পারি

পারি A Quarterly Women Empowering CRITIC Publication. বাংলা ভাষায় প্রকাশিত নারী বিষয়ক ত্রৈমাসিক পত্রিকা...

পারি’র জন্য লিখুন...
21/07/2025

পারি’র জন্য লিখুন...

বনি টিবারজি কাপুটো: আকাশের ইতিহাসে এক নারীর সাহসী পদচারণাপারি প্রতিবেদন ॥ বনি টিবারজি কাপুটো কেবল ককপিটে প্রবেশ করেননি—ত...
26/06/2025

বনি টিবারজি কাপুটো: আকাশের ইতিহাসে এক নারীর সাহসী পদচারণা

পারি প্রতিবেদন ॥

বনি টিবারজি কাপুটো কেবল ককপিটে প্রবেশ করেননি—তিনি যেন আকাশযাত্রায় নারীদের জন্য দরজাই ভেঙে দিয়েছিলেন। ১৯৭৩ সালে, মাত্র ২৪ বছর বয়সে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী হিসেবে একটি বড় বিমান সংস্থায়—আমেরিকান এয়ারলাইন্সে—পাইলট হিসেবে নিয়োগ পান। কিন্তু এই অর্জনের পথ ছিল না সহজ।

সে সময় বিমানচালনার জগৎ ছিল পুরুষদের একচেটিয়া এলাকা—এমন এক সংস্কৃতি যেখানে বিশ্বাস করা হতো, ককপিটে নারীর কোনো স্থান নেই। যখন বনি প্রথম আবেদন করেন, তখন আমেরিকান এয়ারলাইন্স স্পষ্টই জানিয়ে দেয়: “আমরা নারী পাইলট নিয়োগ দিই না।”

কিন্তু বনি ছিলেন অন্য ধাতুতে গড়া। ষোলো বছর বয়স থেকেই আকাশপথে তার যাত্রা শুরু—তিনি ছিলেন একজন দক্ষ ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর, বাণিজ্যিক লাইসেন্সধারী পাইলট। এরপরও একের পর এক বিমান সংস্থা তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। অবশেষে ১৯৭৩ সালে, ‘ইকুয়াল এমপ্লয়মেন্ট অপারচুনিটি অ্যাক্ট’-এর প্রভাবে আমেরিকান এয়ারলাইন্স তাকে সুযোগ দিতে বাধ্য হয়।

প্রথম দিন ইউনিফর্ম পরে তিনি যখন পুরুষ পাইলটদের ভরা কক্ষে প্রবেশ করেন, তখন অনেকেই তাকিয়ে থাকে, কেউ কেউ ফিসফিস করে, আবার কেউ তো সরাসরি তার সঙ্গে উড়তেও অস্বীকৃতি জানায়। ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্টরা ধরেই নেন তিনি তাদেরই একজন, কেউ কেউ যাত্রীদের জন্য তার হাতে কফিও তুলে দেন।

আর যাত্রীরা? মাঝআকাশে বিমানের ঘোষণা শুনে অনেকে অবাক হয়ে ভাবতে বাধ্য হন—“একজন নারী পাইলট!”

কিন্তু বনি উড়তেন আত্মবিশ্বাস নিয়ে, নিখুঁত দক্ষতায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার দৃঢ়তা ও নিষ্ঠাই হয়ে উঠল তার জবাব—যা বদলে দিয়েছিল সন্দেহভাজন চোখগুলিকে।

তবে তিনি ছিলেন প্রতিনিয়ত লড়াইয়ের মধ্যে। কেউ বলতো, নারীর জায়গা নাকি রান্নাঘরে—not in the sky! কেউ প্রশ্ন তুলতো—বনি কী ঝড়ঝঞ্ঝার মধ্যে বিমান সামলাতে পারবেন? কেউ আবার ধরে নিয়েছিল, তিনি নিশ্চয়ই বিয়ের পর এই চাকরি ছেড়ে দেবেন!

