অভ্রায়ীনি ঐশি -Avrayini oishi

অভ্রায়ীনি ঐশি -Avrayini oishi Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from অভ্রায়ীনি ঐশি -Avrayini oishi, Digital creator, Feni.
(1)

"★"আলতো হাতে কোমল স্পর্শের আবেশ,দু দেহের মাঝে বিস্তর ফারাক রেখেও বুকে নিশ্চিন্তে মাথা রাখার অনুভুতি,,, আপনি হতেই আশা রাখি 'উষ্ণায়ন'

" আমি আপনার শ্যামাফুল বলছি"

30/08/2025

#রেখো_তোমার_বাহুডোরে গল্পটি আর ফেইসবুকে দিবো নাহ।পরবর্তী গল্প আসবে কয়েকদিনের মধ্যেই।

24/08/2025

রিচ নেই বলেই গল্প দিচ্ছি না।
#রেখো_তোমার_বাহুডোরে

 #রেখো_তোমার_বাহুডোরে কনটেস্ট উইনার Shuvoshree Ghosh আপু। বাকিদেরও অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ, প্রতিটা গল্প শেষেই নতুন ক...
20/08/2025

#রেখো_তোমার_বাহুডোরে
কনটেস্ট উইনার Shuvoshree Ghosh আপু।
বাকিদেরও অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ, প্রতিটা গল্প শেষেই নতুন কনটেস্ট আসবে। 😊

[আপু,পেইজের ইনবক্সে কুরিয়ার এড্রেস দিয়ে রাখবেন।]
গল্প আসবে পরশু,কালকে এক্সাম আছে আমার,মাফ করে দিয়েন পাঠকমহল।🙏

কনটেস্ট ❗কনটেস্ট❗
#রেখো_তোমার_বাহুডোরে

এই পর্যন্ত প্রকাশিত হওয়া গল্পটির যতগুলো পর্ব রয়েছে,সেগুলোর মধ্যে প্রতিটি সদস্যের নাম ও ছোট্ট করে পরিচয় তুলে ধরতে হবে এই পোস্টের কমেন্টে। যে সবগুলো নাম ও পরিচয় তুলে ধরতে পারবে সে হবে উইনার।যদি একাধিক ব্যক্তি সঠিক উত্তর দিতে পারে তাহলে গল্পে রিয়েক্ট ও কমেন্টের উপর ভিত্তি করে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হবে। 💙💙

[সময়: ১৬ তারিখ রাত ১০ টা পর্যন্ত ]🚫

আপনার পড়াকু বন্ধুদের কাছে পোস্টটি শেয়ার করে জিতার সুযোগ করে দিন 😊
Best of luck pathok mahal🫶
#অভ্রায়ীনি_ঐশি

 #রেখো_তোমার_বাহুডোরে #অভ্রায়ীনি_ঐশি #পর্ব_২৪সিক্ততার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ কাবু হয়েই বাড়ি ফিরলো রাত।শরীরের শার্ট খানা ভিজ...
18/08/2025

#রেখো_তোমার_বাহুডোরে
#অভ্রায়ীনি_ঐশি
#পর্ব_২৪

সিক্ততার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ কাবু হয়েই বাড়ি ফিরলো রাত।শরীরের শার্ট খানা ভিজে লেপ্টে আছে। বাইরেটায় তুমুল বৃষ্টি। আকাশের হঠাৎ এমন মন পরিবর্তন হবে বুঝতেই পারে নি কেউ। গাড়ি নিয়ে বের হলেও মিষ্টির দোকানে গিয়ে আবার গাড়িতে ফিরে আসতে আসতে বেশ অনেকটাই ভিজে গেছে সে। কিচেনে গিয়ে হাতের বড় ব্যাগটা টেবিলে রাখতেই কান্তা আর মিশি এসে জিজ্ঞেস করলো...

" এই ভর দুপুরে কি নিয়েছিস আবার?"

কান্তা ততক্ষণে নিজের শাড়ির আচল দিয়ে রাতের ভেজা চুল মুছতে ব্যস্ত।

" মিষ্টি এনেছি বড় মা। আলাদা প্যাকেটে দেখো লেমন বরফি আছে ৩ পিস, এই কয় পিসই ছিলো ইনটেক দোকানে।ওগুলোয় যেন কেউ হাত না দেয়, তিয়াসের জন্য এনেছি।"

মিশি প্যাকেট খুলে বললো...

"রাত বাবা,এত মিষ্টি যে? এখানে তো ৭/৮ রকমের আছে। "

রাত এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললো..

"তিয়াসের জন্য ক্ষীরমোহন,গোলাপজাম আর লেমন বরফি, এই তিনটা নিয়ে দিবা একটু? আর... রসগোল্লা গুলো এখনো গরম আছে। ওখান থেকেও দু পিস দিও,খাবে কিনা জানি না, তাও দেখি। "

মিশি "আচ্ছা " বলে কিচেন থেকে প্লেট আনতে ব্যস্ত হলো। কান্তা বললো...

" দুটো বাজতে চললো।এখন মিষ্টি খেলে মেয়েটা ভাত খাবে কখন? "

" পরে আমি খাইয়ে দিবো বড় মা। ওর মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে এখন।মিষ্টিই দাও।"

"আচ্ছা তুই যা চেঞ্জ করে নে।আমি ওর জন্য মিষ্টি নিয়ে যাচ্ছি। "

"আমাকেই দাও।ওকে দিয়ে তারপর চেঞ্জ করে নিবো সমস্যা নেই।"

কান্তা, মিশি হার মানলো। ট্রেতে করে কয়েকটি আলাদা বাটিতে করে সব রকম থেকেই মিষ্টি সাজিয়ে দিলো ইন্দুর জন্য। রাত ট্রে নিয়েই সিঁড়ি ডিঙিয়ে উপরে উঠলো ইন্দুর রুমের দিকে।

ঘরটায় বিরাট জ্যাম। তুরুলা বাহিনী উপস্থিত এখানেই। কিছু একটা নিয়ে বেশ হাসি তামাশা হচ্ছে সবার মাঝেই। দরজা দিয়ে রাতকে মিষ্টি হাতে ঢুকতে দেখেই সায়ন দ্রুত কদমে এগিয়ে এলো...

"ওহহো,রাত ভাই মিষ্টি নিয়ে এসেছে। দেখি দেখি..."

বলেই ট্রের দিকে হাত বাড়াতে গেলেই রাত সরিয়ে ফেললো সেটি।বললো..

