JR Masum

JR Masum ইনশাআল্লাহ আমি একজন মুসলিম এটাই বড় পরিচয়। I'm a Human
(1)

22/10/2025

চাচায় কামডা করলো কি??

#লালনসাইমাজার #লালনআখড়া #লালনমেলা #লালনসাই

গ্রাম্য সালিশে  আব্বা আম্মার তালাক হয়ে গেল। আমার বয়স তখন কেবল নয়, ভাইয়ের সাড়ে চার। তারা কেউ কারো সাথে সংসার করতে চা...
21/10/2025

গ্রাম্য সালিশে আব্বা আম্মার তালাক হয়ে গেল। আমার বয়স তখন কেবল নয়, ভাইয়ের সাড়ে চার। তারা কেউ কারো সাথে সংসার করতে চায় না। আম্মার ধারণা আব্বা পরকীয়ায় লিপ্ত। আব্বা এটা মানতে নারাজ আর আম্মা যেহেতু তার বিরুদ্ধে সবার সামনে এই অভিযোগ এনেছে তাই সে কোনভাবেই সংসার করবে না,মুখে মুখেই তালাক হয়ে গেল।
হুজুর দিয়ে পড়ানো বিয়ের তালাক সাধারণত মুখে মুখেই হয়। এখনকার মত ডিভোর্স লেটারের দরকার পড়ে না।
সেখানেই সন্তান ভাগাভাগি হলো। সন্তান যে ভাগাভাগি করা যায় সেটা আমি জানতাম না। অবশ্য আমার জানার কথাও না। আমি পড়লাম বাবার ভাগে আর মায়ের ভাগে পড়লো আমার ভাই। সত্যি বলতে কি মায়ের মুখে আমি তৃপ্তির হাসি দেখেছিলাম যেন ছেলে পেয়ে তিনি আনন্দিত। আমি কয়েকবার আম্মা আম্মা বলে ডাকলাম কিন্তু তিনি ফিরেও তাকালেন না।
দাদি আমাকে দেখেই মুখ ঝামটা দিয়ে চলে গেলেন। তিনি আমাকে নাম ধরে ডাকতেন না। যেকোন একটা গালি বিশেষণ হিসেবে জুড়ে দিয়ে ডাকতেন। কত মার যে খেয়েছি অযথাই। ঠোঁট কেটে ফুলে যেত আব্বা তাকাতোও না যেন আমি উচ্ছিষ্ট।
কিছুদিন পরেই পাশের ঘর থেকে শুনতে পেয়েছিলাম আব্বা আর দাদী কথা বলছেন,আম্মা নাকি আবার বিয়ে করেছেন। তাই আব্বাকে বিয়ে করানো দাদির জন্য এখন যেন চ্যালেঞ্জ।
দাদি যখন তার মনের মত পাত্রী খুঁজে পেলেন আমার খুব কান্না পেল। সব সময় শুনেছি সৎ মায়ের অত্যাচারের কাহিনী। এখন দাদি আর নতুন মা দুজন মিলে আমাকে কি করবে তা ভেবে পালিয়ে যেতে ইচ্ছা করলো।
আব্বার বিয়ে হলো। বাড়িতে নতুন বউ এলো, আমি এক কোনায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম।
দুইদিন পর নতুন মা আমাকে ডেকে বললেন,
-তোমার নাম কি?
-পারুল
-পারুল তুমি আমার কাছে আসো না কেন? আমাকে ভয় পাওয়ার কিছু নাই, লুডু খেলবা?
আমি হেসে ফেললাম অনেকদিন পরে। ছুটে গিয়ে লুডু নিয়ে আসলাম।
ঘন্টাখানেক পরে দাদি রে রে করে তেড়ে আসলেন,
-ও বউ তুমি নতুন, তাই কোন কাজকর্ম করতে বলি না। তার মানে এই না যে বইসা বইসা তুমি বাচ্চা মেয়ের মাথা খাইবা। আর এই মেয়ের সাথে বেশি মিশবা না। ওর মা ছিল একটা দুশ্চরিত্রা বড় হইয়া ও নিজেও তাই হইবো।
-আপনে একটা বাচ্চারে নিয়া এমনে কথা বলবেন না।
-কি বললি তুই! আমার মুখে মুখে কথা? দাদি তেড়ে আসছিল, আমি ভয়ে গুটিয়ে গেলাম।
-আমারে অবাধ্য হইতে বাধ্য করবেন না। আমি অত নরম না। চলো, পারুল ঘরে যাই।
আমি নতুন মায়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘরে গেলাম।
আব্বা আসতেই দাদি কান্নাকাটি করে নালিশ জানালেন।
আব্বা রণমূর্তি ধারন করে ঘরে আসার সঙ্গে সঙ্গে নতুন মা বলে উঠলেন,
