sangskriti.com - সংস্কৃতি ডটকম

sangskriti.com - সংস্কৃতি ডটকম শিল্প-সংস্কৃতির ঘরবসতি
http://sangskriti.com/

www.sangskriti.com is an Online magazine of reportage, commentary, criticism, essays, reviews on culture with fiction, satire, cartoons and poetry.

পায়ে নাচের জুতো, হাতে বক্সিং গ্লাভস – আমি প্রস্তুত! 💃শৈশবে বিয়ের অনুষ্ঠান মাত্রই আমার নাচ শুরু হয়ে যেত। আমার আনুষঙ্গিক ক...
28/11/2025

পায়ে নাচের জুতো, হাতে বক্সিং গ্লাভস – আমি প্রস্তুত! 💃

শৈশবে বিয়ের অনুষ্ঠান মাত্রই আমার নাচ শুরু হয়ে যেত। আমার আনুষঙ্গিক কিছু লাগতো না, কেবল গান হলেই চলতো। বাবা-মা আমাকে পারিবারিক কোনো বিয়ের দাওয়াতে নিয়ে যেতে কার্পণ্য করতো না, কারণ এসব জায়গায় গেলেই আমি মন খুলে নাচতাম। এটা আমি খুবই ভালবাসতাম!

এমনকি আমি স্কুলের প্রোগ্রামগুলোতেও পারফরম করতাম, প্রতিযোগীতায় অংশ নিতাম। কলেজে গিয়ে যখন কোরিওগ্রাফি সোসাইটিতে যোগ দিলাম, তখন তো আর কথাই নেই। রোজ আমি আট ঘণ্টা সময় নেচে বেড়াতাম!

এতটাই প্যাশনেট ছিলাম আমি – যদিও আমার সত্যিকারের স্বপ্ন ছিল অভিনয় করার।

যদিও, দিল্লীতে নিজের বাসায় আমি এই কথাটা কখনো স্বীকার করিনি। কারণ, ভাবতাম সবাই হয়তো আমার কথাটা হেসেই উড়িয়ে দেবে। চাইতাম না, সবার হাসিতে আমার স্বপ্নটা নষ্ট হয়ে যাক। যদিও, আমি ভাবতাম নাচতে নাচতেই আমার সামনে অভিনয়ের সুযোগ আসবে।

তাই আমি ড্যান্স ইন্ডিয়া ড্যান্স রিয়েলিটি শো-তে অংশ নিলাম। সেরা ১০০-তেও পৌঁছে গেলাম। তবে, এরপরই আমাকে চলে আসতে হল। কারণ, আমার জীবনের গল্পটা ওদের কাছে শক্ত কিছু মনে হয়নি। তখন থেকে নিজের সামর্থ্যের ওপরই সন্দেহ হতে শুরু করলো। মনে হল, পারফরম করে কোনো লাভ নেই।

রিয়েলিটি শো আমাকে ফিরিয়ে দিলেও, সেবারই আমি মুম্বাই আসার সুযোগ পেয়েছিলাম। ফলে, অনেক কিছুই করার সুযোগ ছিল। শেষ মেশ বাবাকে বলেই দিলাম যে, আমি অভিনয়ে ভাগ্যের সন্ধান করতে চাই। আমাকে অবাক করে দিয়ে বাবাও সমর্থন দিলো।

তো, এবার শুরু হল আমার অডিশন দেওয়ার পালা। তবে, এটা খুব কঠিন ছিল। আমি একটা অ্যাপার্টমেন্টে ছয়জন রুমমেটের সাথে থাকতাম। যখন যে যার মত কাজে চলে যেত, তখন আমাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা একা থাকতে হতো। স্রেফ বসে থাকতে হত। এটা আমাকে ভেঙে দিচ্ছি, তল্পিতল্পা গুটিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ভেবেও ফেলেছিলাম।

তখনই আমি নিজের পারফরম্যান্সের কথা ভাবি, নিজের স্বপ্নের কথা ভাবি। আস্তে আস্তে আমি সব বুঝতে শুরু করি। কাস্টিং ডিরেক্টরদের সাথে যোগাযেগ হয়। কিছু বিজ্ঞাপনে কাজ করি। এমনও মাস গেছে যখন আমার হাতে কোনো কাজ ছিল না, ব্যাংক ব্যালান্স থেকে নিজের কপাল ঠুঁকতে ইচ্ছা হত।

তবে, আমি হাল ছাড়িনি। বিজ্ঞাপনের জগতে এক বছরে আমি ১০ টার মত বিজ্ঞাপন করি। কখনো নিজের আত্মসম্মান বিসর্জন দেইনি। আমি নিজের কাছে কথা দিয়েছিলাম, কখনো ভরসা হারাবো না।

এর ঠিক কয়েক মাস পরই আমি আমার প্রথম সিনেমা ‘দাঙ্গাল’-এর অডিশনের জন্য ডাক পাই। মনে আছে, অডিশনের সময় আমার সাথে আরো ৩০ জন মেয়ে ছিল। তখনই মন বলছিল, আমাকেই নেবে। ‘বিহাইন্ড দ্য সিন’-এর ভিডিওতেও দেখা যায় আমি বলছি – ‘অবশ্যই আমি এই ছবিটা করবো’ – এতটাই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমি। সেটাই শেষ অবধি সত্যি হল – রোলটা আমিই পেলাম!

সেসব দিনের তাড়াহুড়া, অনুভূতি গুলো আমি কখনোই ভুলবো না। সব কিছুই শেষ পর্যন্ত সার্থক হয়েছে। একদম শৈশব থেকেই আমি পারফরম করতে ভালবাসি, এখন বড় পর্দায় পারফরম করছি, সেটাও ভালবাসছি।

সেদিন থেকে এখন অবধি আমি যতগুলো রোল করেছি, কখনো নিজেকে সন্দেহ করিনি। আমি জানি আমি এখনো শিখছি। কেউই তো পারফেক্ট নয়, কিন্তু এর অর্থ তো এই নয় যে আপনি হাল ছেড়ে দেবেন। এটা সবে শুরু হল – আরো অনেক কিছু করার আছে। পায়ে নাচের জুতো, হাতে বক্সিং গ্লাভস – আমি প্রস্তুত!

_______________

‘হিউম্যান্স অব বোম্বে’-তে নিজের অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন ‘দাঙ্গাল’, ‘বাধাই হো’ কিংবা ‘কাঠাল’-এ নিখুঁত অভিনয় করা সানিয়া মালহোত্রা।

উড়ে বেড়ানো শত্রু বিমানের চোখে ধোঁকা দিতে মানুষ কত কৌশলই না অবলম্বন করেছিল।তারই এক বিস্ময়কর উদাহরণ—লস অ্যাঞ্জেলসের কাছ...
08/11/2025

উড়ে বেড়ানো শত্রু বিমানের চোখে ধোঁকা দিতে মানুষ কত কৌশলই না অবলম্বন করেছিল।

তারই এক বিস্ময়কর উদাহরণ—লস অ্যাঞ্জেলসের কাছেই অবস্থিত লকহিড এয়ারক্রাফ্ট প্ল্যান্ট, বারব্যাঙ্ক, ক্যালিফোর্নিয়া।

১৯৪০-এর দশকে এই বিশাল কারখানায় তৈরি হতো যুদ্ধবিমান ও তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলে এটি ছিল জাপানি আক্রমণের সম্ভাব্য টার্গেটগুলোর একটি। কিন্তু মার্কিন কর্তৃপক্ষ এমন এক অভিনব পন্থা নিল, যাতে উপর থেকে দেখলে কেউ বুঝতে না পারে যে এখানে চলছে যুদ্ধকালীন উৎপাদন। পুরো শিল্পাঞ্চলটিকে তারা ঢেকে দিল এমনভাবে, যেন উপর থেকে শত্রু বিমানের কাছে এটি একটি সাধারণ গ্রামীণ বসতি বলে মনে হয়।

এই কাজে অংশ নেন হলিউডের সেট ডিজাইনাররা। তাঁদের তত্ত্বাবধানে কারখানার ছাদ ঢেকে দেওয়া হয় কৃত্রিম ঘাস, নকল গাছপালা, ছোট ছোট কুঁড়েঘর ও কৃষিজমির মতো সাজসজ্জায়। উপরের দিক থেকে দেখলে মনে হতো সাধারণ এক গ্রাম—মাটির রাস্তা, গবাদি পশু রাখার খোঁয়াড়, ছায়াঘেরা গাছের সারি।

দিনের পর দিন হাজার হাজার শ্রমিকের শত্রুর চোখ ফাঁকি দিয়ে যাতায়াতের ব্যবস্থা এমনভাবে সাজানো হয়েছিল, যাতে আকাশ থেকে দেখলে মনে হতো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গাছগাছালি, ফাঁকা মাঠের মাঝে কদাচিৎ চলাফেরা করছে কয়েকজন কৃষক। অথচ সেই ছাউনির নিচেই তখন তৈরি হচ্ছিল যুদ্ধের শক্তিশালী অস্ত্র—Lockheed P-38 Lightning ও Hudson bomber।