"একদম নাহ।এগুলো তিয়াসের। তোদের সবার জন্য নিচে আছে, বড় মার থেকে নিয়ে নে যাহ।"

সায়নকে আর পায় কে,লাফাতে লাফাতেই ছুটলো সে। রাতের ইশারায় বাকিরাও বেরিয়ে গেলো রুম থেকে। ইন্দু হাসি মুখে উৎসুক হয়ে তাকিয়ে।রাত এগিয়ে গেলো বিছানায়।মিষ্টির ট্রে খানা ইন্দুর সামনে রাখতেই ইন্দু নজর দিলো রাতের উপর...

"ভিজে গেছেন তো আপনি। তারাতাড়ি চেঞ্জ করে নিন,ঠান্ডা লেগে যাবে তো আবার।"

রাত বা হাত ইন্দুর চুলে বুলিয়ে দিয়ে বললো...

"তুমি খাও যেটা মন চায়।এগুলো ভালো না লাগলে নিচে আরো কয়েক রকম আছে, ওগুলো থেকে টেস্ট করতে পারবে। আমি ৫ মিনিটেই আসছি।"

ইন্দু মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলো।

-------
পৃথিবী নিজের ক্যামেরা দিয়ে টেবিলে সাজানো মিষ্টির ভিডিও নিচ্ছে নানা এঙ্গেল থেকে। ওদিকে তার এসবের জন্য তুরুলা বাহিনী মিষ্টিতে হাতও লাগাতে পারছে না। কলিংবেলের শব্দে সেদিকে ফিরে তাকালো সবাই। তারপর একে অপরের দিকে তাকিয়ে হুট করে এক সাথেই বলে উঠলো...

"আমি পারবো না..."

এদের এসব কান্ড রোজকার ঘটনা। মিশি কাছেই ছিলো,বিরক্ত হয়ে এগিয়ে গিয়ে সে নিজেই দরজা খুলে দিলো। সৌরাজি দাঁড়িয়ে, তাকে দেখেই মিশি হাসলো, আলতো করে জড়িয়ে ধরলো তাকে। জিজ্ঞেস করলো...

"কেমন আছিস সাজি মা?"

সাঁজি হেঁসে উত্তর দিলো...

"ভালো আম্মু,তুমি?"

"আমিও ভালো। ইশশ,ক'দিনেই কেমন শুঁকিয়ে গেছিস তুই? "

মিশির কথায় সাঁজি উত্তর দেওয়ার আগেই পেছন থেকে আরেকটি কন্ঠ ভেঁসে এলো..

"বাহ সাঁজিপু,,এটা বুঝি আনান ভাইয়ের আম্মু? তোমার হবু শাশুড়ী? "

তট মাত্রই একটা মিষ্টি মুখে পুরতে নিচ্ছিলো।কন্ঠটা শুনেই থেমে গেলো সে। চোখ দুটো গোলগোল হয়ে গেলো তার, মুখের সামনে মিষ্টিটা ধরে রেখে হা করেই দরজার দিকে ঘুরলো সে।

একজোড়া আঁখি যে তাকেই এতক্ষণ খুজছিলো,দৃষ্টিতে দৃষ্টি মিলতেই তটের এমন উদ্ভব ভাব দেখে ফিক করে হেঁসে দিলো মেয়েটি। তট ব্যতিব্যস্ত হয়ে এদিক ওদিক তাকালো। মিষ্টিটা সরিয়ে মুখ বন্ধ করে নিলো। বিরবির করে উচ্চারণ করলো..

"ও বাড়িতে কেন এলো?"

ছায়া ছবি এগিয়ে যেতে যেতে বললো...

"আরেহ, নদী যে। আসো আসো ভেতরে।"

নদী হেঁসে গিয়ে দু হাতে জড়িয়ে ধরলো ছায়া-ছবিকে। বাড়ির বড়রা নদীকে এই প্রথম দেখছে। চিনে উঠতে পারেনি ঠিক তারা। ছায়া সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিলো নদীর সাথে। মেয়েটা মিশুকে,কেমন যেন মুহূর্তেই মিশে গেছে বাড়ির বড়দের সাথেও।সাঁজি বললো....

"বিভাকে দেখতে আসছিলাম। পথেই নদী সাথে দেখা, ওকে বলতেই বললো সেও বিভাকে দেখতে আসবে। তাই নিয়েই এলাম।"

সাবিহা হেঁসে বললো...

"ভালো করেছিস সাঁজি মা। আয় একটু বসে জিরিয়ে নে।"

নদী এদিক ওদিক তাকিয়ে ফের তাকালো তটের দিকে। তট চোখের ইশারায় কিছু একটা জিজ্ঞেস করলো তাকে, বুঝতে পেরেই নদী বাঁকা হেসে ডান চোখ মারলো তটকে। ওখানেই থেমে গেলো তট। বিরক্ত লাগছে কিছুটা, তবে সেটা নদীকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। নদী জিজ্ঞেস করলো...

" আপি কোথায়? দেখছি না যে?"

সাবিহা হেঁসে বললো...

"তিয়াস উপরেই আছে নিজের রুমে। সাঁজির সাথে যা,দেখাকরে আয়।"

দুজন মিলে এগিয়ে গেলো সিঁড়ি বেয়ে। যেতে যেতেই নদী আবার তটের দিকে তাকিয়ে একটু আড়ালে ফ্লায়িং কিস ছুঁড়ে মারলো, সাথে সাথেই তটের কাশি উঠে গেলো। এদিকে নদী মুখ টিপে হাসতে ব্যস্ত। তখনই পাশ থেকে সাঁজি বলে উঠলো...

"আমি কিন্তু সবটা দেখে ফেলেছি নদী।"

-----------
ফ্রেশ হয়েই রাত ইন্দুর রুমে ঢুকতে ঢুকতে দেখলো মেয়েটা ডান হাতে একপিস লেমন বরফি ধরে আছে আর বা হাতে চামচ নিয়ে রসগোল্লার শিরা নিয়ে খাচ্ছে। রাত আলতো হাসলো।এগিয়ে এসে বসলো ইন্দু বরাবর। প্লেটে তাকিয়ে দেখলো ক্ষীরমোহনের একটা থেকে একটু খেয়েছে, গোলাপজামেরও একই অবস্থা। লেমন বরফি দুটো হাপিস,তৃতীয়টাই অবস্থান করছে ইন্দুর হাতে। রসগোল্লা খায়নি মেয়েটা,তবে সেটায় থাকা শিরাগুলো প্রায় শেষের দিকে।

"শিরা খাচ্ছো কেন? পেট খারাপ করবে তো। "

ইন্দু মাত্রই আরেক চামচ মিষ্টির শিরা মুখে পুরলো। বললো...