-খবরদার আমার সাথে উঁচু গলায় কথা বলবেন না। আগে সত্যতা যাচাই করবেন , ভুইল্লা যায়েন না আপনের আগের বৌও কিন্তু চইলা গেছে।
আব্বাকে মনে হলো দ্বিধান্বিত। আমার নতুন মায়ের বয়স ছিল ১৬-১৭, তিনি ভেবেছিলেন এই বাচ্চা মেয়ে কি এমন করবে?
নতুন মায়ের সাথে আমার সম্পর্ক হয়ে গেল বান্ধবীর মত। তিনি সব রান্নাবান্না, কাজকর্ম শেষ করে আমাকে পড়াতে বসান। স্কুলে আবার ভর্তি করেছেন, মাঝখানে স্কুল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আমরা উঠোনের চারপাশে বিভিন্ন শাকসবজি লাগাই। তিনি আমাকে একটু একটু করে রান্নাবান্নাও শেখান।
দাদি হাজার রকম ভাবে বাবাকে নতুন মা সম্পর্কে নালিশ জানাতো। একদিন দুইদিন তিনদিন দেখলাম নতুন মায়ের গায়ে মারের চিহ্ন। সেই চিহ্ন দেখে দাদি খুবই তৃপ্ত। তারপর একদিন কি জানি হলো, মা-বাবাকে ঘর থেকে টেনে উঠোনে এনে দাদি এবং আমার সামনে সপাটে দুইটা চটকানা লাগিয়ে দিলেন, বাবা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলেন।
-পত্যেক দিন যা অয় বন্দ গরে অয় কেউ দেহেনা। দ্যাখলেও আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু আইজ যা হইল আপনের মা আর মাইয়া দুইজনেই দ্যাখছে। এই শরম রাখবেন কই? আর একদিন যুদি আপনের মায়ের কথায় আমার গায়ে হাত তুলেন সেই হাত আমি ভাইঙ্গা দিমু। আর আপনের বুড়ি মারে কইয়া দেন সে যুদি না শুধরায় তারে রাইতে ঘুমের মইধ্যে বালিশ চাপা দিয়ে মাইরা ফেলমু। তারপর থানা পুলিশ যা করার করবেন। নতুন মা আমাকে নিয়ে ঘরে চলে গেলেন।
পেছনে তাকিয়ে দেখলাম দাদি ভয়ে কাঁপছে আর আব্বা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে।
দাদি ম*রল শীতের এক কাক ভোরে, আমি তখন ১৭। ছোট একটা বোন এসেছে ঘরে, সে এখন গুটি গুটি পায়ে হাঁটা ছেঁড়ে দৌড়াতে শিখেছে।
সময় কাটলো, নতুন মায়ের শিক্ষা আর নিজের মেধার জোরে ঢাকা ইউনিভার্সিটি তে 'ল' ডিপার্টমেন্টে চান্স পেলাম, হলেও উঠলাম।
দাদি ম*রার পর থেকেই একটা গুঞ্জন কানে আসছিল, বাবার সাথে নাকি আবার কোন মহিলার যোগাযোগ, নতুন মা আমাকে সেগুলো পাত্তা দিতে নিষেধ করেন, পড়াশোনায় মনোযোগী হতে বলেন। পরে কানে আসে সেই মহিলা আর কেউ নয় আমার নিজেরই গর্ভধারিনী মা। আমার কি খুশি হওয়া উচিত ছিল? কে জানে, আমি কিন্তু খুশি হতে পারিনি বরং ভীষণ রাগ হয়েছিল। আম্মা তার ঐ সংসারে খুশি ছিল না। সে আবার ফেরত আসতে চায়।
হলে থাকতেই একদিন খবর পেলাম সেই মহিলা মানে আমার আসল মা কে বাবা বাড়িতে নিয়ে এসেছেন। আমি বাড়ি ফিরলাম। নতুন মায়ের মুখে মারের দাগ, বোনের শরীরেও। আপন ছোট ভাইটি শয়তানি হাসি হাসলো। যাকে এইটুকু দেখেছিলাম, আদুরে, তুলতুলে খেলার পুতুল ছিল আমার । আর আজ ওকে দেখে মুখে থুতু জমলো।
ততদিনে নতুন মায়ের শিক্ষার ছাপ আমার মাঝে পড়েছে। আমি এখন প্রতিবাদ করতে শিখেছি। আমার নতুন মা গ্রামের অল্প শিক্ষিত মেয়ে হয়েও অনেক কিছু করেছেন, আমি কেন পারবো না? গ্রামের চেয়ারম্যান চাচার সাথে কথা বললাম। জানি এখানে শহুরে নিয়ম খাটবে না।
