25/04/2025
"মানুষটা যেদিন চলে গেলো, ঠিকঠাক জীবনটা ওলটপালট হয়ে গেলো নিমেষেই। মুখস্ত বুলির মতো সবাই বলতে লাগলো, 'একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে'
অনুভূতিরা বোধহয় গোলাপের পাপড়ির মতো। একদিন শুকিয়ে কাঠ হয়ে যায়, তবু প্রিয় বইটার ভাঁজে কেন যেন রয়ে যায় আজীবন।
আচ্ছা, শখের মানুষ কি শখ করে চলে যায়? কখনো নিয়তি এসে মৃ ত্যু র গল্প শোনায়, কখনো অবহেলা নেমে আসে অসময়ের বৃষ্টির মতো, কখনো পোষ না মানা শালিকের মতো উড়ে যায় মানুষটা।
কখনো মন উঠে যায়। একদিন সকালে মানুষটা শীতল কন্ঠে জানায়, সে চলে যাচ্ছে। আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে তার প্রস্থান দেখি। যেমন করে কাঁধে ভারী ব্যাগ নিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে শেষ ট্রেনটাকে স্টেশন ছাড়তে দেখে অসহায় যাত্রীটা।
প্রিয় মানুষের প্রস্থান জীবনে একটা দাগ কে টে যায়। সেই দাগে কেউ এফোড় ওফোড় হয়ে যায়, কেউ বা আবার সেই দাগ সযত্নে লুকিয়ে রেখে সব সামলে নেয়। লোকে আবার বলতে শুরু করে, 'জীবন কি একজনের জন্য থেমে থাকে? অন্য কাউকে আগলে ধরে বাঁচো'
শেষ ট্রেনটা চলে যাওয়ার পরে অনেক দিন পর স্টেশনে আবার ট্রেন এসেছিলো, থেমে ছিলো অনেকটা সময়। ক্লান্ত আমি কাঁধের ভারী ব্যাগটা নিয়ে এবারও উঠতে পারি নি।
ব্যাগের ভেতর শুকনো গোলাপের পাপড়ি, এক বর্ষা নিংড়ানো স্মৃতি, অবহেলার বরফগলা নদী, সহস্র পাতার প্রত্যাখানের মহাকাব্য আর প্রস্থানের শোকসভা - সব রেখে দিয়েছিলাম। অতকিছুর ভার নিয়ে হয়তো বেঁচে থাকা হয় কোনোভাবে, কিন্তু আর কোনো ট্রেনে ঠিক উঠা হয় না।
একদিন সব ঠিক হয়ে যায়, কিন্তু কেউ কেউ আটকে থাকে ভুল স্টেশনেই। একদিন জীবন আর থেমে থাকে না, কিন্তু কারো কারো আর কখনোই ঘরে ফেরা হয় না।"
- মুশফিকুর রহমান আশিক