19/04/2025
সূরা আল-মুজাদালাহ | আয়াত ১০
আরবি আয়াত:
إِنَّمَا النَّجْوَىٰ مِنَ ٱلشَّيۡطَٰنِ لِيَحۡزُنَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ وَلَيۡسَ بِضَآرِّهِمۡ شَيۡـٔٗا إِلَّا بِإِذۡنِ ٱللَّهِۚ وَعَلَى ٱللَّهِ فَلۡيَتَوَكَّلِ ٱلۡمُؤۡمِنُونَ
⸻
বাংলা অর্থ:
“নিশ্চয় গোপন পরামর্শ (কানাকানি) শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে, যাতে সে ঈমানদারদের দুঃখিত করতে পারে। অথচ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া সে তাদের বিন্দুমাত্র ক্ষতি করতে পারবে না। সুতরাং মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপরই ভরসা করা।”
⸻
তাফসীর ও ব্যাখ্যা:
১) আয়াতের পটভূমি:
মদিনার ইহুদি, মুনাফিক এবং কিছু শয়তানি চরিত্রের মানুষ গোপন আলোচনা করতো — ঈমানদারদের সামনে বসে এমনভাবে নিজেদের মধ্যে ফিসফিস করত যেন মনে হয় খুব ভয়ংকর কিছু হচ্ছে। এতে মুমিনদের মনে সন্দেহ, আতঙ্ক ও কষ্ট হতো।
আল্লাহ তা’আলা এই আয়াতে মুসলিমদের সতর্ক করছেন — এ ধরনের ফিসফাস বা গোপন কথা আসলে শয়তানের ফাঁদ, উদ্দেশ্য হচ্ছে ঈমানদারদের মন ভাঙা ও কষ্ট দেয়া।
⸻
২) শয়তানের সীমাবদ্ধতা:
শয়তান চেষ্টা করে মানুষকে দুঃখিত করা, বিভ্রান্ত করা, ভয় ঢোকানো এবং সন্দেহ সৃষ্টি করতে।
কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া সে কিছুই করতে পারে না। এই আয়াতে মুমিনদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো হয়েছে —
“তোমার ক্ষতি শয়তান কখনোই করতে পারবে না, যতক্ষণ আল্লাহ তা অনুমতি না দেন।”
⸻
৩) মুমিনদের কর্তব্য:
এ আয়াতের শেষে পরিষ্কার বলা হয়েছে:
“সুতরাং মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপরই ভরসা করা।”
মুমিনদের দায়িত্ব হচ্ছে:
• শয়তানের ফাঁদে পা না দেওয়া।
• মানুষের গোপন কানাকানি, ফিসফাসে ভয় না পাওয়া।
• সব সময় আল্লাহর উপর ভরসা রাখা।
⸻
মূল শিক্ষা:
• গোপন কানাকানি ফিতনার হাতিয়ার।
• শয়তান মানুষের মন দুর্বল করে দুঃখিত করতে চায়।
• আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়া কেউ কারও ক্ষতি করতে পারে না।
• ঈমানদারের শক্তি হচ্ছে তার “তাওয়াক্কুল” — আল্লাহর উপর দৃঢ় ভরসা।