
04/08/2025
জুলাই মাসজুড়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে সংঘটিত গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার বিষয়ক উপদেষ্টা মাহফুজ আলম একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিবৃতি দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, “জুলাই আমাদের সবার”—এ লড়াইয়ের কোনো একক দাবি নেই, বরং এটি সমষ্টির সংগ্রাম।
ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, দলীয় বা আদর্শিক মতপার্থক্যের কারণে কারো অবদান অস্বীকার করা অনুচিত। তিনি বিশ্লেষণ করে বলেন, কীভাবে দেশের প্রতিটি স্তরের মানুষ এই অভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখেছে।
মাহফুজ আলম উল্লেখ করেন, ইসলামী ছাত্রশিবির তাদের 'জনশক্তি' ও সাংগঠনিক সমন্বয়ের মাধ্যমে আন্দোলনে সক্রিয় ছিল। ছাত্রদল ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং সরাসরি সংঘাতে অংশ নেয়। অন্যদিকে ছাত্রশক্তি সামনে থেকে মাঠ পরিচালনা করেছে, সিভিল সোসাইটি ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আস্থা তৈরি করেছে।
ছাত্র ইউনিয়নের একটি অংশ, ছাত্র ফেডারেশন ও বাম ছাত্র সংগঠনগুলো মাঠে সক্রিয় থেকেছে এবং রাজনৈতিক ভাষা ধরে রেখেছে। বামপন্থী সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো জনগণের মাঝে সাহস সঞ্চার করেছে।
তিনি আরও বলেন, আলেম সমাজ ও মাদ্রাসা ছাত্ররা রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েছে—যার প্রমাণ যাত্রাবাড়ীর দীর্ঘ প্রতিরোধ। শ্রমজীবী মানুষ, প্রাইভেটের শিক্ষার্থীরা, রিকশাচালক ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ রাজপথে সক্রিয় ছিল। নারীরা আহতদের সহায়তা করেছে, আর মায়েরা ও বোনেরা কার্ফিউর মধ্যেও সাহস জুগিয়েছেন।
বিশেষভাবে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি বলেন, তারাই অনেক ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়ে অভ্যুত্থান এগিয়ে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নীরবে কিন্তু কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে।
তিনি স্বীকার করেন, ছাত্রলীগের একটি অংশ বিদ্রোহ করে অভ্যুত্থানে যোগ দেয় এবং উঠতি মধ্যবিত্ত শ্রেণির অংশগ্রহণ জুলাইয়ের শেষ দিকে আন্দোলনকে ব্যাপকতা দেয়।
তথ্য উপদেষ্টা জানান, পেশাজীবী সংগঠন, মিডিয়া ও সংস্কৃতি জগতের মানুষ, এমনকি প্রবাসীরা পর্যন্ত এ আন্দোলনকে আন্তর্জাতিক পরিসরে পরিচিত করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার ও র্যাপাররা জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “জনগণের লড়াইয়ে কার কোন অবদান অস্বীকার করবেন?”
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা সামনে এনে তার এই বিবৃতি সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।