30/08/2024
আজকের জুমার খুতবার সারাংশ
বাইতুল আতিক জামে মসজিদ কমপ্লেক্স
৩০/৮/২০২৪
ইসলামে খিলাফাহ রাষ্ট্র নির্মাণের গুরুত্ব
*****************************
🎤 প্রিয় নবীজির নেতৃত্বে ইসলামী খিলাফাহ রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। খেলাফাহ বলা হয় এমন এক রাষ্ট্রব্যবস্থাকে যা আল্লাহ প্রদত্ত বিধি-বিধান দ্বারা পরিচালিত হয়। যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা জনগণের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জিম্মাদারী পালন করে এবং রাষ্ট্রের আনাচে-কানাচ থেকে জুলুম ও বিচারের ময়লা আবর্জনা দূর করে। ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করে।
পৃথিবীর ইতিহাসের সবচাইতে ইনসাফপূর্ণ সোনালী সমাজ গড়ে তুলেছিল প্রিয় নবীজির এই খিলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এই রাষ্ট্র ব্যবস্থা ছিল পুর্ন বৈষম্য মুক্ত। জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। সর্বকালের সেরা রাষ্ট্র ব্যবস্থা খেলাফাহ রাষ্ট্র ব্যবস্থা। খেলাফাহ রাষ্ট্র ব্যবস্থা জনগণের জন্য দুনিয়ার জান্নাত।
🎤নবীজী (সা:)’র প্রতিষ্ঠিত সে রাষ্ট্রের আয়তন তাঁর জীবদ্দশাতেই বাংলাদেশের চেয়ে প্রায় ২০ গুণ বৃহৎ ছিল। সাহাবীগণ সে রাষ্ট্রকে বাংলাদেশের চেয়ে ৮০ গুণেরও বেশি বৃহৎ রাষ্ট্রে পরিণত করেন। ফলে মুসলিমগণ পরিণত হয় বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিশ্বশক্তিতে।
🎤আমাদের উপলব্ধি করতে হবে মুসলমানদের মুসলমান হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন এই খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা। খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা ছাড়া মুসলমানদের মুসলমান হিসেবে বেঁচে থাকাও কঠিন।
আজ আমাদের দুর্ভাগ্য প্রিয় নবীজীর খিলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থার রূপরেখা সামনে থাকা সত্ত্বেও আজকের মুসলমান ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা না দিয়ে দেশে দেশে প্রতিষ্ঠা দিচ্ছে সেক্যুলার জাতীয়তাবাদী, ফ্যাসিবাদী ও রাজতন্ত্রী রাষ্ট্র ব্যবস্থা। আর এ রাষ্ট্র ব্যবস্থার অধীনে প্রকৃত ঈমানদার রূপে বেড়ে উঠার কাজটি শুধু কঠিনই হয় না, বরং অসম্ভব হচ্ছে।
🎤আমাদেরকে আগামী দিনে মানব রচিত কাল্পনিক রাষ্ট্রচিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে আল্লাহ প্রদত্ত খিলাফাহ রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। তাহলে আমরা আমাদের আকাঙ্ক্ষিত সুন্দর পৃথিবী দেখতে পাবো।
মুসলমান হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন খিলাফাহ-
জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি ধর্ম রাষ্ট্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়-
************************************
একটি রাষ্ট্রের হাতে শুধু একটি ভৌগলিক মানচিত্র ও পতাকা থাকে না, থাকে প্রশাসন, আইন-আদালত, শিক্ষা-সংস্কৃতি, রাজনীতি ও সেনাবাহিনী।