এই “ক্যামোফ্লাজ শহর” ছিল প্রকৃত অর্থে শিল্প ও প্রতিরক্ষার এক অভূতপূর্ব সংমিশ্রণ, যেখানে সিনেমার নকশা মিলেছিল বাস্তব যুদ্ধের সঙ্গে। যুদ্ধ শেষে যখন এই ছদ্মবেশ তুলে ফেলা হয়, তখন মানুষ প্রথম বুঝতে পারে, আপাতদৃষ্টিতে এই সাধারণ গ্রামের আড়ালেই লুকিয়ে ছিল বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিমান কারখানা।

আব্বাসউদ্দীন আহমদ (২৭ অক্টোবর ১৯০১ – ৩০ ডিসেম্বর ১৯৫৯)আজকে (অক্টোবর ২৭, ১৯০১) আব্বাসউদ্দিনের জনম-দিন, উনি জন্মাইছিলেন কি...
27/10/2025

আব্বাসউদ্দীন আহমদ (২৭ অক্টোবর ১৯০১ – ৩০ ডিসেম্বর ১৯৫৯)

আজকে (অক্টোবর ২৭, ১৯০১) আব্বাসউদ্দিনের জনম-দিন, উনি জন্মাইছিলেন কিনতু কুচবিহারে, কিনতু যেহেতু পাকিস্তান-আন্দোলনের একজন প্রমিনেন্ট কালচারাল-ফিগার ছিলেন ১৯৪৭’র পরে ঢাকাতেই সেটেলড হইছিলেন… উনি খুবই পপুলার একজন সিঙ্গার ছিলেন, উনার সময়ের, এবং এখনো পরিচিত একটা নাম বাংলাদেশে; কিনতু খুবই অবাক করার মতো ঘটনা হইতেছে ১৯৮১ সালে ‘স্বাধিনতা পুরষ্কার’ পাওয়ার আগে তেমন কোন রাষ্ট্রিয়-পুরষ্কারই উনি পান নাই! (পাওয়ারফুল লোকজন পপুলার মানুশ-জনরে খুব একটা দেখতে পারে না আসলে…)

তো, উনার মিউজিক ক্যারিয়ারের শুরু ব্রিটিশ পিরিয়ডে, কলকাতা'তে… তখন গ্রামোফোন রেকর্ড কোম্পানিগুলাতে ‘মুসলমান-নাম’ নিয়া কেউ গান গাইতো না, কিনতু আব্বাসউদ্দিন উনার নাম বদলাইতে রাজি হন নাই, এবং উনি-ই পয়লা ‘ইসলামি গান’ ‘পল্লি গান’... এই জনরাগুলারে এস্টাবলিশ করেন; আর যার ফলে, বিশাল একটা এরিয়া এক্সপোজড হয়া পড়ে, যেইগুলারে আমরা (শিকখিত মিডলক্লাস) ‘আর্ট কালচার’ বইলা মাইনা নিতে রাজি ছিলাম না, এখনো নানান রকমের ব্রাকেটের ভিতর দিয়াই রিকগনাইজ করি…

তো, আব্বাসউদ্দিনের সিগনিফিকেন্স'টা এই জায়গাটাতেই যে, উনি এই গানগুলা গাওয়া ও শোনাটারে শিকখিত-মিডলক্লাসের কাছে ‘রুচিসম্মত’ কইরা তুলছেন! এবং যেই কারনে দেখবেন, পরে ১৯৮০’র দশকে আইসা বাংলাদেশি-ব্যান্ডগুলা ২-১টা ‘লোকসংগিত’ বা ‘আঞ্চলিক গান’ গাওয়াটারে তাদের ‘দায়িত্ব’ মনে করতে পারছে!

আমি মনে করি, ‘পুব-বাংলা’ বা ‘বাংলাদেশ’ বইলা যেই ধারনা, সেইটা একভাবে শেইপ-আপ হইছিল ১৯২০-৩০’র দিকেই, আর সেইখানে অন্য অনেকের সাথে আব্বাসউদ্দিন ছিলেন একজন কি-ফিগার!

আর যে কোন গ্রেট আরটিসট-ই একটা লিগাসি তৈরি করেন, একটা ‘ধারা’ তৈরি করেন… বাংলাদেশি-গানে আব্বাসউদ্দিনের পরে আবদুল আলীম, রথীন্দ্রনাথ রায়, নীনা হামিদ, বারী সিদ্দিকী হইতেছেন মোস্টলি আব্বাসউদ্দিনের একটা লিগাসি… যদিও উনাদেরকে ‘ফোক সিঙ্গার’ ব্র্যাকেটে রাখা হয়, কিনতু উনারা তো সিঙ্গার-ই!

এমনকি জালালউদ্দিন খাঁ, উকিল মুন্সি, আবদুর রাজ্জাক দেওয়ান, আবুল সরকার, কাজল দেওয়ানরে যে আমরা সং-রাইটার ও সিঙ্গার হিসাবে মানতে কিছুটা রাজি আছি, তার পিছনে আব্বাসউদ্দিনের কালচারাল কন্ট্রিবিউশন আছে বইলা আমি দেখতে পাই…

তো, আব্বাসউদ্দিন একজন পপুলার গায়ক ছিলেন – এইটুকই উনার পরিচয় না আসলে, বরং উনি বাংলাদেশি কালচারের কিছু জায়গা প্রমিনেন্ট কইরা তুলছেন – এই হিস্ট্রিকাল সিগনিফেকন্সরে খেয়াল করতে পারাটা বেটার!

লিখেছেন- Imrul Hasan।

সেন্টমার্টিনে যেতে লাগবে ট্রাভেল পাস, মানতে হবে ১২ নির্দেশনা!সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রত...
24/10/2025

সেন্টমার্টিনে যেতে লাগবে ট্রাভেল পাস, মানতে হবে ১২ নির্দেশনা!

সেন্টমার্টিন দ্বীপের অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকার নতুন নির্দেশনা জারি করেছে। বুধবার (২২ অক্টোবর) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ-২ শাখা হতে ১২টি নির্দেশনা সংবলিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

‘বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫’ অনুযায়ী প্রণীত ‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’ এর আলোকে এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হলো:

১. বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিন দ্বীপে কোনো নৌযান চলাচলের অনুমতি দিতে পারবে না।

২. পর্যটকদের অবশ্যই বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস এবং কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।

৩. দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচি এবং পর্যটক উপস্থিতিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে।

৪. নভেম্বর মাসে পর্যটকরা শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না।

৫. ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে।

৬. ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।

৭. প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন না।

৮. সেন্টমার্টিনের প্রাকৃতিক পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে দ্বীপে রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বা বারবিকিউ পার্টি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৯. কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা ক্রয়-বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুক ও অন্যান্য জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।

১০. সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যে কোনো মোটরচালিত যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

১১. নিষিদ্ধ পলিথিন বহন করা যাবে না এবং একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।

১২. প্লাস্টিকের বোতলের পরিবর্তে পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

একজন কোটিপতি তার মেয়েকে নতুন মা বেছে নেওয়ার জন্য একদল গ্ল্যামারাস মডেলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন — কিন্তু ছোট্ট মেয়েটি ...
20/10/2025

একজন কোটিপতি তার মেয়েকে নতুন মা বেছে নেওয়ার জন্য একদল গ্ল্যামারাস মডেলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন — কিন্তু ছোট্ট মেয়েটি কাজের মেয়েটিকে ইশারা করে বলল: “আমি তাকে আমার মা বানাতে চাই।”

গোলাপী সাটিন পোশাক পরা ছয় বছর বয়সী সোফি তার কনিষ্ঠ আঙুল তুলে সরাসরি গৃহপরিচারিকা আনার দিকে ইশারা করলে গ্র্যান্ড হুইটমোর এস্টেট হতবাক হয়ে গেল।

“বাবা, আমি তাকেই বেছে নিই,” সে স্পষ্টভাবে বলল।

আনা নিথর হয়ে গেল, তার হাত তার বুকের কাছে উড়ে গেল।

“আমি? সোফি... না, প্রিয়তমা, আমি ঠিক—”

“তুমি আমার প্রতি সদয়,” ছোট্ট মেয়েটি মৃদুভাবে বাধা দিল, তার কণ্ঠস্বর নির্দোষ কিন্তু দৃঢ়। “বাবা যখন খুব ব্যস্ত থাকে তখন তুমি আমাকে ঘুমানোর সময় গল্প বলো। আমি চাই তুমি আমার মা হও।”

ঘরটি হাঁপাতে শুরু করল। এডওয়ার্ড হুইটমোর, একজন কোটিপতি যিনি সর্বদা নিয়ন্ত্রণে থাকার জন্য নিজেকে গর্বিত করতেন, তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন। সেই বিকেলে তিনি এক ডজন অসাধারণ, হীরার পোশাক পরা মহিলা জড়ো করেছিলেন - মডেল, সমাজকর্মী, ম্যাগাজিন শোভা পাওয়া নারী - আশা করেছিলেন যে তার মেয়ে তিন বছর আগে তার প্রয়াত মায়ের শূন্যস্থান পূরণের জন্য একজনকে বেছে নেবে।