আবার বাবার বিরুদ্ধে আবার সালিস বসলো।সালিসে নির্ধারণ হলো নতুন মাকে তালাক না দিয়ে সে যে তার আগের স্ত্রীর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়েছে সাথে বাড়িতেও নিয়ে এসেছে এটা বিরাট অন্যায় হয়েছে। যেহেতু নতুন মায়ের বিয়েতে সবাই উপস্থিত ছিল তাই তাকে মুখে মুখে তালাক দিলেও সম্পত্তির কিছু অংশ দিতে হবে আর এটাও মাথায় রাখতে হবে তার শুধু এক ছেলে না বরং আরও দুটো মেয়ে আছে। ফলাফল স্বরুপ পূবপাড়ার জমিটা আব্বা লিখে দিতে বাধ্য হলেন। দুই দিনের মধ্যেই গ্রামের জলিল চাচার কাছে নতুন মা সেটা বিক্রি করে দিলেন। সেই টাকা আর নতুন মায়ের বিয়ের গয়না নিয়ে আমরা ঢাকায় ফিরে এলাম। ঢাকায় এসে একটা বাড়ি খুঁজতে খুব একটা সমস্যা হলো না।
কথাগুলো বলছিলেন এডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জাজ পারুল খন্দকার।
আমি রুবি, দৈনিক বাংলা পত্রিকার সাংবাদিক। নারী দিবস উপলক্ষে সংগ্রামী নারীদের উপর একটা ফিচার লেখার দায়িত্ব পড়েছে আমার উপর।
-তারপর কি হলো? জিজ্ঞেস করলাম
-মা ঘরে সেলাইয়ের কাজ করতেন, আমিও বাইরে টিউশনি করতাম। কিছু টাকা পয়সা তো জমাই ছিল তাছাড়াও মামারবাড়ি থেকে মানে নতুন মায়ের বাবার বাড়ি থেকে আমাদেরকে সাহায্য করা হয়েছিল। আমি প্রথমে এলএলবি তারপর এলএলএম কমপ্লিট করে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করে অ্যাসিস্ট্যান্ট জাজ হিসেবে যোগ দিলাম আর ধীরে ধীরে প্রমোশনের মাধ্যমে আজকে এই পজিশনে এসেছি।
-বাহ, দারুন! আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি বলে উঠলাম।
-না আপনি ভুল বললেন, আমার সবকিছুর পেছনে আছে আমার নতুন মা। যে আমার চেয়ে বয়সে মাত্র ৬-৭ বছরের বড়, গ্রামের অল্প শিক্ষিত একজন মহিলা। তার পেছনে কেউ ছিলনা, তিনি একাই লড়েছেন আমাকে নিয়ে। তিনি না থাকলে আজ আমার জীবনটা এমন হতো না। ছোট বোনটাও স্কলারশিপ নিয়ে দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে পারত না। আজ সেও নিজের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। কে কোথায় টিকে আছে এর উপর ভিত্তি করে আপনারা বড় বড় কলাম লেখেন, হেডলাইন বানান কিন্তু তার পেছনে কে আছে তার খোঁজ নেন না। আজ যদি কোন কাহিনী লিখতে হয় সেটা আমার নামে না, আমার মায়ের নামে লিখতে হবে, নতুন মা। আপনি রাজি তো ?
আমি হেসে সম্মতি দিয়ে বললাম,
-একটা প্রশ্ন ছিল।
-বলুন
-আপনার আসল বাবা-মায়ের কি হলো তাহলে?
-দুনিয়াতে আসল নকল বলে কিছু নেই তবুও আপনি যে ব্যাপারে বলেছেন সেটা বলতে আমার ভালই লাগবে। বেশ কিছু বছর আগে একটা খবর ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল, এক ছেলে নেশার টাকা না পেয়ে বাবা-মাকে ঘুমের মাঝে জ*বাই করেছে। সেটা ছিল আমার আপন ছোট ভাই। বলে মুচকি হেসে উনি চলে গেলেন।
আমি খানিকক্ষণ 'থ' হয়ে বসে থাকলাম, আসলেই আমরা শুধু জয়ের শিখরে যে দাঁড়িয়ে আছে তাকেই দেখি অথচ তার অনুপ্রেরণা কে, কার হাত ধরে আজ তার এই অবস্থান, সেই প্রশ্ন আমাদের মাথায় আসে না।
#নতুন_মা
কলমে: সুবর্না শারমিন নিশী