প্রতিটি রাষ্ট্রের বুকে সে রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠিই জনগণের ধর্মীয় সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক চিন্তাধারা তৈরি করে থাকে। রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গির মোকাবেলা করার সাধ্য সকলের থাকে না। এক পর্যায়ে জনগণ রাষ্ট্রীয় দৃষ্টিভঙ্গিতেই গড়ে উঠে।
👉রোমান সম্রাট কনস্টানটাইন যখন খৃষ্টান ধর্ম গ্রহণ করে তখন সে রাজ্যের প্রজাগণ তাদের পূর্বের ধর্মে স্থির থাকতে পারেনি। বরং বাস্তবতা হলো, রাজকীয় শক্তির বলে প্রজাদের নিজ ধর্মে স্থির থাকতে দেয়া হয়নি। সবাইকে রাজার ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হয়।
👉একই কারণে ফিরাউনের রাজ্যের সবাইকে বাধ্য করা হয় দুর্বৃত্ত ফিরাউনকে খোদা বলতে।
👉কম্যুনিস্টদের হাতে রাশিয়া অধিকৃত হওয়ার পর সে দেশের মুসলিমদেরও বাধ্য করা হয় কম্যুনিজমের স্রোতে ভেসে যেতে। তাদেরকে নাস্তিক হতে বাধ্য করা হয়।
কাজেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা দ্বারা মানুষ ধর্ম কতটুকু পালন করবে তা নির্ধারিত হয়। রাষ্ট্র যতটুকু অনুমোদন করে ততটুকু ধর্ম পালনের সুযোগ থাকে রাষ্ট্র যার অনুমতি দেয় না তা পালন করার সুযোগ হয়ে ওঠেনা।
অনৈসলামিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা-
প্রধান সমস্যা শরীয়ত প্রতিষ্ঠিত না থাকায়
আংশিক ইসলাম পালন পালন করা হয়-
**************************************
রাষ্ট্র পর্যায়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা না করার সবচেয়ে ভয়ানক বিপদ হলো, এমন রাষ্ট্রে মুসলিমদেরকে বাস করতে হয় র্শরিয়তী আইনকে বাদ দিয়ে এবং এ রাষ্ট্রে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার জিহাদ বাদ দিয়ে একজন মুসলিমকে প্রতি মুহূর্ত যুদ্ধ করতে হয় শয়তানী শক্তির শাসন বাঁচাতে।
ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱللَّهِۖ وَٱلَّذِینَ كَفَرُوا۟ یُقَـٰتِلُونَ فِی سَبِیلِ ٱلطَّـٰغُوتِ
[Surah An-Nisāʾ: 76]
যেমন বৃটিশ শাসনামলে বহু লক্ষ ভারতীয় মুসলিম যুদ্ধ করেছে ব্রিটিশ শাসন বাঁচাতে। তাদেরকে ব্রিটিশের অধীনে যুদ্ধ করতে হয়েছে উসমানিয়া খলিফার বিরুদ্ধেও। অথচ সেটি তাদের জন্য হারাম ছিল। মুসলিম হওয়ার জন্য শুধু নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাত ও দোয়া-দরুদ পালন করাই যথেষ্ট নয়, বরং বাঁচতে হয় হারাম কাজ থেকেও।
এই ব্যবস্থাপনায় অল্প কিছু মানুষ অন্য রাষ্ট্রের জনগণকে জিম্মি করে নিজে চিন্তা ধারাকে বাস্তবায়ন করে। প্রশাসন বিভাগ সেই চিন্তা ধারা বাস্তবায়নে জনগণের উপর প্রভাব বিস্তার করে।
এই ব্যবস্থাপনার অধীনে একজন নাগরিকের শাসকের চিন্তাধারার বিপরীত নিজ ধর্মীয় অনুভূতি প্রকাশের সুযোগ থাকে না। রাষ্ট্রের পরিষ্কার মেসেজ থাকে এ চিন্তাধারার বাইরে রাষ্ট্রে বসবাসের সুযোগ থাকবে না
যেমন দীর্ঘ 16 বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের তথাকথিত অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে একটি নতুন ধর্ম হিসেবে অন্য দেশের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল। এর বিরোধিতা করা ছিল রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ। রাষ্ট্রের প্রশাসন গুলো এর বিপরীত চিন্তা নির্মূলে সর্বশক্তি প্রয়োগ করছিল।
রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের অজুহাতে যারা এ চেতনা প্রতিষ্ঠায় ধার্মিকদের উপর অত্যাচার চালিয়েছিল এরা কি জানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে তারা নিজ ধর্মের সাথে বিদ্রোহ করছিল।
শরীয়ত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা মুসলমানদের ফরজ এবাদত
*******************************************
🎤প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ হলো শরিয়তী আইন অনুযায়ী বিচার ব্যবস্থা করে তোলা। শরিয়তী আইনের পূর্ণ পালন ছাড়া মহান আল্লাহ তায়ালার নিরঙ্কুশ ক্ষমতার কাছে আত্মসমর্পণহয়না। আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ হয়।
পবিত্র কুর’আনে তাদেরকে কাফির, জালিম ও ফাসিক বলা হয়েছে। সে ঘোষণাটি এসেছে সুরা মায়েদার ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ আয়াতে। অথচ আদালতে শরিয়ত পালনের কাজটি একমাত্র তখনই সম্ভব হয় যখন প্রতিষ্ঠা পায় ইসলামী রাষ্ট্র।
وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡكَـٰفِرُونَ (44)
وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلظَّـٰلِمُونَ (45
وَمَن لَّمۡ یَحۡكُم بِمَاۤ أَنزَلَ ٱللَّهُ فَأُو۟لَـٰۤىِٕكَ هُمُ ٱلۡفَـٰسِقُونَ (47)
🎤 ইসলামী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ছাড়া শরিয়তী আইন শুধু কিতাবেই থেকে যায়। তখন ইসলাম শুধু নামাজ-রোজা, হজ্জ-যাকাত ও তাসবিহ পাঠের মাঝে সীমিত হয়ে যায় -যেমন দেখা যায় আজকের মুসলিমদের মাঝে। এরা বাঁচছে পূর্ণ ইসলাম পালন না করেই। অথচ ইসলামের এরূপ আংশিক পালন মহান আল্লাহতায়ালার কাছে আদৌ গ্রহনযোগ্য নয়।
{ یَـٰۤأَیُّهَا ٱلَّذِینَ ءَامَنُوا۟ ٱدۡخُلُوا۟ فِی ٱلسِّلۡمِ كَاۤفَّةࣰ
[Surah Al-Baqarah: 208]
তিনি চান পবিত্র কুর’আনে ঘোষিত প্রতিটি বিধানের প্রতি পূর্ণ আত্মসমর্পণ। যে কোন একটি আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ তথা সে আইনের প্রয়োগ না করাটি ইসলামে গুরুতর অপরাধ।
🎤শরিয়তী আইনে বিচারের কাজটি মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসার মোহাদ্দেস বা কোন পীর সাহেবের নয়। লক্ষ লক্ষ মসজিদ এবং হাজার হাজার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠান দিয়ে সে কাজটি হয়না। কারণ মসজিদ-মাদ্রাসার হাতে ইসলামী বিধান শিক্ষাদানের সামর্থ্য থাকলেও সেগুলির হাতে সে বিধানগুলিকে কার্যকর করার সামর্থ্য থাকে না। এমন কি নামাজী, রোজাদার ও হাজীদের সংখ্যা বিপুল বাড়লেও সে লক্ষ্য সাধিত হয়না। এ লক্ষ সাধিত হয় খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে। এজন্যই দ্বীন প্রতিষ্ঠা ফরজ।
🎤আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় নবী (সা:)কে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী হওয়ার জন্য দোয়া করতে শিখিয়েছেন। নবীজী (সা:)কে সে বিশেষ দোয়াটি শিখিয়েছেন সুরা বনি ইসরাইলের (সুরা ইসরা’র) ৮০ নম্বর আয়াতে। বলা হয়েছে:
وَقُل رَّبِّ أَدْخِلْنِى مُدْخَلَ صِدْقٍۢ وَأَخْرِجْنِى مُخْرَجَ صِدْقٍۢ وَٱجْعَل لِّى مِن لَّدُنكَ سُلْطَـٰنًۭا نَّصِيرًۭا
অর্থ: “(হে রাসূল!) বলুন, হে আমার রব, আমাকে (মদিনায়) প্রবেশ করান সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে এবং আমাকে (মক্কা থেকে) বের করুন সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে এবং আপনার নিকটি থেকে আমাকে দান করুন সাহায্যকারী নির্বাহী (রাষ্ট্রীয়) শক্তি।”
নবীজী (সা:) উপরিউক্ত দোয়াটি পাঠ করেছেন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের সময়। নবীজী (সা:)’র সে বিশেষ আমলটি হলো, মদিনায় প্রবেশের সাথে সাথে তিনি প্রতিষ্ঠা দেন ইসলামী রাষ্ট্রের।
অনৈসলামিক রাষ্ট্র জাহান্নামের বাহন
****************************
অনৈসলামিক রাষ্ট্র জনগণকে জাহান্নামে নেয়ার বাহন। রাষ্ট্রই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। এবং প্রতিটি রাষ্ট্রে সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি হলো তার শাসক।
শাসকের হাতে থাকে রাজনীতি, প্রশাসন, শিক্ষাব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা, আইনপ্রণয়ন, মিডিয়া, পুলিশ ও সেনাবাহিনী -তথা রাষ্ট্রকে ও রাষ্ট্রের জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সকল হাতিয়ার। এজন্যই রাষ্ট্রকে জাহান্নামের বাহনে পরিণত করা শাসকশক্তির জন্য সহজ হয়ে যায়। রাষ্ট্র তখন শয়তানের হাতিয়ারে পরিণত হয়।
রাষ্ট্রীয় শক্তি হাতে থাকায় ফিরাউন ও নমরুদের ন্যায় জালেম শাসকগণও নিজেদেরকে খোদা রূপে প্রতিষ্ঠা দিতে পেরেছিল। এজন্যই ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ এবাদত হল শয়তানী শক্তির দখলদারি থেকে দেশকে মুক্ত করা এবং সে ভূমিতে ইসলামী রাষ্ট্রের নির্মাণ। ইসলামে এটি পবিত্র জিহাদ।
খেলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা জান্নাতের বাহন
********************************
খিলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থা জনগণকে জান্নাতে নেয়ার বাহন। এই ব্যবস্থাপনা দ্বারা দেশের কোটি কোটি মানুষকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর কাজটি সহজ হয়ে যায়। এর চেয়ে অধিক কল্যাণকর্ম এ পৃথিবী পৃষ্ঠে দ্বিতীয়টি নাই।
আজকের বাংলাদেশ কোন পথে
**************************
রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জনগণের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের ফিকির না করা হলে মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তা-ঘাট ও কল-কারখানায় দেশ ভরে ফেললেও কোন লাভ হয়না। কারণ, সে রাষ্ট্রে জান্নাতের উপযোগী মানুষ গড়ার কাজটি হয়না। বরং রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় জাহান্নামের উপযোগী বিপুল সংখ্যক মানুষ।