কিন্তু সোফি বিলাসিতা বা সৌন্দর্যের পরোয়া করত না। সে কেবল আন্নাকে চেয়েছিল - কালো পোশাক এবং সাদা অ্যাপ্রোন পরা শান্ত মহিলা যিনি সর্বদা তার সাথে ভদ্রতার সাথে আচরণ করতেন।

এডওয়ার্ডের অভিব্যক্তি কঠোর হয়ে উঠল। এটি তার চাওয়া ক্ষমতার চিত্র ছিল না। তিনি তার মেয়েকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন - নতুন পুতুল, প্যারিস ভ্রমণ, এমনকি একটি সোনালী কুকুরছানাও দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সোফি কেবল মাথা নাড়ল, তার চোখে একগুঁয়ে অশ্রু।

"আমি আন্নাকে চাই," সে প্রতিবার পুনরাবৃত্তি করল।

পরের দিন সকালে নাস্তার সময়, তার ছোট্ট কণ্ঠস্বর নড়বড়ে হয়ে গেল, কিন্তু তার বার্তা স্পষ্ট ছিল:
"যদি তুমি তাকে থাকতে না দাও, বাবা... আমি আর তোমার সাথে কথা বলব না।"

বছরের পর বছর ধরে প্রথমবারের মতো, এডওয়ার্ড হুইটমোরের কাছে কোন কথা ছিল না।
এবং তখনই তিনি সত্যিই আন্নাকে দেখতে শুরু করলেন - সেই মহিলা যাকে তার মেয়ে ইতিমধ্যেই তার হৃদয় দিয়ে বেছে নিয়েছিল।

A billionaire invited a group of glamorous models so his daughter could pick a new mother — but the little girl pointed to the maid and said: “I want her to be my mommy.”

The grand Whitmore Estate fell into stunned silence as six-year-old Sophie, wearing a pink satin dress, lifted her small finger and pointed straight at Anna, the housemaid.
“Daddy, I choose her,” she said clearly.

Anna froze, her hand flying to her chest.
“M-me? Sophie… no, sweetheart, I’m just—”
“You’re kind to me,” the little girl interrupted softly, her voice innocent but firm. “You tell me bedtime stories when Daddy’s too busy. I want you to be my mommy.”

The room gasped. Edward Whitmore, a billionaire who prided himself on always being in control, was left speechless. He had gathered a dozen stunning, diamond-clad women that afternoon — models, socialites, the kind who graced magazines — hoping his daughter would choose one to fill the void her late mother left three years ago.

But Sophie didn’t care about luxury or beauty. She only wanted Anna — the quiet woman in a black dress and white apron who’d always treated her with gentleness.

Edward’s expression hardened. This wasn’t the image of power he wanted. He tried to persuade his daughter — promising new dolls, trips to Paris, even a golden retriever puppy. But Sophie only shook her head, stubborn tears in her eyes.
“I want Anna,” she repeated every time.

The next morning at breakfast, her little voice wavered, but her message was clear:
“If you don’t let her stay, Daddy… I won’t talk to you anymore.”

For the first time in years, Edward Whitmore had no words.
And that’s when he began to really see Anna — the woman his daughter had already chosen with her heart.

আগুন নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছেদয়া করে কেউ বিশ্বস্ত মিডিয়াতে প্রচার ছাড়া কোনও খবর সোশ্যাল মিডিয়া তে ছড়াবেন না।আজক...
19/10/2025

আগুন নিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে

দয়া করে কেউ বিশ্বস্ত মিডিয়াতে প্রচার ছাড়া কোনও খবর সোশ্যাল মিডিয়া তে ছড়াবেন না।

আজকে সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে দাবি করা হয়, ‘এই মুহূর্তে ঢাকা সদরঘাটে লঞ্চে ভয়াবহ আগুন!

ভাইরাল ভিডিওটির "সময় সংবাদ ’ TV তে ২০২৩ সালের ৩০ জুন ‘রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালের পন্টুনে থাকা ময়ূর-৭ নামক একটি লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে’ ক্যাপশনে প্রচারিত একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়।

ভিডিওটি পর্যালোচনায় দেখা যায়, এতে উপস্থাপিত দাবি অনুযায়ী স্থান, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও লঞ্চের চিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রয়েছে। তাছাড়া,

উক্ত সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এটি ২০২৩ সালের ৩০ জুন রাজধানীর সদরঘাটে ময়ূর-৭ নামক লঞ্চে।

আজকে এক ভদ্রমহিলা মারা গেলেন। ৮৪ বছর বয়স হয়েছিলো উনার, আল্লাহ পাক নিয়ে গেলেন। উনার মারা যাওয়ার ব্যপারটা ইন্টারেস্টিং না।...
15/10/2025

আজকে এক ভদ্রমহিলা মারা গেলেন। ৮৪ বছর বয়স হয়েছিলো উনার, আল্লাহ পাক নিয়ে গেলেন। উনার মারা যাওয়ার ব্যপারটা ইন্টারেস্টিং না। কুল্লু নাফসিন যাইকাতুল মওঊত, মারা তো সবাইকেই যেতে হবে একদিন। ইন্টারেস্টিং হলো, উনি যেই প্রক্রিয়াটায় মারা গিয়েছেন, সেই প্রক্রিয়াটায়।

বয়স্ক এই ভদ্রমহিলার একজন নয়, দুইজন নয়, পাঁচ পাঁচজন সন্তান রয়েছে, সবাই ই বিবাহিত। তিন ছেলে দুই মেয়ের এই গর্বিত মা জননী তিন ছেলেকে পুরান ঢাকায় তিনটি দোকান ভাগ করে দিয়েছেন। ছেলেদের সংসারের জয়েন্ট ফ্যামিলিতে থাকতেন। উনার মৃত্যুর প্রক্রিয়াটা শুরু হয় মাসখানেকের কিছু আগে।

মাসখানেক আগে থেকে প্রতিদিন তিনি বলতেন, "আমার না বুকে অনেক ব্যথা করে। আগে কম করতো, এখন অনেক বেশী করে।" ব্যথাটা কোথায় করে, সেটা জিজ্ঞেস করলে তিনি বুকের নির্দিষ্ট একটা পিনপয়েন্ট লোকেশন দেখাতেন। সন্তানরা বললো, "গ্যাসের ব্যথা, তুমি গ্যাসের ট্যাবলেট খাও।"

গ্যাসের ট্যাবলেট খাওয়া হলো একের পর এক, ব্যথা গেলো না। ভদ্রমহিলার অভিযোগ করতেই থাকলেন। তিনি বসা থেকে উঠতে গেলে বুকে ব্যথা পান, দাঁড়ানো থেকে বসতে গেলেও বুকে ব্যথা পান, এমনকি নি:শ্বাস নিতে গেলেও বুকে ব্যথা পান। সপ্তাহখানেক পরে তিনি ছেলেদেরকে আলাদা আলাদা করে ডেকে নিয়ে অনুরোধ করে বললেন, "আমাকে একটা ডাক্তার দেখাও না তোমরা!! বুকের ব্যথাটায় অনেক কষ্ট পাচ্ছি।"

ডাক্তার দেখানো হলো না। তবে এই ফ্যামিলিটার একটা দু:সম্পর্কের আত্মীয় আছে, যিনি কিছুদিন আগে এমবিবিএস পাশ করে এখন একজন সার্জন হিসেবে কাজ করছেন। সেই সার্জনের সাথে কনসাল্ট করা হলো, ফোনে।

কমবয়সী সেই ডাক্তার সিম্পটম শুনেই বললো, অসুখটা সুইমিংপুলের পানির মত পরিষ্কার, সমস্যাটা কার্ডিয়াক। আপনারা এক্ষণি একটা ইকোকার্ডিওগ্রাম করান, সাথে আরও দুটো টেস্ট করাবেন। দ্রুত ট্রিটমেন্টে চলে না গেলে বিপদ কিন্তু বাড়বে।

তিনটা টেস্ট করাতে সাড়ে চার হাজার টাকার মত লাগবে শুনে সন্তানরা সেগুলো করালেন না। তারা ইস্যুটা চাপা দিয়ে ফেলার জন্য বললেন, "আরে ধূর, এত টাকার টেস্ট লাগবে না। প্রবলেমটা মনে হয় গ্যাসেরই। মা খায় না ঠিকমতো, খাওয়াটা রুটিনমাফিক করলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।"

ব্যথা গেলো না। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চললো। এরই মাঝে তারা একজনকে ডাক্তার সাজিয়ে বাসায় এনে ভদ্রমহিলার চেকাপ করানোর নাটকও করলেন। তাকে শান্ত করার জন্য জানানো হলো, "আপনার কিছুই হয় নাই। খাওয়াদাওয়াটা রুটিনমাফিক করবেন। সব ঠিক হয়ে যাবে।"

এভাবে দুই সপ্তাহ চলার পরে বয়স্ক ভদ্রমহিলা হুট করে একদিন পড়ে গেলেন, তার মুখ বেঁকে গেলো, কথা বলা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলো। যেই সাড়ে চার হাজার টাকার টেস্ট সন্তানরা করাতে চাচ্ছিলো না, সেই টেস্টগুলোই তাকে হাসপাতালে এডমিট করার পরে করানো হলো। উনার শরীরে হোয়াইট ব্লাড সেল পাওয়া গেলো দেড় লাখ। এখন আইসিইউ ছাড়া উপায় নেই।