"বরফির সাথে শিরাটা খেতে এত্তো দারুন লাগছে না,কি বলবো আর।খেয়ে দেখুন একটু?"

বলতে বলতেই ইন্দু আপন মনেই নিজের আধখাওয়া মিষ্টিটা রাতের মুখের সামনে ধরলো। রাত হাসলো।নীরবে এগিয়ে গিয়ে মিষ্টিতে কামড় দিতে যাবে তখনই ইন্দু সরিয়ে নিয়ে বলে উঠলো..

"এই এই,সরি সরিহ।। এটা আমার মুখের..."

বাকি কথা টুকু আর শেষ করতে দিলো না রাত তাকে। তার আগেই ইন্দুর হাত চেপে ধরে ঐ মিষ্টিটার থেকেই একটুকরো খেয়ে নিলো। ইন্দু ফের কিছু বলতে যাবে তখনই দরজায় টোকা পড়লো...

"আসবো আপি?"

রাত ইন্দু দুজনই তাকালো সেদিকে। সাঁজি আর নদীকে দেখে ইন্দু বিরল হাসলো।উৎসাহ নিয়ে ডাকলো তাদের...

"আরেহ,,তোমরা? এদিকে আসে,এদিকে আসো।"

অনুমতি পেয়ে তারাও প্রবেশ করলো ভেতরে। রাত নিরবে বেরিয়ে এলো রুম থেকে। ওরা তিনজন যে গল্প জুড়ে দিয়েছে এতক্ষণে৷

------
আরজু পড়ার টেবিলে বসে। দরজায় বেল পড়ায় পেছনে ফিরে তাকালো একবার। দরজা দিয়ে আফরোজাকে দেখে আর উঠলো না সে। কে এসেছে তা আপাতত দেখার সময় নেই, নিজের মতোই পড়ায় মনোযোগ দিলো। একটু পরেই পাশে কারো হাতের দেখা মিলতেই চোখ তুলে তাকালো। আবির্ভাবের সেই অমায়িক হাসিখানা। সজ্জল দৃষ্টি তার কখনোই সরে না যেন৷ পড়নে হালকা রঙের শার্টটা যেন আটশাট হয়েই এটেছে আবির্ভাবের গায়ে। আরজু ভাবান্তর হলো,, কিছু অপ্রত্যাশিত আকাঙ্ক্ষারা যেন তাকে আবার ঘিরে ধরছে। কোন এক পথ নেহারির দৃশ্য তার চোখে ভাসছে।আপন মনেই নিজেকে নিজে প্রশ্ন ছুড়লো..

"নিবিড় ভাইকেও ঠিক এমনই দেখাতো, তাই না?"

ভেতর থেকে কোনো উত্তর এলো না,তবুও আরজু অপেক্ষা করলো,কিছু তো শুনবে সে। ইচ্ছে গুলো দমন হতে বেশি সময় নেয় না।তেমনি তার অতি প্রেক্ষিত ভেতরকার কথা গুলোও শুনা হলো না আবির্ভাবের কন্ঠে...

"আরজু রানী, আপনার খাতা গুলো। চেক করে নিন সব ঠিক ছে কিনা?"

আরজুর স্তম্ভিত ফিরলো। খেয়াল করলো আবির্ভাব তার প্রয়োজনীয় প্র্যাক্টিকেল খাতাগুলোই টেবিলে রেখেছে। ইন্দু তাকে আগেই বলে দিয়েছে এই ব্যপারে। তাই তেমন অবাক হলো না সে। উঠে দাঁড়িয়ে চোখ ফেরালো আবির্ভাবের দিক থেকে। খাতাগুলো উল্টাতে উল্টাতে আস্তে করে বললো....

"থ্যাংকস।"

আবির্ভাব ঠোঁট এলিয়ে হাসলো।বললো..

"এই শুকানো থ্যাংকসে তো চিড়ে ভিজবে না আরজু রানী।"

নির্মল আঁখি দুটি এবার উঁচু হলো। নিবদ্ধ হলো আবির্ভাবের দিকে।ভ্রু জোড়া কিঞ্চিৎ কুঁচকানো। কি চাই লোকটার?..

আবির্ভাব টেবিলে হেলান দিয়ে দু হাত বুকে গুঁজে দাঁড়ালো আয়েশ করে।বললো...

"এত কষ্ট করে কমপ্লিট করলাম,বিনিময়ে কিছু তো প্রাপ্য আমার। তাই না?"

আরজুর ভয় হয়,লোকটা কি কোনো ভাবে অপ্রত্যাশিত কিছু চেয়ে বসবে? এই লোকটার অনুভূতি গুলো যে আরজু বেশ টের পায়। তাহলে কি এইবার সত্যি সত্যিই তেমন কিছু চেয়ে বসবে?..

আবির্ভাব নীরবে পর্যবেক্ষণ করলো আরজুর মুখাভাব। বেশ বুঝতে পারছে তার নির্মলা ভয় পাচ্ছে, অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু চাওয়ার যে এক বিশাল ইচ্ছে পোষন করে আবির্ভাব নিজেও। কিন্তু সময় তাকে বাঁধা দেয়, ভবিষ্যৎ আর অতীত মিশ্রিত কিছু পরিস্থিতি আবির্ভাববে জানিয়ে দেয় 'ইহা মোক্ষম সময় নয়ে,অপেক্ষা করো'

আবির্ভাব এবার ফিক করে হেঁসে দেয়। ঠোঁট দুটি প্রসারিত হয় তার, চোখ ছোট ছোট আকার ধারণ করে। আরজু মুগ্ধ নয়নে সেই হাসিখানাই দেখে যায়, এতো সুন্দর কেন এই লোকটার হাসি?

"কি ভাবছেন আরজু রানী? আপনার হৃদপিণ্ড চেয়ে বসবো আমি? "

আরজুর উত্তরের অপেক্ষা করলো, কিন্তু মেয়েটা কিছুই বললো না। শুধু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়েই রইলো আবির্ভাবের দিকে। আবির্ভাব এবার সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বললো...

"শুনুন,,হৃদপিণ্ড হচ্ছে চুরি করার জিনিস,চেয়ে নিতে হয় না। সময় হলে সেটি নিজেই হেটে হেটে চলে আসবে তার নিজ ঠিকানায়। আপাতত আমি এককাপ ধোঁয়া উঠা চা খেতে চাই। পাড়ার মোড়ের রবির টং এর চা। "

আরজু মনে মনে সস্থির নিঃশ্বাস ফেললো। তারপর আবার সরাসরি আবির্ভাবের দিকে তাকিয়ে বললো...

