23/10/2025
একটি বিষয় যা আমাদের সবার জানা উচিত ❤
একটি সিজারিয়ান অপারেশন (Caesarean section) আসলে এক মায়ের জন্য সন্তানের জন্মের দিন থেকে মৃত্যু পর্যন্ত একটি আজীবন শারীরিক অক্ষমতা।
অনেকে অবলীলায় বলে ফেলেন,
“আরে, সিজারের ব্যথা কিসের! পেট কেটে বাচ্চা বের করে দিলেই হয়।”
কিন্তু আমি বলতে চাই —
এই পৃথিবীতে একটি শিশুকে আনতে মায়ের শরীরের ৮টি স্তর কেটে পৌঁছাতে হয়।
হ্যাঁ, সিজারের আগে হয়তো অজ্ঞানতার কারণে সেই কাটার অনুভূতি বোঝা যায় না,
কিন্তু অপারেশনের আধা ঘণ্টা পরেই যখন ৩ বোতল স্যালাইন শেষ হয়,
তখন শুরু হয় আসল যুদ্ধ।
পিঠে মোটা সিরিঞ্জ দিয়ে দেওয়া স্পাইনাল ইনজেকশন
একজন নারীর পিঠে আজীবন ব্যথার কারণ হয়ে থাকে।
এরপরের ২৪ ঘণ্টা ভয়াবহ যন্ত্রণার,
এমন এক ব্যথা যেন শরীরের কোনো অঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে কিন্তু ওষুধ দেওয়া হয়নি—
তবুও মায়েরা সেই যন্ত্রণা সহ্য করেন, টিকে থাকেন।
প্রথম ২৪ ঘণ্টা আপনি নিজে থেকে উল্টে শুতে পারেন না,
নিজে হাঁটতে বা টয়লেটে যেতে পারেন না!
অজ্ঞানতার প্রভাব শেষ হলে মনে হয়
যেন কেউ আপনার গলা কেটে দিয়েছে আর আপনি ছটফট করছেন।
২৪ ঘণ্টায় ২৪ বোতল স্যালাইন দেওয়া হয়,
এবং হাতের একটার পর একটা শিরায় সূচ ফোটানোর যন্ত্রণা—
তা না বললেও নিশ্চয়ই বোঝা যায়!
হাতে স্যালাইন চলছে, আর ক্যাথেটার শরীরে জমে থাকা বরফের মতো ঠান্ডা যন্ত্রণা দিচ্ছে।
এইসব কষ্টের মাঝেও
আমাদের নবজাতককে বুকের দুধ খাওয়াতে হয়,
আত্মীয়-স্বজনের সামনে হাসিমুখে থাকতে হয়,
আর শুনতে হয় শত রকমের অবাঞ্ছিত পরামর্শ।
তবু কিছু মানুষ বলে বসে —
সিজারিয়ান মায়েদের নাকি তাদের সন্তানের সঙ্গে
“নরমাল ডেলিভারি” মায়েদের মতো গভীর বন্ধন তৈরি হয় না!
সত্যি তাই?
আপনি জানেন, সন্তান জন্মের অনেক পরেও —
আমরা ক্লান্ত, বিরক্ত হয়ে যাই,
হঠাৎ বসা অবস্থা থেকে উঠতে পারি না,
নিচু হয়ে বাচ্চাকে কোলে তুলতে পারি না,
ভারী কিছু তোলা যায় না,
বেশি হাঁটলেই পিঠে টান ধরে, দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়।
তবুও আমরা সব করি,
কারণ আমরা নারী, এখন আমরা মা। ❤️
আর এত কিছুর পরেও যদি কেউ বলে,
“সিজার তো কিছুই না”—
তখন সত্যিই খুব কষ্ট লাগে!
তাই মনে রাখবেন —
স্বাভাবিক হোক বা সিজারিয়ান — দুই ক্ষেত্রেই এক নারী, এক মা, এক স্ত্রী— ভয়ানক কষ্ট সহ্য করে নতুন জীবনকে পৃথিবীতে আনে।
সে প্রাপ্য শুধু সম্মান ও যত্নের। ❤️🥀🥰