16/07/2025
ডাকাত পরিবারে বিয়ে এবং তারপর
———————————————–––
না, এভাবে চুপচাপ বসে থেকে স্ত্রীর হাতে খু*ন হওয়ার কোনো মানে হয় না। যেভাবে হোক এ বাসা থেকে আমাকে পালাতে হবে। কিন্তু কিভাবে পালাবো, বুঝতে পারছি না।ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলাম এখন সময় রাত বারোটা সতেরো।মফস্বল শহরে এটা অনেক রাত। বিয়ে বাড়ির সবাই সারাদিন অনেক পরিশ্রম করেছেন। আমার ধারণা তারা সবাই হয়তো এতক্ষণে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। ঠিক করলাম, কনা বাথরুম থেকে আসার আগেই আমাকে এখান থেকে পালাতে হবে। ওই মেয়ের সামনে দিয়ে কোনভাবেই যাওয়া যাবে না। কারণ ঐ মেয়ে কুংফু-কারাতে জানে। হয়তো দেখা যাবে ফ্লাইং কিক মেরে দিয়েছে। তাই যা করার এখনই করতে হবে।
ঠিক করলাম আস্তে আস্তে দরজা খুলে বের হবো। তারপর দ্রুত কনার ভাই এর নাকে একটা, আর ভাবির নাকে একটা ঘুষি মারবো। না, ঐ মহিলা বড়ই বজ্জাত। উনাকে দুইটা ঘুষি মারতে হবে, একটায় কাজ হবে না। ঘুষি মেরে আর কোন দিকে তাকাবো না। যাস্ট চোখ বন্ধ করে একটা দৌড় দিবো।
প্রথমে শরীর থেকে শেরওয়ানি খুলে ফেললাম। কারণ এভাবে পালালে রাস্তার সব লোক তাকিয়ে থাকবে। পা টিপে টিপে হেঁটে দরজার কাছে আসলাম। আস্তে আস্তে দরজাটা একটু খুলে বাইরে তাকালাম। না কেউ নেই। হতে পারে ভাই-ভাবি বাথরুম বা অন্য কোথাও গিয়েছে। অবশ্য কোথায় গিয়েছে সেটা আমার চিন্তার বিষয় না। আমি আস্তে আস্তে রুমের বাইরে এলাম। তারপর ড্রইংরুমের ভেতর দিয়ে বাসার মূল দরজার দিকে অগ্রসর হলাম। কিন্তু ড্রইংরুমের মাঝামাঝি গিয়ে আমার পা ভয়ে জমে গেলো। কারণ দেখলাম সোফার উপর কনার দৈত্য মামা শুয়ে আছেন। তবে ভাগ্য ভালো তিনি জেগে নেই। তিনি রীতিমত নাক ডাকছেন। একবার মনে হলো বেটার ভুঁড়িতে একটা ঘুষি মারি। কারণ এই দৈত্যের জন্যই আজ আমাকে এই বাড়িতে রাত কাটাতে হচ্ছে। অনেক কষ্টে ঘুষি মারার ইচ্ছেটাকে দমন করলাম। কারণ উনার ভুঁড়ির যে সাইজ, আমার মতো মানুষ হাজারটা ঘুষি মারলেও এই দৈত্যের কিছুই হবে না।সময় নষ্ট না করে খুবই সতর্কতার সাথে দরজার ছিটকিনি খুলে বাসা থেকে বের হয়ে পড়লাম।
বাইরে বের হয়ে একটা রিক্সা নিয়ে সোজা বাসস্টেশনে চলে এলাম। বাসস্টেশনে এসে খোঁজ নিয়ে জানলাম রাতে আর কোনো বাস নেই। ভোর ছয়টা থেকে আবার বাস চালু হবে।বুঝলাম বাকি রাতটা এখানেই কাটাতে হবে।
বাসস্টেশনের একটা দোকানে বসে এক কাপ চা আর একটি সিগারেট নিলাম। আমি সাধারণত ধুমপান করি না। কিন্তু এখন কেন জানি মনে হলো সিগারেট ধরালে মনে সাহস বাড়বে। আমার ধারণা এতক্ষণে আমার খোঁজাখুঁজি শুরু হয়ে গেছে। আমি সিওর একটু পর খুঁজতে খুঁজতে ওরা এখানেও চলে আসবে। তবে যেই আসুক আমি আর ঐ বাড়িতে যাচ্ছি না। আমাকে খু*ন করতে হলে, এখানে সবার সামনেই করতে হবে।
বাসর রাতে বাসস্টেশনে বসে চা খেতে হবে তা কখনো ভাবিনি। রাগে ইচ্ছে হচ্ছে ঘটক বেটারে ধরে একটা আছাড় মারি। হঠাৎ মনে হলো, ঘটককে ফোন করে একটু গালাগাল করি। তাহলে হয়তো মনের রাগটা একটু কমবে। ফোন বের করে ঘটককে একটা ফোন দিলাম। কিন্তু ঘটক বেটা ফোন ধরলো না। বেশ কয়েকবার ফোন দেবার পর উনি ফোন ধরলেন। ঘুম জড়ানো কন্ঠে বললেন,
- কে ভাই এত রাতে ফোন করতেছেন?