"ঠিক আছে যান না? চা খেয়ে আসুন?"

আরজুর কথায় আবির্ভাব মাথার কাছটায় চুলকাতে চুলকাতে বললো..

"আপনার থেকে ট্রিট চেয়েছি আমি। আপনাকে সহ-ই যেতে হবে। যাবেন না?"

আরজু নীরবে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আবির্ভাবের দিকে। আবির্ভাবও যেন কত শত বছটের অশেষ উত্তরের আশায় কামুক পাখির ন্যায় চেয়ে আছে আরজুর দিকে। আরজু ভাবছে, আবির্ভাবের সাথে একা এভাবে যাবে এখন? টং এর চা, শব্দগুলো বেশ পুরোনো আরজুর। কতবার যে নিবিড় ভাইয়ের সাথে....

"আমি কি তাহলে ফিরে জাবো আরজু রানী?"

ভাবনায় ছেদ পড়লো আরজুর। দৃষ্টি এদিক ওদিক নাড়িয়ে মুখে হালকা হাসি এনে বললো..

"আপাতত ফিরেই যান। "

আবির্ভাবের মুখের হাসি খানা বিলুপ্ত হলো যেন। আরজু যে এভাবে না করে দিবে তা জানতো আবির্ভাব। তবুও কেন যেন মেয়েটাকো প্রস্তাবটা দিতে ইচ্ছে করলো তার। এখন আর কি, যা হওয়ার কথা ছিলো তাই তো হলো।

আবির্ভাব আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিয়ে রুম ত্যাগ করতে উদ্ধত হলো। তখনই পেছন থেকে আরজু বললো..

"ফিরে গিয়ে ড্রয়িং রুমে ৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। আমি চেঞ্জ করেই আসছি। "

--------

"কি হয়েছে কি তোমার? এভাবে হুট করে আমাদের বাড়িতে কেন এলে?"

তটের হালকা রাগ মিশ্রিত হিসহিসে কন্ঠের প্রেক্ষিতে দারুন হাসলো নদী।একটু আগেই তট বেশ কায়দা করেই নদীকে নিয়ে সবার আড়ালে গিয়ে খোলা বারান্দাটার কোনে এসে দাড়ালো।মেয়েটার সাথে তার এখন প্রেম প্রেম খেলা চলছে। কিন্তু এতটা বাড়াবাড়ি হয়তো ঠিক হচ্ছে না, তাইতো নদীকে সাবধান করার উদ্দেশ্যেই এভাবে আলাদা নিয়ে আসা।

"আপনাকে দেখতে খুউউব ইচ্ছে করছিলো সুদৃঢ় সাহেব।তাই তো চলে এলাম। আজ সকালে দেখা করার কথা ছিলো। আসেন নি কেন?"

তট ভেতরে ভেতরে প্রচন্ড বিরক্ত হলেও তা প্রকাশ করলো না। ধীর দৃষ্টিতে বা দিকে তাকিয়ে বললো..

"ব্যস্ত ছিলাম। "

"তাহলে আমাকে জানিয়ে দিলেই তো হতো। আমি দু ঘন্টা অপেক্ষা করছিলাম আপনার জন্য। আচ্ছা বাদ দিন,,আপনার নম্বরটা দিন তো।!"

তট সাথে সাথেই মানা করলো..

"নাহ, নম্বর দেওয়ার দরকার নেই।প্রতিদিনই তো দেখা করছি নাকি, ফোন নম্বর কেন আবার। "

নদী দু হাত কোমরে ঠেকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো..

"আজব,আমি তো আপনারই গার্লফ্রেন্ড নাকি? আমার কাছে আপনার নম্বরটা থাকবে না?"

"না থাকবে না। এখন তুমি যাও বাড়ি থেকে। আ্ আমি কাল দেখা করবো আবার৷ "

অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো নদী তার দিকে। কেমন যেন চোরা চোখে তাকিয়ে আস্তে করে মাথা দুলিয়ে বলে উঠলো...

"দু নৌকায় পা দিয়ে চললে কিন্তু নদীতেই পড়ে যাবেন জনাব সুদৃশ মির্জা "

চোখ তুলে তাকালো তট,,কি বললো মেয়েটা?

"কি বলতে চাইছো তুমি?"

হঠাৎই নদী ফিক করে হেঁসে দিলো। হাসতে হাসতেই বললো...

" যাচ্ছি আমি হুম? কালকে কিন্তু দদেখা করতে না এলে খুব রাগ করবো।টাটা.."

বলেই হুট করে তটের গাল দুটো টেনে দিয়ে দৌড়ে পালালো নদী। তট নিস্তব্ধ,কোথাও যেন নিজের ভেতরই প্রশ্নের আনাগোনা চলছে,আদেও সে কি ঠিক কাজ করছে? এক জনের শাস্তি কি আরেক জনকেই দিয়ে দিচ্ছে? না নাহ,,যা করছে সে, ঠিকই করছে। একই রক্ত যে তারা, এমনই করা উচিৎ।
তবুও কোথাও যেন একটা কিন্তু থেকে যায়। আচ্ছা,তট কি কোনো ভাবে তার অপরিচিতা কে ঠকাচ্ছে? কিন্তু এখনো যে তাকে মনের সুপ্তিসিদ্ধান্তটাই জানানো হয়নি তটের।জানানো হয়নি যে, স্বয়ং সুদৃশ মির্জা প্রেমে পড়েছে। টলটলে আঁখি, চিরল কোমল ঠোঁট, বাহ্যিক গঠন কোনোটাই নয়, বরং অপরিচিতার সুমিষ্ট কন্ঠের ব্যাকুলতর কথার প্রেমেই পড়েছে৷

--------চলবে-----------

[মাঝেমধ্যে নিজেই ঘুলিয়ে ফেলি কার সাথে কার সম্পর্ক বানিয়েছি। আমার আক্কেল হয়ে গেছে এত বিশাল পরিবার নিয়ে গল্প লিখতে গিয়ে।😑]

17/08/2025

আগামীকাল গল্প আসবে
#রেখো_তোমার_বাহুডোরে

[কনটেস্ট টাইম শেষ,যারা কমেন্ট করেছেন এবং ইনবক্সে উত্তর দিয়েছেন, সবার উত্তর নেওয়া হবে। আর হ্যা,এবার থেকে প্রতিটা গল্প শেষেই একটা করে কনটেস্ট আসবে😊]

#অভ্রায়ীনি_ঐশি

আজ রাত ১০ টা পর্যন্ত সময়,,"Btw: যারা কি দিবেন, কি পাবো, এসব জিজ্ঞেস করতেছেন,তারা আর কষ্ট করে কমেন্ট কইরেন নাহ,,😊
16/08/2025

