Asad's Diary

Asad's Diary আমাদের পেইজে আপনাকে স্বাগতম, নিত্যনত?

28/10/2024

ভিড়ের বাসে, ফুটপাতে, মার্কেটে আমি মেয়েদের শরীরে হাত দিতাম। ভিড়ের কারণে মেয়েরা ধরতে পারতো না। আর যদি হাত দেয়ার সুযোগ না থাকতো তাহলে চোখ দিয়ে তাদের শরীর লেহন করতাম।

খারাপ জায়গায় যাওয়ার অভ্যাস ছিলো। ভার্সিটিতে পড়ার সময় একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক হয়েছিলো। কিন্তু এক নারীতে স্থির থাকার মানুষ আমি ছিলাম না। তাই গোপনে আরো কয়েকটা প্রেম করি। এবং নানা ছলছুতো করে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করতাম। এবং শারীরিক সম্পর্ক হয়ে গেলে মেয়েগুলোর উপর মিথ্যা দোষ চাপিয়ে সম্পর্ক ছিন্ন করে দিতাম।

মাস্টার্স পড়ার সময় কী করে যেনো বাবা জানতে পারলেন আমি খারাপ জায়গায় যাই।

যার মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন তিনি বাবাকে বললেন, "ছেলেকে বিয়ে করিয়ে দিন। তাহলে ওর চরিত্রের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।"

এরপরই তাড়াহুড়ো করে আমার বিয়ে হয়ে গেলো। আমিও ভেবেছিলাম বিয়ের পর আমার চরিত্র ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু তা হলো না। বিয়ের আগে যে অপকর্মগুলো করেছিলাম বিয়ের পরও সেগুলো করে যেতে লাগলাম। এমন দক্ষতার সাথে অপকর্মগুলো করতাম যে, আমার স্ত্রী বিন্দুমাত্র টের পেতো না।

সময়ের সাথে সাথে এক ছেলে এক মেয়ের বাবা হলাম। সব কিছু ঠিকঠাক ভাবেই যাচ্ছিলো। কিন্তু বিপত্তি বাঁধলো ছেলে যখন ভার্সিটিতে পড়ার শেষ দিকে তখন।

একদিন এক অফিস সহকর্মী আমাকে বললো, "ছেলেকে দ্রুত বিয়ে করিয়ে দিন।"

বললাম, "এখনই কীসের বিয়ে? ছেলেটা পড়াশোনা শেষ করুক। টাকা পয়সা উপার্জন করুক। তারপর বিয়ের কথা ভাবা যাবে।"

সহকর্মী বললো, "আপনার তো আর্থিক সমস্যা নেই। ছেলেকে শোধরাতে চাইলে বিয়ে করিয়ে দিন।"

আশ্চর্য হয়ে বললাম, "শোধরানোর কথা কেনো বলছেন?"

তারপর সহকর্মী নিচু গলায় যা বললো তাতে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। ছেলে খারাপ জায়গায় যায়।

বাসায় এসে নীরবে ভাবতে লাগলাম কী করা যায়? বিয়ের পর আমি তো ভালো হয়ে যাই নি, ছেলে কি ভালো হবে? কে জানে সে হয়তো ভালো হয়ে যাবে।

এরপর তড়িঘড়ি করে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে দিলাম। কিন্তু আমার কপাল খারাপ। ছেলে শোধরালো না। বিয়ের পর অন্য নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে ছেলের সাথে ছেলের বউয়ের প্রায় সময় ঝগড়া হতে লাগলো। এক পর্যায়ে অবস্থা এতো খারাপ হলো যে, ওদের বিয়ে ভেঙে যাওয়ার অবস্থা হলো। ছেলের বউকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বিয়েটা রক্ষা করলাম।

এরপর বেশ কিছুদিন স্বাভাবিক ভাবে গেলো। ভাবলাম ঝামেলা সব দূর হয়ে গেলো। কিন্তু আমার ভাবনায় ভুল ছিলো। কারণ এরপর এমন একটা ঘটনা ঘটলো যা আমি কল্পনা করতে পারি নি।

আমার মেয়ে একদিন শ্বশুরবাড়ি থেকে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এসে ওর মাকে বললো, ওর স্বামীর চরিত্র ভালো না। অন্য নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক আছে। এবং এই নিয়ে কিছু বলতে গেলে গায়ে হাত তোলে।

শুনে মেজাজ এমন খারাপ হলো যে বলার মতো নয়। তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্ত নিলাম তালাক দিয়ে মেয়েকে ওখান থেকে নিয়ে আসবো।

তালাকের কথা বলাতে অনেকে বললো, সরাসরি তালাকে না গিয়ে জামাইকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে সংসারটাকে টিকিয়ে দেয়ার জন্য।

উত্তরে তাদের কড়া ভাষায় বললাম, "যাদের চরিত্রে সমস্যা থাকে সেটা আজীবন থাকে। কোনো ভাবে সেটা পাল্টায় না। তাই তালাক ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। আমি জেনেশুনে মেয়েকে জাহান্নামের মধ্যে রাখতে পারি না। আমার মেয়ে পানিতে ভেসে আসে নি।"

ডিভোর্স করিয়ে মেয়েকে যেদিন বাড়ি নিয়ে এলাম সেদিন জানলাম ছেলের বউ ছেলেকে ডিভোর্স দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ছেলের বউকে ঠেকাতে গেলে তার বাবা কঠিন গলায় যে কথা বললেন তাতে আমি আর কিছু বলতে পারলাম না।

তিনি বললেন, "যাদের চরিত্রে সমস্যা থাকে সেটা আজীবন থাকে। কোনো ভাবে সেটা পাল্টায় না। তাই তালাক ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। আমি জেনেশুনে মেয়েকে জাহান্নামের মধ্যে রাখতে পারি না। আমার মেয়ে পানিতে ভেসে আসে নি।"

ছেলের বউ যেদিন চিরতরে চলে গেলো সেদিন থেকে সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেলো। ছেলেটা অফিস যাওয়া বন্ধ করে দিনরাত রুমে শুয়ে থাকতো। আর মেয়েটা বিষন্ন হয়ে থাকতো। বাড়িটাকে মনে হতো কবরের মতো।

স্ত্রী চোখের পানি ফেলে বলতো, "কী অপরাধে আল্লাহ আমাদের এমন শাস্তি দিলেন?"

আমার তখন ইচ্ছে হতো স্ত্রীকে বলি, "সব দোষ আমার। আমার কারণেই ছেলেমেয়েরা কষ্ট পেলো।"

কিন্তু মান সম্মান হারানোর ভয়ে বলতে পারতাম না।

জীবনের এই চরম দুঃখময় দিনে অনুভব করলাম, আল্লাহ ছাড়া আর কেউ আমাকে উদ্ধার করতে পারবে না। আমি হজ্জ করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

কিন্তু বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, আমি কোনো ভাবে হজ্জে যেতে পারছিলাম না। আমার পাসপোর্ট ভিসা নতুবা অন্য কোনো কাগজপত্রে কিছু একটা সমস্যা হয়ে যেতো এবং হজ্জে যাওয়া বাতিল হয়ে যেতো।

অবশেষে বুঝলাম সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে। কেনো আল্লাহ আমাকে হজ্জে যেতে দিচ্ছেন না?