- আমি তোর যম। আমার নাম রনি, আজ যারে তুই বিয়া দিছিস, আমি সেই লোক।
- হে হে হে...। ভাইজান কেমন আছেন? আমি তো ঘুমাচ্ছিলাম।
- বেটা বদ*মাশ আমার জীবনের বারোটা বাজায়ে তুমি এখন বউ এর পাশে শান্তিতে ঘুমাচ্ছো!
- হে হে হে..। কি যে কন ভাইজান, আমি তো অহনও বিয়াই করি নাই।
- ঐ তুই বিয়া করস নাই! সমস্যা নাই, শোন তোর বিয়া আমি করামু। আমারে তুই কুংফু জানা মেয়ের সাথে বিয়া দিছোস না? আমি তোরে সুমু কুস্তিগীর মাইয়ার সাথে বিয়া দিমু।
- হে হে হে...। তা দিয়েন। হেতি যদি বাংলা বুঝে তাইলে আমার কোন সমস্যা নাই। কারণ ভাইজান আমি আবার জাপানি ভাষা জানি না। আর জাপানি ভাষা এখন শিখতেও পারুম না। ছোটবেলা থেকেই আমার মেধা একটু কম আছে। হে হে হে...।
- খবরদার হে হে করবি না। আমি তোর সাথে মজা করছি না।
- হে হে হে....। ভাইজান সমস্যা কি?
আমনে মনে হয় খুউব রাইগা আছেন। যার কারণে আমনে আমারে তুই তুই করতেছেন।
- সমস্যা শুনতে চাস?
আজ আমার বাসর রাত, কোথায় বউ এর সাথে গল্প করবো, তা না আমি এখন বাসস্যান্ডে বসে চা খাচ্ছি।
- কেন ভাইজান! নতুন বউ কি আপনারে ঘর থাইক্যা বাইর কইরা দিসে?
- তোর কি মনে হয়?
ঘটক গলার আওয়াজ নিচু করে প্রায় ফিসফিস করে বললেন,
- ভাইজান, আমনের কি শারিরীক কোনো সমস্যা আছে?
তা সেটা আমারে আগে কইতেন, এক ডোজ হোমিওপ্যাথি ঔষধ বা হারবাল ঔষধ খাওয়ায় দিতাম। তারপর দেখতেন হে হে হে...।
- তোরে হাতের কাছে পাইলে, হোমিওপ্যাথি আর হারবাল আমি তোর...... (অপ্রকাশ যোগ্য) দিতাম।
- ভাইজান, আমনের মুখ তো খুবই খারাপ। হে হে হে...।
- খবরদার হে হে করবি না। বেটা ফাজিল ফোন রাখ।
- ভাইজান রাগ করেন কেন?
রাগ করলে তো আর সমস্যার সমাধান হইবে না। আমনের যে সমস্যা সেটার জন্য ঔষধ লাগবে। না হইলে তো বউ এর মন পাইবেন না। হে হে হে...।
- ঐ বদমাস বেটা তোরে আমি ফোন রাখতে কইছি। তুই ফোন রাখ। তু-ই-ই ফোওওন রাখ।
বলেই ফোনের লাইন কেটে দিলাম। ভেবেছিলাম ঘটকরে গালাগাল করলে রাগ কমবে। কিন্তু ঐ বেটা ঔষধের কথা বলে মেজাজটা আরও খারাপ করে দিলো। কত বড় ফা*জিল, বেটা আমারে রুগী বানায়ে দিলো!