আজ রাত ১০ টা পর্যন্ত সময়,,

"Btw: যারা কি দিবেন, কি পাবো, এসব জিজ্ঞেস করতেছেন,তারা আর কষ্ট করে কমেন্ট কইরেন নাহ,,😊

কনটেস্ট ❗কনটেস্ট❗
#রেখো_তোমার_বাহুডোরে

এই পর্যন্ত প্রকাশিত হওয়া গল্পটির যতগুলো পর্ব রয়েছে,সেগুলোর মধ্যে প্রতিটি সদস্যের নাম ও ছোট্ট করে পরিচয় তুলে ধরতে হবে এই পোস্টের কমেন্টে। যে সবগুলো নাম ও পরিচয় তুলে ধরতে পারবে সে হবে উইনার।যদি একাধিক ব্যক্তি সঠিক উত্তর দিতে পারে তাহলে গল্পে রিয়েক্ট ও কমেন্টের উপর ভিত্তি করে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হবে। 💙💙

[সময়: ১৬ তারিখ রাত ১০ টা পর্যন্ত ]🚫

আপনার পড়াকু বন্ধুদের কাছে পোস্টটি শেয়ার করে জিতার সুযোগ করে দিন 😊
Best of luck pathok mahal🫶
#অভ্রায়ীনি_ঐশি

কনটেস্ট ❗কনটেস্ট❗ #রেখো_তোমার_বাহুডোরে এই পর্যন্ত প্রকাশিত হওয়া গল্পটির যতগুলো পর্ব রয়েছে,সেগুলোর মধ্যে প্রতিটি সদস্যের ...
13/08/2025

কনটেস্ট ❗কনটেস্ট❗
#রেখো_তোমার_বাহুডোরে

এই পর্যন্ত প্রকাশিত হওয়া গল্পটির যতগুলো পর্ব রয়েছে,সেগুলোর মধ্যে প্রতিটি সদস্যের নাম ও ছোট্ট করে পরিচয় তুলে ধরতে হবে এই পোস্টের কমেন্টে। যে সবগুলো নাম ও পরিচয় তুলে ধরতে পারবে সে হবে উইনার।যদি একাধিক ব্যক্তি সঠিক উত্তর দিতে পারে তাহলে গল্পে রিয়েক্ট ও কমেন্টের উপর ভিত্তি করে তাদের মধ্যে থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হবে। 💙💙

[সময়: ১৬ তারিখ রাত ১০ টা পর্যন্ত ]🚫

আপনার পড়াকু বন্ধুদের কাছে পোস্টটি শেয়ার করে জিতার সুযোগ করে দিন 😊
Best of luck pathok mahal🫶
#অভ্রায়ীনি_ঐশি

12/08/2025

ইয়ে মানে,,কাল কনটেস্ট আসতেছে আরকি।ভাবলাম একটু জানিয়ে দিই..🙂

#রেখো_তোমার_বাহুডোরে
#অভ্রায়ীনি_ঐশি

বহুদিন পর মা শাপলা লতা রান্না করেছে।খেতে বসেই হঠাৎ মনে পড়ে গেলো চৌবির বাজারের ৩৩ লেনের ২ নম্বর বাড়ির এক ডাকাতনির কথা🌸 #ফ...
10/08/2025

বহুদিন পর মা শাপলা লতা রান্না করেছে।খেতে বসেই হঠাৎ মনে পড়ে গেলো চৌবির বাজারের ৩৩ লেনের ২ নম্বর বাড়ির এক ডাকাতনির কথা🌸

#ফ্যাক্ট

#আয়ুশপঙ্খী

10/08/2025

দুই -আড়াই ঘন্টা বসে বসে চিন্তা করলাম..
তে আবির-নিবিড়দের ছেলে মেয়েদের নিয়ে অর্থাৎ আরুশ-আয়ুশ,কুহু পঙ্খিকে মিলিয়ে মোট চার জোড়া টুইন্সের রোমান্স দিয়েছি। এবার যদি আরুশ-আয়ুশদের বংশধরদের নিয়ে লিখি তাহলে এক গল্পে নায়ক নাইকা,তাদের বাপ-মা সহ দাদা-দাদি, নানা-নানিদেরও রোমান্টিক সিন লিখবো। 🙂
ভাই ভাবতেই আমার কষ্ট হচ্ছে, এগুলা লিখবো কি করে?🙂🙂🙂

#ফ্যাক্ট


#অভ্রায়ীনি_ঐশি

 #বিষচক্ষু #অভ্রায়ীনি_ঐশি #অনুগল্পসেদিন যখন পাহারের ধারে মোটা বৃক্ষে তনয়ের ঝুলে থাকা লা"শটা স্বচক্ষে দেখেছিলো তখন বন্ধু ...
09/08/2025

#বিষচক্ষু
#অভ্রায়ীনি_ঐশি
#অনুগল্প

সেদিন যখন পাহারের ধারে মোটা বৃক্ষে তনয়ের ঝুলে থাকা লা"শটা স্বচক্ষে দেখেছিলো তখন বন্ধু মহলের সাতজনের চোখেই ছিলো অশ্রু। আত্মহ'ত্যার মতো একটি কাজ যে তনয় করতে পারে তা যেন কল্পনাতীত ছিলো। কিন্তু তার লিখা শেষ চিঠিটাই প্রমাণ করেছিলো সে নিজেকেই নিজে বিদায় জানিয়েছে। কিন্তু আজও ঠিক একই ভাবে যখন মায়ার আত্মহ'ত্যার খবর পেলো তখন যেন বিষয়টা একটু খুঁচিয়ে দেখার মতোই মনে হলো নিধির। মায়া ছিলো বেশ চঞ্চল ধাঁচের মেয়ে। মা বাবার আদরের, কখনো কোনো জিনিসের অভাব ছিলো না তার, না জড়িয়েছে কোনো প্রকার প্রণয় সম্পর্কে। তাহলে কি এমন কারন যে মায়াও আত্মহ'ত্যা করলো?

মায়ার দাফন কার্য শেষেই বন্ধুমহলের ছয় সদস্য একত্রিত হলো পরিচিত বটতলায়। রোমানা ভীষণ নরম মনের মেয়ে, মায়ার মৃত্যুটা মেনে নিতে পারে নি সে। এখনো কেঁদেই যাচ্ছে। সায়র নিশ্চুপ,চোখ তার টকটকে লাল হয়ে আছে। নাক টেনে নিয়ে রোমানার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো...

