25/07/2025
লক্ষ্য যাদের ৪৯ তম বিসিএস।
জেনারেল বিষয়গুলো নিয়ে বলার কিছু নেই। কারণ এটা নিয়ে যুগ যুগ ধরে ব্যাপক গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। আমি বলবো সাবজেক্টিভ নিয়ে। স্পেশালি প্রাণিবিদ্যা সাবজেক্ট নিয়ে লিখছি তবে অন্যান্য সাবজেক্টের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হবে বলে মনে করি।
সিলেবাস
প্রথমত, পিএসসির ওয়েবসাইট থেকে বিষয়ভিত্তিক সিলেবাস প্রিন্ট করে নিন। এরপর কয়েকবার রিডিং পড়ুন।
বইঃ
এইচএসসি প্রাণিবিজ্ঞান
সিলেবাসের সাথে যেসব টপিক এইচএসসি বায়োলজি ২য় পত্র অর্থাৎ প্রাণিবিজ্ঞানের সাথে মিলে যায় সেসব টপিক খুব গুরুত্ব দিয়ে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে গাজী আজমল স্যারের বইটি এনাফ বলে মনে করি।
অনার্স প্রাণিবিজ্ঞান
বিসিএস সিলেবাসের অনার্স লেভেলের টপিকগুলোর জন্য ভাল একটা পরামর্শ দেই। প্রথমেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে অনার্স প্রাণিবিদ্যা প্রথম থেকে চতুর্থ বর্ষ পর্যন্ত সিলেবাস ডাউনলোড করে প্রিন্ট করুন। তারপর বিসিএস সিলেবাস এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স সিলেবাসের সঙ্গে যেসব টপিকে মিল রয়েছে সেসব টপিক দাগিয়ে নিন। এরপর দাগানো টপিকগুলো পড়ার জন্য সংশ্লিষ্ট বর্ষের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা টেক্সট বই বা গাইড বই সংগ্রহ করে শুধুমাত্র দাগানো টপিকগুলো ভাল করে পড়ুন। গুরুত্বপূর্ণ টপিকে অল্পসময়ে চোখ বোলাতে আমার লেখা প্রশ্নব্যাংকভিত্তিক বইগুলো দেখতে পারেন। অনার্স ১ম, ২য়,৩য়,৪র্থ, মাস্টার্স ফিশারিজ, শিক্ষক নিবন্ধন (কলেজ পর্যায়) সহায়িকা, মাইবুক/গ্রন্থমেলা/মাক্কুশা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত। প্রকাশকের অকাল প্রয়াণের জন্য নতুন সংস্করণ প্রকাশ স্থগিত রয়েছে। তবে আপনারা নিকটস্থ লাইব্রেরিতে না পেলে নীলক্ষেত পুরাতন বইয়ের দোকানগুলোতে পাবেন। বইগুলো সংগ্রহ করার আগে অবশ্যই পৃষ্ঠা উল্টিয়ে দেখে শুনে ভাল মনে হলে তবেই নিবেন। না হলে অন্য প্রকাশনীর নিবেন। তবে নিঃসন্দেহে এটা সবাই জানেন যে টেক্সট বই থেকে দাগিয়ে পড়া বেশি ফলপ্রসূ।
এইচএসসি উদ্ভিদবিজ্ঞান বইঃ
কিছু কমন টপিক রয়েছে যেগুলো প্রাণিবিজ্ঞান উদ্ভিদবিজ্ঞান উভয় বইয়ে রয়েছে। এবং কিছু টপিক রয়েছে যেগুলো আবুল হাসান স্যারের বইয়ে খুব ভালভাবে আছে। সেসব টপিক সেখান থেকেও পড়া যেতে পারে।
টপিক গোছানো
কোন টপিক কোন বইয়ের কোন পৃষ্ঠা থেকে পড়েছেন সেটি সিলেবাসের টপিকের পাশে লিখে রাখুন। তাহলে যে কোন মুহূর্তে টপিক খুঁজে পেতে সুবিধা হবে। যদি পারেন আরেকটা কাজ করতে পারেন, বইগুলোর পাতা ফটোকপি করে বাঁধাই করে একটা সংকলন বানিয়ে ফেলতে পারেন। এক্ষেত্রে রিভিশন দেয়ার জন্য সময় বাঁচবে।
ইন্টারনেটের হেল্প
সিলেবাসের যে কোন টপিক নেট থেকে সার্চ দিয়ে পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে অল্প সময়ে টপিক সম্পর্কে মোটামুটি একটা ক্লিয়ার আইডিয়া পাওয়া যায়।
পড়ার ধরণ
যেহেতু প্রশ্ন বর্ণনামূলক নয়, শুধুমাত্র এমসিকিউ, সুতরাং কোন টপিক পড়ার আগে ছোট ছোট তথ্যগুলো মনে রাখার চেষ্টা করবেন। একটা আলাদা নোটখাতা রাখলে ভাল হয়। সেখানে টপিকভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো অতি সংক্ষিপ্ত আকারে নোট রাখবেন।
সাল, সংখ্যা, সাইজ ইত্যাদি সংখ্যাভিত্তিক তথ্য
সংখ্যাভিত্তিক তথ্য মনে রাখার চেষ্টা করবেন। কষ্ট হলে একবার লেখার চেষ্টা করবেন। তবুও যদি মনে না থাকে সেক্ষেত্রে এভয়েড করতে হবে। ১০০ নম্বরের সাবজেক্টিভ পরীক্ষায় ১০০ পেতে হয় না। কিছু জায়গা ছেড়ে দেয়াটা কৌশলের অংশ। সংখ্যাভিত্তিক তথ্য মনে রাখতে গিয়ে বেশি সময় ব্যয় করা যাবে না। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের দিকে জোর দিতে হবে। পরীক্ষার যেহেতু খুব বেশি দিন নাই সুতরাং আবেগী হয়ে কোন নির্দিষ্ট জায়গায় বেশি শ্রম দিয়ে সময় নষ্ট করা যাবে না। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সবগুলো টপিকে চোখ বোলান।
অনার্সে ফাঁকি দিয়েছি, বেসিকে কিছুটা প্রব্লেম রয়েছে
আপনি যতই ফাঁকি দিন কিংবা আপনার বেসিক যেই লেভেলেরই থাকুক, আপনি যদি আজ থেকে পরীক্ষার পূর্ব পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণে রেখে নিজের প্রতি বিশ্বাস রেখে কৌশলী হয়ে কঠোর পরিশ্রম করেন, তাহলে বিষয়ভিত্তিক ১০০ মার্কের এমসিকিউ মোকাবিলা করতে খুব বেশি বেগ পেতে হবে না। যে কোন টপিক একাধিকবার রিডিং দিন। পড়তে পড়তে একটা সেন্স ক্রিয়েট হয়ে যাবে। পরীক্ষার হলে গিয়ে দেখবেন অটোমেটিক ওয়েতে সঠিক প্রশ্নে কলম চলে যাচ্ছে।
পড়ি কিন্তু ভুলে যাই, এসব অজুহাত দিয়ে সময় নষ্ট না করে এই অল্প সময়েই সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মাঠে নেমে পড়ুন। অতীত যেমনই হোক, আপনার বর্তমান পরিশ্রম ভবিষ্যতে আপনাকে প্রত্যাশিত জায়গায় নিয়ে যাবে। শুভকামনা রইল।
মোঃ বেলাল হোসেন ( উজ্জ্বল)
বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডার
প্রভাষক, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ,
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও
বিএসসি, এমএসসি, প্রাণিবিদ্যা বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়