23/08/2025
আমার স্ত্রী। ২০ আগস্ট ২৫ ইং ডেলিভারির তারিখ ছিল। ১৯ আগস্ট সকাল থেকে একটু একটু ব্যথা আরম্ভ হয়। এইভাবে পুরা দিন চলতে থাকে। ব্যথা বেড়ে যাওয়ার কারণে রাত ৮ টায় আমরা তাকে মানারাত হাসপাতালে নিয়ে যাই। শুরু থেকে আমরা মানারাতে গাইনি ডাক্তার দেখিয়ে আসছি। ডাক্তার সব চেক করে ভর্তি নেয়। আমরা বাচ্চার পজিশন জিজ্ঞেস করি। উনারা বললো: সব ঠিক আছে। তারপর তারা তাকে কেবিনে নিয়া যায়। কিছুক্ষণ পরে তারা আমার স্ত্রীকে স্যালাইন এবং ইনজেকশন পুস করে সিটে শুয়ে থাকতে বলে।
স্যালাইন লাগানোর পর আমরা দেখতে পাই তার আর ব্যথা হচ্ছেনা। আমি যতটুকু জানি। হাসপাতালে আসলে তারা ব্যথা বাড়ার জন্য ঔষধ দেবে। ব্যথা বাড়বে। বাচ্চা ডেলিভারি হয়ে যাবে। আমার আগে ২টা বাচ্চা হয়েছিলো- আমি উপস্থিত ছিলাম। ২টা বাচ্চাই নরমাল ডেলিভারি হয়েছিলো। এই পরিস্থিতিতে আমি ইনজেকশনের খালি পেকেটের গায়ে লিখা নামগুলো নেটে সার্চ দিয়ে দেখতে থাকি- কোন ঔষধের কি কাজ?
একটা ইনজেকশনের কার্যকরীতায় লেখা ছিল- ব্যথা কমায়। পরে আমি ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করলে উনি বললেন: এই ইনজেকশন ব্যথা কমায়। আবার প্রয়োজন হলে বাড়ায়।
তখন আমি বলি: এখন বাড়ানোর প্রয়োজন। কমছে কেন?
উনি বলেন: আপনি বুঝবেন না।
আমাদের সাথে আমার খালাম্মা ছিল। উনি আমাকে বললেন: তুমি একটু অপেক্ষা করো। আমার পরিচিত একজন নার্স আছে। দেখি তাকে পাই কিনা? পরে তাকে নিয়ে আসেন আমার খালাম্মা। তার সাথে অনেক্ষণ আমরা কথা বলি। উনি কেবিনে আসেন। কেবিনে এসে উনি স্যালাইন খুলে দেন। স্যালাইন খোলার পর পুনরায় ব্যথা আরম্ভ হয়। উনি আমাদেরকে বললেন রোগীর সব ঠিক আছে। নরমাল ডেলিভারি হবে, ইনশাআল্লাহ।
উনি চলে যাবার পর ডিউটি ডাক্তার আসেন। তখন রাত ১০টা। উনি আমাকে ডেকে বললেন। আমাদের স্পেশাল ডাক্তার আছে। উনি রাত ১২টার পর চলে যাবে। উনার ভিজিট ১২শত টাকা। আপনি উনার সাথে কথা বলে কাজ শেষ করে ফেলেন। কারণ উনার আরো অপারেশনের রোগী আছে। তার মানে সিজার করে ফেলতাম।
তখন আমি বলি: কেন আমি সিজার করবো? আমার বাচ্চার পজিশন তো ভালো। আমার আগের দু'জন বাচ্চা নরমাল ডেলিভারি হয়েছে।
এরপর উনি রাগ করে বলেন: রাতে রোগীর কিছু হলে আমরা জানিনা। এবং এ কথা বলে চলে গেলেন।
আমি বলি: কোনো প্রবলেম হলে আমরা ফেনী নিয়ে যাবো। তারপর উনি সম্ভবত রেগুলার যে নার্স আছে তার সাথে রাগারাগি করেন- স্যালাইন কেন খুলছে? কিছুক্ষণ পর নার্স পুনরায় স্যালাইন লাগিয়ে দেন। আবার আমার স্ত্রীর ব্যথা কমে যায়।
কিছুক্ষণ পর আমার কাছে একটা পেপার নিয়ে আসেন। এবং আমাকে বলেন- পেপারে স্বাক্ষর করতে। আমি বলি এইটা কিসের পেপার। কেনইবা এখানে স্বাক্ষর করবো?
