জয় শ্রী কৃষ্ণ

জয় শ্রী কৃষ্ণ 🥀🥀হে কৃষ্ণ করুনা সিন্ধু দীনবন্ধু জগৎপতে গোপেষ গোপিকাকান্ত রাধাকান্ত নমঃহস্তুতে🥀🥀

31/08/2025
📮প্রশ্ন: পিতামাতার মৃত্যুতে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান কখন (একাদশী/দ্বাদশী) হয়?এবং অশৌচকাল কত দিন?সনাতন হিন্দুধর্ম অনুযায়ী, পিতামা...
24/08/2025

📮প্রশ্ন: পিতামাতার মৃত্যুতে শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান কখন (একাদশী/দ্বাদশী) হয়?এবং অশৌচকাল কত দিন?

সনাতন হিন্দুধর্ম অনুযায়ী, পিতামাতার মৃত্যুর পর প্রথম ১০ দিনের (অশৌচকাল) অব্যাহত থাকে। এরপর ১১তম দিন (একাদশী তিথি) বা প্রয়োজনে ১২তম (দ্বাদশী তিথি) দিনে শ্রীদ্ধানুষ্ঠান (পিণ্ডদান ও শ্রাদ্ধ) সম্পন্ন করা হয়।

📌ব্রাহ্মা পুরান: “যখন মৃত ব্যক্তি ব্রাহ্মণ হন, একই গোত্রের আত্মীয়দের শুদ্ধি হয় ১০ দিনের পর; ক্ষত্রিয়দের ১২ দিন পর; বৈশ্যদের ১৫ দিন পর; শূদ্রের শুদ্ধি ঘটে এক মাস পর।”

বাংলা অর্থ: “ব্রাহ্মণ হলে দশ দিন পর শুদ্ধি, ক্ষত্রিয় হলে বারো দিন, বৈশ্য হলে পনেরো দিন, শূদ্র হলে এক মাস।”

📮প্রশ্ন : শুদ্ধি (অশৌচকাল) – বর্ণভেদে কতদিন?

শুদ্ধির সময়কাল বর্ণভেদে নিম্নরূপ:
বর্ণ অশৌচকালের দৈর্ঘ্য
ব্রাহ্মণ ১০ দিন
ক্ষত্রিয় ১২ দিন
বৈশ্য ১৫ দিন
শূদ্র ৩০ দিন (পুরো এক মাস)

📌 পরাস্মর ম্মৃতি -৩.২ :
“ক্ষত্রিয় অশৌচ থেকে শুদ্ধি পায় বারো দিনে; বৈশ্য পনেরো দিনে; শূদ্র মাসে শুদ্ধ হয়।”

📌ব্রাহ্মা পুরান পুনরায় উল্লেখ:
“ব্রাহ্মণ হলে ১০ দিন, ক্ষত্রিয় হলে ১২ দিন, বৈশ্য হলে ১৫ দিন, শূদ্র হলে এক মাস পর পরিশুদ্ধ হয়।”

📮প্রশ্ন : শূদ্রদের ক্ষেত্রে ১৭–৩০ দিনের মধ্যে শুদ্ধির বাধ্যতামূলকতা রয়েছে কি?

শাস্ত্রীয়ভাবে— শূদ্রদের শুদ্ধির সময় ৩০ দিন (পুরো এক মাস) হিসাবে নির্ধারিত। “১৭–৩০ দিন” এর মতো কোনো মাঝখানের বা ভিন্ন সময়সীমা শাস্ত্রানুসারে নেই।

শ্লোকসমূহে স্পষ্টভাবে ৩০ দিনের উল্লেখ আছে, কোনো “১৭ দিন” বা “১৮ দিন” বা “२५ দিন” এর মত নেই।

তাই, ১৭–৩০ দিনের মধ্যবর্তী শুদ্ধি—মানে ১৭, ১৮...২৫...৩০—এর কোন “মধ্যবর্তী বাধ্যবাধকতা” বা “স্বয়ংক্রিয় বিধান” শাস্ত্রে উল্লিখিত নয়।

📚📚সব মিলিয়ে সম্পূর্ণ সংযোজিত উত্তর:

১. শ্রাদ্ধানুষ্ঠান (শুদ্ধির পর)
প্রথম ১০ দিন অশৌচকাল হয়।
১১তম দিন (একাদশী) তে সাধারণত শ্রাদ্ধ ও পিণ্ডদানের বিধান রয়েছে।
প্রয়োজনে ১২তম দিন (দ্বাদশী) তেও করা যেতে পারে।

২. শুদ্ধি – বর্ণভেদে
ব্রাহ্মণ — ১০ দিন পর শুদ্ধি।
ক্ষত্রিয় — ১২ দিন পর।
বৈশ্য — ১৫ দিন পর।
শূদ্র — ৩০ দিন (এক মাস) পর।
৩. “১৭–৩০ দিন” এর বিভ্রান্তি

শূদ্রদের জন্য নির্ধারিত যেই সময়কাল—তার মানে হলো সম্পূর্ণ মাস (৩০ দিন)।
“১৭–৩০ দিবস” এর মতো কোনো মধ্যবর্তী বা নমনীয় সময় শাস্ত্রে নির্বাচিত নয়।
যে কেউ ১৭ দিন বা ২৫ দিন পালন করলে সেটি শাস্ত্রানুগ নয়; সম্পূর্ণ মাস পালন করাই শাস্ত্র সম্মত।

বি দ্র: বিস্তারিত চাইলে কমেন্ট করুন বাকি অংশ জানতে?বা কোন প্রশ্ন থাকলে।

জীবন মজুমদার
২৪.০৮.২০২৫

📘 প্রশ্ন :“সনাতন ধর্মে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে মাছ বা মাংস দেওয়া কি শাস্ত্রসম্মত? মাছ-মাংস ছাড়া কি শ্রাদ্ধ শুদ্ধ হয় না? শ্রাদ্ধ...
23/08/2025

📘 প্রশ্ন :
“সনাতন ধর্মে শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে মাছ বা মাংস দেওয়া কি শাস্ত্রসম্মত? মাছ-মাংস ছাড়া কি শ্রাদ্ধ শুদ্ধ হয় না? শ্রাদ্ধে নিরামিষ হওয়া উচিত, নাকি আমিষ?