#নতুন_মা

21/10/2025

লালনের আখড়া বইলা কথা চাচী যদি হালকা উপড় ঝাপসা না খায় কেমনে হইলো।

#লালনমেলা #লালনআখড়া #লালনসাই #লালনসাইমাজার

বাড়ির পাশের এক ছেলের সঙ্গে ছাত্রীর দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল, প্রায় কয়েক বছরের। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। ছেলেট...
20/10/2025

বাড়ির পাশের এক ছেলের সঙ্গে ছাত্রীর দীর্ঘদিনের প্রেম ছিল, প্রায় কয়েক বছরের। কিন্তু সম্প্রতি তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। ছেলেটাকে একদম ছেড়ে দেওয়ার জন্য ছাত্রী জানায় টিউশন টিচারকে সে পছন্দ করে। যদিও এ ব্যাপারে কিছুই জানতেন না সেই শিক্ষক। তার এই কথার ওপর ভিত্তি করেই সেই প্রেমিক গতকাল টিউশন টিচারকে গলা কে/টে হ/ত্যা করে।

জ-গ-ন্না-থ বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভাইটি জানতেও পারলেন না তাকে ঠিক কী কারণে মে/রে ফেলা হলো।

অফিস থেকে বাসায় ফিরে বেল বাজাতেই সেঁজুতি বেজার মুখে দরজা খুলল। "কী ব্যাপার, মুড অফ নাকি?" জিজ্ঞেস করলেও তার উত্তর না দিয়...
20/10/2025