ফলে এমন দেশে চুরিডাকাতি, ভোটডাকাতি, ব্যাংক লুট, ট্রেজারী লুট,গণহত্যা ও দুর্বৃত্তিতে প্লাবন আনতে লোকের অভাব হয়না। সেটির জাজ্বল্যমান প্রমাণ হলো আজকের বাংলাদেশ।
এদেশটিতে যেরূপ বিপুল সংখ্যক মসজিদ-মাদ্রাসা, তা বিশ্বের আর কোন দেশে নাই। তাবলিগ জামায়াতের এতো অনুসারীও অন্য কোন দেশে নাই। দেশটিতে রয়েছে লক্ষাধিক হাফিজে কুর’আন। কিন্তু দেশটি দুর্নীতিতে এ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বে ৫ বার প্রথম হয়েছে।
অতএব এতো মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ করে আমরা সফল হতে পারিনি। দেশবাসীকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচানোর সর্বশ্রেষ্ঠ হাতিয়ার হলো ইসলামী রাষ্ট্র। কারণ, এ কাজে রাষ্ট্রের হাতে থাকে শিক্ষানীতি, রাজনীতি, বুদ্ধিবৃত্তি ও প্রশাসনসহ প্রয়োজনীয় সকল সামর্থ্য।
নবীজির সাহাবায়ে কেরাম - বিপরীতে আজকের পৃথিবী
******************************************
🎤নবীজী (সা:) ওফাতের পর সাহাবায়ে কেরাম ঐক্যবদ্ধভাবে প্রিয় নবীজির দাফর কাফনের আগে নিজেদের খলিফা নির্ধারণ করেছেন খেলাফত রক্ষার্থে। আজ ৫০টির বেশি রাষ্ট্রে বিভক্ত মুসলিম ভূমির কোথাও ইসলামী খিলাফাহ নেই। বরং প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাতীয়তাবাদী, গোত্রবাদী, ফ্যাসিবাদী, রাজতন্ত্রী ও সেক্যুলার রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রগুলো মুসলিম জনসাধারণের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জিম্মাদারী বহন করছে না।
🎤আজ মুসলমানের সন্তান তার ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। ধর্ম থেকে দূরে সরানোর সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ারটি কোন মন্দির-মন্ডপ বা গীর্জা নয়; কোন ধর্মগুরুও নয়। সেটি হলো রাষ্ট্র। কারণ রাষ্ট্রের হাতে আছে জনগণকে প্রভাবিত করার সকল সামর্থ্য। এজন্যই শয়তানের চিরাচরিত স্ট্র্যাটিজি হলো, রাষ্ট্রকে ইসলামের বিরুদ্ধে হাতিয়ার রূপে ব্যবহার করা।
🎤পৌত্তলিক গ্রীক ও রোমানদের শাসনামলে রাষ্ট্রের সে ষড়যন্ত্র ও নাশকতা দেখা গেছে ইহুদী ও খৃষ্টান ধর্মের বিরুদ্ধে। সেসব জালেম শাসকদের হাত থেকে তাওরাত ও ইঞ্জিলের বিশুদ্ধতা বাঁচেনি। এবং কোন রাষ্ট্রেই প্রতিষ্ঠার সুযোগ পায়নি তাওরাতে প্রদত্ত শরিয়তী আইন।
আজ মুসলিম নামধারী জালেম শাসকদের হাতে ইসলাম বন্দী। তারা কোরআন পরিবর্তনের সুযোগ পাচ্ছে না। তবে ইসলামের খন্ডিত অংশ প্রচারের সুযোগ দিচ্ছে আর বাকি অংশের ব্যাপারে জনসাধারণের মাঝে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করছে। নামধারী মুসলিম শাসক ও রাষ্ট্র দ্বারা ধর্ম সম্পর্কে বিভ্রান্ত হচ্ছে মুসলমান।
পরিবর্তন জন্যই লড়তে হবে
*********************
একটি পরিবর্তনের জন্য লড়তে হবে। লড়াই দ্বারা অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। প্রথম লড়াইটা বুদ্ধিবৃত্তিক। ইসলাম বিজয়ী হবে। এটা আল্লাহর ওয়াদা। আমাদেরকে সহ অথবা আমাদের ছাড়া। সকল প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করে ইসলামের খেদমতে আমাদের অংশগ্রহণ করতে হবে নিজেদের স্বার্থে।
M***i Saeed Ahmad