🟢📚পক্ষে (আমিষ – মাছ বা মাংস – শ্রাদ্ধে বৈধ বলে যেসব শাস্ত্র বলেছে)

✅ ১. মার্কণ্ডেয় পুরাণ – অধ‍্যায় ১৫০
শ্লোক (সংস্কৃত):
“শুনু শ‍্রদ্ধে দ‍ত্যঃ পিণ্ডঃ মাংসেন তুষ্টি ভবেত্।”

বাংলা অনুবাদ:“শ্রাদ্ধের সময় যদি মাংস প্রদান করা হয়, তাতে পিতৃগণ সন্তুষ্ট হন।”

বিশ্লেষণ:এই পুরাণে বিভিন্ন প্রাণীর মাংস পিতৃগণের সন্তুষ্টি অর্জনের সময়সীমা সহ উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন —
হংসের মাংস = ১ মাস
খরগোশ = ৪ মাস
শশক = ৫ মাস
গরুর দুধ/ক্ষীর = ১২ মাস
মাছ = ২ মাস

✅ ২. গৌতম ধর্মসূত্র – অধ্যায় ১৫, শ্লোক ৩
শ্লোক (সংস্কৃত):“श्राद्धे मत्स्यं मांसं च दातव्यम् विशेषतः पितृप्रीतये।”

বাংলা অনুবাদ:“পিতৃদের সন্তুষ্টির জন্য শ্রাদ্ধে মাছ ও মাংস প্রদান বিশেষভাবে প্রশংসনীয়।”

বিশ্লেষণ:শ্রাদ্ধে নির্দিষ্ট মাছ বা প্রাণীর মাংস ব্যবহার করা যেতে পারে — বিশেষ করে যাদের হত্যা হিংসার আওতায় পড়ে না।

✅ ৩. আপস্তম্ব ধর্মসূত্র – ২.৭.১৭
শ্লোক (সংস্কৃত):“श्राद्धे विहितं मांसं, यदि हिन्सारहितं भवति।”

বাংলা অনুবাদ:“শ্রাদ্ধে সেই মাংস বৈধ, যা হিংসার বাইরে প্রাপ্ত।”

বিশ্লেষণ:মৃত বা প্রাকৃতিকভাবে পতিত পশুর মাংস দেওয়া হলে তা বৈধ, কারণ এতে হিংসা নেই।

✅ ৪. যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি – অধ্যায় ১, শ্লোক ১০৯
শ্লোক (সংস্কৃত):“श्राद्धकाले मांसं भक्त्या दत्तं पितृणां तृप्तिकारकम्।”

বাংলা অনুবাদ:“শ্রাদ্ধের সময় ভক্তিসহ মাংস প্রদান করলে তা পিতৃদের তৃপ্ত করে।”

বিশ্লেষণ:নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ভক্তিসহ দিলে মাংস গ্রহণযোগ্য — তবে এটি বাধ্যতামূলক নয়।

📚📚🔴 বিপক্ষে (নিরামিষই শ্রেয়; আমিষ গ্রহণ অপ্রশস্ত বা নিষিদ্ধ — শাস্ত্রীয় অবস্থান)

❌ ১. ভগবদ্‌গীতা – অধ্যায় ১৭, শ্লোক ৭-১০

শ্লোক (সংস্কৃত):“आहारा: सात्त्विक, राजस, तामसः च। मांसं तामस आहार।”

বাংলা অনুবাদ:“আহার তিন প্রকার — সাত্ত্বিক, রাজসিক, তামসিক। মাংস তামসিক আহার হিসেবে বিবেচিত।”

বিশ্লেষণ:শ্রাদ্ধ একটি সাত্ত্বিক কার্য — তাই তামসিক পদার্থ (যেমন মাংস) এতে অনুচিত।

❌ ২. মনুস্মৃতি – অধ্যায় ৫, শ্লোক ৪৮

শ্লোক (সংস্কৃত):“मांसभक्षणं हि हिन्साया मूलं प्रोक्तं मनीषिभिः।”

বাংলা অনুবাদ:“বিচক্ষণ ঋষিরা বলেছেন — মাংস ভক্ষণ হিংসার মূল।”

বিশ্লেষণ:শ্রাদ্ধে হিংসা নিন্দনীয় — তাই মাংস/মাছ অশোভন।

❌ ৩. গরুড় পুরাণ – প্রেতখণ্ড, অধ্যায় ১৫

শ্লোক (সংস্কৃত):“न हिंसा श्राद्धकर्मणि — अशुचिः स्यात्।”

বাংলা অনুবাদ:“শ্রাদ্ধে হিংসা (যেমন প্রাণী হত্যা) হলে তা অপবিত্র হয়ে যায়।”

বিশ্লেষণ:আমিষ খাদ্য প্রাণীহত্যার সঙ্গে যুক্ত — ফলে তা শ্রাদ্ধে নিষিদ্ধ।

❌ ৪. ভাগবত পুরাণ – সপ্তম স্কন্ধ, অধ্যায় ১৫, শ্লোক ৭

শ্লোক (সংস্কৃত):“न कदाचिद् अनिर्विशुद्धं भक्षयेत्, न तु मांसम्।”

বাংলা অনুবাদ:“কখনোই অপবিত্র বা মাংস জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা উচিত নয়।”

বিশ্লেষণ:পিতৃ উদ্দেশ্যে শুদ্ধতা অপরিহার্য — তাই আমিষ পরিহার করা উত্তম।

❌ ৫. মহাভারত – অনুশাসন পর্ব বক্তব্য (ভাবার্থ):
ভীষ্ম বলছেন — শ্রাদ্ধে তিল, দুধ, মধু, ঘৃত, ক্ষীর ইত্যাদি সাত্ত্বিক পদার্থ প্রদান করা উচিত। কোথাও মাংস/মাছের উল্লেখ নেই।

বিশ্লেষণ:প্রাচীন মহাভারতের মূল আলোচনায় নিরামিষকেই শ্রাদ্ধের মান্য আহার ধরা হয়েছে।

উপসংহার: নিরামিষ না আমিষ – কোনটা শ্রেয়?
বিষয়ের দিকব্যাখ্যা আমিষ সমর্থনকারী শাস্ত্র নির্দিষ্ট পুরাণ ও ধর্মসূত্রে উল্লেখ আছে — ভক্তিসহ এবং হিংসা-রহিতভাবে মাছ বা মাংস দেওয়া শ্রাদ্ধে পিতৃগণের সন্তুষ্টির জন্য বৈধ হতে পারে। তবে তা স্থানিক ও 📍📍কালের নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষ।📍📍

