27/08/2025
"কর্পোরেট পলিটিক্স—একটি প্রতিষ্ঠানের অদৃশ্য শত্রু" -
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে লক্ষ্য থাকে উন্নতি, উদ্ভাবন আর টিমওয়ার্ক। কিন্তু অনেক সময় এই তিনটি জিনিসকে ধ্বংস করে দেয় এক অদৃশ্য শত্রু—কর্পোরেট পলিটিক্স। কর্পোরেট পলিটিক্স—একটি প্রতিষ্ঠানের অদৃশ্য শত্রু। বাইরে থেকে হয়তো কোনো কোম্পানি সাফল্যের আলোয় ঝলমল করে, কিন্তু ভেতরে ভেতরে যখন স্বার্থের দ্বন্দ্ব, গোষ্ঠীবাজি আর ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়—তখন সেই ঝলক ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়। সম্পর্ক আর রাজনীতি যখন যোগ্যতা ও কর্মদক্ষতার ওপর ছাপিয়ে যায়, তখন ভেঙে পড়ে দলগত সমন্বয়, প্রতিভাবান কর্মীরা হারিয়ে ফেলে প্রেরণা, আর কর্মপরিবেশ ভরে ওঠে অবিশ্বাস ও নেতিবাচকতায়। এভাবে অদৃশ্য ক্ষয় ভেতর থেকে ধ্বংস করে দেয় প্রকৃত উন্নয়নকে।
তবুও মনে রাখতে হবে—প্রতিটি সংকটের মধ্যেই পরিবর্তনের সম্ভাবনা লুকিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠান যদি স্বচ্ছতা, সততা ও সহযোগিতাকে সামনে আনে, তবে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব নয়, বরং মেধা ও কর্মদক্ষতাই হবে সাফল্যের আসল মানদণ্ড। টেকসই উন্নতির পথ খুলবে তখনই, যখন প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠবে একটি ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ এবং পারফরম্যান্সভিত্তিক সংস্কৃতি।
কেন এটাকে অদৃশ্য শত্রু বলা হয়?
কারণ এটা কখনও সরাসরি সামনে আসে না—বরং ভেতরে ভেতরে নীরবে ক্ষয় করে।
🔹 টিমের মধ্যে বিশ্বাস নষ্ট করে।
🔹 প্রতিভার বদলে তোষামোদের দাম বাড়ায়।
🔹 সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে ব্যক্তিগত স্বার্থে।
🔹 প্রতিষ্ঠানের গতিকে ধীর করে দেয়।
এর ভয়াবহ প্রভাব:
• সেরা ট্যালেন্টরা হতাশ হয়ে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যায়।
• মাঝারি মানের লোকেরা উপরে উঠে আসে—কারণ তারা রাজনীতি করতে জানে।
• ইনোভেশন ও পারফরম্যান্স জায়গা হারায়—প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে পিছিয়ে পড়ে।
একজন সৎ কর্মীর সবচেয়ে বড় শক্তি হলো তার কাজ। সেই কাজই শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে, আনে প্রকৃত সম্মান। তাই আমাদের বেছে নিতে হবে রাজনীতির বিভাজন নয়, বরং যোগ্যতার শক্তি; গোষ্ঠীবাজির অন্ধকার নয়, বরং সহযোগিতার আলো। কারণ আসল বিজয়ী কখনও একক ব্যক্তি নয়—বরং সেই দল, যারা একসাথে লড়ে সাফল্যকে নিজেদের হাতেই তৈরি করে।
লেখা : জিএম কামরুল হাসান