21/06/2025
💌 একজন আমেরিকান পর্যটকের চোখে ইরান 🇮🇷
"ইরানে কয়েক মাস ধরে ঘুরেছি, থেকেছি। তেহরানে একটা ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর সঙ্গে দেখা হয়, যিনি আমাকে ঘর খুঁজতে দেখেছিলেন। আমাকে বাসায় ডেকে নেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে থাকি, প্রতিদিন একসঙ্গে খাই—এক টাকাও নিতে রাজি হননি। একদিন অসুস্থ হয়ে বমি করছিলাম, সবাই বাথরুমে এসে পাশে দাঁড়াল, মাথায় হাত বুলিয়ে বলল, "আয়বি নাদারে"—লজ্জার কিছু না, ঠিক আছো।
ইরানের শহর থেকে শহর ঘুরেছি—প্লেন, ট্রেন, বাস, শেয়ার ট্যাক্সি। শেষে আর হোটেল বুক করতাম না, কারণ সবসময় কাউকে পেতাম—বাসে বা ট্রেনে—যারা বলত, "চলো, আমার বাসায় থাকো।" ইয়াজদের ইরান-ইরাক যুদ্ধের এক শহীদের পরিবার আমাকে নিয়ে গেল পাহাড়ে বারবিকিউ করতে। রাসতের এক ট্যাক্সিচালক সব হোটেল ভরতি দেখে নিজের ছোট্ট ঘরের মেঝেতে আমার ঘুমানোর ব্যবস্থা করল।
পুলিশ?
একবারই কথা বলেছে—তাও জানতে চেয়েছে, আমি ঠিক আছি তো?
কখনো একটুও অস্বস্তি লাগেনি। রাত হোক, দিন হোক—সব সময় যেন একটা অদৃশ্য ভালোবাসা আমাকে জড়িয়ে রেখেছে। ইরান শুধু একটা দেশ না, এটা এক বিশাল হৃদয়। পাহাড়ি রেইনফরেস্ট থেকে শুরু করে লবণাক্ত মরুভূমি পর্যন্ত—মানুষগুলোও তেমনই বৈচিত্র্যময়। কারো ভেতর ছিল প্রচণ্ড উদারতা, কারো ভেতর ধর্মীয় গাম্ভীর্য—কিন্তু সবার মধ্যে একটাই জিনিস ছিল—মানুষের প্রতি ভালোবাসা।
এই দেশটা শুধু পাহাড়, মরুভূমি, আর পারমাণবিক শিরোনাম না।
এই দেশটা মানুষের, হৃদয়ের, ভালোবাসার।
ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতির সীমা পেরিয়ে
তারা আমাকে শুধু আশ্রয় দেয়নি—মানুষ হিসেবে সম্মান দিয়েছে।
আজও মনে হলে লজ্জায় চোখ ভিজে যায়।"
– অধ্যাপক জনাথন এ সি ব্রাউন, জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়