নিরামিষ সমর্থনকারী শাস্ত্র অধিকাংশ প্রধান গ্রন্থ (গীতা, ভাগবত, মনু, গরুড় পুরাণ, মহাভারত) – পবিত্রতা, অহিংসা ও সাত্ত্বিক আহারকেই শ্রাদ্ধে সর্বোত্তম বলেছেন।
সামাজিক বাস্তবতা অনেক জায়গায়, বিশেষ করে বাংলা ও পূর্বভারতে, লোকাচার অনুসারে মাছ শ্রাদ্ধে ব্যবহার করা হয় — তবে তা শাস্ত্রীয় নয়, সংস্কারজাত ঐতিহ্য মাত্র।

📜📜সংক্ষিপ্ত সিদ্ধান্ত
শ্রাদ্ধ একটি পবিত্র, সাত্ত্বিক, নিরাসক্ত কাজ। শাস্ত্র বলছে — পিতৃ তুষ্ট হন সেই অন্নে যা অহিংস, পবিত্র, ও ভক্তিপূর্ণ।





জীবন মজুমদার
২৩.০৮.২০২৫

সনাতন ধর্মে বৈষ্ণবরা কেন শ্রাদ্ধ-অনুষ্ঠানের অন্ন গ্রহণ করেন না? বৈষ্ণবরা সাধারণত শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান বা পিণ্ড দানের সময় অন...
22/08/2025

সনাতন ধর্মে বৈষ্ণবরা কেন শ্রাদ্ধ-অনুষ্ঠানের অন্ন গ্রহণ করেন না?

বৈষ্ণবরা সাধারণত শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান বা পিণ্ড দানের সময় অন্ন গ্রহণ করেন না — এর পেছনে মূলত ধর্মীয় ও দর্শনীয় কারণ রয়েছে। নিচে এর মূল কারণগুলো ব্যাখ্যা করছি:
🔸 ১. প্রসাদ ব্যতীত অন্য অন্ন গ্রহণে অনীহা
বৈষ্ণবদের মতে, কেবল ভগবানকে নিবেদন করা প্রসাদ গ্রহণযোগ্য। শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে যে অন্ন প্রস্তুত হয়, তা সাধারণত পূর্বপুরুষদের উদ্দেশ্যে নিবেদিত হয়, ভগবানের উদ্দেশ্যে নয়। অতএব, সেই অন্ন তাঁদের দৃষ্টিতে "অপ্রসাদ" — যা বৈষ্ণবদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।

🔸 ২. ভক্তির শুদ্ধতা রক্ষা
বৈষ্ণব দর্শনে ভক্তির শুদ্ধতা ও একাগ্রতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পূর্বপুরুষ পূজা বা শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানকে অনেক বৈষ্ণব আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে মনে করেন, কারণ সেটি সরাসরি ভগবানের ভক্তিমূলক সেবার অন্তর্ভুক্ত নয়। তাই তাঁরা এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বা সেসব অন্ন ভক্ষণ এড়িয়ে চলেন।

🔸 ৩. গুরুপরম্পরার বিধান
বৈষ্ণব সমাজে গুরু ও আচার্যের উপদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক বৈষ্ণব আচার্য যেমন চৈতন্য মহাপ্রভু, রামানুজ, মাধ্বাচার্য, ইত্যাদি তাঁদের অনুগামীদের বলেছিলেন যেন ভগবানের সেবার বাইরে অন্য কোনো কর্ম বা অন্ন গ্রহণে বিরত থাকেন। এই নির্দেশ পালন করতে গিয়েই বৈষ্ণবরা শ্রাদ্ধ অন্ন গ্রহণ করেন না।

🔸 ৪. কার্মকাণ্ড বনাম ভক্তি
শ্রাদ্ধ হচ্ছে একটি কার্মকাণ্ড (বৈদিক কর্মানুষ্ঠান)। চৈতন্য বৈষ্ণব মত অনুসারে, ভক্তি হচ্ছে ভগবানের প্রতি আত্মসমর্পণের সর্বোচ্চ পথ, যা কার্মকাণ্ড থেকে পৃথক। সেই কারণে অনেক বৈষ্ণব শ্রাদ্ধ বা পূর্বজদের উদ্দেশ্যে অন্নদান ও সেই অন্ন গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন।

✅ ১. ভাগবত পুরাণ (১১.০৫.৪১)
বাংলা অর্থ:
যে ব্যক্তি সর্বান্তঃকরণে শরণাগত হয়ে ভগবান মুকুন্দকে গ্রহণ করে, সে আর দেবতা, ঋষি, পূর্বপুরুষ বা আত্মীয়স্বজনের প্রতি কোনো ঋণী থাকে না।

🔹 মূল বক্তব্য:
ভক্ত যে ভগবানের শরণাগত, তার আর পৃথকভাবে পিতৃ-কর্ম (যেমন শ্রাদ্ধ) পালনের প্রয়োজন নেই।

✅ভাগবত পুরাণ (১০.৮৪.১৩):
"ধর্মান সন্বিত্য য: সর্বান্ পরিত্যজ্য হরিং ভজেত্।
ব্রাহ্মণ্যং তদ্বিদঃ শ্রাদ্ধং প্রেত কর্ম চ নৈব কুর্যাৎ।"

🔸 অর্থ:
যে ব্যক্তি সমস্ত ধর্মের আচরণ পরিত্যাগ করে কেবল ভগবান হরির ভজনেই নিয়োজিত, সে ব্রাহ্মণধর্ম, শ্রাদ্ধ ও প্রেতকর্ম পালন করে না।

🔸 এই শ্লোকের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ভগবদ্ভক্ত যারা "অনন্যশরণ", তাদের জন্য পিতৃ-কর্ম (যেমন শ্রাদ্ধ) করা অপরিহার্য নয়, বরং তারা ভগবানের নামস্মরণ এবং ভক্তিসাধনাতেই সিদ্ধি লাভ করেন।

✅ ২. ভগবদ গীতা (৯.২৬)
বাংলা অর্থ:
যে ভক্তি সহকারে আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল বা জল নিবেদন করে, আমি তা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করি।
🔹 মূল বক্তব্য:
শ্রাদ্ধের অন্নে ভগবানের নাম নেই। বৈষ্ণব কেবল প্রসাদ গ্রহণ করেন—যা ভগবানের উদ্দেশে নিবেদিত। তাই তারা পিতৃ উদ্দেশ্যে নিবেদিত অন্ন গ্রহণ করেন না।

✅ভগবদ্‑পুরাণ (১০.৮৪.১৩)

অর্থ:
যে ব্যক্তি সমস্ত ধর্মাচার পরিত্যাগ করে শুধুমাত্র ভগবান হরির ভজনে নিয়োজিত থাকে, সে ব্রাহ্মণধর্ম (যথা সংস্কার, শ্রাদ্ধ), এবং প্রেতকর্ম (যেমন শ্রাদ্ধ—পিতৃকর্ম) করেন না।

