সাথে সাথে দুষ্টুমি আর মারামারি করতেছে- পুরাই চিল ম্যান 😎

এতোগুলো কথা লিখলাম সেই তরুণদের জন্য, যারা চাকরি না পেলে হা হুতাশ করেন, রাত ১২ টায় মেসেজ করেন স্যার আ"ত্ম"হ"ত্যা করতে ইচ্ছে করতেছে। গুণ থাকলে আপনি যেটিই করবেন, সেখানেই সোনা ফলবে; আর বেগুন হলে, চাকরিটাও শেষ হবে সহকর্মী আর সেবাগ্রহীতাদের গালি খেয়ে খেয়ে। স্কিল তৈরি করুন, হ্যাপি হতে শিখুন।

ফ্রিল্যান্স কর্মজীবনে স্বাগত চিলম্যান মুন্সি বেল্লাল ব্রো 🎉

© রবিউল আলম লুইপা, একজন চাকর

07/09/2025

ঢাকা, যে শহর অকারণ ভালবাসার আচ্ছাদন
নাহিল আশরাফুল
------------------------------
ঢাকা, প্রথম দেখায় এই শহরের প্রেমে পড়াও যায় না।
বরং সে আসে জীবনে চাপিয়ে দেওয়া কোনো সিদ্ধান্তের মতো শিক্ষা, চিকিৎসা, চাকরি কিংবা শুধু বেঁচে থাকার দায়ে। ঢাকায় প্রবেশটা হয় চুপিসারে, প্রায়শই অনিচ্ছায়। কিন্তু একবার ঢুকলে, এই শহর আর সহজে কাউকে ছাড়ে না।

ঢাকা জটিল। এই শহরের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। প্রতিদিনের ভিড়, ধুলা, শব্দ আর ক্লান্তির ভেতর দিয়ে কেটে যেতে যেতে এক সময় বোঝা যায় এই শহরকে সহ্য করার মধ্যেই গড়ে ওঠে এক ধরনের সহমর্মিতা। মানুষের মুখে তখন ঘুরে ফিরে আসে একই কথা—“ঢাকায় থাকা যায় না”, অথচ চলে যাওয়ার কথাও আর কেউ বলে না।

শহরটা যেমন প্রাণবন্ত, তেমনি নির্মম। রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এক বৃদ্ধ রিকশাওয়ালা, ফুটপাতে ঘুমিয়ে পড়া এক কাগজওয়ালা ছেলে, কিংবা ব্যস্ত অফিসপাড়ায় ছুটে চলা এক মা—সবাই একই শহরের ভেতর, কিন্তু কেউ কারও নয়। তবু প্রতিদিন একে অপরের ভেতর দিয়েই টিকে থাকা, নিজেকে খুঁজে নেওয়ার এক নিরন্তর প্রয়াস। ঢাকাকে বোঝা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়।

এই শহরের অলিতে-গলিতে গোপনে লুকিয়ে আছে ছোট ছোট গল্প। ধানমন্ডি লেকে একলা হাঁটতে হাঁটতে কেউ মনে করে পুরোনো সম্পর্কের কথা, নিউ মার্কেটের ঠেলাগাড়িতে ঠান্ডা ডাব খেতে খেতে কেউ ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে। পুরান ঢাকার ভাঙাচোরা দেয়ালে হঠাৎ চোখে পড়ে কিছু লেখা"তুমি ছিলে বলেই ভালো ছিল সব"—এ শহর যেন তার দেয়ালেও জমিয়ে রাখে অজস্র না বলা অনুভূতি।

ঢাকা কারও কাছে শুধু একটি শহর নয়। সে কারও প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় জীবন, কারও প্রথম চাকরির সকাল, কারও প্রথম ভালোবাসার সন্ধ্যা। এ শহরের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অগণন প্রথমবারের অভিজ্ঞতা। তাই হয়তো, যতটা বিরক্তি জন্মায়, ততটাই টানও থেকে যায়। ঢাকাকে নিয়ে অভিযোগ ফুরোয় না, কিন্তু ভালোবাসাটাও শেষ হয়ে যায় না কোনোদিন।

জানুয়ারির সকালে হাত কাঁপিয়ে দেয়া ঠান্ডা হাওয়া, রমজানে ইফতারের আগের মুহূর্তের ব্যস্ততা, ঈদের দিন ফাঁকা রাস্তায় নিঃশব্দ হাঁটা সব মিলিয়ে ঢাকা এক অনির্বচনীয় আবেগ। কে কোথায় যেন হারায়, আবার কে কোথা থেকে যেন এই শহরে ফিরে আসে, বারবার। এ শহরের ব্যর্থতা যতটা ব্যক্তিগত, সাফল্যগুলোও যেন ঠিক ততটাই সমষ্টিগত হয়ে ওঠে।