অতঃপর এক রাতে মাথা নিচু করে স্ত্রীকে আমার চরিত্রের কথা খুলে বললাম। বিয়ের পর অন্য নারীর সাথে সম্পর্ক করে আমি যে তাকে ধোঁকা দিয়েছি সব বললাম। আমার কুকর্মের একটি কথাও গোপন করি নি।

সব বলার পর তাকে বললাম, "তুমি চাইলে আমাকে তালাক দিয়ে চলে যেতে পারো। তোমার ভরণপোষণসহ যা যা লাগে সব দেবো। আবার তুমি চাইলে আমাকে ক্ষমা করতে পারো। তুমি ক্ষমা না করলে আমার ইহকাল পরকাল দুটোই শেষ হয়ে যাবে।"

আমাকে অবাক করে দিয়ে স্ত্রী আমাকে ক্ষমা করলো।

তবে সে আমাকে বলেছিলো, "আমি তোমাকে তোমার জন্য ক্ষমা করি নি। ক্ষমা করেছি ছেলেমেয়েদের জন্য। কারণ ছেলেমেয়েদের জীবনে দুর্দশা নেমে এলেও তাদের মাথার উপর এখনো বাবা মার ছায়া আছে। এখন যদি সেটাও সরে যায় তাহলে তাদের দুর্দশার আর অন্ত থাকবে না।"

এরপর আর হজ্জে যেতে সমস্যা হলো না। পাসপোর্ট ভিসায় কোনো ত্রুটি হলো না। তবে হজ্জে একা যাই নি। স্ত্রীকেও নিয়ে গেলাম।

বাবা মা হজ্জে যাচ্ছে দেখে ছেলেমেয়েরা খুশি হলো। তাদের খুশি দেখে কী যে ভালো লাগলো!

হজ্জ থেকে এসে মেয়েটার আবার বিয়ে দিলাম। তবে ছেলেটা আর বিয়ে করতে চাইলো না।

সে তার মাকে বললো, "মা, সংসার করতে ভয় লাগে। যদি আবার স্ত্রীকে কষ্ট দিয়ে ফেলি?"

ওর মা তখন বললো, "তোমার একথা থেকেই বোঝা যায় আল্লাহ তোমার মন পরিষ্কার করে দিয়েছেন। বাবা, তুমি নিশ্চিন্তে সংসার করতে পারো।"

ছেলে মায়ের কথা রাখলো।

বিয়ের রাতে স্ত্রীকে বললাম, "যদি ভাগ্যগুণে কোনোদিন জান্নাতে যাই তবে আল্লাহকে বলবো, আমার একটিও হুরপরী চাই না। শুধু আমার স্ত্রীকে চাই।"

সে ভেবেছিলো আমি মজা করছি। তাই গুরুত্বহীন চোখে আমার দিকে তাকালো। কিন্তু যখন দেখলো আমার চোখে পানি তখন সে বুঝলো আমি মজা করছি না।

সে তখন আমার ডান হাত তার দু হাতের মুঠোয় নিয়ে কোমল করে ধরলো।

এমন পরম মায়াময় স্পর্শে আমার কান্না না থেমে আরো বেড়ে গেলো।

"মায়া"
- রুদ্র আজাদ

26/10/2024

শ্রাবণীর সাথে আমার বিয়েটা বাবা মা মেনে নিতে পারলেও মেনে নিতে পরে নি আমার দাদি আম্বিয়া বেগম। দাদি খুব করে চেয়েছিলো আমি যেন আমার ফুফাতো বোন নাতাশা’কে বিয়ে করি। কিন্তু যে মেয়েটা আমার কোলে হিসু করে বড় হয়েছে তাঁকে বিয়ে করি কিভাবে?

বিয়ের পর থেকেই দেখছি দাদি শ্রাবণীকে একদম সহ্য করতে পারে না। শ্রাবণীর প্রতিটা কাজে দাদি কোনো না কোনো ভুল খুঁজে বের করে।দাদির এমন ব্যবহার শ্রাবণী আগে মেনে নিতে পারলেও এখন আর পারে না।

আজ শ্রাবণী প্রথম বার যখন সবার জন্য বিরিয়ানি রান্না করলো তখন বিরিয়ানিতে এতো পরিমাণ লবণ হয়েছিলো মনে হচ্ছিলো বিরিয়ানি না, পূবালী লবণের ফ্যাক্টরিতে বসে লবণ খাচ্ছি। দাদি বিরিয়ানিটা মুখে নিয়ে মুখ বাংলার পাঁচের মতো করে রেগেমেঘে আমায় বললো,
-“পালিয়ে বিয়ে করার জন্য আর কোনো মেয়ে পেলি না? কোথা থেকে এই বয়লার মুরগিটাকে ধরে এনেছিস? শুধু চামড়াটাই সুন্দর। না আছে চেহারার ঢঙ না আছে ভিতরে কোনো গুণ।আমার নাতনি নাতাশা দেখতেও যেমন সুন্দর ছিলো তেমনি সব রকম রান্নাও পারতো।তুই ওরে বিয়ে না করে কোথা থেকে এই রক্তশূন্যতাই ভুগছে রোগীটাকে ধরে আনলি ?”

আমি দাদির কথার কোনো উত্তর না দিয়ে শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে দেখি ও হাতে কাটা চামচ নিয়ে রাগে কাঁপছে। একে তো মাত্রাতিরিক্ত সুন্দর তার উপর রাগের জন্য নাকে আর কপালে মুক্তার দানার মতো বিন্দু বিন্দু ঘামের কণা জমেছে।

বউয়ের সৌন্দর্য্যে আমি যখন বেহুঁশ তখন মা আমার গালে থাপ্পড় মেরে হুঁশে ফিরিয়ে এনে বললেন,
- “বউমাকে আটকাচ্ছিস না কেন?”