অফিস থেকে বাসায় ফিরে বেল বাজাতেই সেঁজুতি বেজার মুখে দরজা খুলল। "কী ব্যাপার, মুড অফ নাকি?" জিজ্ঞেস করলেও তার উত্তর না দিয়ে রুমে চলে গেল। সামনেই দাঁড়িয়ে ছিল আমার মেয়ে দোলা। সে ফিসফিস করে বলল, "সজীব ভাইয়া এসেছে।"
বুঝলাম এই হচ্ছে ওর মার মুড খারাপ হওয়ার কারণ। সত্যি বলতে, আমি নিজেও একটু বিরক্ত হলাম। এভাবে না বলে বাসায় চলে আসার মানে কী! বিশেষ করে যখন আমি বাসায় নেই। একটা ফোন করে তো আসবে। আর ওর আসা মানেই টাকা লাগবে, হয়তো ওর মা দিচ্ছে না।
একরাশ বিরক্তি নিয়ে ড্রয়িংরুমে ঢুকলাম। সোফায় জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে সজীব। ছেলেটার মুখের দিকে তাকাতেই মনটা কেমন করে উঠল। মুখটা একদম শুকিয়ে আছে। বাতাসে ঘামের চাপা গন্ধ, হয়তো বাসে চড়ে এসেছে। আমাকে দেখে সালাম দিয়ে একটু নড়ে চড়ে বসল।
সালামের উত্তর দিয়ে বললাম, "কখন এসেছ সজীব?"
"আধা ঘণ্টা হবে বাবা। ভেবেছিলাম এই সময় তুমি চলে আস।"
"হ্যাঁ, আজ একটু দেরি হয়ে গেল ফিরতে, একটা মিটিং ছিল।"
"কিছু খেয়েছ?" জিজ্ঞেস করে নিজেই বিব্রতবোধ করলাম। কিছু দিলে তো টেবিলেই থাকত। তাছাড়া আমি না বললে সেঁজুতি এক কাপ চাও দিতে চায় না ওরা আসলে।
পর্দার নিচ দিয়ে দোলার পা দেখা যাচ্ছে। আড়ি পেতে কথা শোনে নাকি! এই বয়সে এই স্বভাব!
জোরে ডাকলাম, "দোলা, ভাইয়ের জন্য পানি আর নাস্তা নিয়ে এসো, যাও।"
পায়ের আওয়াজ শুনে বুঝলাম দোলা দৌড়ে চলে গেল।
কিছুক্ষণ পর একটা ট্রেতে এক গ্লাস পানি আর কয়েকটা বিস্কুট নিয়ে আসল। ছেলেটা সাথে সাথে গ্লাসটা নিয়ে এক ঢোকে পানি শেষ করে ফেলল। দেখে বুঝাই যাচ্ছে, খুব পিপাসা পেয়েছিল। ভূতের গলি থেকে গুলশান কম দূরত্ব তো নয়। সরাসরি বাসও তো নেই। নিশ্চয়ই বাসা থেকে ফার্মগেট থেকে বনানী এসে আবার সেখান থেকে রিক্সায় বা হেঁটে এসেছে। দোলাকে বললাম, আরেক গ্লাস পানি নিয়ে এসো। নাস্তার কথা আর বললাম না, সেধে ছেলের সামনে আর অপমান হতে চাই না।
"তোমরা সবাই কেমন আছ? সায়রা ভালো আছে? ওর সাথে অনেকদিন কথা হয় না।"
"সায়রা ভালো আছে বাবা, এইচএসসি পরীক্ষা সামনে। চাপে আছে। তুমিও তো ফোন করো না।"
ঠিক! আমিও তো ফোন করি না। খুব একটা মনেও হয় না আসলে। সায়রার সাথে থাকলে সে কি নিত্যনতুন বায়না করত আমার কাছে, দোলার মতো? সেদিনও একটা নতুন জামা কিনে দিলাম তাকে, সাথে অ্যাক্রেলিক কালার সেট। সায়রাও খুব ভালো ছবি আঁকে, সে কি আর্টের জিনিসপত্র মনমতো কিনতে পারে? শখ হলেই একটা জামা কিনতে পারে? ওর মা খুব বেশি আয় তো করে না। হয়তো অনেক শখই মেটাতে পারে না। সজীবের হাতে ওর জন্য কিছু টাকা দিয়ে দেবো ভাবলাম।
হঠাৎ দেখি, সজীব কাঁদছে, ওর পুরো গা কাঁপছে। এর মধ্যে দোলা এসে আরেক গ্লাস পানি দিয়ে গেছে। ওকে পানি দিতে গেলে না করল। আমি ওর পাশে গিয়ে বসলাম, "কী হয়েছে বাবা, বলো।"
"মা কেমন আছে জিজ্ঞেস করবে না বাবা?"
শারমিন! শারমিনের কথা তো আমি কখনোই জিজ্ঞেস করি না। প্রাক্তনের কথা জিজ্ঞেস করা কি উচিত? অবশ্য ভদ্রতা করে ওদের মা কেমন আছে, তা তো জিজ্ঞেস করাই যায়। সেই ভদ্রতাটুকু অবশ্য আমি কখনো করিনি।
"তোমার মায়ের কিছু হয়েছে সজীব।"
"মায়ের ক্যান্সার হয়েছে বাবা। স্টমাক ক্যান্সার, স্টেজ ফোর।"
থমকে গেলাম। ছেলেটা হাঁপুস নয়নে কাঁদছে। ওকে কী বলে সান্ত্বনা দেবো আমি?
কোনো মতে জিজ্ঞাসা করলাম, "কবে ধরা পড়ল?"
"গত সপ্তাহে, পরশু থেকে কেমো শুরু করতে হবে, বেশি সময় নেই বাবা।"
ওর কাছ থেকে হাসপাতাল আর কেমোর সময় সব নিয়ে রাখলাম। ছেলেটাকে ছাড়তে মনে চাইছিল না। বললাম, "চলো, তোমাকে উবার ঠিক করে দিচ্ছি।"
"না না, আমি বাসেই যেতে পারব।"