বাসায় তিন ভাইয়ের মিটিং বসলো। মায়ের দিয়ে যাওয়া পুরান ঢাকার তিনটা দোকান দিয়ে পেট চালানো তিন ভাইয়ের একজন বললো, "আইসিইউতে অনেক খরচ, এত টাকা কোথায় পাবো?? উই আর অল ব্রোক!!" বাকি দুই ভাই বিনা প্রশ্নে সম্মতি দিলো।

সেই কমবয়সী ডাক্তারটা এই ঘটনা জানার পরে নিজ উদ্যোগে নিজের চ্যানেল দিয়ে NICVD তে একটা আইসিইউ বেড জোগাড় করে দিলেন, যেখানে পার ডে তে খরচ পড়বে মাত্র দেড় হাজার টাকা। এই বেড পাওয়া আর লটারি পাওয়ার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। সরকারি এবং এত সস্তা আইসিইউ বাংলাদেশে আর কোথাও নাই।

কমবয়সী ডাক্তারটা বয়স্ক মহিলার ছেলেদের শুধু হাত পায়ে ধরা বাকি রাখলেন ওখানে ভর্তি করানোর জন্য। এত অনুরোধেও কাজ হলো না, তারা মা কে ভর্তি করালো না। ঠিক সেই মুহূর্তটায় পরিষ্কার হয়ে গেলো, তাদের মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা জিনিসটা আসলে কখনোই ইস্যু ছিলো না।

তাকে বাসায় নিয়ে এসে একটা অক্সিজেন সিলিন্ডার লাগিয়ে বিছানায় ফেলে রাখা হলো। মাঝেমধ্যে গা হাত পা টিপে মুছিয়ে দেয়া হলো। মাতৃসেবার নামে এই ভন্ডামি করে তারা এই বয়স্ক ভদ্রমহিলার মৃত্যুর অপেক্ষা করে গেলো।

মানুষের শরীরে হোয়াইট ব্লাড সেল বা WBC এর স্বাভাবিক রেঞ্জ হলো চার থেকে এগারো হাজার। WBC যখন ৬০-৭০ হাজারে যায়, তখন শরীরের ভিতরের সবকিছু আগুনে পুড়ে যাওয়ার অনুভূতি হয়। জ্ঞান থাকলে মানুষটা যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকে, বরফ খেতে চায়, গায়ে পানি ঢালতে চায়।

এই ভদ্রমহিলার WBC ছিলো দেড় লাখ!! শরীরের ভিতর দিক থেকে পুড়ে যাওয়ার যেই যন্ত্রণাটা তিনি পেয়েছেন, সেটা এমনকি বর্ণনা করাও সম্ভব না।

ভদ্রমহিলা আজকে মারা গিয়েছেন। কারও মৃত্যুতে আলহামদুলিল্লাহ পড়া উচিৎ না, কিন্তু আমি পড়লাম। উনার সকল যন্ত্রণার অবসান করে দেয়ার মত দয়া দেখানোর জন্য আমি আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া আদায় করলাম।

আইসিইউ ম্যানেজ করে দেয়া সেই ডাক্তার দুই ঘন্টা সময় নিয়ে আমাকে ঘটনাটা বলেছেন। শেষদিকে কান্না আটকানোর জন্য উনি কথা বলতে পারছিলেন না। ভাঙা ভাঙা গলায় আমাকে বললেন, "এই মহিলার এক ছেলের বউ ইনফার্টাইল, কোনোদিন বাচ্চা হবে না। এটা জানার পরেও এই মহিলা কোনোদিন মনের ভুলেও ছেলের বউকে কোনোদিন খোঁটা দিয়ে কথা বলেন নাই। ছেলেকে আরেকটা বিয়েও করতে বলেন নাই। সেই মায়ের সাথে কিভাবে পারলো এত নিষ্ঠুর হতে এরা?? মায়ের লিখে দেয়া দোকান থেকে ইনকাম করে খাচ্ছে। সেই মায়ের চিকিংসার সময় এই কাজটা এরা কিভাবে করলো??"

কিছু কিছু সময় আসে, যখন মানুষ আসলে শুধু প্রশ্নটাই করতে চায়। উত্তর পাওয়াটা তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ না, প্রশ্ন করার ফ্লোর পাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।

আমি এক অখন্ড নীরবতার মধ্যে এই প্রশ্নটাকে বহমান নদীর কচুরিপানার মত ভেসে যেতে দিলাম।

সংগৃহীত

আমার ছেলের গার্লফ্রেন্ড এসেছে আমাদের সাথে দেখা করতে৷ একসময় লোকে পাত্রী দেখতে মেয়ের বাড়ি যেত এখন পাত্রী নিজেই চলে এসেছে হ...
02/09/2025

আমার ছেলের গার্লফ্রেন্ড এসেছে আমাদের সাথে দেখা করতে৷ একসময় লোকে পাত্রী দেখতে মেয়ের বাড়ি যেত এখন পাত্রী নিজেই চলে এসেছে হবু শ্বশুর-শ্বাশুড়ির সাথে দেখা করতে। যুগ পাল্টেছে। যদিও যুগের সাথে তাল মেলাতে আমার আপত্তি নাই কিন্তু আমার বেগম মিসেস রেবেকা একদমই মেয়েটাকে পছন্দ করতে পারছে না। মেয়েটা আসবে শুনেই সকাল থেকেই রেগে আগুন হয়ে আছে।একশ একবার বলেছে,

-বিয়ের আগেই ঢ্যাঙঢ্যাঙ করে ছেলের হাত ধরে চলে আমবে।বেহায়া মেয়ে!আজকালকার মেয়েগুলা হচ্ছে নির্লজ্জ টাইপের। ভালো ছেলে দেখলেই গলায় ঝুলে পড়ার মতলব আঁটে।

চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে আমি বললাম,
-ইসলামে কিন্তু মেয়েদের নিজ থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া সুন্নাত। উম্মুল মুমেনীন খাদিজা(রাঃ) আমাদের প্রিয়নবী মুহম্মদ(সঃ) এর চাচার কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।উনাকে তুমি কি বলবা বেহায়া?

যুক্তিতে না পেরে রেবু কড়াইয়ের ফুটন্ত তেলের মত টগবগ করতে লাগল।গুণধর পুত্র বাড়ি নাই বিধায় সমস্ত দোষ গিয়ে পরল আমার ঘাড়ে। এই যেমন ছেলেকে আমি কোনোদিন শাসন করি নাই,শাস
করলে আজকের দিনটা দেখতে হত না।

ছেলের বয়স ছাব্বিশ৷সদ্যই ব্যাংকে চাকরি হয়েছে।পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতে চাওয়া একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য কখনই অপরাধ নয় এই সাধারণ সত্যটা রেবু বুঝতে চাইছিল না। বাঙালি মায়েদের এই এক সমস্যা। মাতৃস্নেহ কখন যে সন্তানের প্রাইভেসি অতিক্রম করে বেডরুমে ঢুকে পড়ে তা তারা নিজেরাই বুঝে না। যাই হোক,মেয়েটা আসবে সন্ধ্যায়। সকাল থেকেই গিন্নির মুখের পাশাপাশি হাত চলছে। এইযুগের বাচ্চারা পিঠাপুলি পছন্দ করে না।বেকারি আইটেম কিনে আনা হল। সাথে ঘরে বানানো বেকড পাস্তা,নুডৃুলস,চিকেস ফ্রাই আরো কত কী!

মেয়েটি শৈশবের সাথে হাজির হল ঠিক সন্ধ্যা সাতটায়।নাম মেঘা।বড় বড় চোখ,কোঁকড়া চুলের মিষ্টি চেহারার মেয়ে।নীল চুড়িদারের সাথে ম্যাচিং ছোট্ট নীল টিপ। মেয়েদের খুঁটিয়ে দেখার বয়স পাড় হয়ে গেছে বহু বছর আগে। কিন্তু এই মেয়েটি আমার পুত্রবধূ হবে বিধায় ওকে নিজ সন্তানের মতই আপন করে দেখছিলাম।মেঘা হোস্টেলে থাকে।ওর বাবার সরকারি চাকরির সু্বাদে শৈশব কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায়। বর্তমানে ওর পরিবার ঝিনাইদহ আছে আর ও ঢাকা হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। এবছর এমবিএ দিবে। বয়সে শৈশবের বছর তিনেকের ছোট হবে।

দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ বিয়ে করবে সেক্ষেত্রে অভিভাবকদের আপত্তি চলে না। মেয়েটিকে আমার ভালোই লাগল,অল্পবয়সী হাসিখুশি মেয়ে। কিন্তু আমার স্ত্রী খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ওকে প্রশ্ন করতে লাগলেন,
সম্পর্ক কতদিনের,কিভাবে পরিচয় ইত্যাদি!
খাওয়ার টেবিলে মেঘা চাউমিন শৈশবেে প্লেটে সার্ভ করতেই রেবু বলে উঠল,
-ওমা!তোমাদের দুই বছরের পরিচয় কিন্তু এই জানো না! ওর চিংড়ি মাছে এলার্জি!

