23/04/2025
যখন জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে কেউ দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে তখন প্রশ্ন ওঠে, সে কার হয়ে কথা বলছে? সম্প্রতি একজন বাংলাদেশি নাগরিক জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা শোনার পর মনে হয়, কিছু মানুষ দেশের ভেতরের দ্বন্দ্ব, মতবিরোধ কিংবা রাজনৈতিক দাবিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরে একপেশেভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চাইছে।
কথিত ‘আদিবাসী নারী’ পরিচয়ে অগাস্টিনা চাকমা জাতিসংঘে যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে দেখা গেছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ‘দমনমূলক শক্তি’, বাঙালিদের ‘দখলদার’ আর পাহাড়িদের ‘নিপীড়িত জাতি’ হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা। প্রশ্ন হলো এই বক্তব্যের পেছনে উদ্দেশ্য কী? শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ রুদ্ধ করে, একটি অঞ্চলকে বিচ্ছিন্নতার দিকে ঠেলে দেওয়া?
বাংলাদেশের সংবিধান প্রত্যেক নাগরিককে দেশের যেকোনো জায়গায় বসবাসের অধিকার দিয়েছে। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের বসবাস কীভাবে অন্যায় হয়ে যায়? সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কেন 'অবৈধ দখল' হবে, যখন তারা বছর পর বছর উন্নয়ন, সেবা ও শান্তি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে?
আমরা ভুলে গেলে চলবে না, সেই পার্বত্য অঞ্চলেই সেনাবাহিনীর হাত ধরেই স্কুল, হাসপাতাল, সড়ক, বিদ্যুৎ ও পানি পৌঁছেছে। আর এই উন্নয়ন যাদের গায়ের চামড়ায় ঘা দিচ্ছে, তারাই আজ আন্তর্জাতিক মহলে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনী ও রাষ্ট্রকে দায়ী করছে!
এই বক্তব্য শুধু একপেশে নয়, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। কারণ এখানে কোনো ভারসাম্য নেই, নেই বাস্তবতা তুলে ধরা আছে কেবল একতরফা অভিযোগ, যেগুলো পরোক্ষভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে।
কিন্তু সবচেয়ে দুঃখজনক হলো এই বক্তৃতা আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি কুড়ানোর চেষ্টা মাত্র, যেখানে দেশের নিরাপত্তা, সংবিধান ও সার্বভৌমত্বকে সস্তা রাজনীতির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
আমরা যারা বাংলাদেশে বসবাস করি, পাহাড় সমতলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চাই, তাদের জন্য এই ধরনের বক্তব্য অপমানজনক ও উদ্বেগজনক। এটি কোনো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয় এটি পরোক্ষভাবে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্তের অংশ।