07/10/2024
প্রসঙ্গঃ দুর্গাপূজা
আগে হতো দুর্গাপূজা,
তারপর হতো শারদীয় দুর্গাপূজা,
তারপর হতো শারদীয় দুর্গোৎসব,
এখন হয় শারদীয় উৎসব।
মদ কালচার, ডিজে কালচার, প্রতিযোগিতামূলক প্যান্ডেল আর লাইটিং কালচার, এগুলোর ভিড়ে মায়ের পুজোর শুদ্ধতা, ভক্তিচর্চা থেকে হিন্দুরা আস্তে আস্তে সরে গিয়ে এটাকে যাস্ট নেচে-গেয়ে উদ্ভট উদযাপনের একটা মাধ্যম বানিয়ে ফেলেছে।
রাগ করবেন না দয়া করে।
মদ প্রায় সবধর্মেই নিষিদ্ধ, তবু সব ধর্মের লোকেরাই কমবেশি খায়। কিন্তু পূজা উপলক্ষে কিংবা পুজা প্যান্ডেলের মতো পবিত্র একটা জায়গায় মদ খাওয়া যাবেনা এটা যখন প্রশাসন কিংবা অন্য ধর্মের লোকেদের বলে দিতে হয়, তখন হিন্দু হিসেবে আমি ভীষন লজ্জা পাই। আবার যখন এটা নিয়ে মজা করে, তখন উত্তর দিতেও সংকোচবোধ হয়!
গান-বাজনা সনাতন সংস্কৃতির অংশ, এটা আমাদের ধর্মে নিষেধও নয়। কিন্তু “তোর কোন কোন জায়গায় ব্যাথা গো - বান্ধাবি ললিতা, কিংবা শিলা কি জওয়ানি, কিংবা নাগিন-নাগিন“ এসব চটুল গানের সাথে দুর্গাপূজার কি আদৌ সম্পর্ক আছে? পূজার পবিত্র একটা আবহে এই কয়টা দিন আমরা বরং চন্ডিপাঠ, মায়ের বিভিন্ন স্তুতিমূলক, আরাধনামূলক সংগীতগুলো শুনতে পারি।
শুদ্ধ এবং শালীনভাবে থেকেও তো আনন্দ উদযাপন করা যায়। পুজোর এই কয়টা দিন আমরা সংগীত প্রতিযোগিতা, শালীন নৃত্য প্রতিযোাগিতা, যেমন খুশি তেমন সাজো, দুর্গাপূজা সম্পর্কিত, ধর্ম সম্পর্কিত বিভিন্ন কুইজ প্রতিযোগিতা, শাস্ত্র অধ্যায়ন প্রতিযোগিতা এইগুলোও আয়োজন করতে পারি। সাথে নিরামিষ ডেলিশিয়াস ফুড মেলার ব্যবস্থা করা যায়।
মায়ের পুজো উপলক্ষে যদি মাকে ঠিকভাবে শ্রদ্ধাভক্তি না করলাম, মায়ের সম্পর্কে-ধর্ম সম্পর্কে না জানলাম তাহলে প্রতি বছর পুজোয় অংশগ্রহন করে আমরা কি শিখলাম? শুধু গান-বাজনা, নাচ আর আনন্দ?
তাই হিন্দু ভাই-বোনদের নিকট আবেদন, আসুন মায়ের পুজোয় এবার থেকে আনন্দ করার পাশাপাশি মায়ের পুজোর প্রাসঙ্গিকতা, যথাযথ মর্যাদা আর পবিত্রতা বজায় রাখি।
লিখেছেন - শুভজিৎ সরকার