সে বলে: বাচ্চা অথবা মা মারা গেলে আমরা দায়ী না। এই জন্য আপনি স্বাক্ষর করতে হবে।
আমি বলি: এখানে আমি এমন কোন মুমূর্ষু রোগী নিয়া আসি নাই যে, পেপারে স্বাক্ষর করতে হবে। এইভাবে অনেকক্ষণ টাইম চলে যায়। সব নার্স সিজার রোগী নিয়া ব্যস্ত। আমার স্ত্রীকে কেউ দেখার জন্য আসছে না। যতক্ষণ না আমরা তাদেরকে ডাকছি।
রাত ৩টার দিকে আবার আমরা নার্সকে ডাকি এবং জিজ্ঞেস করি- আপনারা কি ডেলিভারি করাবেন না? আপনি বললেন রোগীর সব ঠিক আছে। ঠিক থাকলে কেনো ব্যথা বাড়ার ঔষধ দিচ্ছেন না, কেন ডেলিভারি করাচ্ছেন না?
উনি বললেন: ব্যথা বাড়ার ঔষধ আমি দিতে পারবো না। নিষেধ আছে। আমি বলি: কে মানা করসে। আপনি না দিলে কে দিবে?
সে বলে: দিনের ১০টায় ডাক্তার আসবে উনি দিবে।
আমি বললাম: রোগী কি সকাল ১০টা পর্যন্ত এইখানে পড়ে থাকবে?
সে বলে: আমার কিছুই করার নাই।
এই কথা বলার পর আমাদের বুঝতে দেরি হলো না। আমরা অনেক বড় মাপের অপরাধ করে ফেলেছি। কেনো আমরা তাঁদের কথা মত সিজার করলাম না।
এই হলো মানারাত হাসপাতালের চিত্র!
আমি ছাগলনাইয়ার সন্তান হিসাবে ছাগলনাইয়া বাসীকে জানিয়ে রাখলাম। আমার মতো আর কেউ যেন এই ভোগান্তিতে না পড়েন।
রাত ৪টায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে সিট কাটাই। আমরা রাতের মধ্যে ফেনী নিয়া যাই। ওখানে যেতে যেতে সকাল ৬টা বাজে। উনারা সব কিছু চেক করে ব্যথা বাড়ার ইনজেকশন দেন। আলহামদুলিল্লাহ এক ঘণ্টার মাঝে ডেলিভারি সুসম্পন্ন হয়। কোনো ধরনের সিজারের দরকার হয় নাই।
এই ছিল মানারাত হসপিটালের ঘটনা। ভুক্তভোগী Muhammad Ibrahim এর লেখা পোস্ট কমেন্ট বক্সে দেয়া হয়েছে।
সেইম ঘটনা আমি ওযায়ের আমীন সাথে ঘটেছিল ২০১৬ সালে শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হসপিটালে। আমাদের ছেলে আবদুর রহমানের জন্ম হয়েছিল ইসলামিক ব্যাংক হসপিটালে। হসপিটালের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে আমার ছেলে আবদুর রহমানকে দীর্ঘ পাঁচ দিন এনআইসিও তে রাখতে হয়েছিল। এবং অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছিল আমাদের। কপি করা। হাসপাতাল লক্ষিপুর