ব্যাখ্যা: গৌড়ীয় বৈষ্ণবরা মূলত “অনন্যাশ্রয়”, অর্থাৎ শুধু কৃষ্ণ-ভক্তিতে নিবেদিত। ফলে কার্মিক অনুষ্ঠান যেমন শ্রাদ্ধ—এগুলো তাদের কাছে প্রযোজ্য নয়।

✅ ৩. হরিভক্তি বিলাস (৯.৫৯)
বাংলা অর্থ:
বৈষ্ণব কখনো পিতৃকর্ম বা শ্রাদ্ধ-ভোজনে অংশগ্রহণ করে না। সে সর্বদা ভগবান বিষ্ণুর ভক্তদের সেবায় নিয়োজিত থাকে।
🔹 মূল বক্তব্য:
শাস্ত্রবাক্যে সরাসরি বলা হয়েছে, বৈষ্ণবদের জন্য শ্রাদ্ধ অন্ন গ্রহণ নিষিদ্ধ।

✅ ৪. চৈতন্য চরিতামৃত (১.২২০)
বাংলা অর্থ:
বৈষ্ণবের আচরণ জ্ঞানীজনরাও সবসময় বুঝতে পারেন না।
🔹 প্রসঙ্গ:
চৈতন্য মহাপ্রভু নিজে শ্রাদ্ধ‑অন্ন গ্রহণ করতেন না এবং বলতেন যে, ভক্তের জীবন কৃষ্ণনিষ্ঠ হওয়া উচিত। অপ্রসাদ্য অন্ন গ্রহণ করলে কৃষ্ণচেতনা দুর্বল হয়।

✅ ৫. পদ্ম পুরাণ (উওর খন্ড)
বাংলা অর্থ:
যা শাস্ত্রবিরুদ্ধভাবে শ্রাদ্ধে দান করা হয়, তা ভোগ করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি ভগবানের পূজা বাদ দিয়ে শ্রাদ্ধ করে, সে পশুর মত আচরণ করে।
🔹 মূল বক্তব্য:
শাস্ত্র বহির্ভূত অন্ন গ্রহণ (যেমন শুধুমাত্র পিতৃ উদ্দেশ্যে নিবেদিত অন্ন) বৈষ্ণবদের জন্য অগ্রহণযোগ্য।

✅ ৬. স্কন্দ পুরাণ
বাংলা অর্থ:
যারা শ্রাদ্ধ অন্ন খায়, তারা পিতৃ-লোক যায়। কিন্তু যারা ভগবানের নাম গ্রহণ করে, তারা হরিধামে যায়।
🔹 মূল বক্তব্য:
ভক্তির পথ শ্রাদ্ধের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। শ্রাদ্ধ-ভোজনে অংশগ্রহণ না করাই বৈষ্ণবের আদর্শ।

✅কুর্ম পুরাণ এবং অন্যান্য পুরাণের নির্দেশ:

কুর্ম পুরাণে উল্লেখ আছে যে:
“সকল পাপ বীজে লেগে থাকে; অন্যের দ্বারা পরিবেশন করলে সেই পাপ নিজে গ্রহণ করে।”

অর্থাৎ, পিতৃ‑সংশ্লিষ্ট বা সাধারণভাবে দান করা খাদ্য “অপবিত্রতা” বহন করে; তাই তাঁরা এ ধরনের খাদ্য গ্রহণ এড়িয়ে যান।

📜📚 মূল কারণ:
ভক্তির সাধনা ও আচারভিত্তিক পার্থক্য:
গৌড়ীয় বৈষ্ণব দর্শনে মনে করা হয় যে:
> "ভক্তজন কেবল ভগবান বিষ্ণু বা কৃষ্ণকে নিবেদিত প্রসাদই গ্রহণ করবেন।"
তারা মনে করেন, অশৌচ (মৃত্যু সংক্রান্ত শোক) এবং পিতৃকর্ম মূলত কার্মকান্ড ভিত্তিক ধর্মাচরণ, যা বৈদিক স্মার্ত ধর্মাচারের অন্তর্গত। কিন্তু বৈষ্ণবরা শ্রদ্ধা করে সেই চর্চাকে, তবে তা থেকে নিজেদের আলাদা রাখেন, কারণ তারা সরাসরি ভগবদ্ভক্তিকে প্রধান মনে করেন।

🔹 শ্রাদ্ধ অন্ন কেন গ্রহণ করেন না?
1. শ্রাদ্ধ অন্ন 'পিতৃ-বলিসম্পর্কিত' – এটি ভগবানকে নিবেদন করা প্রসাদ নয়।
2. ভক্তরা কেবল ভগবানের প্রসাদই গ্রহণ করেন, যা বিশুদ্ধ, অপবিত্রতাহীন।
3. শ্রাদ্ধের সময় পরিবেশ থাকে "অশৌচ" – গৃহে মৃত্যুর স্মৃতি, দেহ ও আত্মার বিচ্ছেদের ভাব, যা ভক্তির আবহে নয়।

🔹 চৈতন্য মহাপ্রভুর আদর্শ:
চৈতন্য মহাপ্রভু নিজেও শ্রাদ্ধ অন্ন গ্রহণ না করার বিষয়ে কঠোর ছিলেন। তিনি প্রচার করেন –
"ভক্তের জীবন ভগবানের প্রসাদ এবং নামের আশ্রয়ে গঠিত; সুতরাং কার্মকাণ্ডমূলক আচারে তাঁর স্থান নেই।"

🔹 তবে সবাই একইভাবে মানে না:
☑️ বৈষ্ণবরা নিজেরা শ্রাদ্ধ অন্ন গ্রহণ না করলেও তারা শ্রাদ্ধ কর্মকে অশ্রদ্ধা করেন না।
☑️ অনেক গৃহস্থ বৈষ্ণব (বিশেষ করে যাঁরা স্মার্ত প্রভাবিত অঞ্চলে বাস করেন) কিছুটা মিশ্র আচরণ করেন – যেমন, প্রসাদ স্বরূপ শ্রাদ্ধ অন্নকে গ্রহণ করেন নির্দিষ্ট নিয়মে।

#সনাতন
#ধর্ম
#হরে

জীবন মজুমদার
২২.০৮.২০২৫

🔥মৃতদেহ সৎকার পদ্ধতি (শতকার বা দাহ/সমাধি)✅ সৎকারের উপায়গুলিসনাতন ধর্মে মূলত মৃতদেহ সৎকারের তিনটি প্রধান পদ্ধতি আছে:1. দ...
21/08/2025

