25/09/2025
গ্রেফতারের পর ধর্ষককে কর্মী হিসেবে অস্বীকার মুনাফেক জামায়াতের, অতঃপর ধর্ষিতাকেই ধর্ষকের বিবাহিত স্ত্রী দাবি করে দায়মুক্তি দেয়ার অপচেষ্টা
---
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় মাদ্রাসাছাত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে গত ২১ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়েছে এক জামায়াত কর্মী জামাল উদ্দিন। গ্রেফতারের পর ধর্ষকের তার রাজনৈতিক দলকে আলোচনা শুরু হলে জামায়াতও তার স্ক্রিপ্ট সাজাতে থাকে একদিন পর মুনাফেক এই সংগঠন একদিকে ধর্ষকের পক্ষে সাফাই গেয়ে তাকে দায় মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করে, অপরদিকে ধর্ষকের নিজেদের কর্মী বলে অভিযোগ করা হয়৷
স্ক্রিপ্ট সাজিয়ে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাতে পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয় জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন। জামালকে জামায়াতের কর্মী অস্বীকার করে তিনি বলেন, জামাল উদ্দিন গত বছরের ৩ নভেম্বর জামায়াতের কর্মী হয়েছিলেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন রকম চারিত্রিক ত্রুটির কারণে চলতি বছরের ২২ জুন তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাছাড়া মাদ্রাসাছাত্রী দাবি করা মেয়েটি জামাল উদ্দিনের বিবাহিত স্ত্রী। স্থানীয় মৌলভীর মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয় এক বছরের বেশি সময় আগে। পরে চলতি বছরের ১৪ জুন পঞ্চগড় নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেফিড করে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা হয়। মূলত গত এক বছর ধরে ভরণপোষণ না দেওয়ার কারণে মেয়েটির নানি পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।’
চলুন এবার এই সাম্প্রতিক বিষয়টি নিয়ে জামায়াতের কিছু চুরি হাতেনাতে ধরি আমরা সবাই মিলে-
১. প্রথমেই জামাল জামায়তের কর্মী কি না সে বিষয়ে আলোকপাত করার আগে বলে রাখা ভালো জামাল গুপ্ত সংগঠন জামায়াতের সবচেয়ে দক্ষ কর্মী৷ দক্ষ কেন বলছি, তার কারণ ছাত্রলীগের ভেতরে ঢুকে সাধারণ ছাত্রদের উপর নির্যাতন করে সাফল্যের সাথে ছাত্রলীগের ইমেজ ধ্বংস কারী এবং এরপর সাধারণ ছাত্রদের, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে দাড়া করানোর ষড়যন্ত্রকারী শিবিরের গুপ্তচরবৃত্তি সম্পর্কে আপনারা জানেন। ঠিক একই ভাবে ধর্ষক জামালও আওয়ামী লীগের ভেতর ঢুকে বছরের পর বছর জামায়াতের গুপ্তচর হয়ে দলীয় খবরগুলো জামায়াতকে সরবরাহ করতো। ৫ আগস্টের পর অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মত কোন হামলা, নির্যাতনের স্বীকার না হয়ে খুব নিরাপদে জামায়াতে যোগ দেয় এই জামাল।
২. এবার আসি জামায়াতের কর্মী হিসেবে জামালকে অস্বীকার করা প্রশংঙ্গে। গত ২২ জুন জামালকে চারিত্রিক গুণাবলির কারণে জামায়াত থেকে বাদ দেওয়ার খবরটিও বানোয়াট। বাংলা ট্রিবিউনেরই ২১ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন থেকে এলাকাবাসী সমিজ উদ্দিন বলেন, 'জামাল জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দিয়েছে। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর তাকে সম্ভবত দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রামের মসজিদের দায়িত্ব থেকে তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।'
তার মানে জামালকে ২১ সেপ্টেম্বরই গ্রেফতারের ঘটনা জানতে জামায়াতে ইসলামি তার দল থেকে বহিষ্কার করে। এখন এসে অস্বীকার নাটক সাজিয়েছে তারা।
৩. ধর্ষিতা মেয়েটি জামালের স্ত্রি কিনা বিতর্কের সৃষ্টিকারী মুনাফেক জামায়াত। এই বিতর্ক সৃষ্টি করে জামায়াত একে তো মেয়েটির চরিত্রহানী করেছে। দ্বিতীয়ত একজন জানোয়ারতুল্য ধর্ষককে বিতর্কিতভাবে দায়মুক্তি দেয়ার পায়তারা করছে। তৃতীয়ত, বিবাহিত স্ত্রী দাবি করা জামায়াতের এই মিথ্যাচার, ২০২১ সালে সোনারগাঁ হোটেলের রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক আর ঝর্ণার সাথে মিলে যায়। পরকীয়া করতে গিয়ে রুমের ভেতর অশালীন অবস্থায় ধরা খেয়ে একই ভাবে মামুনুলও ঝর্নাকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছিলেন।
৪. জামায়তের স্ক্রিপ্টে উল্লেখ করা হয়েছে মেয়েটির নানি পরিকল্পিত ভাবে এ মামলাটি করেছে। কতটা ঘৃণ্য মানসিকতাসম্পন্ন হলে একটি রাজনৈতিক দল এ ধরণের জঘন্য বয়ান তৈরি করতে পারে! প্রথমত, ধর্ষক জামালের হাতে মেয়েটি একাধিকবার ধর্ষিত হয়েছে, যার ফলে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা। বাংলা ট্রিবিউনের ২১ সেপ্টেম্বরের প্রকাশিত রিপোর্ট তাই বলে। এর বাইরেও একটা সুস্থ মস্তিষ্কে আমরা যদি বিচার করি তাহলে দেখা যায়, একজন নানী তার নাতনির চরিত্রকে এভাবে কলঙ্ক দিয়ে বাজারে নিলাম করবে কেন? শুধু মাত্র ভরণ পোষণের টাকার জন্যে? কত টাকা ভরণ পোষণের জন্যে একজন বৃদ্ধা এই ধরণের হীনমন্যতার পরিচয় দেবে?
কি মনে হয়? যদি মনে করেন জামাল ধর্ষক তবে নিঃসন্দেহে জামায়াত মুনাফেক। মনে রাখবেন, জামায়াত একাত্তরে ২লক্ষ মা বোনকে বীরাঙ্গনা করার অংশীদার। তাই ধর্ষককে দায়মুক্তি দেওয়ার পুরোনো ইতিহাস জামায়াতের রাজনৈতিক মূল্যবোধের মধ্যেই পড়ে। একাত্তরে তাদের করা অপকর্মের দায় অস্বীকার করে যেমন তারা দায়মুক্তি চাইছে, ঠিক তেমনি ধর্ষক জামালকেও বেমালুম অস্বীকার করে একই মুখে তাকে দায়মুক্তি দেওয়ার প্রোপাগান্ডা চাল্লাচ্ছে এই মুনাফেকের দল। যাতে কাদা তাদের গায়ে না লাগে৷