বুঝলাম ছেলেটা ভাড়ার কথা ভাবছে। বললাম, "আরে চলো তো।"
ওকে নিয়ে বের হয়ে একটা রেস্টুরেন্টে বসে বাপ-ছেলে রাতের খাবারটা খেলাম। খাবারটা খুব মজার হলেও সজীব তেমন খেতে পারল না। হয়তো ফ্রাইড রাইস ওর পছন্দ না। আচ্ছা! ওর পছন্দের খাবার কি সেটাই তো আমি জানি না। বাসার জন্যও কিছু খাবার প্যাক করে দিলাম। সেঁজুতি আর দোলার জন্যও নিয়ে নিলাম। এখানকার খাবার ওদের দু'জনেরই খুব পছন্দ।
সজীবকে একটা উবার ঠিক করে উঠিয়ে দিলাম, আমার কার্ড থেকে পেমেন্ট হয়ে যাবে। যাওয়ার আগে ওকে বললাম, "তুমি ভেঙে পড়ো না, আমি তো আছি।"
ছেলেকে এ কথা বললেও নিজের মনেই সংশয়, কতটা থাকতে পারব আমি?
বাসায় ফিরে দেখি সেঁজুতি তখনও মুখ ভার করে বসে আছে। আমি এখনও অফিসের পোশাক পাল্টাইনি। একবারে গোসল করতে চলে গেলাম। ওর সাথে রাতে কথা বলব।
সব শুনে সেঁজুতিও থম ধরে গেল। স্বামীর প্রথম পক্ষের সন্তানদের পছন্দ না করলেও সে নিষ্ঠুর তো নয়। ওকে যখন বললাম যে, শারমিনের প্রথম কেমোর দিন আমি হাসপাতালে যাব, সে মানা করল না। তবে খানিকক্ষণ চুপ থেকে বলল, "তবে দেখো, টাকা-পয়সার ঝাঁপি খুলে বসো না।"
নির্ধারিত দিনে আমি অফিস থেকে ছুটি নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে গেলাম। শারমিনকে তখন ভেতরে নিয়ে গেছে। ওর সামনে গেলাম না। সায়রার পাশে গিয়ে বসলাম, মেয়েটা শুকনো মুখে করিডোরে একটা চেয়ারে বসে আছে। অনেক শুকিয়ে গেছে মেয়েটা, চোখ-মুখ ফুলে আছে। বুঝাই যাচ্ছে, দিন-রাত কান্নাকাটি করছে। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, "মা ঠিক হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ।"
জবাবে সায়রা শুধু মাথা ঝাঁকাল। মেয়েটার সাথে আমার অনেক দূরত্ব। সজীবের সাথে তাও আমি কিছু সময় কাটিয়েছি, সায়রার সাথে একদমই স্মৃতি নেই আমার। ওর দেড় বছরের সময়ই আমার আর শারমিনের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। আর তার আগের সময়টা আমি নতুন প্রেমে বিভোর ছিলাম। সেঁজুতি ছাডা সেই সময়টা আমার মাথায় কিচ্ছু ছিল না। সায়রা কবে হামাগুড়ি দিল, কবে ওর প্রথম দাঁত উঠল, কবে সে হাঁটতে শিখল, আমি কিছুই বলতে পারব না।
ওয়ার্ডের দরজাটা খুললে শারমিনকে এক ঝলক দেখলাম। শীর্ণ চেহারা, রুগ্ন শরীর, যা শুনেছি, অনেক দিন ধরেই শরীর খারাপ ছিল। কিন্তু সব লক্ষণ অগ্রাহ্য করে শুধু গ্যাসের ওষুধ দিয়ে চালিয়েছে। ডাক্তার দেখায়নি। এ কয়দিন আমি স্টমাক ক্যান্সার নিয়ে বেশ রিসার্চ করেছি। সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
"সায়রা, সজীব, এই নাও কফি। খেয়ে নাও, ভালো লাগবে।" আমার বয়সী এক ভদ্রলোক দুই কাপ কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আমাকে দেখে বললেন, "ওহ! আমি জানতাম না আপনি এসেছেন। কফি খাবেন?"
"না, ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি?"
"বাবা, উনি হামিম আংকেল, মার কলিগ। আমাদের খুব হেল্প করছেন।" সজীব বলে উঠল। ছেলে-মেয়েরা কফি নিয়ে নিলে ভদ্রলোকের সাথে হাত মিলালাম। শারমিনের চিকিৎসার নাড়ি-নক্ষত্র উনার জানা। বুঝলাম সব দৌড়াদৌড়ি উনিই করছেন। শারমিনের বাপের বাড়ির দিকে তেমন কেউ নেই। এক ভাই আছে, ইটালি থাকে। হামিম সাহেবকে ধন্যবাদ দিলাম এই বিপদে ওদের পাশে থাকার জন্য।
