27/07/2025
এক সময়কার "শয়তানের বাক্স" আজ "ধর্ম ব্যবসার" অনেক বড় মাধ্যম-
যখন গ্রামের সহজ-সরল মানুষরা টেলিভিশন কিনে ঘরে এনেছিলো- দুনিয়ার খবর জানবে, গান শুনবে, নাটক দেখবে, সন্তানেরা বিনোদনের একটা মাধ্যম পাবে বলে। কিন্তু সেই সময় একদল তথাকথিত ধর্ম ব্যবসায়ী, যাদেরকে আমরা ‘মোল্লা-মুন্সি’ নামে চিনি, তারা মাঠে-ঘাটে ওয়াজ-মাহফিলে চিৎকার করে বলতো- “টেলিভিশন" দেখা হারাম! এটা শয়তানের বাক্স! তারা লোকজনকে বুঝিয়ে-সুজিয়ে, ভয় দেখিয়ে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে টেলিভিশন ভেঙেছে, আগুনে পুড়িয়েছে। সেই দৃশ্য আজও অনেকের চোখে স্পষ্ট। ঘরের কোণে রাখা কষ্টের টাকায় কেনা টেলিভিশন মুহূর্তে ছাই হয়ে যাচ্ছে, আর একদল দাড়িওয়ালা লোক মুখে- "নারায় তাকবি আল্লাহু আকবার" আর হাতে লাঠি নিয়ে "হারাম হারাম" বলে চিৎকার করছে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, আজ সেই "টেলিভিশন" হারাম ঘোষণাকারীরা কোথায়? তারা কি সেই মতবাদে এখনো অটল? না, বরং আজ তারা নিজেরাই দিনের বড় একটা সময় কাটান ফোনে চোখ গুঁজে! আজ ওয়াজ হয় ইউটিউবে, ভাইরাল হয় ফেসবুকে, টিকটকে ছোট ছোট ভিডিও বানিয়ে চলে ধর্ম ব্যবসার মার্কেটিং। এক সময় যারা ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেই গুনাহের ভয় দেখাত, আজ তারাই রিং লাইটে মুখটাকে ফর্সা করে ভিডিও বানায়। আজকের যুগে এদের অনেকেই একাধিক পেজ আর ইউটিউব চ্যানেল চালান। মোদ্দা কথা সেই টেলিভিশন, যেটা তারা এক সময় হারাম বলতেন, তার চেয়েও বড় স্ক্রিন এখন তাদের পকেটে!
তাহলে কী বদলেছে? কুরআন তো সেই একই আছে। কিন্তু, সেই টেলিভিশন হারাম থেকে হালাল হলো কীভাবে?
উত্তর তো জানি- আসলে টেলিভিশন কখনোই হারাম ছিল না, হারাম ছিল এদের অজ্ঞতা, সংকীর্ণতা, এবং নিজেদের সুবিধামতো ধর্মের অপব্যবহার। এরা সকালে এক কথা বলে, বিকেলে আরেক কথা বলে, আবার সন্ধ্যা বলে অন্য কথা।
এসব ভণ্ডদের কথা শুনে শত শত পরিবার তাদের সন্তানদের আনন্দ কেড়ে নিয়েছে৷ এই ভন্ডরা মানুষকে মানসিকভাবে আতঙ্কিত করেছে। অথচ তারা নিজেরাই আজ সেই টেলিভিশনের আধুনিক রূপ স্মার্টফোন, ইউটিউব, ফেসবুক- সব কিছুর সুযোগ নিচ্ছে!
আজ সময় এসেছে প্রশ্ন তোলার- এই ভণ্ডামি আর কতদিন? কুরআনের ভাষা বদলায়নি, বদলেছে এদের মনোভাব, কারণ সমাজ বদলেছে, প্রযুক্তি এগিয়েছে। কিন্তু ধর্মের নামে প্রতারণা এখনো থামেনি।
আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন- যে টেলিভিশন এক সময় হারাম ছিল, তা কীভাবে হঠাৎ হালাল হলো? উত্তর চাই- তাদের কাছে, এবং আপনাদের কাছেও!
✍️ Trand News Bangla