সব ধারণা ভুল প্রমাণ করে বনি হাজার হাজার ঘণ্টা বিমান চালিয়েছেন। বোয়িং ৭২৭ থেকে শুরু করে ৭৪৭—তিনি আকাশ জয় করেছেন দেশ-বিদেশে, দিনের পর দিন।

তাঁর এই বিজয় কেবল ব্যক্তিগত নয়—এটি বদলে দেয় গোটা একটি শিল্পকে। তাঁর পথ ধরে আরও অনেক নারী বিমান সংস্থায় সুযোগ পেতে শুরু করেন। আজও যদিও নারীরা বৈমানিক হিসেবে এখনও সংখ্যালঘু, তবুও বনি টিবারজি কাপুটো যেমন পথ দেখিয়েছিলেন, তেমনি তার উত্তরসূরি ক্যাপ্টেন ট্যামি জো শাল্টস (যিনি Southwest Flight 1380-এর ইঞ্জিন বিস্ফোরণের পর দক্ষ হাতে অবতরণ করান) সেই পথেই চলেছেন।

বেশ্যাকাজী নজরুল ইসলামসাধুর নগরে বেশ্যা মরেছে পাপের হয়েছে শেষ,বেশ্যার লাশ হবে না দাফন এইটা সাধুর দেশ। জীবিত বেশ্যা ভোগে ...
25/06/2025

বেশ্যা

কাজী নজরুল ইসলাম

সাধুর নগরে বেশ্যা মরেছে পাপের হয়েছে শেষ,
বেশ্যার লাশ হবে না দাফন এইটা সাধুর দেশ।
জীবিত বেশ্যা ভোগে তো আচ্ছা, মরিলেই যত দোস?
দাফন কাফন হবে না এখন সবে করে ফোস ফোস।

বেশ্যা তো ছিল খাস মাল, তোদের রাতের রানী,
দিনের বেলায় ভুরু কোচ কাও? মরিলে দেওনা পানি!
সাধু সুনামের ভেক ধরিয়া দেখালি দারুন খেলা,
মুখোশ তোদের খুলবে অচিরে আসবে তোদের বেলা।

রাতের আধারে বেশ্যার ঘর স্বর্গ তোদের কাছে,
দিনের আলোতে চিননা তাহারে? তাকাও নাকো লাজে!
চিনি চিনি ভাই সব সাধু রেই হরেক রকম সাজ,
সুযোগ পেলেই দরবেশী ছেরে দেখাও উদ্দাম নাচ!

নারী আমাদের মায়ের জাতি বেশ্যা বানালো কে?
ভদ্র সমাজে সতীর ছেলেরা খদ্দের সেজেছে?
গরীবের বৌ সস্তা জিনিস সবাই ডাকো ভাবি,
সুযোগ পেলেই প্রস্তাব দাও আদিম পাপের দাবি।

স্বামী যখন মরলো ভাবির দুধের শিশু কোলে,
ভদ্র দেবর সুযোগ খোঁজে সহানুভূতির ছলে,
দিনের মত দিন চলে যায়, হয় না তাতে দোষ
মরা লাশের সুযোগ পেয়ে মোল্লার রোষ।

মোল্লা সাহেব নায়েবে রাসুল ফতোয়া ঝারিশা কয়,
পতিতা নারীর জানাজা কবর এই এলাকায় নয়।
শুধাই আমি ওরে মোল্লা জানাযায় যত দোষ,
বেশ্যার দান নিয়াছো ঝোলিয়ে তুমি বেটা নির্দোষ?

বেশ্যার তবু আছে পাপ বোধ নিজেকে সে ভাবে দোষী,
তোমরা তো বেটা দিন বেচে খাও হচ্ছেয় খোদার খাসি।
আল্লাহর ঘর মসজিদে ও আছে বেশ্যার দান -কলেমা পড়েছে সে ওতো তবে নামেতে মোসলমান!

বেশ্যা নারী ব্যবসায় নারী পুরুষরা পুরুষরা সব সৎ?
জানি মোল্লা খুলবে না মুখ চাকরি যাওয়ার পথ!
আর কতকাল থাকবি অমন মুখোশ ধারীর দল,
আসবো এবার মশাল নিয়ে ভাঙতে তোদের কল।

সত্যর আলো জলবে যখন চিনবে তোদের সবে,
লেবাশধারী মুখোশধারী মুখোশ উপরে যাবে।
এই ভাবে আর চালাবি কত ছল চাতুরীর খেলা।
আসবে তিনি, এবার তোদের বিদায় নেবার পালা।।।

প্রথম পিরিয়ডেই হারিয়ে গেল একটি জীবনকে নেবে এই দায়?খালিদ বিন মোজাহিদকুমারী একটি মেয়ে, বয়স মাত্র তেরো কিংবা চৌদ্দ। জীবনের ...
25/06/2025

প্রথম পিরিয়ডেই হারিয়ে গেল একটি জীবন
কে নেবে এই দায়?