হামিম সাহেবের উৎকণ্ঠা দেখছি শারমিনের জন্য, বাচ্চাদের প্রতিও অনেক খেয়াল। বিবাহিত জীবনে শারমিনের প্রতি আমি কখনো এতটা খেয়াল দেখাইনি। মনের মিলই হয়নি। শারমিন অবশ্য অনেক চেষ্টা করত আমাকে খুশি রাখার। অফিস থেকে আসলে সেজেগুজে থাকত, পছন্দের খাবার রান্না করত। অভিযোগ করার সুযোগ দিত না আমাকে। কিন্তু ঢাকায় পড়াশোনা করে আধুনিকতার দেখা পাওয়া আমার মফস্বলের মেয়েটিকে মনে ধরেনি। মনে আছে, একবার ও অসুস্থ থাকায় রান্না করতে পারেনি, আমি বলেছিলাম নাটক করছে আমার মনোযোগ পাওয়ার জন্য। এরপর সজীব এলো, শারমিন তার সমস্ত মনোযোগ সন্তানের প্রতি ঢেলে দিল। বছর দুয়েক পর সায়রা আগমনের সংবাদ পাই। সায়রা পেটে থাকতেই আমার সেঁজুতির সাথে পরিচয়। শহুরে, আধুনিকা, যেমন মেধাবী, তেমন চৌকষ, বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করে। আমার অফিসের একটা প্রেজেন্টেশন দিতে গিয়ে ওর সাথে পরিচয়। সায়রা যখন পৃথিবীতে এলো, তখন আমি সেঁজুতিতে ভীষণভাবে মগ্ন। ওর জন্য নিজের সন্তানদের ছেড়ে অন্য ঘর বাঁধতে দ্বিধা করিনি আমি।
"তুহিন সাহেব, একটা কথা বলব?" হামিম সাহেব জিজ্ঞেস করেন।
"বলুন।" হামিম সাহেবের সাথে শারমিনের সম্পর্ক আছে কিনা চিন্তা করছি, না হলে এ যুগে কে কার জন্য এভাবে করে?
"কী ভাবছেন?"
"কিছু না, আপনি বলুন।"
"শারমিনকে আমি বেশ ক'বছর ধরে চিনি। খুব মনোযোগ দিয়ে কাজ করেন, অনেক পরিশ্রমী। পাঁচ বছর আগে আমার স্ত্রী আর মেয়ে একটা রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। সেই থেকে একাই আছি।" এতটুক বলে ভদ্রলোক থামলেন।
এত ইতিহাস বলার উদ্দেশ্যটা আন্দাজ করার চেষ্টা করছি।
হামিম সাহেব আবার বলতে শুরু করলেন, "একাকী জীবন আর টানতে পারছিলাম না। শারমিনকে আমি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম মাস ছয়েক আগে। কিন্তু ছেলে-মেয়েদের কথা ভেবে উনি আমাকে রিজেক্ট করে দেন। আমি মেনেই নিয়েছিলাম। কিন্তু উনার এই অবস্থায় দূরত্ব বজায় রাখতে পারিনি। তুহিন সাহেব, আমি উনার আর ছেলে-মেয়েদের পাশে থাকতে চাই।" বলে আমার হাত ধরলেন। আমিও অন্য হাত দিয়ে তার হাতের উপর আলতো চাপ দিলাম। বললাম, "আপনি যা করছেন, তা সত্যি ভাবা যায় না।"
"দেখুন, শারমিনের এখন অনেক সেবা, অনেক যত্নের প্রয়োজন হবে। আমি জানি না বাচ্চারা কতটুকু পারবে। কলিগ হিসেবে আমারও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, আপনি তো বুঝেন। আজ হোক, কাল হোক, কেউ না কেউ প্রশ্ন করবে, আমি কে, ওদের সাথে আমার কী সম্পর্ক।"
"আপনি কী করতে চাচ্ছেন?"
"আমি পূর্ণ অধিকার নিয়ে শারমিনের পাশে থাকতে চাচ্ছি। হয়তো শারমিনের হাতে বেশি সময় নেই। কিন্তু আমি চাই, ও জানুক, কেউ ওর পাশে আছে, ওর হাতটা ধরে আছে। আপনার কাছে আমার অনুমতি চাওয়ার কিছু নেই। তবুও আপনি পরোক্ষভাবে তাদের পরিবারের অংশ। তাই আপনাকে জানালাম। সজীব আর সায়রারও মত আছে।"
আমি চোখ বন্ধ করে ফেললাম। শারমিনের মুখটা চোখের সামনে ভাসছে। বিয়ের সময়কার, যেদিন আমি বললাম আমি ওকে ডিভোর্স দিতে চাই সেদিনকার, এখনকার। চোখ খুলে আমার সামনে বসা ভদ্রলোককে দেখলাম। প্রায় ফুরিয়ে যাওয়া, মৃত্যু পথযাত্রী শারমিনের সঙ্গী হতে চাচ্ছেন তিনি। অথচ চোখে-মুখে কী উৎসাহ! আমার বিস্ময় বাঁধ মানছে না, এমনও ভালোবাসা হয়! এভাবেও পাশে থাকা যায়! সজীব আর সায়রা অদূরেই বসে আছে, আড়চোখে ওদের দিকে তাকালাম। সত্যি, ওদের একটা শক্ত সাপোর্ট দরকার, যেটা আমি কখনোই হতে পারব না। আমি হামিম সাহেবের সাথে হাত মিলাই। বলি, "আপনি দারুণ মানুষ হামিম সাহেব, ভালো থাকবেন আপনি, অনেক ভালো থাকবেন।" তাকে বলা হয় না, তার সামনে নিজেকে অনেক ছোটো লাগছে আমার। এখানে বসেও আমি হিসাব করছিলাম শারমিনের চিকিৎসায় কত টাকা দিয়ে আমি দায় সারতে পারব। নিজের ক্ষুদ্রতা নিয়ে শারমিনের সাথে আর দেখা করা হয় না। তার জীবনের এই অন্ধকার সময়েও আলো দেখানোর মানুষ এসে গেছে। আমি যা পারিনি, তা অন্য কেউ করছে তার জন্য। যতদিন বাঁচুক সে, ভালোবাসায় বাঁচুক।