মেয়েটা সত্যি লজ্জা পেল।আমি পরিস্থিতি সামাল দেবার জন্যে বললাম,

-ছোট ছোট চিংড়ি মাছ ও বোধহয় দেখতে পায় নাই।তাই না?

মেঘা ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানাল।
মেয়েটা ঘণ্টাখানেক পর বিদায় নিতেই রেবু ঘাড় বেঁকিয়ে বসল৷ এই মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দিব ন্।
-কেন দিবে না?
-এই মেয়ে শৈশবের পছন্দ,অপছন্দ কিছুই জানে না।নীল রঙের কামিজ পরে চলে এসেছে।ও জানে না,নীল রঙ শৈশবের কতটা অপছন্দ!
-প্রিয়তমাকে মানুষ সব রঙে দেখতেই পছন্দ করে রেবু। আমারো লাল রঙ ভালো লাগত না,বিয়ের দিন তোমাকে লাল বেনারসিকে দেখে মনে হচ্ছিল আকাশ থেকে পরী নেমে এসেছে।

রেবু লজ্জা পেয়ে বলল,
-ধুর!তোমার যত্তসব বুড়া বয়সে ভিমরতি।

এখনকার মত রেবুকে সামাল দেওয়া গেলেও ভবিষ্যতে ও এই মেয়েটাকে কতটা গ্রহন করতে পারবে জানি না।রেবু নিমরাজি ছিল তবু ওকে নিয়ে জোর করে চললাম ঝিনাইদহ। উদ্দেশ্য মেঘার বাবা-মায়ের সাথে পরিচিত হওয়া।মেঘারা তিন বোন,ও সবার ছোট।বড় দুইবোন জামাইসহ উপস্থিত ছিল। ওদের পরিবারে সবচেয়ে ভালো লাগল ওর বাবা নেয়ামত সাহেবকে। ভদ্রলোক দুই বছর পর অবসর নিবেন।রিটায়ার্ডের আগে ছোট কন্যাকে সুপাত্রস্থ করতে পারলে আর চিন্তা নেই। বুড়ো-বুড়ি শেষ ক'টা দিন গ্রামে গিয়ে পাড় করতে চান। নিজেদের বসতভিটার পাশে একফালি উঠোন আর পুকুরঘাট উনাকে স্বপ্নের মত টানছে। বুঝলা,সারাজীবন সরকারি সার্ভিস দেবার কল্যাণে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ঘোরা হলেও তার মন পড়ে আছে পিতৃ-পুরুষের ভিটায়। নিপাট ভদ্রলোক,একমাত্র এই লোকটার কথার জাদুতে রেবু বিয়েতে সম্মতি জানাল।মেঘাকে পছন্দ করতে না পারলেও আশ্চর্যজনকভাবে মেঘার পরিবারের প্রশংসার ফুলঝুরি শুনতে পেলাম স্ত্রীর মুখে। এটা অনেকটা অসম্ভব ব্যাপার,কেননা রেবু সহজে কারো প্রশংসা করে না।

বিয়ের আয়োজন শুরু হল।রেবু গিয়ে খুব পছন্দ করে অ্যাংগেজমেন্টের আঙটি কিনে আনল। বেশ ভারী আঙটি,স্বর্ণের বাজারেদর আকাশছোঁয়া। তবু ও একমাত্র ছেলের বিয়েতে কার্পণ্য করল না।আঙটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শৈশব দেখল। তারপর বলল,
-আঙটিটা সুন্দর কিন্তু তুমি এটা পাল্টে ডায়মন্ডের রিঙ নিয়ে আসো।
রেবু জিজ্ঞেস করল,
-কেন?
শৈশব বলল,
-মেঘার খুব ডায়মণ্ডের রিং পছন্দ।ছোট হোক সমস্যা নাই,ডায়মণ্ডের হলেই হবে।
-ডায়মন্ডের কোনো ফিউচার ভ্যেলু আছে নাকি!সেদিন টিভিতে দেখলাম,একটা নামকরা কোম্পানির সব ডায়মন্ডই নকল।
-প্লিজ, মা।ওর একটা রিকুয়েষ্ট রাখো।
বিয়ে তো জীবনে একবারই করছি...

মেঘার একটা রিকুয়েষ্ট রাখতে গিয়ে দেখলাম একটার পর একটা অনুরোধ নামের বিপত্তি আসতে লাগল।হবু বউমা আর ছেলে নিয়ে প্ল্যান করেছে অনুষ্ঠান হবে চারদিনের। মেহেন্দি,হলুদ,বিয়ে,রিসিপশন। আমার ছেলে সদ্য চাকরিতে জয়েন করেছে। বেতন পায় চব্বিশ হাজার আর বউয়ের দু'হাত মেহেন্দিতে রাঙাতেই মেকাপ আর্টিস্ট পেমেন্ট নিবে পনের হাজার।একমাত্র ছেলের বিয়েতে কার্পণ্য করব না কিন্তু তাই বলে স্রেফ ফটোগ্রাফি আর ভিডিও বানাতে চাইছে ত্রিশ হাজার।টাকা কি গাছে ধরে নাকি!আক্কেল গুড়ুম হল তখন যখন হবু পুত্রবধূ পঞ্চাশ হাজার টাকার লেহেঙ্গা পছন্দ করে বসে থাকল। একদিন মাত্র যেই পোশাক পরা হবে তারজন্যে এতগুলা টাকা নষ্ট!শুধু একদিনের জন্যে তো নয়,চারদিনে চার রকমের সাজপোশাক। সাথে বরের জন্যে চাই ম্যাচিং পাঞ্জাবি,শেরওয়ানি কমপ্লিট স্যুট। হিসেব করে দেখলাম বর-কনের পোশাকের পিছনেই বাজেট রাখতে হবে দেড় লাখ।বেগাঢ় এতগুলা টাকা খরচ করতে বুকের ভেতরটা কেমন ব্যথা করতে লাগল।ছোটোখাটো ব্যবসা করি।বাড়ি তৈরি করে আর ছেলেকে দাঁড়া করাতে গিয়ে সঞ্চয় বলতে তেমন কিছু নাই। বিয়ে উপলক্ষ্যে বড় অঙ্কের টাকা ধার করতে হবে।কিভাবে শোধ করব জানি না,তবু আল্লাহর কাছে একটাই চাওয়া ছেলেটা যেন সুখে থাকে।

একটা সময় বিয়ে ছিল দুটি পরিবারের মিলন,আত্মার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া। কিন্তু আমার ছেলেট নিজের বিয়ে উপলক্ষ্যে এতটাই এক্সাইটেড যে বাবা-মাকেও ভুলে যেতে বসল। প্রি ওয়েটিং শ্যুট করতে চলে গেল গাজীপুর। সন্ধ্যায় ফিরে আসল মন খারাপ করে। সারাদিন বৃষ্টি হওয়ায় ভিডিওগ্রাফি মনের মত হয় নাই।রেবু রেগে গজগজ করছে।

-কেমন ছেলের বউ ঘরে আনছ বুঝি না বাপু।
পাথরের গহনার সেট কিনেছে বাইশ হাজার টাকা দিয়ে।এত ঘটা করে বিয়ের অনুষ্ঠান না করে পাঁচ ভরি গোল্ড কিনলেও ভবিষ্যতে কাজে লাগত।

খরচ আমার একার হচ্ছে না। মেয়ের বাবারও অবস্থা কাহিল।বড় দুই বোনের বিয়েতে হাজার মানুষের আয়োজন ছিল ছোট মেয়ের বিয়েতে কম করলে মান থাকে না।সময়ের সাথে রুচি পাল্টেছে। বিয়েতে নরমাল পোলাও,রোস্ট করলে চলবে না।কাচ্চি বিরিয়ানি সাথে টিকিয়া কাবাব শাহী রোস্ট।নেয়ামত সাহেবকে কল দিয়ে বললাম,

-ভাই,আপনি মাথার উপর চাপ নিয়েন না। আমি বুড়ো মানুষ।পোলাওয়ের সাথে এক পিরিচ দই হলেই খাওয়া হয়ে যায়।কাচ্চি-ফাচ্চি বড়লোকি খাবার গরীবের পেটে সইবে না।

-কি যে বলেন না,ভাইসাব!জামাই আমার একটা আবদার করেছে। ঢাকা থেকে ওর বন্ধুবান্ধব,কলিগরা বরযাত্রীতে আসছে। তাদের জন্যে একবেলা খানাপিনার আয়োজন করব এ আর খুব বেশি নাকি!