খালিদ বিন মোজাহিদ

কুমারী একটি মেয়ে, বয়স মাত্র তেরো কিংবা চৌদ্দ। জীবনের প্রথম পিরি*য়ড শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগে। শুরু থেকেই তার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ছিল ধীরে ধীরে। জ্বর, পেটে ব্যথা, অবিরাম র*ক্ত*পাত—সব মিলিয়ে সে প্রায় দশ দিন ধরে বিছানায় পড়ে ছিল। পরিবারের লোকজন প্রথমে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। ভাবছিল, "মেয়েদের এমন তো হয়ই!"

কিন্তু অবস্থার অ*বন*তি ঘটতেই শুরু হয় দু*শ্চিন্তা। একসময় এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছায়, যখন আর কিছু করার থাকে না। বাধ্য হয়ে মেয়েটিকে বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক জানালেন—মেয়েটি মা*রা*ত্ম*ক র*ক্ত*শূন্যতায় ভুগছে। জরুরি ভিত্তিতে রক্ত দরকার, তার ব্লাড গ্রুপ AB+।

রক্ত জোগাড় করে রাত ১টার দিকে তাকে রক্ত দেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। তার শরীর সেই রক্ত নিতে পারেনি। কারণ, সেই ছোট্ট মেয়েটি এরই মধ্যে নিঃশব্দে প্রা*ণ হারিয়েছে—রক্তশূন্যতার কারণে।

ঘটনাটি সুন্দরবনের একেবারে কোলঘেঁষা, প্রত্যন্ত একটি গ্রামের। মেয়েটির বাড়ি থেকে জঙ্গল মাত্র ২০ গজ দূরে, মাঝখানে শুধু একটি নদী। পল্লিবিদ্যুৎ এসেছে মাত্র চার বছর আগে। এখনো নেই পাকা রাস্তা, নেই কোনো আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা।

এই অঞ্চলে ‘মা*সি*ক’ শব্দটি এখনো উচ্চারণযোগ্য নয়। এটি যেন এক অ*পবিত্র, ল*জ্জাজ*নক, নি*ষিদ্ধ কোনো ঘটনা। এখানকার মেয়েরা এখনো পিরিয়ডকালীন সময়ে স্যানিটারি প্যাডের পরিবর্তে ব্যবহার করে নোংরা, বারবার ব্যবহৃত ন্যাকড়া। স্বাস্থ্য সচেতনতার অভাব এতটাই, যে একজন কিশোরী পিরিয়ডের সময় অবিরাম র*ক্তপা*তেও সাহায্য চাইতে পারেনি।

হয়তো অনেকে বলবেন, পরিবারের দোষ। তারা কেন বুঝল না? কেন গুরুত্ব দিল না? তাদেরও যদি জিজ্ঞেস করা হয়, উত্তর আসবে—তারা জানেই না এসব ব্যাপার। এই অঞ্চলে শিক্ষার হার বলতে গেলে ২ শতাংশেরও কম। এখানকার মহিলারা আধুনিকতা বা শহরের সুযোগ-সুবিধা দেখেছে কেবল টেলিভিশন বা মোবাইল ফোনের পর্দায়।

আমরা আজ ২০২৫ সালে বাস করছি—যেখানে চাঁদের বুকে ঘর বানানোর স্বপ্ন বাস্তব হতে চলেছে, নারীরা মহাকাশে যাচ্ছে, প্রযুক্তি পৌঁছে গেছে আঙুলের ডগায়। অথচ এমন এক সময়ে, এমন উন্নত বিশ্বের পাশে—একটি কিশোরী মা*রা যায় শুধুমাত্র পিরিয়ডের সময় যথাযথ যত্ন না পাওয়ার কারণে।