🔥মৃতদেহ সৎকার পদ্ধতি (শতকার বা দাহ/সমাধি)

✅ সৎকারের উপায়গুলি
সনাতন ধর্মে মূলত মৃতদেহ সৎকারের তিনটি প্রধান পদ্ধতি আছে:
1. দাহ-সংস্কার (অগ্নি দ্বারা দাহ করা) – সাধারণত ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় ও বৈশ্যদের জন্য প্রযোজ্য।

2. সমাধি বা ভূ-সমাধি (মাটিতে দাফন) – সন্ন্যাসী বা ত্যাগী ব্যক্তিদের জন্য।

3. জল-সমাধি (জলে বিসর্জন) – কখনো কখনো শিশু, অস্বাভাবিক মৃত্যু, বা সন্ন্যাসীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

📚 শাস্ত্র রেফারেন্স (সৎকার বিষয়ে):
🔸 গারুড় পুরাণ
"এই দেহ ধর্ম সাধনার মাধ্যম। মৃত্যুর পর দেহ সৎকার করা কর্তব্য।"

🔸 মনু সংহিতা (V. 59):
"জ্ঞাত ব্যক্তি মৃতদেহকে অগ্নিতে দাহ করিবে।"

🔸 যজুর্বেদ:
"হে অগ্নি! আমাদের উত্তম পথে নিয়ে চলো।"

🧬 গোত্র বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ভেদে ভিন্নতা:
বিভিন্ন গোত্র, সম্প্রদায়, পঞ্চাঙ্গ, বা শাস্ত্রাচার অনুযায়ী কিছু পার্থক্য হতে পারে। যেমন:
শৈব, বৈষ্ণব, শাক্ত প্রথা ভেদে শেষকৃত্যতে কিছু মন্ত্র ও আচরণ পৃথক।

দাক্ষিণাত্য এবং গৌড়ীয় (বাঙালি) প্রথার মধ্যে শ্রাদ্ধ ও দাহ-সংস্কারে ভিন্নতা দেখা যায়।

📚📚📌মৃতদেহ দাহ বা সমাধি কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে তা ব্যক্তির বর্ণ, আশ্রম, গোত্র, অবস্থা ও সন্ন্যাস গ্রহণ অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।📌

জীবন মজুমদার
২১.০৮.২০২৫

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারে।চেষ্টা করবো ধর্মের বিভিন্ন শাস্ত্র গুলি থেকে রেফারেন্স সহ উওর দেওয়া।তাই দেরি না করে কমে...
19/08/2025

আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে করতে পারে।চেষ্টা করবো ধর্মের বিভিন্ন শাস্ত্র গুলি থেকে রেফারেন্স সহ উওর দেওয়া।
তাই দেরি না করে কমেন্ট করুন।

জীবন মজুমদার
১৯.০৮.২০২৫

শিব হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ দেবতাদের মধ্যে একজন, যিনি **বিনাশ ও পুনর্জন্মের** দেবতা হিসাবে পূজিত হন। সনাতন শাস্ত্র অনুযায়ী...
18/08/2025

শিব হিন্দুধর্মের সর্বোচ্চ দেবতাদের মধ্যে একজন, যিনি **বিনাশ ও পুনর্জন্মের** দেবতা হিসাবে পূজিত হন। সনাতন শাস্ত্র অনুযায়ী তাঁর সম্পর্কে
বিস্তারিত তথ্য ও প্রামাণিক রেফারেন্স নিম্নরূপ:

📚১.শিব কিসের দেবতা?

- শিব ত্রিদেবের (ব্রহ্মা, বিষ্ণু, শিব) একজন, যিনি 📍সংহার (ধ্বংস), 📍তপস্যা, *📍যোগ, চিকিৎসা ও কল্যাণের দেবতা।

- তিনি পঞ্চকৃত্য (সৃষ্টি, স্থিতি, সংহার, তিরোধান ও অনুগ্রহ) এর অধিপতি।

- শিব পুরাণ (বিধি বিভাগ, অধ্যায় ৭) ও লিঙ্গ পুরাণ (অধ্যায় ১) মতে, তিনি নির্গুণ ব্রহ্ম ও **সগুণ ঈশ্বরের** সমন্বয়।

📚২.শিবের প্রণাম মন্ত্র:
✅- প্রধান মন্ত্র:
"ওঁ নমঃ শিবায়" (সর্বাধিক প্রচলিত)।
"ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে..."(মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র, ঋগ্বেদ ৭.৫৯.১২)।

✅- অন্যান্য মন্ত্র:
"নমস্তে রুদ্র বহুবিধান্ত সুরায়"(যজুর্বেদ, তৈত্তিরীয় সংহিতা ৪.৫.১)।
"শম্ভবেচ্ছম্ভুরূপায় নমঃ"(শিব পুরাণ)।

📌৩. শিবের কত রূপে পূজা হয়?
✅প্রধান রূপ:
- লিঙ্গরূপী (নিরাকার),
- অর্ধনারীশ্বর (নারী-পুরুষের ঐক্য),
- ভৈরব (উগ্র),
- নটরাজ (তাণ্ডব নৃত্যের দেবতা),
- দক্ষিণামূর্তি (জ্ঞানের দেবতা)।

✅- ১০৮ রূপ:শাস্ত্রে তাঁর ১০৮টি রূপের উল্লেখ আছে (শতরুদ্রীয়, তৈত্তিরীয় আরণ্যক ১০.৪৩-৪৭)।
✅- আঞ্চলিকভাবে কালভৈরব, হরিহর, কেদারনাথ ইত্যাদি রূপেও পূজিত হন।

📌৪.শিবের কয়টি নাম আছে?

✅- শিব সহস্রনাম (১০০৮টি নাম) বর্ণিত আছে (**মহাভারত**, অনুশাসন পর্ব, অধ্যায় ১৭)।

✅-শিব অষ্টোত্তরশতনাম(১০৮টি নাম) সর্বাধিক প্রচলিত (**লিঙ্গ পুরাণ**, ১.৬৫-৭১)।

📌৫.প্রথম শিবপূজা কে/কখন শুরু করেন?