বুঝলাম,শৈশবও কম যায় না। একসময় মেয়ের বাবা পিষ্ট হত যৌতুকের ঘানি টেনে। আর এইযুগে ছেলে এবং মেয়ের বাবা দুজনেই পৃষ্ট হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার লোক দেখানে বিয়ের অনুষ্ঠানে। স্রেফ ফেসবুকে কিছু ছবি আপলোড আর বন্ধুবান্ধবদের কাছে নিজেদের স্ট্যাটাস প্রমাণ করার জন্যে এত বড় আয়োজন।রেবুর কাছে আক্ষেপ নিয়ে বললাম,

-আমরা আমাদের সন্তানকে মানুষ করতে পারি নাই। যেইসব ছেলেপুলে বাবা-মায়ের কায়িক পরিশ্রমের টাকা স্রেফ লোক দেখানো কালচার দেখাতে গিয়ে উড়িয়ে দেয় আমি তাদের শিক্ষাকে কুশিক্ষা বলব।

আম্বানিমার্কা বিয়ের খরচ করা অধিকাংশ পরিবারের ধরাছোঁয়ার বাইরে। আম্বানি এক বিয়েতে পাঁচ হাজার কোটি টাকা খরচ করলে সেই বিয়ে উপলক্ষ্যে দশ হাজার কোটি টাকা আয়ের ব্যবসায়িক বুদ্ধি রাখে। মধ্যবিত্ত বাঙালিরর বিয়েতে জমে কিছু সস্তা ডিনার সেট আর রাইস কুকার। যাই হোক,লাখ টাকা খরচ করে লোকজন ডেকে পোলাও-কোরমা খাইয়ে তাদের কাছে উপহার আশা করাটাও এক ধরনের ছ্যাচড়ামি। আমার টাকা নাই ব্যস আমি খুরমা খাইয়ে ছেলের বিয়ে দিব।বড়জোর নিকটাত্মীয়দের বাড়িতে ডেকে একবেলা ডাল-ভাতের আয়োজন করা। কিন্তু নিতান্ত অর্ধপরিচিত মানুষদের বিয়ে উপলক্ষ্যে জড়ো করে, বিরাট কমিউনিটি সেন্টার আলোকসজ্জা করে টাকার শ্রাদ্ধ করার কোনো মানে হয় না। একজন মধ্যবিত্তের লাখ টাকা যোগাতে বছরের পর বছর মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয় সেখানে এক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে লাখ দশেক টাকা খরচ করাকে বোকামি ছাড়া আর কিছুই বলা চলে না।

যথারীতি মেহেন্দি, গায়ে হলুদ আর ব্যাচেলর নাইট উৎযাপনের পর বিয়ে সম্পন্ন হল৷ যেই মেয়েটা ব্রান্ডের লেহেঙ্গা ছাড়া বিয়ের পিঁড়িতেই বসতে চাইছিল না সেই মেয়েটা নিজের অধিকার ফলানোর ব্যাপারে খুব কাঁচা। দেনমোহর ধার্য করা হল পাঁচ লাখ। নগদ কোনো টাকা বা সোনার গহনা দিয়েও কিছু উসুল করা হল না। তাতে কি!মেঘা ব্যস্ত বিয়ের ফটোসেশনে। নানান অঙ্গভঙ্গি করে ক্যামেরাম্যানের সামনে ছবি তুলে যাচ্ছে। গত চারদিনের অনুষ্ঠানে সম্ভবত এক হাজার ছবি তোলা হয়ে গিয়েছে। এত আর্টিফিসিয়াল ছবি কি সত্যি অ্যালবামে বন্দী হয় নাকি রয়ে যায় ফোনের মেমোরি কার্ডে বছরের পর বছর ধরে।ওরাই ভালো জানে।

বিয়ের পর নবদম্পতি যেখানে চড়ুই পাখির মত সারাদিন কিচির-মিচির করে ঘুরে বেড়ানেোর কথা। সেখানে ওদের রাতদিন ঝগড়া চলছে। শৈশব কথা দিয়েছিল ওকে নেপাল হানিমুনে নিয়ে যাবে। বিয়েতে প্রচুর টাকা খরচ করে অবস্থা করুণ।কক্সবাজার যাবারও পয়সা নাই। ছেলে যেন এবার কিছুটা লজ্জা নিয়েই আমার কাছে হাত পাতল। আমি বললাম,

-দেখ বাবা,তোকে পড়াশোনা করাইছি। বিয়ে করেছিস এখন আমার দায়িত্ব শেষ। আমাদের বুড়ো-বুড়িকে তোর না দেখলেও চলবে কিন্তু তোর বউয়ের দায়িত্ব একান্তই তোর।

সন্তানদের আদর্শ লিপি,নামতা মুখস্থ করানোর আগে যে সংসারের দৈনন্দিন কাজগুলো শেখানো উচিত তা ওদের বিয়ের পর হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলাম।মশারি টানানো নিয়ে দুজনের রোজ ঝগড়া চলে,বউমা এক কাপ চা বানিয়ে আনলে শৈশবের পছন্দ হচ্ছে না।

-এটা কি বানিয়ে আনছ? চিনি দিয়ে গুলানো শরবত।
-নিজে করে খাও না!

নাহ!আমার ছেলেরও এক কাপ চা বানানোর মুরোদ নাই।

মানুষ জন্ম থেকে কিছু শিখে আসে না। দুঃখজনকভাবে আমার ছেলে এবং ছেলের বউ দুজনের খাবার রুচি,চেহারা এবং মানসিক অবস্থা যোজনগুণ ব্যবধানে থাকলেও একটা ব্যাপারে দুজনের বেজায় মিল।দুজনে কেউই মানিয়ে নিতে পারে না এবং নতুন কিছু শেখারও আগ্রহ নাই। মেঘা বেলা দশটা অবধি ঘুমায়। উঠে এক কাপ চা হাতে নিয়ে ফোনে স্ক্রলিং করতে থাকে আর শৈশবের তো রোজই অফিস যেতে দেরি হয়।এমন করলে ওর চাকরিটা থাকবে কী না কে জানে!

একরাতে ওদের ঘর থেকে তর্কের আওয়াজ ভেসে আসছে। আমরা বুড়ো-বুড়ি চুপচাপ নিজেদের ঘরে দরজা এঁটে বসে ছিলাম।রেবু বলল,

-হল তো তোমার বিশ্বাস।ওরা একে অপরের জন্য পারফেক্ট না।দুজন না চাইতেই দুনিয়া পেয়ে গেছে তো তাই জানে না একটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে স্ট্রাগল করতে হয়।তখন ওদের কথায় রাজি হয়ে ঘটা করে বিয়ে না দিলে আজকের এই দিন দেখতে হত না।

-তাহলে আমি কি করতাম বলো?

-পাছায় লাথি দিয়ে ছেলেকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল। চাকরি পেয়েছিস এখন নিজে বাড়ি-গাড়ি করে টাকা জমিয়ে বিয়ে কর।বাপের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে বউয়ের জন্য লাখ টাকা লেহেঙ্গা কিনতে সবাই পারে। নিজের টাকায় একটা বিয়ে করতে হলে বুঝত ঠেলা।কত ধানে কত চাল!

ফেসবুকে ওদের বিয়ের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।ওদের ছবি,ভিডিওর কমেন্টবক্সে চমৎকার সব শুভকামনা।বেস্ট কাপল,কাপল অব দ্য ইয়ার।অবশেষে ভাইয়া-আপুর প্রেম পরিণতি পেল!কে বলবে হাসোজ্জ্বল চেহারায় কপোত-কপোতীর ছবিগুলো স্রেফ অভিনয় ছিল।ঋনের টাকা প্রতিমাসে একটু একটু করে শোধ করি আর আল্লাহর কাছে প্রার্থণা করি ওদের বিয়েটা যেন এযাত্রায় বেঁচে যায়। জানি না,সৃষ্টিকর্তা এই পাপী বান্দার মোনাজাতে সাড়া দেবেন কী না!তবু সন্তানের জন্য বাবা-মায়ের প্রার্থনা চিরকালই মঙ্গলময়।

দুই বছর পর-

আমি এবং নেয়ামত সাহেব কোর্টের বারান্দায় বসে আছি। আজ শৈশব এবং মেঘার ফাইনাল ডির্ভোস হবে। মেঘা এক বছর ধরে বাপের বাড়িতে ও শৈশবের চেহারা পর্যন্ত দেখতে চায় না। নেয়ামত সাহেব বললেন,
-ভাইসাব,আমি আমার মেয়েকে অনেক বুঝানোর চেষ্টা করেছি। বিয়ে ব্যাপারটা ছেলেখেলা নয়।কিন্তু মেয়েটা এতটাই বেয়াদব,বাবার কথা শুনল না।আপনার প্রতি আমার কোনো অভিযোগ নাই। আমি জানি মেঘাকে আপনারা যত্নের ত্রুটি করেন নাই।

আমি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম,

-সব দোষ আমার কপালের ভাই।ছেলেটাকে প্রকৃত শিক্ষা দিতে পারি নাই।তাই ও মেয়েদের সম্মান করতে জানে না।

