
06/05/2025
"শহীদ মিনার কী করুণ ডাকে সেই নভেরাকে
কিছুতে পায় না সাড়া, ডাকে বারবার
যিনি একুশের দিনে নভেরাকে
আত্মার ভেতর থেকে তুলে এনেছিলেন।"
কবি সাইয়িদ আতীকুল্লাহর কবিতার এমনিভাবে ভাস্বর হয়ে আছেন, ভাস্কর নভেরা আহমেদ।
কোনো ধরাবাঁধা গন্তব্য বা প্রথাগত বসে থাকা নেই; রক্ষণশীল, পুরুষতান্ত্রিক সমাজকাঠামোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের বিহঙ্গ-ভাষা রচনা করে গেছেন তাঁর ভাস্কর্য-সমুদয়ে। পঞ্চাশ-ষাটের দশকে নভেরা, নগর ঢাকায় এক অচেনা বিস্ময়ের নাম।২৮-২৯ বছর বয়সী তরুণ নারী শিল্পী উৎসাহী জনতার সামনে ছেনি, হাতুড়ি, বাটালি নিয়ে স্টুডিওতে বা কখনো মিস্ত্রিদের সঙ্গে কাজ করছেন, অভূতপূর্ব সব শিল্পকর্ম নির্মাণ করেছেন, শহীদ মিনারের পাশে তাঁবু খাঁটিয়ে রাত-দিন নিমগ্ন খেটে একটি জাতির ইতিহাসের স্মারক তৈরি করছেন—এই দৃশ্য সেদিন কারও স্বাভাবিক লাগেনি।
স্বপ্ন ছিল নগরীকে ভাস্কর্য দিয়ে সাজানো। নভেরা বলেছেন, "আমাদের উচিত প্রাত্যহিক জীবনে শিল্পের স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে রাখা এবং জীবনের অন্তর্নিহিত দৃষ্টি জাগিয়ে রাখা।"
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম নির্মাতা হিসেবে তিনি, তাঁর যথাযথ স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, অভিমানে সুদীর্ঘকাল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন প্রবাসজীবন কাটিয়েছেন।
২০১৫ সালের ৬মে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চিরবিদায় নেন নভেরা।
আজো রহস্য আর বিদ্রোহের এক চিরভাস্বর প্রতিমূর্তি রূপে নভেরা আহমেদ শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একই সাথে নন্দিত এবং নিন্দিত।
#নভেরা_আহমেদ
#ভাস্কর্য
#শহীদ_মিণার