✅- বৈদিক যুগ:ঋগ্বেদে "রুদ্র"(শিবের আদিরূপ) এর পূজার উল্লেখ (ঋগ্বেদ ২.৩৩)।
✅ -পুরাণ মতে:রাজা পৃথু প্রথম শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন (**কূর্ম পুরাণ**, ১.১২)।
✅- ঐতিহাসিক ভিত্তি:সিন্ধু সভ্যতার
"পশুপতি" (খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০) মোহরে শিবের প্রাচীনতম চিত্র।

📌৬.শিবের গায়ে ভস্ম ও পোশাকের কারণ:

✅- ভস্ম: বিশ্ব ধ্বংসের পর অবশিষ্ট ভস্ম তাঁর শরীরে লেগে থাকে (**শিব পুরাণ**, রুদ্র সংহিতা ২.১২)। এটি **মায়া ত্যাগের** প্রতীক।

✅- পোশাক:
- বাঘছাল: বনবাসী তপস্বীর প্রতীক (**বায়ু পুরাণ**, ৫৫.৫৮)।

✅ - সর্পহার: বিষধর সর্পকে বশীভূত করার প্রতীক (**লিঙ্গ পুরাণ**, ১.২৮)।
✅- গঙ্গা:তাঁর জটায় গঙ্গার আবাস (**কেদারখণ্ড**, স্কন্দ পুরাণ)।

✅ - চন্দ্র: অমৃত উৎপাদনে সাহায্য (**সোম চন্দ্র**, বৃহজ্জাবাল উপনিষদ)।

✅৭.শিবপূজার ফল:

- **মোক্ষ** (মুক্তি), **আরোগ্য**, **ধন-সম্পদ** ও **শত্রু বিনাশ** (**শিব পুরাণ**, বিদ্যেশ্বর সংহিতা ১৩)।

- রুদ্রাভিষেক(দুধ/জল ঢেলে পূজা) করলে পাপক্ষয় হয় (**অগ্নি পুরাণ**, ৭৪.১-৫)।

📌৮. পূজার সময় ও উপকরণ:
- **সেরা সময়:** **সোমবার**, **প্রদোষকাল** (সূর্যাস্তের আগের ৩ ঘণ্টা), **মহাশিবরাত্রি**।

- উপকরণ:
- বেলপাতা, ধুতুরা ফুল, দুধ, দই, মধু, গঙ্গাজল, আকন্দ ফুল, চন্দন (শিব পুরাণ, কোটি রুদ্র সংহিতা)।

❌❌❌-নিষিদ্ধ:❌❌❌
- কেতকী ফুল (শিব এড়িয়ে যান, কারণ ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর বিবাদে কেতকী মিথ্যা বলেছিল; পদ্ম পুরাণ, উত্তর খণ্ড ২২৯)।
- লাল ফুল, তুলসী (কিছু সম্প্রদায়ে)।
📑📜📜প্রামাণিক শাস্ত্রের রেফারেন্স:
1. শিব পুরাণ (বিশেষত: বিদ্যেশ্বর, রুদ্র, কোটি রুদ্র সংহিতা)।
2. লিঙ্গ পুরাণ (অধ্যায় ১-১০৮)।
3. মহাভারত(অনুশাসন পর্ব, শিব সহস্রনাম)।
4. বৃহজ্জাবাল উপনিষদ(শিবের রূপ বর্ণনা)।
5. অগ্নি পুরাণ (অধ্যায় ৭৪: শিবপূজা বিধি)।

📕📕গুরুত্বপূর্ণ: শিবের পূজা "অচিন্ত্য ভাব"(অন্তরের নিষ্ঠা) প্রধান। উপকরণের চেয়ে ভক্তি শ্রেষ্ঠ (শিব গীতা, ৩.১০)।

সূত্র সংকলন:
- ঋগ্বেদ, শিব পুরাণ, লিঙ্গ পুরাণ, মহাভারত, অগ্নি পুরাণ, বৃহজ্জাবাল উপনিষদ, পদ্ম পুরাণ।

জীবন মজুমদার
১৮.০৮.২০২৫

শিব কে কিসের দেবতা বলা হয়?
17/08/2025

শিব কে কিসের দেবতা বলা হয়?

সনাতন শাস্ত্র (হিন্দু ধর্মগ্রন্থ) মতে ধর্ম, ধর্ম পালনের কারণ ও ভগবানের ধামে যাওয়ার পথ সম্পর্কে নিম্নোক্ত ব্যাখ্যা শাস্ত...
16/08/2025

সনাতন শাস্ত্র (হিন্দু ধর্মগ্রন্থ) মতে ধর্ম, ধর্ম পালনের কারণ ও ভগবানের ধামে যাওয়ার পথ সম্পর্কে নিম্নোক্ত ব্যাখ্যা শাস্ত্রীয় রেফারেন্স সহ দেওয়া হলো:

📌📌১.ধর্ম কি? (সনাতন শাস্ত্রের সংজ্ঞা)

- ধর্ম হলো সৃষ্টির নিয়ম, কর্তব্য, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক পথের সমন্বয়। এটি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং জীবনের সর্বক্ষেত্রে সততা, দায়িত্ব ও ঐশ্বরিক সান্নিধ্যের পথ।

- মনুস্মৃতি (২.১২)
"ধৃতিঃ ক্ষমা দমোহস্তেয়ং শৌচমিন্দ্রিয়নিগ্রহঃ।
ধীর্বিদ্যা সত্যমক্রোধো দশকং ধর্মলক্ষণম্।"
(ধৈর্য, ক্ষমা, আত্মসংযম, অস্তেয় [অচৌর্য], শুদ্ধতা, ইন্দ্রিয়দমন, বুদ্ধিমত্তা, জ্ঞান, সত্য ও অক্রোধ – এই দশটি ধর্মের লক্ষণ।)

- ভগবদ্গীতা (১৮.৬৬)*
শ্রীকৃষ্ণ বলেন: "সর্বধর্মান্ পরিত্যজ্য মামেকং শরণং ব্রজ।
অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ।" (সমস্ত প্রকার ধর্ম ত্যাগ করে কেবল আমার শরণাগত হও। আমি তোমাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করব, শোক করো না।)

এখানে "ধর্ম" অর্থ জাগতিক বিধিনিষেধ, আর চূড়ান্ত ধর্ম হলো ভগবানের প্রতি সম্পূর্ণ সমর্পণ।

📌📌২.ধর্ম পালনের কারণ:

✅- কর্মমুক্তি ও আত্মউন্নতি: ধর্ম পালন করে কর্মবন্ধন থেকে মুক্তি লাভ ও আত্মিক পরিশুদ্ধি ঘটে।
গীতা (৩.৮): "নিয়তং কুরু কর্ম ত্বং কর্ম জ্যায়ो হ্যকর্মণঃ।
শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিধ্যেদকর্মণঃ।"
(তোমার কর্তব্য নিয়মিত কর, কারণ কর্ম না করা অপেক্ষা কর্ম করাই শ্রেয়।)