"এবার একটু থাম রোমানা।আমাদের নিজেদের সামলাতে হবে। বাস্তবতা মেনে নিতেই হবে। "

রোমানার কান্নার বেগ বাড়লো, নিজেকে যে সামলাতে পারছে না সে। বার বার মায়ার সেই বিস্তৃত হাসিখানা ভাসছে মুখের সামনে। রোদ্রের দৃষ্টি অদূরে। ওভাবে থেকেই বললো..

"মায়া কেন এমনটা করলো দোস্ত? ওর তো কোনো কিছুর কমতি ছিলো না।"

পল্লবের হাতে ফোন, মায়ার দেওয়া শেষ ফেইসবুক স্ট্যাটাসটা জ্বলজ্বল করছে সামনে।

"" আমায় কেউ খুঁজো না, আমি হারিয়েছি নিজ গন্তব্যে। আমার জন্য কান্না করে সময় নষ্ট করো না কেউ। "

এতটুকুই, মায়া কি বুঝিয়েছিলো সেই লিখাটুকু দিয়ে? পল্লব ফোনে দৃষ্টি রেখেই কাতর স্বরে বললো...

"সেদিন তনয় ও ঠিক এভাবেই হারিয়ে গেলো, আর আজ তুইও মায়া?"

ডুকরে কেঁদে উঠলো ছেলেটি। কাধে ভরসার হাত হিসেবে ঠাঁই নিলো সৌরভের হাত। এই বন্ধু মহলটা প্রায় ১২ বছরের। কত কত বিপত্তির পরেও এই আটজন একসাথে থেকেছে এই এতগুলো বছর। কেউ কখনো কারোর থেকে কিছু গোপন রাখে নি। একজন বিপদে পড়লে বাকি সাতজন এগিয়ে যেত তার পাশে। কত আড্ডা,কত দুষ্টুমি, কত স্মৃতি। সব কিছু থেকে কিভাবে যেন দুটো প্রাণ হুট করেই হারিয়ে গেলো।

নিধি উঠে দাঁড়ালো, সন্ধ্যা নামছে যে ধরনীর বুকে। বললো...

"চল, বাড়ি ফিরতে হবে এবার।"

সায় জানালো সবাই। রোদ্র বললো...

"আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে তনয় আর মায়ার সুইসাই'ডের বিষয়টা। "

নিধি হাত উঁচিয়ে বাঁধা দিলো রোদ্রকে।বললো...

"আজ থাক ওসব।কাল সকালে দেখা হচ্ছে। তখন কথা বলা যাবে না হয়। ফিরে যাই চল। "

সেদিনের মতো আসর ভাঙলো। যার যার নীড়ে ফিরে গেলো ছয়জনই। রাত আড়াইটার সময় হুট করেই ঘুম ভেঙে গেলো নিধির। মায়া নেই, কেমন যেন অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছে এখনো। ফোন হাতে নিয়ে মায়ার আইডিটায় স্ক্রল করলো সে। এগারো ঘন্টা আগে তার শেষ পোস্ট, সেই সুই'সাইড নোটটি। আরেকটু নিচে যেতেই দেখলো ঠিক বারো ঘন্টা আগেই মায়ার আরেকটি পোস্ট। সুন্দর একটি পাহাড় চূড়ার ছবি আর ক্যাপশনে বন্ধু মহলের ছয়জনকে ট্যাগ দিয়ে লেখা....

" আমরা আবার পাহাড়ে যাবো,মেঘের মায়ায় মুগ্ধ হবো,সাথে করে তনয়কেও নিয়ে যাবো,ও তো খুব পাহাড় ভালোবাসতো, তাই না বল? "

বুক চিরে এক দীর্ঘ নিশ্বাস বেরিয়ে এলো নিধির।মায়ার সাথে আর যাওয়া হলো না সেই পাহাড় চূড়ায়।নিজেকে সামলে নিয়ে বন্ধুদের ওয়াটসআ্যাপ গ্রুপে একটা টেক্সট দিলো..

"কাল একবার পুলিশ স্টেশনে যাবো আমরা। "

---------
পরদিন ঠিক নিধির কথা মতো বাকি পাঁচ জন উপস্থিত হলো পুলিশ স্টেশনের সামনে। হুট করে থানায় আসার কারন জানতে চাইলো সবাই-ই। নিধি উত্তর দিলো..

"মায়া আর তনয়ের মৃত্যুটা আমার কাছে মোটেও স্বাভাবিক লাগছে না। ডায়েরী করবো আমরা।"

কিন্তু থানার ওসি ডাইরী লিখতে রাজি নয়। সুই'সাইড কেসের কোনো ডাইরী হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। অনেক চেষ্টা করেও ডাইরী লিখাতে পারলো না কেউ। বাধ্য হয়ে ফিরে এলো পুলিশ স্টেশন থেকে। সেদিন রাতে ঘটলো আরো একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। সাড়ে নয়টার সময় হুট করেই রোদ্রের মা ফোন করে কান্নারত কন্ঠে জানালো, রোদ্র নিজ হাতের শিরা কেটে আত্মহ'ত্যা করার চেষ্টা করেছে। সায়র, নিধি,রোমানা,পল্লব আর সৌরভ।সবাই তটস্থ, হঠাৎ রোদ্রের আবার কি হলো?

পরদিন সকালে জ্ঞান ফিরার পর সবাই গেলো তার সাথে দেখা করতে। মোটামুটি সুস্থ সে। সৌরভ তার মাথায় গাট্টা মেরে বললো...

"তুইও আবার কেন এমন করতে গেছিলি ভাই? তোদের আসলে হয়েছেটা কি? "

রোদ্র নিজেও কেমন যেন শকের মধ্যে আছে। আস্তে করে বললো...

"আমি বুঝতে পারছি না.."

সাথে সাথেই সায়র চেচিয়ে বললো...

"মর'তে গেছিলি তুই নিজে থেকে। বুঝতে পারছিড না কি হ্যা? তোরা শোন,,ওর সাথে এখন কথা বলাটাই বেকার। বেরিয়ে আয় তোরা।"

সায়র ভীষণ অভিমানি। আজ যেন তার সাথে সাথে বাকিরাও অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। সবাই বেরিয়ে গেলো, শুধু নিধি ছাড়া।নিধি গম্ভীর কন্ঠে রোদ্রকে জিজ্ঞেস করলো...

"এমন কেন করলি তুই?"

রোদ্র যেন সুযোগ পেলো একটু কথা বলার। উদ্বিগ্ন কন্ঠে বললো...