পিরিয়ড কোনো অভিশাপ নয়। এটি একটি মেয়ের জীবনের এক গৌরবময় সূচনা—নারীত্বের পথে প্রথম পদক্ষেপ। কিন্তু আমাদের সমাজের বহু জায়গায় এখনো এটি ল*জ্জা, সংকোচ ও অজ্ঞতার কারণে ধামাচাপা পড়ে থাকে।

মেয়েটির মৃ*ত্যু হয়তো ভাগ্য বলে এড়িয়ে যাওয়া যায়, কিন্তু বাস্তবে এটি আমাদের সমাজ, শিক্ষাব্যবস্থা এবং সচেতনতার মারাত্মক ব্যর্থতা।

যদি আমরা এখনই সচেতন না হই, যদি মা-বাবারা সন্তানদের প্রাথমিক শারীরিক ও প্রজনন শিক্ষা না দেন, যদি স্কুলগুলোতে যৌন ও স্বাস্থ্য শিক্ষাকে গুরুত্ব না দেওয়া হয়—তবে এমন মৃ*ত্যু আরও ঘটবে।

এ মৃ*ত্যু কেবল একটি মেয়ের নয়, এটি আমাদের সবার—সমাজের, অবহেলার, অজ্ঞতার।

আজই সময় এসেছে ‘পিরিয়ড’ শব্দটিকে সম্মানিত করার। মেয়েরা প্রতিনিয়ত যন্ত্র*ণা সহ্য করে, র*ক্ত দিয়ে, কষ্টে থেকেও জীবন এগিয়ে নিয়ে যায়। তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে—এই মৃ*ত্যু যেন আর কোনো মেয়ের জীবনের শেষ অধ্যায় না হয়।

টুপি-পিন আতঙ্ক: বিশ শতকের আত্মরক্ষার নারীকাব্যপারি প্রতিবেদন : কানসাসের তরুণী পর্যটক লিওটি ব্লেকার সেই বিকেলে নিউইয়র্কে...
23/06/2025

টুপি-পিন আতঙ্ক: বিশ শতকের আত্মরক্ষার নারীকাব্য

পারি প্রতিবেদন :
কানসাসের তরুণী পর্যটক লিওটি ব্লেকার সেই বিকেলে নিউইয়র্কের ২৩তম স্ট্রিট থেকে ফিফথ অ্যাভিনিউর এক স্টেজকোচে উঠেছিলেন। গাড়িটি ছিল ভিড়াক্রান্ত, হঠাৎ দোল খাওয়ায় তিনি লক্ষ্য করলেন পাশের এক বয়স্ক, মার্জিত পোশাকের “সদাশয়-দেখানো” ব্যক্তি তার দিকে এক ইঞ্চি সরলেন। ঘোড়ার গতি বেড়ে যাওয়ায় স্টেজকোচ আবার ঝাঁকুনি দেয় এবং এবার সেই ব্যক্তি তার সাথে হিপ থেকে হিপ, কাঁধ থেকে কাঁধ ঘেঁষে বসে পড়েন। এরপর তিনি তার বাহু লিওটির পিঠের পেছনে নামিয়ে রাখেন। লিওটি আর সহ্য করতে পারলেন না। তিনি তাঁর টুপি গুঁজে রাখার জন্য ব্যবহৃত প্রায় এক ফুট লম্বা ধাতব পিনটি তুলে সরাসরি সেই ব্যক্তির বাহুতে গেঁথে দেন। চিৎকারে কেঁপে ওঠে কোচ, এবং ওই ব্যক্তি পরের স্টপেই নেমে যান।

তিনি পরে New York World-কে বলেন,
“তিনি দেখতে খুব ভদ্রলোক টাইপ ছিলেন, তাকে আঘাত করতে কষ্ট পেয়েছিলাম। আমি ‘ব্রডওয়ে ম্যাশার’ আর ‘এল ট্রেন ম্যাশার’-দের কথা শুনেছিলাম, কিন্তু জানতাম না ফিফথ অ্যাভিনিউ’র আলাদা কোনো ধরন আছে… নিউইয়র্ক নারীরা মাশিং সহ্য করলেও, কানসাসের মেয়েরা তা করবে না।”