#ইসরাত_মোস্তফা

19/10/2025

ফকির লালন শাহ্ ১৩৫ তম তিরোধান.

আমরা যে বাসে কুষ্টিয়া যাচ্ছি, সেই বাসটা পুরোই টান টান উত্তেজনায় ভরা! বাসের প্রায় সবাই যাচ্ছে লালন মেলায়  কারো হাতে খ...
18/10/2025

আমরা যে বাসে কুষ্টিয়া যাচ্ছি, সেই বাসটা পুরোই টান টান উত্তেজনায় ভরা!

বাসের প্রায় সবাই যাচ্ছে লালন মেলায় কারো হাতে খিচুড়ি, কারো হাতে বাঁশি, আবার কেউ কেউ তো বাসেই “গাঁজার গন্ধে” একদম ভাসাচ্ছে পুরো পরিবেশ! 🌿

ড্রাইভার ভাইও মনে হচ্ছে রিদমে চলে গেছেন বাসের হর্নেও যেন বাজছে “ভালো আছি ভালো থেকো”! 😂

এই অবস্থায় আমি ভাবছি ভাই, আমি কই যাচ্ছি আসলে? কুষ্টিয়া না গাঁজাস্টিয়া!

#লালন #লালনমেলা #কুষ্টিয়া #লালনআখড়া

একজন মা তার নিজের জীবনের চেয়ে তার সন্তানদের বেশী ভালোবাসে।নিজের সুখটাকে বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে...
17/10/2025

একজন মা তার নিজের জীবনের চেয়ে তার সন্তানদের বেশী ভালোবাসে।
নিজের সুখটাকে বিসর্জন দিয়ে সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবে সারাটা জীবন কষ্টে কাটিয়ে দেয়।
কিন্তু কোন একটা সময় আসে যে সন্তানদের কষ্ট করে বড় করে, তারা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।
আবার সেই সব সন্তানেরাই তাদের মা বাবার খোজ খবর নিতে পারে না, তাদেরকে বোঝা মনে হয়, তাদের শেষ স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রম🥲🥲🥲🥲

#লিখালিখি

16/10/2025

আমার বয়ফ্রেন্ড ও ফ্যামিলি অনেক সাপোর্ট দেয়। AI দিয়ে করা নাকি সত্যি বুজলাম না কিছুই।

ছবির ব্যক্তির নাম কিং বিলি। তাসমানিয়া দ্বীপের শেষ আদিবাসী পুরুষ তিনি। পশ্চিমারা এই জাতি ও জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছ...
16/10/2025

ছবির ব্যক্তির নাম কিং বিলি। তাসমানিয়া দ্বীপের শেষ আদিবাসী পুরুষ তিনি। পশ্চিমারা এই জাতি ও জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।
কিং বিলি নামটি দেওয়া হয়েছিল বিদ্রূপ করে। তার প্রকৃত নাম ছিল উইলিয়াম ল্যানি। জন্ম আনুমানিক ১৮৩৫ সালে, তাসমানিয়া দ্বীপে। তখন দ্বীপের নাম ছিল ভ্যান ডিমেনস ল্যান্ড।
এই আদিবাসীরা ছিল শান্তিপ্রিয়। তারা যুদ্ধ বা অস্ত্র চিনত না। তাদের একমাত্র চাওয়া ছিল "আমাদের শান্তিতে থাকতে দাও"।
কিন্তু যখন ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা এল, তারা ঘোষণা দিল, এই দ্বীপে কেউ নেই! শুরু হলো ১৯ শতকে এক ভয়ংকর গ.ণ.হ.ত্যা, যা পরিচিত "কালো যুদ্ধ" নামে।
আদিবাসীদের জমি থেকে উৎখাত করা হলো। পুরুষদের হ.ত্যা. করা হলো ।
নারী ও শিশুদের বন্দি করে পাঠানো হলো কথিত সভ্যতা শিবিরে।
সেখানে তারা মারা গেল নির্যাতন, রোগ ও অপুষ্টিতে।
উইলিয়াম ল্যানি ছিলেন সেই অল্প কয়েকজন শিশুর একজন, যিনি এই গ.ণ.হ.ত্যা থেকে বেঁচে যান। তাকে পাঠানো হয় ফ্লিন্ডার্স দ্বীপে, যেখানে তাকে "সভ্যতা ও উন্নয়ন" কর্মসূচির আওতায় রাখা হয়।
তিনি দেখলেন, তার জাতির সংখ্যা ১৫,০০০ থেকে কমে, মাত্র কয়েকজন হয়ে গেছে, শেষে শুধু তিনিই রইলেন।
পরে তিনি হোবার্ট শহরে চলে আসেন, সেখানে তিনি নাবিক হিসেবে কাজ করেন। ইউরোপীয়রা তাকে দেখতে লাগল এক "অন্যরকম" মানুষ হিসেবে- যাকে "নমুনা" হিসেবে সংরক্ষণ করার চিন্তা করল তারা।
তাকে দেওয়া হলো একটি ব্যঙ্গাত্মক উপাধি, কিং বিলি।
১৮৬৯ সালের ৩ মার্চ, মাত্র ৩৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান। সম্ভবত যক্ষ্মা বা নিউমোনিয়ায়।
কিন্তু মৃত্যুর পরও তার প্রতি অবমাননা থামেনি। তার দেহ নিয়ে শুরু হয় লড়াই- হোবার্টের ব্রিটিশ রাজকীয় জাদুঘর এবং স্থানীয় মেডিকেল কলেজের মধ্যে।
কে পাবে তার দেহ?
পরে তার মাথা কে.টে. নেওয়া হয়। চুরি করা হয় তার খুলি ও যৌ.না.ঙ্গ। তথাকথিত "নৃবিজ্ঞান" গবেষণার নামে। যা ছিল বর্ণবাদী শ্রেষ্ঠত্ব তত্ত্বের অংশ।
তাসমানিয়ার সরকার এখনও তাকে সম্মানের সাথে পুনঃসমাধিস্থ করার প্রচেষ্টা করছে ।

Address

Dhaka
1000

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when JR Masum posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share