17/09/2025
🌟 বিশ্বকর্মা পূজা: বিস্তারিত
🪔 বিশ্বকর্মা দেবতা কে?
হিন্দু ধর্মে বিশ্বকর্মা হলেন দেবশিল্পী ও স্থপতি।
তাঁকে বলা হয় “স্বর্গীয় স্থপতি”।
তিনি দেবতাদের জন্য নানা প্রাসাদ, অস্ত্র, রথ, অলঙ্কার ও নগরী নির্মাণ করেছিলেন।
পুরাণে উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি
ইন্দ্রপ্রস্থ (পাণ্ডবদের রাজধানী)
দ্বারকা (শ্রীকৃষ্ণের নগরী)
লঙ্কা (বিশ্বকর্মার নির্মিত, পরে রাবণের অধীনে)
দেবতাদের অস্ত্র (যেমন বিষ্ণুর সুদর্শন চক্র, শিবের ত্রিশূল)
---
📅 কবে পালিত হয়?
ভাদ্র মাসের শেষ দিনে (ভাদ্র সংক্রান্তি), অর্থাৎ সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে।
এই দিনেই বাংলায়, আসাম, উড়িষ্যা, ত্রিপুরা সহ ভারত ও বাংলাদেশে বিশেষভাবে পূজা হয়।
---
🌸 পূজার মূল তাৎপর্য
যন্ত্রপাতি ও কাজকে দেবতারূপে সম্মান জানানো।
কর্মক্ষেত্রকে দুর্ঘটনা মুক্ত রাখা।
শ্রম, দক্ষতা ও সততার মর্যাদা প্রদান।
শ্রমজীবী মানুষদের জন্য এটি আনন্দ ও ঐক্যের উৎসব।
---
🎉 বিশেষ প্রথা
কারখানা, ওয়ার্কশপ, দোকান ও যানবাহন পরিষ্কার করে সাজানো হয়।
যন্ত্রপাতি ফুল, ধূপ, প্রদীপ, সিঁদুর দিয়ে পূজা করা হয়।
বাংলায় এদিন ঘুড়ি ওড়ানো একটি বড় ঐতিহ্য।
---
✨ বিশ্বকর্মার প্রতীক
হাতুড়ি, করাত, কুঠার, ছেনি, রথচক্র, বই ও জলপাত্র।
তাঁকে সাধারণত সাদা দাড়ি, চার হাত, সিংহাসনে আসীন অবস্থায় চিত্রিত করা হয়।
---
📜 বিশ্বকর্মার বাণী (প্রচলিত ধারণা)
“কর্মই ধর্ম।”
“কর্মই পূজা।”
👉 অর্থাৎ শ্রম ও দক্ষতার মাধ্যমে জীবন গঠনই প্রকৃত পূজা।
---
🙏 মন্ত্র ও স্তোত্র
🌺 প্রণাম মন্ত্র
ॐ विश्वकर्मणे नमः।
Om Vishwakarmane Namah।
বাংলা উচ্চারণ:
“ওঁ বিশ্বকর্মণে নমঃ।”
অর্থ: বিশ্বশিল্পী, বিশ্বনির্মাতা বিশ্বকর্মাকে প্রণাম জানাই।
---
🌺 বিশ্বকর্মা স্তোত্র (সংক্ষিপ্ত)
शिल्पानां पतये नमो विश्वकर्मणे।
सर्वलोकनिवासाय सर्वसिद्धिप्रदायिने॥
বাংলা অর্থ:
শিল্পকলার অধিপতি, বিশ্বকর্মাকে প্রণাম জানাই,
তিনি সকল লোকের নিবাসদাতা ও সকল সিদ্ধি প্রদানকারী।
---
🌺 ধ্যান মন্ত্র
ध्यानमूलं गुरुर्मूर्ति: पूजामूलं गुरुर्पदम्।
मंत्रमूलं गुरुर्वाक्यं मोक्षमूलं गुरु: कृपा॥
👉 বিশ্বাস করা হয়, এই মন্ত্র পাঠ করলে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা দূর হয় ও সাফল্য আসে।
---
🌼 বিশ্বকর্মা পূজার সহজ পূজা-পদ্ধতি
1. ভোরে স্নান করে পরিষ্কার কাপড় পরা।
2. কারখানা/দোকান/ওয়ার্কশপ/যানবাহন পরিষ্কার করা।
3. বিশ্বকর্মার প্রতিমা বা ছবি স্থাপন।
4. প্রদীপ, ধূপ, ফুল, গন্ধ, চন্দন, অর্ঘ্য নিবেদন।
5. প্রণাম মন্ত্র ও স্তোত্র পাঠ।
6. প্রসাদ বিতরণ (প্রায়শই মিষ্টি, ফল, বাতাসা ইত্যাদি)।
7. দিনের শেষে আনন্দ-উৎসব ও ঘুড়ি ওড়ানো।
---
🏆 সারসংক্ষেপ
বিশ্বকর্মা পূজা কেবল একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি হলো শ্রম ও কর্মকে পবিত্র রূপে দেখার এক সামাজিক উৎসব।
এই দিনে আমরা শিখি —
👉 শ্রমের মর্যাদা দাও,
👉 কর্মক্ষেত্রকে দুর্ঘটনামুক্ত রাখো,
👉 দক্ষতা ও সততা দিয়ে উন্নতির পথে চল।