ভাগ্য ভালো কেউই আমার খোঁজে রাতে আর বাসস্ট্যান্ডে এলো না। ভোর বেলা প্রথম বাসেই ঢাকা যাওয়ার টিকেট কেটে উঠে পড়লাম। বসলাম জানালার পাশে। আমিই বাসের প্রথম যাত্রী। অতি অল্প সময়ে পুরোটা বাসই ভরে গেলো। কেন জানি বাসে উঠলেই আমার ঘুম পায়। এখনও পাচ্ছে। কিন্তু ঘুমাতে পারছি না। কারণ আমি ঘুমালে আমার কোনো হুঁশ থাকে না। হয়তো দেখা যাবে ঘুমের মধ্যে পাশের যাত্রীর উপর ঢলে পড়েছি। পাশের যাত্রী পুরুষ হলে হয়তো সমস্যা হতো না। কিন্তু আমার পাশের সিটে বোরকা পরিহিত একজন ভদ্র মহিলা বসেছেন।
ঘন্টা খানিক অনেক কষ্টে চোখ খুলে রেখেছিলাম। এরপর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি বলতে পারবো না। ঘুম ভাঙার পর বুঝলাম আমি এতক্ষণ পাশে বসা মহিলার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলাম। পুরোটা বাস ফাঁকা। সবাই নেমে গেছে। সম্ভবত মহিলা আমার জন্য নামতে পারেনি। আমি ভীষণ লজ্জিত হয়ে বললাম,
- চাচী আমি সত্যিই লজ্জিত। আপনাকে অনেক কষ্ট দিলাম।
ভদ্র মহিলা কোনো কিছু না বলেই বাস থেকে নেমে গেলেন।
প্রচণ্ড ক্ষিদে পেয়েছে। বাস থেকে নেমে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। তারপর গরুর মাংস দিয়ে পরোটা খেলাম। এরপর আয়েশ করে চায়ে চুমুক দিলাম। এখন নিজেকে খুবই হাল্কা মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমি এক মুক্ত বিহঙ্গ।
বাসায় গিয়ে কলিংবেল বাজাতেই মা দরজা খুলে দিলেন। ভেবেছিলাম এভাবে আমাকে দেখে মা হয়তো অবাক হবেন। কিন্তু তার চেহারায় অবাক হওয়ার কোন লক্ষণ খুঁজে পেলাম না। আমি ঘরে ঢুকেই বললাম,
- মা শোনো, আমি শ্বশুর বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। আচ্ছা মা, তোমরা শেষ পর্যন্ত আমাকে একটা ডাকাত পরিবারে বিয়ে দিলে?
- কি যা তা বলছিস?
- না মা, আমা যা-তা বলছি না। ইহা একশত ভাগ সত্য।
- কিন্তু ঘটক তো বলল, ওরা খুবই বড় বংশ।
- অবশ্যই বড় বংশ, তবে ডাকাত বংশ। তুমি জানো, মেয়ে বালিশের নিচে হাতুড়ি রাখে।
- তাই নাকি!
- তাহলে আর কি বলছি। আমি না পালালে ঐ মেয়ে গতরাতে হাতুড়ি দিয়ে আমার মাথা ফাটিয়ে ফেলতো। তুমি আমার জানের সদকায় দশজন ফকির খাইয়ে দিও। শোনো বিয়ের বাকি আয়োজন ক্যানসেল। আগামীকালের বৌ-ভাতে আমি নাই। আর একটি কথা,আমি একটু পরেই ব্যাগ-ট্যাগ গুছিয়ে বাসা থেকে পালাচ্ছি।
- মানে কি! তুই কই পালাবি?
- ভাবছি কক্সবাজার চলে যাবো। ওখানে তো পরশুদিন হানিমুনে যাওয়ার কথা ছিলো। হোটেল যেহেতু বুক করা আছে, সমস্যা হবে না। তবে একটা কথা, আমি যে কক্সবাজার যাচ্ছি তুমি সেটা কাউকে বলবে না। আমার শ্বশুর বাড়ির কেউ আমার কথা জিজ্ঞেস করলে বলবে, পাশের বাসার এক মেয়েকে নিয়ে আমি পালিয়েছি। দেখবে এই কথা শুনলে আমার বউ এমনিতেই আমাকে ডিভোর্স দিয়ে দেবে।
মা কিছুই বললেন না। শুধু রহস্যময় একটা হাসি দিলেন। মায়ের রহস্যভরা হাসি নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় আমার নেই। রুমে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে এখনই পালাতে হবে। আমি আমার রুমে ঢুকলাম। রুমে ঢুকেই আমি ভয়ে পাথর হয়ে গেলাম। দেখলাম আমার বিছানার উপর একটা বোরকা পড়ে আছে। আমি ভয়ার্ত কন্ঠে মা মা বলে ডাকলাম। কিন্তু মা কোনো সাড়া দিলেন না বা আমার রুমেও এলেন না। আমি আবার মাকে ডাকতে মুখ খুলবো, ঠিক তখনই কনা বাথরুম থেকে বের হয়ে এলো। বুঝলাম এ কারণেই মা আমাকে দেখে অবাক হননি। কনা বের হয়েই বললো,
- মা, মা করছো কেনো?
