26/09/2025
জুমার দিনের ফযিলাত (গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য) অপরিসীম এবং ইসলামে এটি সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন হিসেবে বিবেচিত। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এর বহু ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
এখানে শুক্র বা জুমার দিনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফযিলাত তুলে ধরা হলো:
সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন এবং ঈদের দিন
রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "সূর্য উদয়ের দিনগুলোর মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিন হলো জুমার দিন।" (সহীহ মুসলিম) তিনি আরও বলেছেন, "আল্লাহ তাআলা এই দিনকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন।" (ইবনে মাজাহ)
জুমার দিনের বিশেষ কিছু ঘটনা
জুমার দিনে ইসলামের ইতিহাসে অনেক বড় ও মহৎ ঘটনা ঘটেছে, যা এর মর্যাদাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে:
এই দিনে হযরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়।
এই দিনেই তাঁকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এই দিনেই তাঁকে জান্নাত থেকে বের করে পৃথিবীতে পাঠানো হয়।
এই দিনেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।
দোয়া কবুলের বিশেষ মুহূর্ত
জুমার দিনের অন্যতম সেরা ফযিলাত হলো, এ দিনে দোয়া কবুলের একটি বিশেষ মুহূর্ত বা সময় রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, "জুমার দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যাতে আল্লাহর কোনো বান্দা কল্যাণকর কোনো কিছু কামনা করলে আল্লাহ তাকে তা দান করেন।" (সহীহ বুখারী, মুসলিম)
আলেমদের মতে, এই মুহূর্তটি হলো: ১. ইমামের খুতবার জন্য মিম্বরে বসা থেকে শুরু করে সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত। ২. আসর নামাজের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। (এই মতটি অধিক গ্রহণযোগ্য)
গুনাহ মাফ ও বিশাল সওয়াব
জুমার নামাজ ও এর সংশ্লিষ্ট আমলগুলো গুনাহ মাফের কারণ হয়।
এক জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত (এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের) গুনাহ মাফ হয়ে যায়, যদি বড় গুনাহ থেকে বিরত থাকা হয়।
মসজিদে আগে যাওয়ার জন্য বিশাল সওয়াবের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সবার আগে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কুরবানি করার সওয়াব পায়। এরপর যে যায়, সে একটি গরু, এরপর মুরগি, এরপর ডিম সদকা করার সওয়াব পায়।
যে ব্যক্তি জুমার দিনে উত্তমরূপে গোসল করে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং মনোযোগ সহকারে খুতবা শোনে, সে প্রতিটি পদক্ষেপে এক বছরের নফল রোজা ও এক বছরের নফল নামাজের সওয়াব লাভ করে। (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
কবরের আযাব থেকে মুক্তি
হাদিসে বর্ণিত আছে, কোনো মুসলিম যদি জুমার দিন বা রাতে মৃত্যুবরণ করেন, তবে আল্লাহ তাকে কবরের ফিতনা (পরীক্ষা/আযাব) থেকে রক্ষা করেন। (তিরমিজি)
জুমার দিনের বিশেষ আমল
জুমার দিনের ফযিলাত লাভের জন্য কিছু বিশেষ আমল রয়েছে, যা রাসূলুল্লাহ (সা.) করার জন্য উৎসাহিত করেছেন:
জুমার নামাজে যাওয়া: প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য জুমার নামাজ ফরয।
দরূদ পাঠ: এই দিনে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা।
সূরা কাহফ তিলাওয়াত: যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা কাহফ পাঠ করে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত আলোকময় করে দেন (নূর)। (মিশকাত শরিফ)
উত্তম রূপে গোসল ও পরিচ্ছন্নতা: গোসল করা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা।
তাড়াতাড়ি মসজিদে যাওয়া: যত আগে সম্ভব মসজিদে উপস্থিত হওয়া।
খুতবা মনোযোগ দিয়ে শোনা: খুতবার সময় নীরবতা বজায় রাখা।