ঢাকা হয়তো সৌন্দর্যে মুগ্ধ করে না, কিন্তু অভ্যস্ত করে তোলে। এক সময় মানুষের চলাফেরায়, নিঃশ্বাসে, এমনকি স্বপ্নে ঢুকে পড়ে তার হেঁয়ালিপূর্ণ বাস্তবতা। যে শহরটাকে সকালবেলা গালি দেওয়া হয়, রাত হলেই সেই শহরের বাতাসে ভেসে আসে অদ্ভুত এক মায়া।

এ শহর কাউকে নিখুঁত ভালোবাসা দিতে পারে না, কিন্তু তাকে ভালো না বেসেও থাকা যায় না।
ঢাকা এক ধরণের অভ্যাস, একরাশ অস্থিরতা, একফোঁটা স্বপ্নযা মিলেমিশে এক সময় ভালোবাসায় রূপ নেয়।

04/09/2025
04/09/2025
বয়ঃসন্ধি শব্দটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো—ত্রিশের পরের জীবনটাকে আমরা কোনো নামই দিইনি। অথচ এই বয়সটাও একরক...
02/09/2025

বয়ঃসন্ধি শব্দটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো—ত্রিশের পরের জীবনটাকে আমরা কোনো নামই দিইনি। অথচ এই বয়সটাও একরকম নতুন জন্ম। বুড়ো না, আবার তরুণও না। সংসার, দায়িত্ব, অভিজ্ঞতা—সবকিছু মিলে এটি এক অদ্ভুত বয়স।

ত্রিশ পেরোনো নারীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অন্তত ৬–৭ বছরের সংসারী। কারো দুই-তিন সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার পরও ভেতরের কিশোরী মনটা রয়ে যায় ঠিকই। সেই কিশোরী মনকে দমিয়ে রাখার ক্লান্তিকর চেষ্টার মধ্যেই কেটে যায় প্রতিদিন। সমাজ তাকে আর কিশোরী হতে দেয় না, অথচ মনের ভেতরে সেই চঞ্চলতা অটুট থাকে।

দিন শেষে যখন রান্নাঘর নিভে যায়, অফিসের ফাইল গুছিয়ে রাখা হয়, তখন মনের কোণে জমা হয় না পাওয়া গল্পগুলো। কে শোনে সেইসব? সংসারের লোকজন? তারা তো সবাই ব্যস্ত। বন্ধুত্ব নেই বললেই চলে। একসময় যে বন্ধুত্বগুলো প্রাণের সমান ছিল, ত্রিশ পেরোনো জীবনে সেগুলো কেবল স্মৃতির পাতায় আটকে থাকে।

ত্রিশের পর নারীরা এক অদ্ভুত রোগে ভোগে—নস্টালজিয়া। শৈশব, কৈশোর, কলেজজীবন, প্রথম প্রেম, বৃষ্টিভেজা দুপুর—সবকিছু অকারণেই মনে পড়ে যায়। একসময় যে মানুষ কষ্ট দিয়েছে বা যার কষ্ট সে দিয়েছে, তাকেও ভুলতে পারে না। রাতের অন্ধকারে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে অচেনা লাগে। চুল পড়ে গেছে, মুখে বলিরেখা, শরীরে মেদ—সব মিলিয়ে একসময়কার মেদহীন সুন্দরী শরীরটা কেবল স্মৃতিতে রয়ে যায়।

হয়তো এ কারণেই অনেকে সাজগোজে, শাড়ি-গয়নায় নিজেকে লুকোতে চায়। এটা আত্মপ্রেম নয়, বরং বিষণ্ণতা ঢাকার উপায়।

ত্রিশ পেরোনো নারীরা হঠাৎ প্রেমে পড়তে চায় না। তারা আসলে চায় একজন শ্রোতা—যে কোনো জাজমেন্ট ছাড়াই সব কথা শুনবে। সংসারে থাকা মানুষটিকেই আবার নতুন করে পেতে চায়। চোখের তারা হয়ে থাকার সাধ আবার জাগে। কিন্তু বাস্তবতা কানে কানে বলে দেয়—সবকিছু আগের মতো আর হয় না।