✅ - সমাজ ও সৃষ্টির রক্ষণ: ধর্মই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের নিয়ম রক্ষা করে।
গীতা (৩.২৪): "উৎসীদেয়ুরিমে লোকা ন কুর্য্যাং কর্ম চেদহম্।"
(আমি কর্ম না করলে এই সমস্ত লোক ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।)

✅- মোক্ষের পথ: ধর্মের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো জন্ম-মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি (মোক্ষ)।
গীতা (১৮.৭৮): "যত্র যোগেশ্বরঃ কৃষ্ণো যত্র পার্থো ধনুর্ধরঃ।
তত্র শ্রীর্বিজয়ো ভূতিধ্রুৱা নীতিঃ।"
(যেখানে কৃষ্ণ আছেন, যেখানে অর্জুন আছেন, সেখানে সমৃদ্ধি, বিজয়, ঐশ্বর্য ও ন্যায়বিচার অবশ্যই থাকে।)

📌📌৩.ভগবানের ধামে যাওয়ার পথ (শাস্ত্রীয় নির্দেশনা):

📍📍 - ভক্তিযোগ: ভগবানের প্রতি প্রেম ও সমর্পণই মুখ্য পথ।
শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ (১১.১৪.২০):
"মৎপরং পরমং জ্যোতির্যস্মিন্ প্রীয়তে হৃদি।
তস্যাহং প্রিয়তামেতি প্রসন্নো হ্যকুতোভয়ঃ।"
(যে ভক্ত আমাকে পরম জ্যোতি রূপে হৃদয়ে ধারণ করে, আমি তার প্রিয়তম হই এবং তাকে সর্বভয় থেকে মুক্ত করি।)

📍📍-অন্তিমকালে স্মরণ: মৃত্যুকালে ভগবানের নাম স্মরণ করলে মুক্তি লাভ হয়।
গীতা (৮.৫): "অন্তকালে চ মামেব স্মরন্মুক্ত্বা কলেবরম্।
যঃ প্রয়াতি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্র সংশয়ঃ।"
(যে ব্যক্তি অন্তিমকালে কেবল আমাকে স্মরণ করে দেহ ত্যাগ করে, সে আমার ধামে যায় – এতে সন্দেহ নেই।)

📍📍- নিষ্কাম কর্ম ও জ্ঞান: ফলকামনা ত্যাগ করে কর্তব্য পালন ও আত্মজ্ঞান লাভ।
গীতা (৪.৩৯): "শ্রদ্ধাবান্ লভতে জ্ঞানং তৎপরঃ সংযতেন্দ্রিয়ঃ।
জ্ঞানং লব্ধ্বা পরাং শান্তিমচিরেণাধিগচ্ছতি।"
(শ্রদ্ধাবান ও ইন্দ্রিয়সংযত ব্যক্তি জ্ঞান লাভ করে, আর জ্ঞানী পরম শান্তি পায়।)

📍📍- গুরু ও শাস্ত্রের আশ্রয়:
মুণ্ডকোপনিষদ (১.২.১২): "তদ্বিজ্ঞানার্থং স গুরুমেবাভিগচ্ছেৎ"।
(সেই জ্ঞান লাভের জন্য গুরুর শরণাপন্ন হওয়া উচিত।)

📚📚📚সারসংক্ষেপ:
- ধর্ম= সনাতন নৈতিকতা + কর্তব্য + ভগবৎ-সেবা।
- কারণ = আত্মশুদ্ধি, সমাজ রক্ষা, মোক্ষলাভ।
- ভগবানের ধামে যেতে= ভক্তি, অন্তিম স্মরণ, নিষ্কাম কর্ম, গুরু ও শাস্ত্রানুশীলন।

গীতা (১৮.৫৫): "ভক্ত্যা মামভিজানাতি..." (ভক্তি দ্বারাই আমাকে যথার্থভাবে জানতে পারা যায়।)

📖📖সনাতন মতে, ধর্মের শেষ লক্ষ্য ভগবানের সঙ্গে চিরমিলন, যা **ভক্তিযোগ**ই সবচেয়ে সহজ ও নিশ্চিত পথ। 🌺

জীবন মজুমদার
১৬.০৮.২০২৫

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন (জন্মাষ্টমী) নিঃসন্দেহে আনন্দ ও উল্লাসের দিন। তবে এই দিনে উপবাস রাখার রীতি হিন্দু শাস্ত্রে উল্...
15/08/2025

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন (জন্মাষ্টমী) নিঃসন্দেহে আনন্দ ও উল্লাসের দিন। তবে এই দিনে উপবাস রাখার রীতি হিন্দু শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, এবং এর পিছনে গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে। আসুন শাস্ত্রীয় দৃষ্টিকোণ ও ব্যাখ্যা বুঝে নিই:

📚📚১.উপবাসের শাস্ত্রীয় ভিত্তি:
- পুরাণ ও স্মৃতিশাস্ত্রে(বিশেষত বিষ্ণুপুরাণ, ভাগবত পুরাণ) জন্মাষ্টমী উপবাসকে "মহাফলদায়ক" বলা হয়েছে। উপবাস শ্রীকৃষ্ণের প্রতি ভক্তির প্রকাশ এবং আত্মসংযমের সাধনা।

- "জন্মাষ্টমীব্রতম্" নামক বিশেষ ব্রতের বিধান রয়েছে, যেখানে অষ্টমী তিথিতে সূর্যোদয় থেকে পরদিন সূর্যোদয় পর্যন্ত উপবাস রেখে রাত্ৰিতে জাগরণ, কীর্তন ও পূজার মাধ্যমে কৃষ্ণের জন্মলীলা স্মরণ করা হয়।

📚📚২.উপবাসের তাৎপর্য:
- আনন্দের প্রস্তুতি:উপবাস শারীরিক কষ্টের জন্য নয়, বরং মনের ধ্যানকে কৃষ্ণচেতনায় কেন্দ্রীভূত করার জন্য। এটি আনন্দের পূর্বপ্রস্তুতি—যেমন বিবাহের আগে স্নান-শুদ্ধি।

- ইন্দ্রিয় সংযম:শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন— "যোগী হওয়ার জন্য ইন্দ্রিয়গুলিকে বশে আনতে হয়"(গীতা ৬.১০)। উপবাস ইন্দ্রিয় নিগ্রহের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির পথ।