ম্যাশার আতঙ্ক ও নারীদের প্রতিরোধ

তৎকালীন “ম্যাশার” শব্দটি বোঝাতো রাস্তা-ঘাটে নারীদের উত্ত্যক্ত করা পুরুষদের—যেমনটা থিওডোর ড্রাইজারের Sister Carrie-তে বলা আছে: “যার পোশাক বা আচরণ সহজ-সরল তরুণীদের আকৃষ্ট করার জন্য তৈরি।” যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সংবাদমাধ্যমে উঠে আসতে লাগল এরকম আরও বহু ঘটনার বর্ণনা: নিউইয়র্কের এক গৃহিণী ট্রামগাড়িতে একজনকে প্রতিহত করেন, শিকাগোর এক শো-গার্ল ছাতার আঘাতে মুখ ভেঙে দেন এক উত্ত্যক্তকারীর, সেন্ট লুইসের এক স্কুল শিক্ষিকা হ্যাটপিন দিয়ে আক্রমণ ঠেকান।

এই ঘটনাগুলো শুধু সংখ্যায়ই নয়, নারীর সাহসী প্রতিবাদ হিসেবে সংবাদে এসেছে প্রশংসাসূচক ভঙ্গিতে। নারীরা ভিক্টিম বা হাস্যরসের উপাদান না হয়ে হয়ে উঠলেন নায়িকা। সমাজে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছিল—নারীরা পুরুষনির্ভর না থেকে নিজেরাই নিজেদের রক্ষায় সক্ষম হয়ে উঠছিলেন।

টুপি-পিন এবং আত্মরক্ষার রাজনীতি

‘Hatpin Peril’ বা ‘টুপি-পিন আতঙ্ক’ নামে ১৯০৪ সালে সান ফ্রান্সিসকোর Sunday Call একটি প্রতিবেদন ছাপে, যা পুরুষতন্ত্রের ভিত কাঁপিয়ে দেয়। কাজ করা নারী ও ভোটাধিকার চাওয়া suffragist-রা নারীর স্বাধীন চলাফেরার অধিকারের দাবি তোলেন। Jane Addams বলেছিলেন, “ইতিহাসে কখনও এত নারীরা একসাথে ঘরের বাইরে একা হেঁটে কাজ করার সুযোগ পায়নি।”

তৎকালীন রক্ষণশীলদের মত ছিল, নারীরা অনাড়ম্বরভাবে চললে উত্ত্যক্ত হবেন না। কিন্তু suffragist-রা জোর দিয়ে বলেন, সমস্যাটি নারীর সাজপোশাকে নয়, বরং “ম্যাশার মানসিকতার নোংরামিতে।”

টুপি-পিন আইন: একটি লিঙ্গ যুদ্ধের রূপ

তবে নারীর স্বাধীনতাকে না ঠেকিয়ে, কেউ কেউ ঠেকাতে চাইলেন টুপি-পিনকে। নানা দুর্ঘটনা ও অপব্যবহারের গল্প ছড়িয়ে পড়ে। কোথাও একজন তরুণী প্রেমিকের হৃদয়ে পিন ঢুকিয়ে মারলেন, কোথাও ভুল করে কানে ঢুকে মৃত্যু হলো একজনের, নিউইয়র্কে একশ নারী শ্রমিক হ্যাটপিন হাতে পুলিশের উপর চড়াও হয়েছিলেন।

১৯১০ সালে, শিকাগো সিটি কাউন্সিলে একটি প্রস্তাব আসে—নয় ইঞ্চির বেশি লম্বা হ্যাটপিন নিষিদ্ধ করা হবে। নারীদের প্রবল প্রতিবাদ সত্ত্বেও তা পাস হয় ৬৮-২ ভোটে। এমন আইন আরও বহু শহরে চালু হয়: মিলওয়াকি, বাল্টিমোর, নিউ অরলিন্স সহ বহু জায়গায়। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ৬০ নারী জেল খাটেন হ্যাটপিন পরার কারণে। লন্ডনের অভিজাত মহিলারাও হ্যাটপিনে পয়েন্ট কভার পরতে অস্বীকৃতি জানান।

