16/09/2025
আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবিতে লাগাতার আন্দোলন, কিন্তু সরকারের উদাসীনতা স্পষ্ট
ঢাকা:
দেশের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত আউটসোর্সিং কর্মচারীরা লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দলের নেতা, শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কিংবা সরকারের দায়িত্বশীল কেউ তাদের অবস্থার খোঁজ রাখেননি। আউটসোর্সিং কর্মচারীদের অভিযোগ, বছরের পর বছর ধরে বেতন-ভাতা বকেয়া রাখা, কর কেটে নেওয়া সত্ত্বেও অর্থ পরিশোধ না করা, চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার ভয় দেখিয়ে নিয়োগ বাণিজ্য চালানো এবং বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি চলে আসছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ সহায়তায়।
সোমবার দুপুরে শ্রম ভবনে বকেয়া বেতন ও দুর্নীতির প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ কর্মচারীরা এক ঠিকাদারকে আটকে রাখেন। এ সময় দেখা যায়, প্রশাসনের নির্দিষ্ট মহল থেকে শুরু করে কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি ঠিকাদারকে মুক্ত করার জন্য একদিকে ফোনে যোগাযোগ করেন, অন্যদিকে সরাসরি শ্রম ভবনে উপস্থিত হন। এতে স্পষ্ট হয়ে ওঠে— সরকার, প্রশাসন ও রাজনৈতিক দলসমূহ ঠিকাদারদের পক্ষ নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। অথচ আন্দোলনরত হাজারো আউটসোর্সিং কর্মচারীর পাশে দাঁড়ানোর মতো কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
কর্মচারীরা জানান, “বছরের পর বছর আমরা পরিশ্রম করছি, অথচ মাসের পর মাস বেতন আটকে রাখা হয়। ঈদ ও বিশেষ উৎসবে পরিবার চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু এসব বিষয়ে সরকারের কোনো সহানুভূতি নেই। উল্টো আমাদের অধিকার বঞ্চনার পৃষ্ঠপোষকতা করছে প্রশাসন ও রাজনৈতিক শক্তি।”
তারা আরও অভিযোগ করেন, সরকারের মন্ত্রীরা ও উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা আউটসোর্সিং ব্যবস্থায় চলা অনিয়ম সম্পর্কে অবগত থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। ফলে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও বেতন আটকে রেখে কর্মচারীদের অসহায় করে তুলেছে।
একজন আন্দোলনকারী বলেন, “আমাদের জন্য মনে হচ্ছে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। সরকার, রাজনৈতিক দল আর প্রশাসন সবাই ঠিকাদারদের রক্ষা করছে। আমাদের বেঁচে থাকার অধিকার, ন্যায্য মজুরি পাওয়ার অধিকার কেউ দেখছে না।”
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, সরকারের এই নীরবতা এবং প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্ব আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়ে তুলছে। দীর্ঘদিন এ অবস্থা চলতে থাকলে তা বড় ধরনের শ্রমিক আন্দোলনে রূপ নিতে পারে, যার দায় এড়াতে পারবে না সরকার।