হুঁশে ফিরে এসে দেখি শ্রাবণীকে আমার দাদা আটকে রেখেছে আর দাদিকে বাবা ধরে রেখেছে। শ্রাবণী কাটা চামচ নিয়ে বারবার দাদির দিকে তেড়ে এসে বলছে, “আমি বিরিয়ানিতে পরিমাণ মতই লবণ দিয়েছিলাম। আমার চোখের আড়ালে এই বুড়ি লবণ বেশি দিয়েছে। আমি রান্না করার সময় এই বুড়ি রান্নাঘরে ঘুরঘুর করছিলো।”

আমি শ্রাবণীকে কোনো রকম রুমে নিয়ে আসলাম। ওর দিকে পানির গ্লাসটা বাড়িয়ে দেওয়ার সময় খেলায় করি ওর কাজল কালো চোখ দিয়ে একফোঁটা কৃষ্ণ বর্ণ জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে।

শ্রাবণী পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে বললো,
“পিয়াস, বিশ্বাস করো আমি লবণ পরিমাণ মতো দিয়েছিলাম। সবার সামনে এই বুড়ি যেন আমায় অপমান করতে পারে তাই আমার অজান্তে লবণ বেশি দিয়ে সব নষ্ট করে দিলো। আমি এই বুড়িকে সত্যি সত্যি একদিন শেষ করে দিবো”

আমি মুচকি হেসে বললাম, “ তুমি পানিটা খেয়ে মাথাটা ঠান্ডা করো”

পরেরদিন অফিসের কাছে যখন ব্যস্ত ছিলাম তখন মা আমায় ফোন দিয়ে বললো, “তাড়াতাড়ি বাসায় আয়”
আমি কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে বললাম,
-মা, সব ঠিক আছে তো? শ্রাবণী দাদিকে কিছু করে ফেলি নি তো?

মা আমায় ফোনে যখন সব ঘটনা খুলে বললো তখন আমি কি বলবো বুঝতে পারছিলাম না। তড়িঘড়ি করে বাসায় এসে দেখি বাবা সমানে পায়চারি করছে। ফুপি ফ্লোরে বসে চিৎকার করে কান্না করছে।

আমি বাবার কাছে এসে মাথা নিচু করে বললাম,
-বাবা, ঘটনাটা কি আসলেই সত্যি? তোমার নাকি আরেকটা ছোট ভাই দুনিয়াতে আসতে যাচ্ছে?

বাবা রেগে আমার ডান গালে থাপ্পড় মেরে বললো,
- “হা*রামজাদা সামনে থেকে যা বলছি”

একটু দূরে চুপচাপ বসে থাকা দাদার কাছে গিয়ে বললাম,
-এই বয়সে দাদা কিভাবে কি?
দাদা বোকার মতো আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
- “আমি নিজেও বুঝতে পারছি না কিভাবে কি হয়ে গেলো”

এমন সময় ফুপি কান্না করতে করতে বাবাকে বলতে লাগলো,
- “তোমাকে বারবার বলেছি মা আমার কাছে থাকুক আর বাবা তোমার কাছে। কিন্তু না, তোমার বাবা মা দুইজনকেই লাগবে। এখন বুঝো মজা। সমাজে মুখ দেখাবো কিভাবে?

আমি ফুপির কাছে গিয়ে বললাম,
-ফুপি, দাদি প্রেগন্যান্ট হয়েছে দেখে কান্না করছো নাকি তোমার আরেকটা ভাই বোন হলে তাকেও সম্পত্তির ভাগ দিতে হবে সেই কষ্টে কান্না করছো?

ফুপি আমার বামগালে থাপ্পড় মেরে বললো,
- “সামনে থেকে যাবি নাকি আরেকটা দিবো?”

হঠাৎ খেয়াল করি ড্রয়িং রুমের এক কোণে মা আঁচলে মুখ ডেকে কান্না করছে। ফুপি কান্না করছে মেনে নেওয়া যায় কিন্তু আমার মা কেন কান্না করছে বুঝলাম না। আমি মায়ের কাছে গিয়ে বললাম, “ মা, আল্লাহ আল্লাহ করো যাতে তোমার শ্বাশুড়ির মেয়ে না হয়ে ছেলে হয়। এক ননদির যন্ত্রণায় তোমায় জীবন কেরোসিন হয়ে গিয়েছিলো। এখন যদি নতুন করে আরেকটা ননদি জন্ম নেয় তাহলে তোমার জীবন তেজপাতা হয়ে যাবে”

মা রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো,
“ দুই গালে থাপ্পড় খেয়ে শিক্ষা হয় নি? এখন কি তোর কপাল বরাবর একটা মারবো?

আমি ভয়ে আর কিছু না বলে নিজের রুমে এসে দেখি শ্রাবণী বিছানায় বসে আঁচার খাচ্ছে। আমি তখন শ্রাবণীকে বললাম,
- প্রেগন্যান্ট আমার দাদি আর তুমি আঁচার খাও কোন কারণে?
শ্রাবণী মুচকি হেসে বললো,
“দাদি প্রেগন্যান্ট তোমায় কে বললো?”
আমি অবাক হয়ে বললাম, মানে!
শ্রাবণী হেসে বললো, “ গ্যাসের সমস্যার জন্য সকালে দাদি বেশ কয়েকবার বমি করে দূর্বল হয়ে গিয়েছিলো। আমি দাদিকে আমার ডাক্তার বান্ধবী লিমার কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। লিমাকে আগেই শিখিয়ে দিয়েছিলাম কি কি বলতে হবে। লিমা যখন দাদিকে প্রেগন্যান্সির কথা বললো দাদির মুখটা একদম দেখার মতো হয়েছিলো। বিয়ের পর থেকেই এই বুড়ি আমাকে জ্বালিয়েছে। আমি এখন কিছুটা সময় মজা নিবো”

আমি তখন শ্রাবণীকে বললাম,
-এটা একটু বেশি হয়ে গেছে।সত্যিটা জানার পর সবাই তোমার উপর খুব রাগ করবে। তাছাড়া এতক্ষণে আমার বাবাও নিশ্চয়ই সম্পত্তি হারানোর কষ্টে কান্নাকাটি শুরু করছে।

শ্রাবণী কিছুটা লজ্জা পেয়ে বললো, “তখন আমি আরেকটা সত্যি বলে তাদের রাগ ভেঙে দিবো”

আমি বোকার মতো তাকিয়ে বললাম, “ মানে!”

শ্রাবণী হেসে বললো, “ মানেটা হলো আমি আঁচার এমনি এমনি খাচ্ছি না। এখন সামনে থেকে সরো তো”

এই কথা বলে শ্রাবণী আঁচারের বৈয়ামটা নিয়ে দাদির রুমে চলে গেলো। হঠাৎ খেয়াল করি ড্রেসিং টেবিলের উপর প্রেগনেন্সির কিট।
কিটটা যখন হাতে নেই তখন মনের অজান্তেই চোখের কোণে একফোঁটা জল জমেছে। প্রথমবার বাবা হবে কথাটা শুনে হয়তো সব ছেলেদের চোখের কোণে একফোঁটা জল জমে।

চুপি সারে দাদির রুমে এসে দেখি শ্রাবণী দাদিকে বলছে, “ দাদি আঁচার খাবে? এইসময় নাকি গর্ভবতী মহিলাদের খুব আঁচার খেতে ইচ্ছে করে। চিন্তা করো না আজ থেকে তোমার সব কাজ আমি করবো। তুমি কোনো ভারি কাজ করতে যেও না। গর্ভবতী মহিলাদের ভারি কাজ করতে নেই…”

আমি পর্দার আড়াল থেকে শ্রাবণীর দুষ্টামি কথা গুলো শুনছি আর হাসছি। কিন্তু বুঝতে পারছি না আমার চোখ দিয়ে সমানে পানি কেন বের হচ্ছে। পাগলিটা মা হবার তীব্র যন্ত্রণাটা সহ্য করতে পারবে তো?