হারিয়েও যায়নি সংগ্রাম

নিরাপত্তা এবং আত্মরক্ষার প্রশ্নে হ্যাটপিন হয়ে উঠেছিল নারীর হাতিয়ার ও প্রতিবাদের প্রতীক। Suffragist নেত্রী হ্যারিয়ট স্ট্যানটন ব্ল্যাচ বলেছিলেন, “নারীদের উন্নতির দরকার, কিন্তু তারা পুরুষের শাসনে নয়, রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমেই নিজেদের শৃঙ্খলায় আনবে।”

বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে হ্যাটপিন ইস্যু চাপা পড়ে, ফ্যাশনে আসে ছোট চুল ও cloche hat, আর নতুন ‘সমাজ-সংকট’ হয়ে উঠে—flapper।

অবশেষে, রাজনীতিকরা বুঝতে শুরু করলেন, নারীরা কী পরছে তা নয়, তারা কীভাবে ভোট দেবে সেটাই বড় প্রশ্ন।

ওলিভ অ্যান বিচ: আকাশকে ছুঁয়ে ফেলা এক সাহসিনী নারীর গল্পভাবুন তো, বিশ শতকের শুরুর উত্তাল আকাশে পা রাখছেন আপনি—কিন্তু কোনো...
21/06/2025

ওলিভ অ্যান বিচ: আকাশকে ছুঁয়ে ফেলা
এক সাহসিনী নারীর গল্প

ভাবুন তো, বিশ শতকের শুরুর উত্তাল আকাশে পা রাখছেন আপনি—কিন্তু কোনো বিমান চালিয়ে নয়, বরং বিমানের নকশা ও ভবিষ্যৎ গঠনের পেছনে থাকা এক দূরদর্শী, কৌশলী এবং অবিচল মস্তিষ্ক হিসেবে। সেই মস্তিষ্কের নাম ওলিভ অ্যান বিচ।

তাঁর পরিচয় কেবল “পাইলটের স্ত্রী” নয়, তিনি নিজে ছিলেন একজন প্রতিষ্ঠাতা, এক বিরল আর্থিক মেধাবী, যিনি আমেরিকার ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ সময়গুলোতে নিজের প্রতিষ্ঠানকে সফলতার আকাশে উড়তে শিখিয়েছিলেন।

ওলিভ অ্যান-এর শুরুটা ছিল নীরব, কিন্তু গভীর। তাঁর স্বামী ওয়াল্টার বিচ ছিলেন এক স্বপ্নবাজ, যিনি বিমান নকশায় ছিলেন প্রতিভাধর এবং নিজেও একজন দুঃসাহসী পাইলট। আর ওলিভ? তিনি ছিলেন সেই দৃঢ় ভিতের রচয়িতা, যার সাহসী সিদ্ধান্ত ও আর্থিক দূরদর্শিতা ছিল প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত নিয়ন্ত্রণের চালিকাশক্তি।

বিচক্রাফট কোম্পানির আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব তিনি এমনভাবে সামলাতেন যেন সঙ্গীতজ্ঞ সুর মিলাচ্ছেন—যেখানে প্রতিটি বাজেট, প্রতিটি বিনিয়োগ ছিল সুসংহত সিম্ফনি। গ্রেট ডিপ্রেশনের মতো অর্থনৈতিক দুর্যোগেও বিচক্রাফট টিকে থাকার পাশাপাশি এগিয়ে যেতে পেরেছিল কেবল তার সুবিবেচিত পরিকল্পনার কারণেই।

১৯৪০ সালে, বিশ্বযুদ্ধ যখন আমেরিকার দরজায় কড়া নাড়ছিল, ওয়াল্টার বিচ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন, এই নারীকেই পুরো কোম্পানির দায়িত্ব নিতে হয়।

ভাবুন, একটি প্রতিষ্ঠান, যেটি ছিল মূলত ব্যক্তিগত বিমানের নির্মাতা তাকে রূপান্তরিত করতে হলো এক বিশাল যুদ্ধযন্ত্র প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানে। ওলিভ অ্যান একা হাতে সেই রূপান্তর ঘটান।

