30/08/2025
নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত বিএনপি
নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা করলেও নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে বিএনপি নেতারা। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনের রোডম্যাপকে জামায়াত অগণতান্ত্রিক বলে আখ্যায়িত করেছে। এতে করে নির্বাচন নিয়ে নতুন করে শঙ্কা মনে করছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, বংলাদেশের জনগণ এখন একটাই দাবি দ্রæত সময়ে নির্বাচন হওয়া। কারণ নির্বাচিত সরকার না থাকায় দেশে প্রায় অচলবস্থার মধ্যে দিন যাচ্ছে। দেশে কোন জনপ্রতিনিধি নেই। কারো কাছে জনগণের চাহিদা বলার কেউ নেই। এছাড়া বিগত স্বৈরাচারী সরকার দীর্ঘ ১৬ বছর মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করে রেখেছিল। এখন মানুষ ভোট দিতে চায়। জনগণ ভোট দিয়ে নিজেদের পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। আর এর মধ্যে ২/৩টি দল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্বাচনকে বানচাল করতে নতুন নতুন প্রদ্ধতি নিয়ে আসছে। যা সাধরন মানুষ কখনো বুঝেনি। মানুষ চায় ভোট দিতে এবং তাদের পছন্দের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে। কোন অনির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সাধারণ মানুষ গ্রহণ করবে না। বিগত পতিত আওয়ামীলীগ সরকারের সময় অনির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশে কতটুকু লুটপাট করেছে তা সাধারণ মানুষ দেখেছে। তাই আর নির্বাচন ছাড়া কোন সরকারকে জনগণ সমর্থন করে না। নির্বাচন কমশিন যখন নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা করলেন তখন বিএনপি এ ঘোষনাকে গ্রহণ করেছে এবং সাধুবাদ জানিয়েছে। কিন্তু জামায়াতসহ আর ২টি দল এর বিরোধীতা করছে। যা বলা চলে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রের সামিল। আমরা এ সকল ষড়যন্ত্রৃ মোকাবেলা করতে প্রস্তুত আছি। নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নির্বাচন হবে কি না, তা নিয়ে জনমনে শঙ্কা তৈরী হয়েছে। নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন না হলে ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে। দেশে-বিদেশেও যা নিয়ে তৎপরতা চলছে। মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বাংলাদেশে উদারপন্থি রাজনীতিকে সরিয়ে উগ্রপন্থি রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, এমনটি ঘটলে বাংলাদেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হবে। সেই সঙ্গে, সংস্কার নিয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছর ধরে খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা অত্যাচারের শিকার হয়েছে। এই ত্যাগকে ধারণ করতে হবে। ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই না বাংলাদেশকে। গণতন্ত্রকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে চাই, যেখানে মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী নয়, সার্বিক জনগণের কল্যাণ হবে। একই সঙ্গে সব চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র মোকাবিলার পাশাপাশি ভালো কাজ দিয়ে ক্ষমতায় যেতে হবে বলে নেতাকর্মীদের সতর্ক করেন তিনি। তিনি বলেন, আপনারা মনে রাখবেন দেশে একটা ষড়যন্ত্র চলছে। সেই ষড়যন্ত্রটা হচ্ছে যে, এই দেশে মধ্যপন্থা রাজনীতি, উদারপন্থি রাজনীতি, উদারপন্থি গণতন্ত্র তাকে সরিয়ে দিয়ে একটা উগ্রবাদের রাজনীতিকে নিয়ে আসা বাংলাদেশে। এটা বাংলাদেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হবে। আমাদেরকে সেজন্য উদারপন্থি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জানি যে রাজনীতিতে অবশ্যই মতভেদ থাকবে, রাজনীতিতে বিভিন্ন রকম চিন্তা থাকবে, মত থাকবে কিন্তু এখন যে পরিবেশটা আমাদের আছে, সেই পরিবেশটাতে আমাদের জনগণ কিন্তু অত্যন্ত বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাচ্ছে। আমরা আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন মানুষকে জিজ্ঞেস করলে মানুষ বলে নির্বাচন হবে তো? এই যে একটা এক ধরনের শঙ্কা-আশঙ্কা এবং এক ধরনের হতাশা এসে যায়।তিনি আরও বলেন, আমি যেটা সবসময় বলি যে, নির্বাচন হবেই এবং যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে সেই সময়তেই হবে। এই কারণে যে এর কোনো বিকল্প নেই। আজকে যদি নির্বাচন বন্ধ করা হয় বা নির্বাচন না হয়; তাহলে এই জাতি প্রচÐ রকমের ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বাড়বে। তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করছেন যে, বিভিন্ন থেকে বিভিন্ন সময় অনেকেই চেষ্টা করছে এই ফ্যাসিবাদকে নিয়ে আবার কথা বলার জন্যে এবং বিদেশেও এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে। তাই নির্বাচনটা খুব দ্রুত দরকারৃ সে কথাগুলো আমরা বারবার বলেছি। আমরা মনে করি, একটা অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে আমরা আমাদের যে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা; সেই রাষ্ট্রব্যবস্থায় আমরা যাওয়ার সুযোগ পাব।