এক ফোঁটা চোখের জল
আবুল বাশার পিয়াস

(এটা আমার অনেক আগের একটা লেখাকে নতুন করে আবার লিখার চেষ্টা করা)

🙂
14/08/2024

🙂

09/08/2024

"এই যে চারিদিকে শেখ মুজিবের ভাস্কর্য সমানে ভাঙা হচ্ছে এটা কিন্তু অন্যায় হচ্ছে"
হুট করে শ্রাবণীর বাবার মুখ থেকে এমন কথা শুনে কি বলবো কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
শ্রাবণীর সাথে টানা ৯বছর প্রেম করার পর অবশেষে আমার সাহস হয়েছিলো ওর বাবার সাথে দেখা করার। শ্রাবণী আমায় আগে থেকেই বলে রেখেছিলো ওর বাবা আর্মি অফিসার ছিলো। প্রচুর রাগী মানুষ। আমি যেন উনার কোন কথাতে দ্বিমত পোষণ না করি। উনি যা বলে সবই যেন মেনে নেই।
বুকে কেজি খানেক সাহস নিয়ে যখন শ্রাবণীর বাবার সামনে দাঁড়ালাম তখন উনার কিং কং মার্কা চেহারা দেখে আমার বুকের সব সাহস ফুস হয়ে গেলো। একটা মানুষ দেখতে এতো ভয়ংকর হয় কিভাবে? উনার যে টাইপের চেহারা এতে তো উনার মেয়ের চেহারা হওয়ার কথা ছিলো আফ্রিকা মহাদেশের বদসোনায়া আদিবাসী মেয়েদের মতো। কিন্তু শ্রাবণী এতো সুন্দর হলো কিভাবে? তবে কি আংকেল বিদেশে মিশনে থাকা অবস্থায় —

আমি যখন এইসব উল্টো-পাল্টা জিনিস ভাবছিলাম তখন দরজার পর্দার আড়াল থেকে শ্রাবণী আমায় ইশারা দিয়ে বুঝালো আমি চুপ না থেকে যেন কথা বলি।

আমি তখন বললাম,
-জ্বি আংকেল, অবশ্যই অন্যায় হচ্ছে। টিভি অন করলেই বঙ্গবন্ধুকে দেখতাম। হাটে-বাজারে, চিপায়-চাপায় সেখানেই যেতাম সেখানেই দেখতাম বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বৈদ্যুতিক খাম্বার মতো আমার সামনে দাড়িয়ে আছে।স্কুল কলেজ থেকে শুরু করে ইউনিভার্সিটি সব জায়গায় দেখতাম বঙ্গবন্ধুর আদর্শ সৈনিকেরা নানা রকম সামাজিক কাজ করছে। এমন কি পাবলিক টয়লেটে হাগু করতে গেলেও দেখতাম দেয়ালে লেখা, জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।জন্মের পর থেকে মনে হয় না আমি আমার বাপের চেহারাও এতোবার দেখেছি এই ১৬ বছরে আমি যতবার বঙ্গবন্ধুর চেহারা দেখেছি। গা*জাখোরদের কাছে গা*ঞ্জা যেমন জরুরি। সময় মত গা*জা না খেলে তাদের মাথা কাজ করে না। তেমনি বাঙালির কাছে শেখ মুজিবের চেহারাটাও জরুরি। প্রতিদিন এই ভদ্রলোকের চেহারা না দেখলে মানুষের অস্থিরতা লাগে। ১৬ বছরের অভ্যাস বলে কথা। আমার তো এখনি অস্থির লাগছে।

শ্রাবণীর বাবা একটু কেমন জানি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে চা’য়ে চুমুক দিতে দিতে বললো,
“ তবে এক হিসাবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙা ঠিকই হয়েছে?”
আমি তখন বললাম,
-অবশ্যই ঠিক হয়েছে। বাংলাদেশে এতোগুলো বৈদ্যুতিক খাম্বা নাই যতগুলো বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য আছে। শহরের প্রতিটা দেয়াল থেকে শুরু করে মেট্রোরেলের পিলার সবখানেই শুধু বঙ্গবন্ধুর ছবি। মানুষ এক মুখ বার বার দেখে অতিষ্ঠ হয়েই এইগুলো ভাঙছে। এই সরকার যদি আরো ৫ বছর দেশ শাসন করতো তাহলে বাঙালিরা ৩ কবুল বলে আর বিয়ে করতে পারতো না। ৩বার বঙ্গবন্ধুর নাম বলে বিয়ে করতো। কাজী তখন বলতো “নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউড়া গ্রামে ইসলাম উদ্দিনের বড় পুত্র মোঃ আবুল বাশার পিয়াসের সাথে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আফজাল হোসেনের একমাত্র মেয়ে সানজিত বিন শ্রাবণীর সাথে ১০লক্ষ ১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে ধার্য করা হলো। তুমি সম্মতি থাকলে তিন বার বলো, “শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ মুজিবুর রহমান”

আমার কথা শুনে শ্রাবণীর বাবা রাগে চিৎকার করতে করতে বললো, “শ্রাবণী এই বেয়াদবটাকে এখনি আমার সামনে থেকে নিয়ে যা বলছি”

জয়নুল আবেদিন পার্কে আমি আর শ্রাবণী চুপচাপ বসে আছি। পাশে কয়েকজন শিল্পী জয়নুল আবেদিনের ভাস্কর্যটা ঠিক করছে। অন্যায় করেছে শেখ হাসিনা। ভাঙলে তার বাপের ভাস্কর্য ভাঙবি। বেচারা জয়নুল কি দোষ করলো। তোরা তার ভাস্কর্য কেন ভাঙলি…

আড়চোখে শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর রাগ এখনো কমে নি। ৯ বছর ধরে দেখছি শ্রাবণী যখন কোনো বিষয় নিয়ে রেগে যায় তখন ওর সারা মুখ লাল হয়ে যায়। নাকে বিন্দু বিন্দু ঘামের কণা জমে। দেখে মনে হয় মুক্তার দানা গুলো জ্বল জ্বল করছে। আমি যখন মুক্তার দানাগুলো ছুতে যাবো তখনি শ্রাবণী বলে উঠলো,
- “তোমাকে কে বলেছিলো বাবার সাথে এমন ফালতু কথা বলতে? দুইটা দিন কিছু না খেয়ে, নানা রকম ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে বাবাকে রাজি করিয়েছিলাম। আর তুমি সব শেষ করে দিলে? আজকের পর তোমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি আমার বাবার পছন্দ করা কোন আর্মি অফিসারকে বিয়ে করে ফেলবো। আজকের পর ভুলেও তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করবে না।”