তিনি সাহস করে নিয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ানোর দায়িত্ব, তিনি ব্যাংক থেকে তুলেছিলেন কোটি কোটি ডলার ঋণ,
তিনি বদলে দিয়েছিলেন কারখানার চেহারা, এবং সবচেয়ে বড় কথা তিনি রক্ষা করেছিলেন গুণগত মান।

এইসব কিছুর জন্য বিচক্রাফট পায় বহু আর্মি-নেভি “E” পুরস্কার—শিল্প উৎপাদনে শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি।

১৯৫০ সালে, ওয়াল্টারের হঠাৎ মৃত্যুতে যখন সবাই ভেবে নিয়েছিল, বিচক্রাফট হয়তো থেমে যাবে তখন আবারও দৃঢ় কণ্ঠে উঠে দাঁড়ালেন ওলিভ অ্যান। তিনি হলেন প্রথম নারী যিনি একটি প্রধান বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রেসিডেন্ট ও চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিলেন।

পরবর্তী তিন দশক তিনি সেই প্রতিষ্ঠানকে শুধুই পরিচালনা করেননি—তিনি তা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেন। কোম্পানির বিক্রয় তিন গুণ বেড়ে যায়, তারা অংশ নেয় NASA-র মহাকাশ প্রকল্পে, তৈরি করে ক্রায়োজেনিক সিস্টেম, এবং বাজারে আনে King Air এর মতো আইকনিক বিমান।

ওলিভ অ্যানকে অনেককেই বিশ্বাস করতে চায়নি, তিনি তো “নারী”, তাঁর জায়গা নাকি অফিসে নয়। কিন্তু তিনি কেবল প্রমাণ করেননি যে তিনি “সমান”—তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে অনেক ক্ষেত্রেই তিনি “শ্রেষ্ঠ”।

যখন তিনি অফিসে ঢুকতেন, কেউ একজন বলতো—“সাহসী মহিলার আগমন!” কিন্তু ইতিহাস বলছে, তিনি কেবল সাহসী ছিলেন না—তিনি ছিলেন একজন দৃষ্টান্ত, একজন পথপ্রদর্শক, এবং একজন সত্যিকারের “ক্যাপ্টেন”, যিনি ককপিটে না বসেও আকাশকে জয় করেছিলেন।

ওলিভ অ্যান বিচের জীবনের গল্প আমাদের শেখায়, সফলতা কেবল দৃশ্যমান মঞ্চে নয়, অনেক সময় পর্দার আড়ালে বসে গড়া হয় ভবিষ্যৎ। তিনি ছিলেন সেই নীরব অথচ দীপ্তিমান আলো, যিনি আমেরিকার বিমান ইতিহাসের অন্যতম রত্ন হয়ে আজও উজ্জ্বল।

পালিয়ে বাঁচা মেয়েরা: সৌদি আরবের গার্ডিয়ানশিপ ব্যবস্থায় নারীর বন্দিজীবন ও মুক্তির লড়াইপারি ডেস্ক | বাড়ি—অনেকের জন্য এটি ...
21/06/2025

পালিয়ে বাঁচা মেয়েরা:
সৌদি আরবের গার্ডিয়ানশিপ ব্যবস্থায়
নারীর বন্দিজীবন ও মুক্তির লড়াই

পারি ডেস্ক | বাড়ি—অনেকের জন্য এটি শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতীক। কিন্তু বিশ্বের বহু নারীর জন্য, বিশেষ করে সৌদি আরবের মতো সমাজে, ‘বাড়ি’ মানেই বন্দিদশা—একটি পिंজর, যার তালা তৈরি হয়েছে আইন, সংস্কৃতি ও পুরুষতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণ দিয়ে। এখানে নারীরা যুগের পর যুগ ধরে আইনি ও সামাজিকভাবে পুরুষ অভিভাবকের অধীন। তারা একা ভ্রমণ করতে পারে না, কাজ করতে পারে না, এমনকি চিকিৎসাও নিতে পারে না অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া।

এই ব্যবস্থাকে যারা চ্যালেঞ্জ করে, তাদের জীবনের পথ সহজ নয়। তারা হয়ে ওঠে পালিয়ে বাঁচা শিল্পী—রাত্রির আঁধারে নিঃশব্দে হারিয়ে যায়, সীমান্ত পেরিয়ে, নিজ নিয়তির নতুন মানচিত্র আঁকে, নিছক সাহস আর অবিচল ইচ্ছাশক্তিকে সম্বল করে।