আমি কনাকে দেখেই মনে হলো ভুত দেখলাম। আমি ভয়ে তোতলাতে তোতলাতে বললাম,
- আ-আপনি !
- জি, আমি। তোমার চাচী। বাসে যার কাঁধে মাথা রেখে সারা রাস্তা ঘুমিয়েছিলে। শোনো বোরকা শুধু চাচী-খালারা পড়ে না। বোরকা যে কেউ পড়তে পারে। খবরদার জীবনে আর কখনো বোরকা পড়া কাউকে, না জেনে চাচী ডাকবে না।
- মাইগড, ওটা আপনি ছিলেন! আপনি তো ভয়ঙ্কর মেয়ে। আপনি আমার পিছন পিছন চলে এসেছেন?
- তুমি কি ভেবেছো, তোমাকে আমি এতো সহজে ছেড়ে দেবো? শোনো তোমার জন্য আমার বাসর রাত মিস হয়েছে।এই কথা আমি জীবনেও ভুলবো না। এর খেসারত তোমাকে সারাজীবন দিতে হবে।
নতুন বউ এর হুমকিতে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। একটা মেয়ে তার নতুন স্বামীকে এইভাবে থ্রেট করতে পারে তা আমার জানা ছিলো না।
বোকার মত দাঁড়িয়ে থেকো না। জার্নি করে এসেছো, যাও গোসল করে এসো। আর আসার সময় ওজু করে আসবে একসাথে নামাজ পড়বো। কাল রাতে বিয়ের শোকরানা নফল নামাজ না পড়েই তুমি পালিয়েছো।
আমার মুখ দিয়ে কোন কথাই বের হলো না। শুধু মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানালাম। বাথরুমে ঢুকতে যাবো এসময় হঠাৎ করেই কনা এসে আমার মুখোমুখি দাঁড়ালো। আমি ভাবলাম, হয়তো ভালোবেসে একটু জড়িয়ে ধরবে। কিন্তু তা না করে, সরাসরি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
- তোমার মাস্ক কই? তোমাকে না বলেছি সব সময় মাস্ক পড়ে থাকতে? ইতালিয়ান ভাষা বুঝো, বাংলা ভাষা বোঝো না?
এবারও মুখে কিছু বললাম না। তবে মনে মনে বললাম-
সন্ত্রাসী মহিলা, তুই তো আমারে মরার আগেই হাতুড়ি দিয়া খু*ন করবি। তাহলে আমার মাস্ক পড়ার দরকার টা কি?
- চুপ করে আছো কেন? কথা বলছো না কেন?
- শোনেন, কুংফু জানা বউ এর সামনে স্বামীদের চুপ করে থাকাই সমীচীন। না হলে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হবার সমূহ সম্ভাবনা আছে।
আমার কথা শুনে কনা খিলখিল করে হেসে উঠলো। মনে মনে বললাম, ডাকাত মেয়ে তুমি যতই হাসো, আমি তোমার মিষ্টি হাসিতে ভুলছি না।
আমি বাথরুমে ঢুকতে যাবো, সে সময় পিছন থেকে আবার বলে উঠলো,
- শোনো আবার পালানোর চিন্তা মাথায় এনো না। আর আনলেও কোনো লাভ হবে না। কারণ আমি মাকে বলে দিয়েছি তুমি ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই মেইন দরজায় তালা দিয়ে দিতে। সম্ভবত সেটা এতক্ষণে দেওয়া হয়ে গেছে।
আমি তার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে হতাশ, ক্লান্ত পদক্ষেপে বাথরুমে ঢুকে গেলাম।
না, এ মেয়ের সাথে কোনো ভাবেই সারাজীবন থাকা সম্ভব না। নতুন অবস্থায় সে যেভাবে খবরদারি করছে, তাতে তো আমার ভবিষ্যৎ অন্ধকার। আমাকে আবার পালাতে হবে।মূল দরজায় তালা লাগিয়ে আমাকে আটকানো যাবে না।সপ্তম শ্রেণী থেকে এ পর্যন্ত জীবনে বহুবার, আমি আমার বাথরুমের জানালা খুলে বাসা থেকে পালিয়েছি। এটা আমার কাছে কোনো ব্যাপারই না। বাথরুমে ঢুকে প্রথমেই বাথরুমের সবগুলো পানির নল ছেড়ে দিলাম। তারপর বাথরুমে লুকিয়ে রাখা স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে একে একে বাথরুমের জানালার সবগুলো স্ক্রু খুলে ফেললাম।
(চলবে)
ইমদাদ বাবু