শ্রাবণী চলে যাবার সময় আমি যখন ওর হাতটা ধরলাম তখন ও কেঁদে দিয়ে বললো, “পিয়াস প্লিজ, আর আমায় আটকিও না। ৯টা বছর আমি তোমার সাথে ছিলাম। একদিনের জন্য তোমাকে দেখিনি আমার প্রতি সিরিয়াস হতে”

আমি শ্রাবণীর কাজলে লেপ্টে যাওয়া চোখের জলটা মুছে দিয়ে বললাম, “ আর আটকাবো না। শুধু তোমার আর্মি অফিসার স্বামী যখন দেশের বাহিরে মিশনে যাবে তখন আমার সাথে একটু যোগাযোগ রেখো”

শ্রাবণীর লাল হয়ে যাওয়া মুখটা আরো লাল হয়ে যাচ্ছে। আর ওর সামনে দাঁড়ানো যাবে না। আমি ছুটে চলেছি আর আমার পিছন পিছন শ্রাবণী। ৯বছর ধরে যে কথাটা আমি শ্রাবণীকে বলতে পারি নি সেই কথাটা আমি আজো বলতে পারলাম না। আমি ওর প্রতি কতটা সিরিয়াস, ওকে আমি কি পরিমাণ ভালোবাসি…

বলতে না পারা কথা
আবুল বাশার পিয়াস

05/08/2024

আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নিচ্ছেন

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস৷
Source: Sarjis Alam

05/08/2024

ঈদের জামা কিনতে যাচ্ছি। টাটা গায়েস 😛🇧🇩❤️

04/08/2024

আমার ফ্রেন্ডলিস্টে অনেক ছাত্রলীগ আছেন। তারা বলছেন, কোটা আন্দোলন কি সরকার পতনের উদ্দেশ্য ছিল?? তাদের উদ্দেশ্য আমি একটা গল্প বলি শুনেন! গল্পটা বলার কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই পারিবারিক এবং পড়াশুনা/লেখালেখির ক্ষেত্রে আমার বন্ধু কিংবা ভালো সম্পর্ক রয়েছে।

ধরুন, আপনার বাবা এবং মায়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো এবং একদিন প্রচন্ড ঝগড়া শুরু হলো। আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করলেন সেই ঝগড়া থামানোর। কিন্তু ঝগড়া এতই বেড়ে গেল যে আপনার বাবা আপনার মাকে মেরে ফেলল। তখন আপনার রাগী বাবা হঠাৎ শান্ত হয়ে গেল। কিন্তু আপনি আপনার বাবাকে প্রচন্ড ঘৃণা করা শুরু করলেন এবং মনে মনে বললেন, রাগটা যদি আগে কন্ট্রোল করতো তাহলে মা'কে মরতে হতো না। মনে মনে ধারণা হলো, যে আপনার মা'কে হত্যা করেছে সে আপনাকেও হত্যা করতে পারে। এখন আপনার বাবা অনুশোচনা নিয়ে বললেন, আসো বাবা তোমার মা'কে কবর দিয়ে যা হয়েছে ভুলে যাই এবং আলোচনা করে এর সমাধান করি। তখন আপনি কি তাই করবেন নাকি মায়ের হত্যার বিচার চাইবেন? আপনি কি পরবর্তীতে নিজেকে কখনো আপনার বাবার কাছে নিজেকে সেইভ মনে করবেন?

এটাই হলো কোটা আন্দোলন থেকে সরকারের পতন চাওয়ার উদ্দেশ্য। এখানে ছাত্রদের সাথে আর কোনো রাজনৈতিক সংগঠন জড়িত নেই। ঠিক যেমন আপনি গল্পের মতো পরবর্তীতে যে পরিবারের কাছেই থাকুন না কেন শুধুমাত্র নিজের মানসিক শান্তির জন্য বাবার সাথে থাকতে চাচ্ছেন না এটাই মূল বিষয় !!

Shadbin Shakil

04/08/2024

কোটা সংস্কারের পক্ষে ছিলাম, এখন যেটা চাচ্ছেন সেটার অপেক্ষাতেই ছিলাম। 🥱

03/08/2024

আজ কী আমাদের চোখ জলে ভাসার রাত? চট্টগ্রামের লাখো জনতার একসাথে গেয়ে উঠা গানটি দেখে চোখের জলে ভেসেছি। এখন ঢাকা শাহবাগের। আহ, কলিজা ঠান্ডা হয়ে যায়। গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। চোখ ভিজে যায়। 💚

18/07/2024

আমি বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন দেখি নি। আমি একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধ দেখি নি। তবে আমি ২০২৪ সালের কোটা আন্দোলন দেখেছি। আমি দেখেছি একই শ্রেণীতে অধ্যয়নকারী বন্ধু আরেক বন্ধুকে মা*রার সময় হাত না কাঁপতে। আমি দেখেছি তাদের বিবেকে কুত্তা হিসু করতে।

মানুষের বিবেকের কতটা পচন ধরলে রাস্তাঘাটে নিজের স্বজাতি ভাই-বোনদের মে*রে র*ক্তা*ন্ত করতে পারে?

অবশ্য কুকুর কখনো ন্যায় অন্যায় বুঝে না। ও শুধু ওর মালিকের প্রতি অনুগত থাকে। ওর মালিক যদি পা চাটতে বলে তাহলে পা চাটে। ওর মালিক যদি হাগু করার পর গু খেতে বলে সে গু খেতে থাকে…

আজ একজন সিনিয়র বড়ভাইকে দেখলাম খুব আফসোস করে বলতে, “একটা সময় ১০জন মানুষের সামনে খুব গর্ব করে বলতাম আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলো। আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। অথচ এখন দুই জনের সামনে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান বলে পরিচয় দিতে নিজের ভিতর সংকোচ বোধ কাজ করবে। কারণ যারা দেশ চালায় তারাই মুক্তিযোদ্ধার সন্তান আর সাধারণ মানুষের সন্তানদের মাঝে বৈষম্য তৈরি করে ফেলেছে। আমি চাই না নিজের জন্য কোটা, চাই না আমার সন্তানরা তার দাদার জন্য কোন কোটা পাক। আমি শুধু এতটুকুই চাই, আমি যেন গর্ব করে ১০জনের সামনে বলতে পারি আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।”

কথা বলার সময় বড় ভাইয়ের অশ্রুমাখা চোখ গুলো বলে দিচ্ছিলো কতটা বৈষম্য তৈরি হয়ে গেছে।

আপনারা একটা জিনিস খেয়াল করেছেন তথাকথিত আমাদের দেশের সেলিব্রিটিরা যখন বুঝতে পেরেছে দেয়ালে তাদের পিঠ ঠেকে গেছে। তারা যদি এখন কিছু না বলে তাহলে এইদেশের জনগন তাদের গায়েবী জানাজা পড়বে। তখনি তারা কোন রকম দায় সারার জন্য ফেসবুকে নাম মাত্র একটা পোস্ট দিচ্ছে। অথচ তারা কেউ একজন বলছে না, “আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে আছি। বৈষম্য দূর করে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হোক”