২০১৯ সালে, মাত্র আঠারো বছর বয়সে, রাহাফ মোহাম্মদ নিজের জীবন ফিরিয়ে নিতে সিদ্ধান্ত নেন। এক নিপীড়নমূলক পরিবারের অন্তরালে আবদ্ধ, যেখানে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল তাকে, রাহাফ জানতেন, পালানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কুয়েতে এক পারিবারিক ভ্রমণের সময় তিনি সুযোগ নেন। ব্যাংককের একটি বিমানবন্দর হোটেল কক্ষে নিজেকে বন্ধ করে দিয়ে আসবাব দিয়ে দরজা আটকে রাখেন, আর সামাজিক মাধ্যমে সাহায্যের আহ্বান জানান সারা বিশ্বের কাছে।

সৌদি কর্তৃপক্ষ চেয়েছিল তাকে ফিরিয়ে নিতে। কিন্তু এবার গোটা বিশ্ব তা দেখছিল। রাহাফের বার্তাগুলো ভাইরাল হয়, আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি হয়। অবশেষে কানাডা তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়। আজ রাহাফ সেখানেই একজন মুক্ত নারী হিসেবে বসবাস করছেন, কথা বলছেন সেই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, যা তার স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল।

তবে সব নারীর ভাগ্য রাহাফের মতো হয়নি। ২০১৭ সালে, দিনা আলি লাসলুম নামের এক ২৪ বছর বয়সী সৌদি নারী অস্ট্রেলিয়ায় পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু ফিলিপাইনে তাকে ধরে ফেলে তার পরিবার। এয়ারপোর্টের সিকিউরিটির সামনেই তাকে বেঁধে, মুখে কাপড় গুঁজে, জোর করে বিমানে তুলে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। আর কখনো কেউ তার খবর পায়নি।

দিনার গল্প আমাদের কাঁপিয়ে তোলে—এক জীবন্ত দলিল, কী ভয়ংকর ঝুঁকি নিতে হয় একজন নারীকে, যদি সে নিজের জীবনটাকে নিজের মতো করে গড়তে চায়।

তাদের এই পালানোর পেছনে থাকে মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর ধরে পরিকল্পনা। পাসপোর্ট গোপন করে রাখা, জরুরি নাম্বার মুখস্থ করা, সন্দেহ এড়াতে মিথ্যে গল্প রপ্ত করা—সবই থাকে তাদের প্রস্তুতির অংশ। তারা জানে ধরা পড়লে কী হতে পারে: কারাবাস, নির্যাতন, এমনকি মৃত্যুও। তবু তারা পথ ধরে, কারণ বেঁচে থাকার বিকল্পটা আরও ভয়ংকর—একটি জীবন, যেখানে নেই স্বাধীনতা, নেই পছন্দের অধিকার, নেই নিজের শরীর বা সিদ্ধান্তের ওপর কর্তৃত্ব।

রাহাফ, দিনা এবং তাদের মতো অসংখ্য নারীর গল্প শুধু মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাহিনি নয়—এগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা শুধু কোনো কাগজে লেখা অধিকার নয়, এটি জীবনের জন্য লড়াই করার সাহস। যারা পালায়, তারা শুধু নিজের জীবন নয়, ইতিহাসের গতিপথও বদলায়।

এটি এক অসমাপ্ত লড়াইয়ের গল্প—নারীর অধিকার, মর্যাদা ও আত্মমর্যাদার জন্য এক সংগ্রাম, যা এখনো চলছেই।

পারি সংঘবদ্ধ হচ্ছে আবার। নারীরা লিখুন। অমানুষদের সোজা করার দায়িত্ব নিন।
18/05/2025

পারি সংঘবদ্ধ হচ্ছে আবার।
নারীরা লিখুন। অমানুষদের সোজা করার দায়িত্ব নিন।

04/05/2025
04/05/2025

Address

68/Ka Khilgaon Chowdhurypara, Khilgaon
Dhaka
1219

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when পারি posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to পারি:

Share