"আমি জানি না দোস্ত, ওরা তো কেউ শুনতেই চাইছে না আমার কথা। কাল সবার সাথে দেখা করার পর আমি কখন কিভাবে বাড়ি ফিরলাম তাও মনে করতে পারছি না আমি। কখন নিজের হাত কাটলাম আমার তাও মনে করতে পারছি না। জ্ঞান ফেরার পর আমি নিজেও অবাক যে আমি হসপিটালে কিভাবে এলাম, আর কেনই বা এলাম। "

নিধির দু:চিন্তা বেড়েছে একধাপ। কপালে পড়েছে সূক্ষ্ণ ভাজ।বললো...

"হসপিটাল থেকে ডিসচার্জ করা হলে আবার যাবো থানায়। এবার তুই নিজে ভিক্টিম হিসেবে বয়ান দিবি। "

রোদ্রের বয়ান গ্রহনযোগ্য হলো। থানায় ডায়েরি লিখা হলো। তদন্ত চলবে জানিয়েছে ওসি। থানা থেকে ছয় জন একসাথেই বেরিয়েছে। তপ্ত রোদে রাস্তার ধার ধরেই ছায়াপাতে হাটছিলো তারা। গন্তব্য পরিচিত সেই বটমূলে।

সায়র বললো...

" ডায়েরী তো করা হলো। আদেও কি কিছু সত্য বেরিয়ে আসবে?"

নিধি বিচক্ষণ, তারও মন বলছে ওসি এই কেসটি নিয়ে তেমন ঘাটবেন না। তদন্ত চলবে না।

পল্লব ভেবে বললো..

"সৌরভ? তোর মামা তো দূদকে আছে, তিনি কি কোনো ভাবে আমাদের সাহায্য করতে পারবে? "

সৌরভের দিক কোনো উত্তর আসলো না। সে নিরবেই হাটছে। রোদ্রও জিজ্ঞেস করলো...

"কিরে কিছু বলছিস না কেন?"

সৌরভের নিশ্চুপ ভাবে নিধি, রোমানা সবাই-ই এবার চোখ তুলে তাকালো তার দিকে। ছেলেটার চোখ সায়রের চোখে নিবদ্ধ। কি অদ্ভুত সেই দৃষ্টি, এদিক ওদিক নড়ছেও না। সায়র ভ্রু কুঁচকালো। বলতে নিলো...

"তোর আবার কি হলো সৌরভ?"

কথাটা শেষ হলো কি হলো না হঠাৎই সৌরভ রাস্তার কিনারা থেকে দ্রুত পায়ে হেটে মাঝ রাস্তায় যেতে লাগলো। নিধি তড়িৎ গতিতে তার হাত চেপে ধরলে সৌরভ তাকে ধাক্কা মেরে দূরে সরিয়ে দেয়। হঠাৎই মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে রাস্তার অপর পাশ থেকে একটি ট্রাক এসে পিষে ফেললো সৌরভকে। ছুটে গেলো সবাই চিৎকার দিয়ে। রাস্তায় তার রক্তের ছড়াছড়ি, কত মানুষের জটলা। নিধি তার রক্তাক্ত মাথাটা নিজের কোলে তুলে নিয়ে কান্নারত কন্ঠে ডাকতে লাগলো। প্রাণপাখি তার যায় যায়। সায়র উঠে দাড়িয়ে ফোন করলো এম্বুলেন্সকে। তখন সৌরভের গোলগোল দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হলো তার দিকে। নিজের ভাঙা, রক্তাক্ত একটু হাতের তর্জনী উঁচিয়ে তাক করলো সায়রের দিকে। দম বন্ধ হওয়া অবস্থায় অতি কষ্টে উচ্চারণ করলো....

"ও্ ওর চোখ... ওর চোখ ভয়ঙ্কর। শ্ শেষ করে দিলো আ্ আমায়"

আর একটি বাক্যও বের হলো না সৌরভের মুখ দিয়ে। চিরতরের জন্য হারিয়ে গেলো সেও। বন্ধু মহল থেকে তৃতীয় জনও বিদায় নিলো।

তারা স্তব্ধ। মনের মধ্যে বয়ে চলছে অজানা আতঙ্ক। সেদিনের সৌরভের বলা শেষ কথাটি ভাবায় নিধিকে। কি বোঝাতে চেয়েছিলো সৌরভ সেদিন? সায়রের চোখ ভয়ঙ্কর। কিন্তু কেন?

দিন কাটলো ছয় সাতেক। এরপর অলৌকিক ভাবে পল্লবের লা'শ মিললো পরিচিত সেই বটতলায়। মৃত্যুর ধরণ স্থানীয়রা জানালো, বটতলার শানে বাঁধানো গোল চাকতিতে নিজের মাথা নিজেই ঠুকেছিলো পল্লব। যতক্ষণ না মস্তিষ্ক হতে রক্তক্ষরণ হয়েছে ততক্ষণ ঠুকে গেছে ওভাবেই। তারপর তারও হৃদযন্ত্র থমকে গেলো।

থানায় সন্দেহভাজন হিসেবে একটি নাম উঠলো। জেরা করার জন্য তুলে আনার কথা ছিলো পুলিশের। কিন্তু নিধি বললো....

"তার চোখ ভয়ংকর, ঐ চোখে কিছু একটা নিশ্চই আছে। তাকে আমরাই নিয়ে আসবো থানায়।"

কথাখানা ভিত্তি পেলো। দু দিন পরেই সায়রের জন্মদিন। এই দুটো দিনে দেখা হয়নি কারোর। কিন্তু সেদিন আবার একত্রিত হলো চারজন। আটজন থেকে বন্ধুমহলটা চারজনের হয়ে গেলো। টিকে থাকাটা যেন দায়।

জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর পর নিধি ঠোঁটের কোনে হাসি নিয়ে এগিয়ে গেলো সায়রের কাছে। হুট করেই তার চোখে একটি কালো পট্টি বেঁধে দিলো সে। সায়র বিমূর্ত হয়ে বলতে নিলো...

"আরেহ,কি করছিস নিধি? চোখ বাঁধছিস কেন?"

নিধি তার কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বললো....

"সারপ্রাইজ.. "

সেই সারপ্রাইজের নাম দিয়েই সায়রকে এক প্রকার ধরে বেঁধে নিয়ে গেলো থানায়। ওসি জিজ্ঞেস করলো...

"এই তাহলে এতগুলো খুনের আসামি। "

সায়রের হৃদপিণ্ড সচল হয়ে উঠলো। হাত উঁচিয়ে চোখের বাঁধন খুলতে যাবে,ততক্ষণে একজন কনস্টেবল এসে তার দু হাত পেছনে নিয়ে বেঁধে ফেললো। সায়র জিজ্ঞেস করলো...