আমরা কোন সেলিব্রিটিদের বলছি না, আপনি আমাদের সাথে রাস্তায় নেমে পুলিশের হাতে কুত্তা*মার খান। আমরা শুধু আপনাদের মতো প্রিয় মানুষদের থেকে একটু সমর্থন আশা করেছিলাম। যাতে আপনাদের মাধ্যমে হলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিশ্ববাসী জানতে পারে। অথচ আপনারা নাম মাত্র পোস্ট করে খালাশ…

এইসকল টুট মারানী সেলিব্রিটিদের জন্য আমারা নিজেরা নিজেরা কামড়া-কামড়ি করি। “আপনারা আমাকে ভুলে যাইয়েন না” এই কথা শুনে কেঁদে বুক ভাসায়। তাদের সিনেমা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে হলে গিয়ে দেখি। নিজের হাত খরচের টাকা খরচ করে তাদের বই কিনি। অথচ আমাদের প্রয়োজনে তাদের কখনো পাশে পাই না।

আজ এই আন্দোলন না হলে এইসকল তেলবাজদের চিনতে পারতাম না। জাতি আজ তাদের চিনে রাখুক। নেক্সট টাইম ওরা আমাদের ইমোশন নিয়ে খেলতে আসলে আমরা তাদের ইমোশনে হিসু করে দিবো…

আর সাকিব আল হাসান আর মাশরাফি ভাইকে জাতি সারাজীবন মনে রাখবে। ভাবতে পারি নি যে উনারা এতো তাড়াতাড়ি পটল তুলবে। আমরা উনাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি…

বিবেকের পচন
আবুল_বাশার_পিয়াস

15/07/2024

আমাদের বাবা যখন বিয়ে করেন তখন তার আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলো না। বিয়ের বছর খানিক পর আমার বড়ো ভাইয়ের জন্ম হলো। এর বছর দুয়েক পর আমার জন্ম হলো। আমাদের দুই ভাইয়ের জন্মতে বাবা মা আত্মীয়স্বজন খুশি হলেন।

দুই ছেলের জন্মের পর বাবা মা আর সন্তান নিতে চান নি। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত মায়ের পেটে আরেকটি সন্তান চলে এলো। এবার একটি মেয়ে সন্তান জন্ম নিলো। শ্যাম বর্ণের। এতে কেউ খুশি হলেন না। কারণ একে তো মেয়ে, তার ওপর গায়ের রঙ শ্যামলা। বাবা মা এবং আমরা দুই ভাই ফর্সা।

আমাদের দুই ভাইয়ের সাথে বোনকে দেখলে মানুষেরা বলতো, "এই মেয়েটা তোমাদের কী হয়?"

বোন শুনলে তারা অবাক হয়ে বলতো, "তোমাদের সাথে ওর কোনো মিল নেই। তোমরা দুই ভাই কতো সুন্দর, আর ও কেমন ময়লা!"

বাবা মা বলতেন, "এই কালো মেয়েটা কোত্থেকে আমাদের ঘরে জন্ম নিলো?"

বাবা মার অপ্রত্যাশিত সন্তান হওয়াতে এবং মেয়ে হওয়াতে এবং শ্যামলা হওয়াতে বাবা মা আমাদের বোনের প্রতি খুশি ছিলেন না। আমরা দুই ভাইও বোনটাকে পছন্দ করতাম না। আমরা দুই ভাই যখন খেলতাম, গল্প করতাম তখন যদি বোনটা আমাদের কাছে আসতো, আমরা তাকে ধমক দিয়ে দূর করে দিতাম। ছোট্ট শ্যামলা বোন ধমক খেয়ে আড়ালে চলে যেতো।

বাবা মা বোনটাকে বোঝা ভাবতেন।

বাবা প্রায় সময় দুঃখ করে বলতেন, "এই মেয়েকে বিয়ে দিতে অনেক কষ্ট হবে। অনেক টাকা খরচ হবে আমার। এতো সাবধানে থাকলাম তবু কী করে যে এই মেয়ে পৃথিবীতে চলে এলো?"

আমাদের বোনটাকে যে কেউ পছন্দ করতো না এটা বোন বুঝতো। তাই সব সময় আমাদের বোন কুঁকড়ে থাকতো।

অবহেলায় আমাদের বোন বড়ো হতে লাগলো। কিন্তু একটা বিষয় আমরা কেউ খেয়াল করলাম না, তা হলো, আমাদের বোনের জন্মের পর থেকে বাবার আর্থিক অবস্থা ভালো হতে লাগলো। বাবার আর্থিক উন্নতির সাথে যে বোনের সম্পর্ক আছে এটা আমাদের মা প্রথম ধরতে পেরেছিলেন। কিন্তু ততোদিনে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিলো।

অল্প বয়সে আমাদের বোনের বিয়ে হয়ে যায়। শ্যামলা মেয়েকে দ্রুত বিয়ে দিয়ে বাবা মা দায়মুক্ত হতে চেয়েছিলেন। আমাদের শ্যামলা বোন চোখের পানি ফেলে যেদিন শ্বশুরবাড়ি চলে গেলো সেদিন থেকে বাবার আর্থিক অবস্থা খারাপ হতে শুরু করলো। এবং বোনের জন্মের আগে বাবার আর্থিক অবস্থা যেমন ছিলো ঠিক সে অবস্থায় ফিরে গেলো।

মা তখন একদিন হঠাৎ করে বাবাকে বললেন, "মনে হচ্ছে মেয়েটার সাথে করে আমাদের সৌভাগ্যটাও চলে গেলো।"

বাবা চমকে উঠেছিলেন মায়ের কথা শুনে। এবং মায়ের কথা যে মিথ্যা নয়, তা বাবার চেহারা দেখে বোঝা গেলো।

এদিকে আমাদের শ্যামলা বোনের জীবনেও অনেক ঘটনা ঘটে গেলো। বোনের চেহারা শ্যামলা হওয়াতে তার ভালো জায়গায় বিয়ে হয় নি। ছেলের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ ছিলো না, কিন্তু ছেলেটা বেকার ছিলো। তবে আমাদের শ্যামলা বোন ওদের বাড়িতে যাওয়ার পর ছেলের ভাগ্য খুলতে শুরু করেছিলো। আমাদের বাবার টাকায় ছেলে দুবাই গেলো। এবং সেখানে দোকান করে ভালো টাকা কামাতে লাগলো। অল্প সময়ের মধ্যে সে দেশে বাড়ি করলো। তবে দেশে এসে সে একটা কুকাম করলো। আরেকটা বিয়ে করলো।