এই বয়সে বাবা-মায়ের অভাব সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়। যাদের বাবা-মা বেঁচে আছেন, তারাও চান না মেয়েটা অতিরিক্ত অধিকার খাটাক। অথচ ভেতরে ভেতরে মেয়ে হয়ে যতটুকু আদর পেতে ইচ্ছে করে, তা আর বলা হয়ে ওঠে না। নিজের সন্তানদের আঁকড়ে ধরে সে অন্যরকম সমাজের স্বপ্ন বুনে চলে।

ত্রিশ পেরোনো কোনো নারী যদি অবিবাহিতা হয়, সন্তান না থাকে, কিংবা ডিভোর্সি হয়, তবে সমাজ তাকে নিয়ে অযথা চিন্তিত হয়ে পড়ে। অথচ যে মেয়েটা সংসার করছে, বাচ্চা সামলাচ্ছে, তার মনের খবর কে রাখে? কে জিজ্ঞেস করে—কেমন আছো? আজ তোমাকে ক্লান্ত লাগছে কেন?

আজকাল মেয়ে মানেই ফাইন্যান্সিয়ালি ইন্ডিপেন্ডেন্ট হওয়ার ডাক। কিন্তু ত্রিশ পেরোনো নারী বুঝে যায়—শুধু আর্থিক স্বাধীনতা যথেষ্ট নয়। অর্থ থাকলে সময় থাকে না, সময় থাকলে অর্থ থাকে না। তাছাড়া সমাজ তো কখনোই পুরোপুরি স্বাধীনতা দেয় না। মেয়েরা যতই উপার্জন করুক, মানসিকভাবে সমাজের শেকল ভাঙা কঠিন।

এ বয়সে প্রায়শই মন চায় একা থাকতে। নিজের মতো করে। কোনো দায়িত্ব ছাড়া। অথচ মুহূর্তের মধ্যেই সন্তানদের মুখ মনে পড়ে যায়। মায়ের সবচেয়ে বড় ভয় হলো মৃত্যু—কারণ সন্তানদের ছাড়া চলে যাওয়ার কথা সে ভাবতেই পারে না।

ত্রিশের কাছে এসে মেয়েদের সবুজ মন ধীরে ধীরে নীল হয়ে যায়। যে মেয়ে সামান্য আঘাতেই কেঁদে ফেলত, সে নিঃশব্দ কান্না করতে শিখে যায়। যে মেয়ে আগে স্বপ্নে ভরা ছিল, সে এখন ব্যালান্স করতে করতে নিজের স্বপ্নই ভুলে যায়।

দুই বা তিনবার সন্তান জন্ম দেওয়ার ধকল শরীরের উপর যে কতটা প্রভাব ফেলে, তা সে-ই বোঝে। মেরুদণ্ডে ইনজেকশন, অস্ত্রোপচারের ব্যথা—সব সহ্য করেও রান্নাঘরে দাঁড়িয়ে, সন্তান সামলে, সংসারের চাকায় সে ঘুরতেই থাকে। পরিবারের অন্য সদস্যরা অসুস্থ হলে তার কষ্টকে গৌণ মনে হয়। অথচ সে-ও চায়, কেউ একবার জিজ্ঞেস করুক—আজ তোমার শরীরটা কেমন আছে?

ত্রিশ পেরোনো নারীর মনের সবচেয়ে গভীর চাহিদা হলো যত্ন। তারা খুব সামান্য কিছুই চায়—কেউ যদি বলে “আজ তোমাকে খুব ক্লান্ত দেখাচ্ছে” বা “তুমি অনেক কষ্ট করো”—এটুকুই তার কাছে বিশাল প্রাপ্তি।

ত্রিশ পেরোনো নারীর জীবন হলো নীরব এক সংগ্রাম। সমাজ তাকে নানা নামে ডাকতে ভালোবাসে—মা, স্ত্রী, কর্মজীবী নারী। কিন্তু তার ভেতরের মানুষটিকে চেনে কয়জন? এই বয়সে নারীরা শুধু দায়িত্ব নয়, একটু যত্ন, একটু বোঝাপড়াও প্রাপ্য। আমরা যদি সেটা মনে রাখতে পারি, তবে ত্রিশ পেরোনো জীবনের নাম হয়তো একদিন পাওয়া যাবে—আর সেই নাম হবে আত্মিক পরিপূর্ণতার আরেক নাম।

Address

Dhaka

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Everyday Stories posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Everyday Stories:

Share