"নিধি,রোদ্র কি হচ্ছে এসব? কোথায় নিয়ে এলি আমাকে?"

নিধির কন্ঠ কাপে।নিজের ছোট বেলার একজন বন্ধুকে এভাবো হেনস্তা করতে বুকও কেঁপেছিলো রোমানা,রোদ্র, নিধির। কিন্তু কাজটা করা ভীষন প্রয়োজন। জীবন থেকে একটি কাটা তুলে ফেললে হয়তো আর কোনো প্রাণ হারিয়ে যাবে না। কাতর কন্ঠে বলে উঠলো নিধি....

"আমায় ক্ষমা করিস তুই সায়র। তুই যা করেছিস, এরপর তোকে পুলিশে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না আমাদের। "

সায়র ছটফট করছে নিজেকে বন্ধন মুক্ত করার জন্য। কিন্তু সে অপারগ।চেঁচিয়ে রেগে বললো....

"এটা তোরা ঠিক করিস নি নিধি, আমার সাথে প্রতারনা করেছিস...."

রোমানার চোখে জল,তবুও সে জিজ্ঞেস করলো....

"তনয়, মায়া, সৌরভ, পল্লব।ওদের কেন মেরেছিস সায়র? কি ক্ষতি করেছে ওরা তোর? কেন এত বছরের বন্ধুত্বের প্রতিদান হিসেবে ওদের মৃত্যু দিলি?"

সায়র উত্তর দিলো না। তার কাছে কোনো উত্তর নেই। কেন মেরেছে সে জানে না। রোদ্র প্রশ্ন করলো...

"তোর চোখে কি আছে সায়র? কি করে তুই ঐ চোখ দিয়ে বশিভূত করে ফেলিস সবাইকে? আমিও সেদিন তাহলে তোর বশিভূত হয়েই সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম।"

সায়র ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলে উঠলো...

"হ্যা আমার চোখ অদ্ভুত। আমি পারি সবাইকে বস করতে।এটা আমার ক্ষমতা, যা আর কারোর কাছে নেই। তোদের আমি ছাড়বো না বলে দিলাম।তোরা কেউ বাচবি না,,আমি আসবো।ফিরে আসবো আমি আবার।"

সায়রকে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হলো গরাদে।তবে তার ক্ষিপ্ততা দাগ কাটলো তিনটি হৃদয়ে। তারা আজ আরেকটি সংখ্যা হারালো। বিষন্ন মন, তেমনি বিষন্ন প্রকৃতিও। তুমুল ঝড় তুলেছে চারদিকে। সন্ধ্যা পেরিয়ে গভীর রাত। বিদ্যুৎ পৃষ্ঠের শব্দে কেঁপে কেঁপে উঠছে ঘুমন্ত নিধি। প্রকৃতি আজও কেন এত কালছে? আজ তো তার রঙিন হওয়ার কথা ছিলো।

ফোনের আওয়াজে ঘুম ভাঙলো নিধির। রাত বাজে প্রায় একটা। এতরাতে রৌদ্র কল দিচ্ছে কেন? রিসিভ করতেই রোদ্রের ভয়াতুর কন্ঠ ভেসে এলো নিধির কানে..

"দোস্ত,, সায়র পালিয়েছে জেল থেকে। এক মুহুর্তের জন্য ওর চোখের বাধন খোলা হয়েছিলো, তখনই কন্সটেবলকে আবার বশ করে ও। নিজে পালিয়ে যায় আর কনস্টেবল নিজের মাথায় নিজেই গু'লি করে মারা যায়।"

নিধি স্তব্ধ।মুখ থেকে একটি কথাও বের হলো না তার। রোদ্র আবার বললো...

"আমায় ক্ষমা করিস নিধি। এই জীবনে আর তোদের সাথে দেখা হবে না। আমি হারিয়ে যাচ্ছি চিরতরে।"

নিধি চিৎকার করে ডাকলো রোদ্র বলে। কিন্তু ততক্ষণে রোদ্রের কল কেটে গিয়েছে। নিধির বুক কাঁপছে। কি হবে কি হবে ভয়। হুট করেই রুমের দরজায় খ্ট করে আওয়াজ এলো কানে। নিধি তাকালো সেই দিকে। তার মায়ের চোখে মুখে উদ্বিগ্নতা। নিধিকে বললেন...

"নিধি রে। রোমানার বাবা কল দিয়েছে,, ওকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। "

এই একটা কথাই যথেষ্ট ছিলো নিধিকে এলোমেলো করে দেওয়ার জন্য।তবে কি এবার সত্যিই ইতি ঘটবে সবকিছুর?

দ্রুত পায়ে বিছানা ত্যাগ করে ছুটলো নিধি। রোমানাকে খুঁজতে হবে যে করেই হোক। ঘরের সদর দরজা খুলতেই থমকে গেলো নিধি। সামনে একটি মানব অবয়ব দাঁড়িয়ে। বৃষ্টিতে ভিজে চুবচুবে হচ্ছে সেই অবয়ব। আকাশের গর্জনের সহিত বিদ্যুৎ চমকালো মুহুর্তেই, সাথা সাথে অবয়বটির বি'ষেলী সবুজ চোখ দুটি জ্বলজ্বল করে উঠলো৷।

নিধি পিছিয়ে গেলো দু কদম। মুখ থেকে বেরিয়ে এলো একটি নাম..

"সায়র??"

ঝরো হাওয়ার আয়াসে ঘরে থাকা দেওয়ালের বড় ফ্রেমে বাঁধানো নিধিদের আটবন্ধুর ছবিটি ছিটকে পড়লো নিচে। সাথে সাথেই ঝনঝনিয়ে আওয়াজ হলো। টুকরো টুকরো হয়ে গেলো ছবির কাচ।বিধ্বস্ত সেই ছবি,তেমন ভাবেই মহা বিধ্বস্ত দেখালো সায়রের সেই সবুজ চক্ষুর দৃষ্টি।

নিধির গলায় স্বর আটকালো। চলার শক্তি হারালো।চার দিকে নিবদ্ধ দেওয়াল যেন চেপে ধরলো তাকে। দৃষ্টিতে শুধু সায়রের সেই বিষচক্ষু।
তবে কি এই বিষচক্ষুই ছিলো অষ্টক বন্ধুমহলটির ধ্বংসের কারন?

........সমাপ্ত......

08/08/2025

অনুগল্প কি দিবো একটা??🙂

#অভ্রায়ীনি_ঐশি

Address

Feni

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when অভ্রায়ীনি ঐশি -Avrayini oishi posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share