সে এমনিতে আমাদের শ্যামলা বোনকে অবহেলা করতো, দ্বিতীয় বিয়ের পর এই অবহেলা আরো বাড়লো। প্রায় সময় সে আমাদের বোনকে মারতো। এর মধ্যে আমাদের বোনের একটা মৃত ছেলে হয়েছিলো। অল্প বয়সে সন্তান জন্ম এবং স্বামীর নির্যাতনে আমাদের বোন বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো। তবু আমাদের বোন কখনো বাবা মাকে কিছু বলে নি। হয়তো সে ভাবতো, বাবা মার বাড়িতে এসেও তার সুখে থাকা হবে না। কারণ বাবা মার বাড়িতেও সে অবহেলা পেয়েই দিন কাটিয়েছিলো।

আমাদের শ্যামলা বোনের স্বামী যখন দেখলো আমাদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে তখন সে আর আমাদের বোনকে রাখতে চাইলো না। একদিন প্রচণ্ড মেরে আমাদের বোনকে ঘর থেকে বের করে দিলো। বোনের স্বামী বুঝতে পারলো না সে যে আমাদের বোনের সাথে তার জীবনের সৌভাগ্যটাকেও বের করে দিলো। চোখের পানি ফেলে আমাদের শ্যামলা বোন বাবার বাড়িতে ফিরে এলো।

আমাদের বোনকে তার স্বামী যেদিন ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলো ঠিক সেদিনই তার দুবাইয়ের দোকান আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিলো। তারপর থেকে তার পতন শুরু হয়ে গেলো। শুধু তার পতন নয়, তাদের পুরো পরিবারের পতন শুরু হয়ে গিয়েছিলো। আকস্মিক এই পতন বোনের স্বামী মেনে নিতে পারে নি। তার মানসিক সমস্যা দেখা দিলো। পরে তার অবস্থা এতো খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে, তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হতো। এখনো সে উন্মাদ অবস্থায় আছে।

এদিকে আমাদের দুঃখী বোন আমাদের বাড়িতে আবারো সৌভাগ্য নিয়ে এলো। আমাদের দুই ভাইয়ের পর পর চাকরি হয়ে গেলো। এবার আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম আমাদের বোনকে ভালো রাখার জন্য। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা তাকে বেশিদিন ধরে রাখতে পারি নি। সারাজীবনের অবহেলায় তার মন মরে গিয়েছিলো। অল্প কিছুদিনের মধ্যে আমাদের শিশির বিন্দুর মতো বোন চিরতরে আমাদের ছেড়ে চলে গেলো।

বোনের জানাজায় বোনের শ্বশুর এসেছিলেন। তিনি, বাবা, মা এবং আমরা দুই ভাই ভেজা চোখে সেদিন বলেছিলাম, "এই সৌভাগ্যবতী মেয়েটার মূল্য আমরা কেউ বুঝতে পারলাম না।"

আপনারা হয়তো আমাদের বোনের সৌভাগ্যের ব্যাপারটাকে কাকতালীয় বলবেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন ব্যাপারটা কাকতালীয় নয়। কারণ পরবর্তীতে আমাদের দুই ভাইয়ের সংসার জীবনে বড়ো ভাইয়ের একটা মেয়ে একটা ছেলে হয়েছিলো, আর আমার তিনটা মেয়ে হয়েছিলো। এবং বড়ো ভাইয়ের মেয়ের জন্মের পর তার চাকরিতে প্রমোশন হয়েছিলো, আর আমার তিনটা মেয়ের জন্য চাকরিতে তিনবার প্রমোশন হয়েছিলো।

তবে আমাদের বাবা মা আমাদের বোনকে যেভাবে অবহেলা করেছিলেন, আমরা আমাদের মেয়েদের সাথে মোটেই তা করি নি। কারণ ততোদিনে বুঝে গেছি কন্যা সন্তান হলো আল্লাহর দেয়া বরকত। আর এই বরকতের যত্ন নিতে হয়। অযত্ন নয়।

"শিশির বিন্দু"
- রুদ্র আজাদ

02/07/2024

আমি একমাত্র ছেলে। আমার জন্মের কিছুদিন পরই সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা মারা যান। মা আর নানা নানু আমাকে বড়ো করে তোলেন। মা স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন।

আমার বিয়ের দুই বছর পর যখন আমি সদ্য জন্মানো একটি ছেলে সন্তানের বাবা, তখন আমার জীবনে একটা অকল্পনীয় ঘটনা ঘটলো। আমি জানলাম, আমার বাবা জীবিত।

এক রাতে নানু আমাকে তার রুমে ডেকে মা বাবার জীবনের কথা বললেন।

তাদের ঘটনাটি এরকমঃ

মা বাবা প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। মার সাথে বাবার যখন সম্পর্ক হয়, তখন মা চাকরি করতেন। কিন্তু বাবা বেকার ছিলেন। বাবা চাকরি খুঁজছিলেন, কিন্তু পাচ্ছিলেন না। মাও বাবার জন্য চাকরি খুঁজতেন। কারণ ছেলে বেকার শুনলে নানা নানী হয়তো বিয়েতে রাজী হবেন না।

এক সময় বাবা একটা সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির খোঁজ পেলেন। কিন্তু সমস্যা হলো, চাকরিটা পেতে হলে বড়ো অংকের টাকার প্রয়োজন ছিলো। বাবার পক্ষে সে টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিলো না। কারণ বাবার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলো না। মা তখন বাবাকে সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন।

মার জমানো টাকা ছিলো। কিন্তু ঐ টাকা দিয়েও যখন হচ্ছিলো না, মা তখন ব্যাংক থেকে লোন নিলেন। অবশেষে মার টাকা দিয়ে বাবার চাকরি হয়ে গেলো।

তারপর পারিবারিক ভাবে বাবা মার বিয়ে হলো। মা শ্বশুরবাড়ি চলে এলেন। শ্বশুরবাড়ি থেকে মা স্কুলে যাতায়াত করতেন। এক সময় মার পেটে আমি এলাম।

আমার জন্মের সময় যখন ঘনিয়ে এলো, বাবা তখন মাকে বললেন,"এখানে তোমার দেখার কেউ নেই। মা অসুস্থ মানুষ। তার পক্ষে তোমাকে দেখা সম্ভব নয়। তুমি বাবার বাড়ি চলে যাও। আমি নিয়মিত গিয়ে খোঁজ নেবো।"

মা বাবার বাড়ি চলে এলেন। মাকে দেখার জন্য বাবা নিয়মিত আসতেন। আমার জন্মের দিনও বাবা এসেছিলেন। কিন্তু এরপর থেকে বাবা আসা বন্ধ করে দিলেন। তখন মোবাইল ফোন ছিলো না। তাই ফোনে বাবার সাথে যোগাযোগ করার উপায় ছিলো না।

মা শ্বশুরবাড়ি গিয়েও বাবার খোঁজ পান নি।

মার শাশুড়ি অর্থাৎ আমার দাদী মাকে বলেছিলেন, ছেলে এখন বাসায় থাকে না। কোথায় থাকে তিনিও জানেন না।

মাস কয়েক পর মা জানতে পারলেন, বাবা গোপনে আরেকটা বিয়ে করেছেন। যাকে বিয়ে করেছেন তিনি বাবার অফিসের কলিগ ছিলেন। বাবা হুট করে কলিগকে বিয়ে করেন নি। গোপনে অনেকদিন প্রেম করেছিলেন।

বাবার এই বিশ্বাসঘাতকতা মা প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেন নি। যাকে তিনি শূন্য থেকে প্রতিষ্ঠিত করলেন সেই মানুষটা কী করে এমন করতে পারলেন?