দুজন সর্বস্বান্ত বুড়ো কোর্টের বারান্দায় হাতল ভাঙা চেয়ারে নীরবে বসে রইলাম।ভিতরে তালাকের প্রক্রিয়া চলছে।ব্যাংকে এখনও আমার দুই লাখ টাকা ঋণ আরো দেনমোহর পরিশোধের আরো পাঁচ লক্ষ টাকা যুক্ত হল। নেয়ামত মেয়ের বিয়েতে পেনশনের অধিকাংশ টাকা খরচ করে নিঃস্ব হয়েছেন। মেয়ের চিন্তায় গত এক বছরে দুইবার হার্ট অ্যাটাক করেছেন। ডির্ভোসি মেয়েকে নিয়ে সমাজের কাছে কি বলবেন তা নিয়ে আরো দ্বিগুণ চিন্তা হল।

বহুবছর আগে একটা কবিতায় পড়েছিলাম,"আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে'। সন্তানকে দুধ-ভাত খাওয়ানোর আগে কি উপায়ে গরু থেকে দুধ পাওয়া যায় ধান থেকে ভাত হয় তা শেখানো জরুরি। নয়ত দুধভাত খেয়ে থালায় লাথি মারত দু'বার ভাববে না।কেননা না চাইতে যা পাওয়া যায় তা চিরকালই মূল্যহীন, যেমন মূল্যহীন ওদের কাছে বাবা-মায়ের অকৃত্রিম ভালোবাসা।

লেখক- হাবিবা সরকার হিলা

‘প্রিন্স’-এ শাকিবের পারিশ্রমিক ৩ কোটি!প্রযোজক বললেন, ‘এটা তার প্রাপ্য’‘প্রিন্স : ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ঢাকা’ সিনেমার পোস্...
24/08/2025

‘প্রিন্স’-এ শাকিবের পারিশ্রমিক ৩ কোটি!

প্রযোজক বললেন, ‘এটা তার প্রাপ্য’

‘প্রিন্স : ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন ঢাকা’ সিনেমার পোস্টার প্রকাশ করে চারিদিকে হইচই ফেলে দেন শাকিব খান। শোনা যাচ্ছে, এই সিনেমার পারিশ্রমিক হিসেবে তিনি ৩ কোটি টাকা নিচ্ছেন! যেখানে অন্যান্য নায়কদের পুরো সিনেমার বাজেটও এই পরিমান থাকে না। যদিও প্রযোজক ক্রিয়েটিভ ল্যান্ডের কর্ণধার শিরিন সুলতান বলেন, ‘এটা তার প্রাপ্য। যেটা উনি ডিজার্ভ করেন, সেটা তাকে অবশ্যই দিতে হবে। অবশ্যই আগের তার ছবিগুলো চেয়ে পারিশ্রমিক বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক।’

প্রকাশিত ‘প্রিন্স’ সিনেমার পোস্টারে দেখা যায়, শাকিব দুই হাতে বন্দুক উঁচিয়ে পেছনমুখী। চারপাশ ঘিরে আরও অনেকের হাতে পিস্তল। সঙ্গে লেখা রয়েছে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গার নাম—যেমন উত্তরা, গাবতলী, মোহাম্মদপুর, বাড্ডা, কারওয়ান বাজার, শাঁখারীবাজার, গ্যান্ডারিয়া প্রভৃতি। সিনেমায় নায়িকার ভূমিকায় কে থাকছেন, সেটা এখনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। এটি নির্মাণ করবেন আবু হায়াত মাহমুদ।

বিটিভি নিউজ : ফ্যাসিস্ট হাসিনার আস্থাভাজন ফরিদুজ্জামান -তাসমিনা- শামসুল গংদের নিয়ন্ত্রণে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ...
13/08/2025

বিটিভি নিউজ : ফ্যাসিস্ট হাসিনার আস্থাভাজন ফরিদুজ্জামান -তাসমিনা- শামসুল গংদের নিয়ন্ত্রণে, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের রহস্যজনক ভূমিকা

ঢাকা, আগস্ট ২০২৫ :
ছাত্র -জনতার গণ-অভ্যুত্থানের ১ বছর অতিবাহিত হলেও দেশের একমাত্র রাষ্ট্রীয় চ্যানেল বাংলাদেশ টেলিভিশনের বার্তা বিভাগ এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে ফ্যাসিস্ট হাসিনার আস্থাভাজন মুন্সী ফরিদুজ্জামান ও সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ গংদের হাতে। এদেরই হাত ধরে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও ভিডিওচিত্র সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের কাছে নিয়মিত পাঠানোর অভিযোগ পাওয়া যায় বিটিভির একাধিক সূত্র থেকে। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে এবিষয়ে একাধিক অভিযোগ দেওয়া হলেও অদৃশ্যকারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে বিটিভির সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে কি হাছান মাহমুদ ও হাসানুল হক ইনুর আস্থাভাজনরাই মন্ত্রণালয়ে বহাল তবিয়তে ?

২০২৪ এর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালালে সরকারের স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের অধিকাংশ দপ্তরে বড় ধরণের পরিবর্তন দেখা গেলেও ব্যতিক্রম শুধু বিটিভি। মহাপরিচালক ও জেনারেল ম্যানেজার পরিবর্তন ছাড়া হয়নি কোন সংস্কার। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলেও সত্যি জুলাই ২০২৪ এ ছাত্র হত্যায় ইন্দনদাতাদের অন্যতম কুশীলব বিটিভির তৎকালীন বার্তা প্রধান হাসিনা ও হাছান মাহমুদের আস্থাভাজন মুন্সী ফরিদুজ্জামানকে সম্প্রতি দেয়া হয় বিটিভি নিউজের প্রধান বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব। শুধু তাই নয় হাসিনাস ম্যান দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মোঃ মহসিনের দুর্নীতিবাজ স্ত্রী ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদকে দেয়া হয়েছে বিটিভির উপ- মহাপরিচালক বার্তার দায়িত্বে।

ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনামলে ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ বিটিভিতে অন্যতম প্রভাবশালী ও আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। বিটিভির একাধিক সূত্র জানায়, তার ক্ষমতার উৎস ছিল, তার ভাসুর হিসেবে পরিচিত ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক ও তার স্বামী হাসিনার আমলে অন্যতম লুটপাটের মন্ত্রণালয় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. মহসিন।

বিটিভির একটি তদন্ত কমিটি রিপোর্টর অনুযায়ী, সাবেক মহাপরিচালক ড. মো: জাহাঙ্গীর আলম (অতিরিক্ত সচিব-পিআরএল ভোগরত) এবং উপ-মহাপরিচালক (অনুষ্ঠান ও বার্তা) ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদের নেতৃত্বে ঢাকা কেন্দ্রের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার (চলতি দায়িত্ব) মাহফুজা আক্তার ও তার সিন্ডিকেট সদস্যরা ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ভুয়া বিল ভাউচার ও বাজেটের মাধ্যমে ১৩ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা অনিয়ম-দুর্নীতির করেছেন মর্মে তদন্ত কমিটি রিপোর্ট দাখিল করে।

অপরদিকে, গত ৩০/০৪/২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত অডিট অধিদপ্তরের নিরীক্ষা দল কর্তৃক দাখিলকৃত বিশেষ অডিট রিপোর্টেও ১০,৪৪,২২,০৭৯/- টাকা অনিয়মসহ অডিশন কেলেঙ্কারী, জালিয়াতি ও আরো দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর প্রমাণ মিলেছে। শুধুমাত্র সাবেক জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তারকে বদলি করা হলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ। দুদক থেকেও স্বামীর প্রভাবে মামলা থেকে নাম কাটান তিনি।

শুধু তাই নয় বিটিভিতে শিল্পী তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের সাথে জড়িত কমিটির আহবায়ক তাসমিনাকে নিয়ে যখন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে তদন্ত চলছে তাকেই কোন ক্ষমতাবলে বর্তমানে বিটিভির উপ-মহাপরিচালক (বার্তা ) হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হল তাতে হতবাক সকলেই।

অপরদিকে , শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসেবে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস উইং এ ছিলেন বিটিভির মুন্সী ফরিদুজ্জামান। সেসময়কার তার বন্ধুমহলের অধিকাংশ এখন পলাতক কেউবা জেলে। আর তিনি উল্টো প্রমোশন নিয়ে বিটিভি নিউজের প্রধান বার্তা সম্পাদক। বর্তমানে কখনও তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা , কখনও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের নাম ভাঙিয়ে দাপটের সাথে বিটিভি নিউজকে হরিলুটের আখড়ায় পরিণত করেছেন এই মুন্সী ফরিদ। সব সময় উপর মহল ম্যানেজের দাম্ভিকতা দেখান তিনি।

কে এই মুন্সী ফরিদুজ্জামান ? ২০০৭ সালে ফখরুদ্দিন -মইনুদ্দিনের শাসনামলে ওয়ান ইলিভেনের কারিগরদের সাথে যোগসাজসে বিটিভির হয়ে যোগ দেন তৎকালীন প্রধান উপদেষ্টা ফখরুদ্দিন আহমেদের প্রেস উইং এ। পরবর্তীতে হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে এইচ টি ইমাম ও মাহবুবুল আলম শাকিলের গড়া মিডিয়া সিন্ডিকেটে যুক্ত হয়ে বিটিভি সংবাদকে একপেশে করে ফেলে। কেউ প্রতিবাদ করলেই চাকুরীচ্যুত বা বদলির হুমকি দিতেন মহাপরিচালকের মাধ্যমে।