মার আঘাত পাওয়া এখানেই শেষ হয় নি। আরো বাকি ছিলো।

মা একদিন আমাকে কোলে নিয়ে বাবার দ্বিতীয় সংসারে হাজির হলেন। বাবার বদলির চাকরি ছিলো। বাবা তখন অন্য জেলায় থাকতেন।

মা বিস্ময় নিয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন,"তুমি আমার সাথে এমন কেনো করলে?"

বাবা উত্তরে মাকে তুই সম্বোধনে বললেন,"তুই নষ্টা মেয়ে। তোর এই ছেলের বাবা আমি না। তোর সাথে সংসার করার প্রশ্নই আসে না। কিছুদিনের মধ্যে ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবি।"

বাবা ভালো করেই জানতেন, আমি তার সন্তান। আর মায়ের চরিত্রেরও কোনো সমস্যা ছিলো না। তবু বাবা মাকে দোষ দিয়েছিলেন তার দ্বিতীয় বিয়েকে বৈধতা দেয়ার জন্য।

বাবার মিথ্যা অপবাদ শুনে মা চিৎকার চেঁচামেচি করেন নি। শুধু অবিশ্বাস নিয়ে বাবার দিকে চেয়েছিলেন। মা সেদিন কতোখানি আঘাত পেয়েছিলেন, তা ধারণা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।

আমাকে নিয়ে মা বাড়ি ফিরে এলেন। সেদিনই মা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, আমাকে বাবার কথা কোনোদিন বলবেন না। আমাকে বলবেন, বাবা মারা গেছেন। আর আমি সেটা জেনেই বড়ো হলাম।

মার ফিরে আসার কিছুদিন পরই বাবা মার তালাক হয়ে গেলো।

এটুকু বলার পর নানু বললেন,"ঘটনা এখানেই শেষ হয় নি। আরো বাকি আছে। সেটা আগামীকাল তুমি জানতে পারবে।"

সারারাত আমার ঘুম হলো না। গোটা রাত বাবা মার কথা মাথায় ঘুরতে লাগলো।

পরদিন মা আমাকে বাবার বাড়ি নিয়ে গেলেন। বাবা নেই এটা জেনে আমি বড়ো হয়েছি। তাই বাবার প্রতি বিশেষ কোনো টান আমার মধ্যে ছিলো না। শুধুমাত্র কৌতূহলবশত বাবাকে দেখতে গেলাম।

আমি আর মা ড্রইং রুমে বসেছিলাম। খানিক পর বাবা রুমে এলেন। বাবাকে দেখে চমকে গেলাম। তিনি হুইলচেয়ারে বসে আছেন। রোগে জর্জরিত শীর্ণ শরীর। তিনি এতোটাই দুর্বল ছিলেন যে, হুইলচেয়ার চালানোর শক্তি তার ছিলো না। অন্য একজন মানুষ হুইলচেয়ার ঠেলে বাবাকে রুমে এনে দিয়েছিলেন।

বাবা কম্পিত কণ্ঠে যা বললেন, তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।

বাবা বললেন, যেদিন মা আমাকে কোলে করে তার বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন, ঠিক সেদিন থেকে তার জীবন বরবাদ হয়ে গিয়েছিলো।

সেদিন রাত থেকে তিনি শারীরিক মিলনের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিলেন। অনেক ডাক্তার কবিরাজ দেখিয়েছিলেন, কিন্তু লাভ হয় নি। এক সময় দ্বিতীয় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেলেন। এতে তিনি দমে না গিয়ে আরো একটা বিয়ে করলেন। কিন্তু এই স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে গেলেন। এবার তিনি ভেঙে পড়লেন। তিনি তখন বুঝতে পারলেন, তার জীবন আর আগের মতো নেই। সেই যে ভেঙে পড়লেন, আর স্বাভাবিক হতে পারলেন না। তারপর একের পর এক রোগে তিনি আক্রান্ত হতে লাগলেন। এখন জীর্ণ শরীরে মৃত্যুর অপেক্ষা করছেন।

এতোদিন পর আমাকে বাবার কথা বলা এবং বাবাকে দেখতে নিয়ে আসা বিনা কারণে ছিলো না। মা কেনো হঠাৎ এ কাজটা করলেন তা আমার বুঝতে সমস্যা হয় নি।

মাস ছয়েক হবে আমি এক নারীর সাথে গোপন সম্পর্কে জড়িয়েছি। কিছুদিন হলো স্ত্রী সেটা ধরতে পেরেছে। তখন থেকে ওর সাথে ঝগড়া হতে লাগলো।

একদিন রেগে গিয়ে ঠিক বাবার কথাগুলো স্ত্রীকে বললাম,"তুই নষ্টা মেয়ে। তোর এই ছেলের বাবা আমি না। তোর সাথে সংসার করার প্রশ্নই আসে না। কিছুদিনের মধ্যে ডিভোর্স লেটার পেয়ে যাবি।"

আমার আর বাবার কথা অবিকল মিলে গেলো দেখে প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেলাম। আরো ভয় পেলাম এই দেখে, বাবা যখন মাকে মিথ্যা চরিত্রের দোষ দিয়েছিলেন, তখন আমার বয়স ছিলো চার মাস, আর আমি যখন আমার স্ত্রীকে মিথ্যা চরিত্রের দোষ দিয়েছিলাম, তখন আমার সন্তানের বয়সও ছিলো চার মাস।

এতোখানি যখন মিলেছে তার মানে আমার সাথে বাবার করুণ পরিণতিও অবিকল মিলবে। আমি আতঙ্কে স্তব্ধ হয়ে গেলাম।

বাবার বাড়ি থেকে বেরুনোর পর মা শান্ত গলায় আমাকে বললেন,"তোমার স্ত্রী খুবই ভালো একটা মেয়ে। তাকে কষ্ট দিও না।"

সেদিন রাতে স্ত্রীর হাত ধরে অনেকক্ষণ কেঁদেছিলাম।

গল্পটি শেষ করার আগে কোরআনের একটা আয়াত বলিঃ

সুরা নূর এর ২৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেছেন,"যারা সতী সাধ্বী সরলমনা নারীদের ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ দেয় তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত এবং তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।"

"অবিকল কীর্তিনাশা"
- রুদ্র আজাদ

Address

Dhaka, Tejgaon, South Begun Bari
Dhaka
8320

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Asad's Diary posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Asad's Diary:

Share