২০০৮ এ হাসিনা ক্ষমতায় এসেই তার প্রেস উইং এ বিটিভির পক্ষ থেকে যুক্ত করেন মুন্সী ফরিদুজ্জামানকে। একটা পর্যায়ে এতটাই অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েন তিনি বিদেশ ট্যুরের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েন শেখ হাসিনার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি শাখাওয়াত মুনের সঙ্গে। অফিস বিধি লংঘনের দায়ে তাকে দেয়া হয় বিভাগীয় মামলা। শাস্তিস্বরূপ পান পদাবনতি অর্থাৎ চলমান পোস্ট থেকে একধাপ নিচে নামিয়ে দেয়া হয়। বিভাগীয় আদালতে আপীল করেও ফিরে পাননা পদ। অবশেষে তার আপা ( শেখ হাসিনা ) বিশেষ ক্ষমতাবলে চাকুরীর পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেন।

ফরিদুজ্জানের প্রতি এতটাই হাসিনার আস্থাশীল ছিল পরবর্তীতে তার সিনিয়রকে ( বর্তমানে বিটিভির জেনারেল ম্যানেজার নুরুল আজম পবন ) ডিঙিয়ে প্রধান বার্তা সম্পাদক হিসেবে বিটিভিতে নিয়োগ দেয় ফ্যাসিস্ট হাসিনা। শুধু তাই নয় আওয়ামীলীগের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ডক্টর আব্দুর রাজ্জাকের কাছ থেকে কি পরিমান অনৈতিক সহায়তা নিয়েছেন তা বিটিভির সবার মুখে মুখে।

সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এতটাই বিশ্বস্থ ছিলেন এই ফরিদ প্রায় রাতেই মন্ত্রীর ৩৪ মিন্টু রোডের বাসায় দেখা যেত দুইজনকে অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায়। সেই সময় মুন্সী ফরিদের কাছে তুলে দেওয়া হাছান মাহমুদের একজন নিউজ প্রেজেন্টার এখনও বীরদর্পে খবর পড়ছেন বিটিভি নিউজে। বর্তমান জিএম বাধা দিলেও বলেন উপরের নির্দেশে তার নিউজ চলবে ? তবে কি উপর বলে বর্তমান সরকারকেও বিব্রত করার চেষ্টা করছেন এই ফরিদুজ্জামান।

অথচ জুলাই আন্দোলনে ছাত্রদের পক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়াতে বিনা কারনে নিউজ থেকে বাদ দেন অনেককেই। বিটিভির মহাপরিচালক মাহবুবুল আলম বর্তমান সরকারের সময়ে নিয়োগ পেলেও বিটিভির সাবেক কর্মকর্তা হাওয়ায় চক্ষু লজ্জায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননা বলে জানা যায়।

শুধু তাই নয় জুলাই আন্দোলনে শুধুমাত্র পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট করায় রিপোর্টার এ কে এম শহীদুল্লাহকে জুলাই মাসের প্রাপ্ত সম্মানী কেটে দিয়ে অফিস ডিউটি থেকে দুরে রাখেন। ৫ আগস্ট বিজয়ের পর ফোন করে সেই রিপোর্টারকে অফিসে এনে নিজেকে তাৎক্ষণিক জুলাই যোদ্ধা ঘোষণা করেন। যদিও পরবর্তীতে ১৩ বছর কাজ করা সত্ত্বেও উক্ত রিপোর্টার কাজ পারেনা এমন অভিযোগ এনে বিনা নোটিশে তাকে চাকুরিচ্যুত করেন। মুন্সী ফরিদের এ কাজে যিনি সহযোগিতা করেন তিনি হলেন বিটিভির উপ মহাপরিচাক বার্তা সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ। যার স্বাক্ষরে ঘটে সব অন্যায় অবিচার। তাকেও ব্ল্যাকমেইলিং করতে বাদ যায়নি এই ফরিদ। মুন্সী ফরিদ বিভিন্ন সময় ঠাট্টার ছলে বলেন, মহসিন ভাইর বন্ধু দুর্যোগের সিনিয়র সচিব শাহ কামাল জেলে আর একই পদে তিনি বাসায় এসির বাতাস খান। মুন্সীর এই ডায়ালগে তিনি যা করতে বলেন তাসমিনা আহমেদ এখন তাই করেন। কারণ স্বামীর প্রভাবে আওয়ামীলীগ আমলে এই সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ বিটিভির বার্তা সম্পাদক থেকে আইন অমান্য করে রাতারাতি তিনটি প্রমোশন নিয়ে ভারপ্রাপ্ত ডিজি পর্যন্ত হয়েছিলেন।

বিটিভি নিউজে এখনও রিপোর্টাররা স্ক্রিপ্ট এ ফ্যাসিস্ট হাসিনা লেখায় তা কেটে এডিট করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিখতে বাধ্য করেন এই বিটিভি নিউজের এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা।

জুলাই আন্দোলন চলাকালে যখন পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে শহীদ হচ্ছেন ছাত্ররা তখন এই মুন্সী ফরিদুজ্জামান ও হাসিনার সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আরাফাত মিলে বিটিভিতে প্রচার করে হাসিনার গুণগান নিয়ে সম্মৃদ্ধির অগ্রযাত্রা নামের অনুষ্ঠান। আর সে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পান বিটিভির সেরা কর্মকর্তার পুরস্কার।

গত ২৯ মে ২০২৪ তারিখে ২০২৪-এর কথিত জাতীয় নির্বাচনে বিটিভির সংবাদ নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (TIB) প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী বিটিভি সংবাদ সাড়ে ৪ কোটি টাকা অপচয় করেছে। ড. সৈয়দা তাসমিনা আহমেদ একমাত্র উপ-মহাপরিচালক (বার্তা) এবং মুন্সী মো: ফরিদুজ্জামান একমাত্র মুখ্য বার্তা সম্পাদক হিসেবে এই অনিয়ম-দুর্নীতির দায় কোনও ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না কিন্তু অদ্যাবধি তাদের বিরুদ্ধে কোনো বিষয়েই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
হাসিনা পলানোর পর নিজেকে রক্ষা করতে কিছু চুক্তিভিত্তিক

রিপোর্টারকে বিনা নোটিশে বাদ দেন এই মুন্সী ফরিদুজ্জামান। অথচ হাসানুল হক ইনু ও হাছান মাহমুদের হাতে নিয়োগপ্রাপ্ত রিপোর্টাররাই এখন তার আস্থাভাজন। করাচ্ছেন তাদের দিয়ে নানা চাঁদাবাজি। কাউকে দিয়ে বিনামূল্যে হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা আবার কাউকে দিয়ে জমি দখলের কাজ। কেউ এসব অনৈতিক কাজ না করতে চাইলে হাসিনার মত বিটিভিকে নিজের বাব-দাদার সম্পত্তি মনে করে রিপোর্টারদের চাকুরিচ্যুত করেন ঠুনকো অজুহাতে।

তাসমিনা ও মুন্সী ফরিদ গং তাদের অবস্থান ধরে রাখতে তাদেরই আস্থাভাজন নির্বাহী প্রযোজক শামসুল আলমকে বিটিভির পক্ষ থেকে যুক্ত করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ। নিয়ম ভেঙে নিউজের কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও অতিরিক্ত দায়িত্ব দেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে। এক্ষেত্রেও নাম ভাঙ্গানো হয় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এর। আর শামসুল আলম তাদের আস্থাভাজন হবার কারন ২০২৪ এর ৭ জুলাই বিটিভি কর্তৃপক্ষ ছাত্রদের আন্দোলন দমনে এবং সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আরাফাতের নির্দেশে মিথ্যা প্রপাকাণ্ডের যে সংবাদ প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেখানে শামসুল আলমকে প্রধান করে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। যার স্মারক নম্বর -১৫.৫৪.৩০২৫।০২৫.১৮.০০২.২২.১৫৭।

দুঃখের বিষয় হলেও সত্যি ছাত্র হত্যার নেতৃত্বদানকারী শামসুল আলম এখন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সদস্য। বিটিভি থেকে শামসুল আলমের মনোনয়ন হিসেবে বলা হয় বর্তমান প্রেস সচিবের চাহিদা ? সত্যি কি তাই ? আদৌ কি জানতেন তার সম্পর্কে বর্তমান প্রেস সচিব জুলাইযোদ্ধা শফিকুল আলম ? ছাত্র হত্যার নেতৃত্বদানকারী শামসুল আলম এখন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সদস্য। পুরো নিউজরুম জুড়ে চলছে প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টা, প্রেস সেক্রেটারি, তথ্য সচিব, উপপ্রেস সেক্রেটারিদের নাম ভাঙিয়ে রমরমা ব্যবসা।

Address

House-8, Avenue/1, Block-A, Mirpur/10
Dhaka
1216

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when sangskriti.com - সংস্কৃতি ডটকম posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to sangskriti.com - সংস্কৃতি ডটকম:

Share

Our Story

www.sangskriti.com is an Online magazine of reportage, commentary, criticism, essays, reviews on culture with fiction, satire, cartoons and poetry.