- কৃষ্ণের জন্মকথার স্মরণ: উপবাসের সময় ভক্তরা মথুরায় কংসের কারাগারে অন্ধকার রাত্ৰিতে কৃষ্ণের জন্মলীলা ধ্যান করেন। এই আধ্যাত্মিক আনন্দ শারীরিক ভোগ থেকে উচ্চতর।

📖📚৩.উপবাসের পর আনন্দোৎসব:**
- "পরানা" বা উপবাস ভঙ্গ:অষ্টমী তিথি শেষ হলে ভক্তরা ফল-দুধ-মিষ্টান্ন দিয়ে উপবাস ভঙ্গ করেন। এরপর **নন্দোৎসব** পালিত হয়—কীর্তন, ভোগ, নাচ-গান ও সম্প্রদায়িক ভোজের মাধ্যমে।

📌-শাস্ত্রীয় সমর্থন:ভাগবত পুরাণে (১০.৪৩.১৭) উল্লেখ আছে—কৃষ্ণের জন্মোৎসবে গোপ-গোপীরা উল্লাসে নাচতেন, মিষ্টান্ন বিতরণ করতেন। জন্মাষ্টমীর রাত্ৰিজাগরণও আনন্দের অঙ্গ।

📖📖৪.কেন দুই রীতি?

📌 - স্মার্ত ও বৈষ্ণব প্রথা:
- স্মার্তরা (শংকরাচার্য পরম্পরা) অষ্টমী তিথিতেই উপবাস রেখে জন্মোৎসব পালন করেন।

- বৈষ্ণবরা(বিশেষত গৌড়ীয় সম্প্রদায়) "নিশীথ সেবা"অনুসারে—কৃষ্ণের জন্মক্ষণ (মধ্যরাত্ৰি) পর্যন্ত উপবাস রেখে পরদিন "নন্দোৎসব"পালন করেন। এদিন কোনো উপবাস নেই, কেবল ভোগ ও উৎসব।

✅✅- উদাহরণ: বৃন্দাবন/মথুরায় জন্মাষ্টমীর পরদিন "নন্দোৎসব"-এ মন্দিরগুলিতে মহাভোগ, সংকীর্তন ও রথযাত্রা হয়।

📜📜৫.সারমর্ম:
"উপবাস আনন্দকে দমনে নয়, পরিশুদ্ধ করে তীব্রতর করতে।"

জন্মাষ্টমীর উপবাস ভোগ নয়, যোগের পথ—যা শ্রীকৃষ্ণকে ধ্যানের মাধ্যমে হৃদয়ে ধারণের সাধনা। এরপরের দিনের উৎসব হল সেই আনন্দের বহিঃপ্রকাশ।

📑📑📌৬.আপনার জন্য পরামর্শ:
- স্বাস্থ্য ও শারীরিক সামর্থ্য অনুযায়ী উপবাস রাখুন (পূর্ণ/আংশিক/ফলাহার)।
- রাত্ৰিতে কৃষ্ণজন্মের কীর্তন ও পাঠে অংশ নিন—এটিই আসল "আনন্দসাধন"।
- পরদিন নন্দোৎসবে প্রসাদ বিতরণ, সঙ্গীত ও মিষ্টান্ন ভোগের মাধ্যমে উল্লাস করুন!
জন্মাষ্টমীর ব্রত আনন্দ ও শুদ্ধির সমন্বয়—যেমন শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন,
"যে যথা মাং প্রপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম্"(গীতা ৪.১১)—"ভক্ত যে ভাবে আমাকে ভজনা করে, আমি তাকে সেইভাবেই প্রসন্ন করি।" 🙏

📌📌ঐ দিন কি কি করা বাধ্যতা মূলক জানতে
নিচের লিং এ যেতে পারেন বা পেইজে আগের পোষ্ট পড়ে নিতে পারেন।

https://www.facebook.com/share/p/1CVj2LU2R7/

জীবন মজুমদার
১৫.০৮.২০২৫

কৃষ্ণভক্ত বা বৈষ্ণবরা শুদ্ধ ভক্ত দ্বারা তৈরি হলেও **অন্য ব্যক্তির হাত দিয়ে নিবেদিত প্রসাদ** গ্রহণ না করার পেছনে শাস্ত্রস...
14/08/2025

কৃষ্ণভক্ত বা বৈষ্ণবরা শুদ্ধ ভক্ত দ্বারা তৈরি হলেও **অন্য ব্যক্তির হাত দিয়ে নিবেদিত প্রসাদ** গ্রহণ না করার পেছনে শাস্ত্রসম্মত তিনটি মূল কারণ** রয়েছে। এটি **প্রসাদের অবমাননা নয়**, বরং **ভোগ-নিবেদনের শুদ্ধ প্রক্রিয়া রক্ষার অনুশাসন।

📌১.শাস্ত্রীয় নিয়ম: "নিবেদনকারী" এর ভূমিকা অপরিহার্য
- হরিভক্তিবিলাস (১৬.১৪১) ও পদ্ম পুরাণ-এ স্পষ্ট: "স্বয়ং নিবেদয়েৎ বিষ্ণবে ভক্ত্যা শুদ্ধান্তঃকরণঃ"

("শুদ্ধচিত্ত ভক্ত নিজেই ভক্তি সহকারে বিষ্ণুকে নিবেদন করবেন।")

- নিবেদনকারীকে অবশ্যই শারীরিক-মানসিক শুদ্ধতা (স্নান, পবিত্র বস্ত্র, একাগ্রচিত্ত) বজায় রাখতে হবে। অন্য কাউকে দিয়ে নিবেদন করালে এই শর্ত পূরণ হয় না।

- স্কন্দ পুরাণ (বিষ্ণুখণ্ড ১১.২৫)-এ উল্লেখ:

"অপবিত্রো যঃ করোতি নিবেদনমহর্নিশম্।
ন তৎ প্রীত্যৈ হরিঃ প্রাপ্যো নরকং তস্য গচ্ছতি॥"

("অপবিত্র ব্যক্তি নিবেদন করলে ভগবান তুষ্ট হন না; নিবেদনকারী নরকগামী হয়।")

📌২.প্রসাদের "চৈতন্য": নিবেদনকারীর ভক্তি-শক্তি

- বৈষ্ণব বিশ্বাস অনুযায়ী, প্রসাদে দুটি শক্তি থাকে:
১. ভগবানের কৃপা** (মূল প্রসাদ),
২. নিবেদনকারীর ভক্তির শক্তি।

- চৈতন্য চরিতামৃত (মধ্যলীলা ১৫.১৬২)-এ বলা হয়েছে: "ভক্তের ভক্তি-বলে ভগবান প্রসাদে অধিষ্ঠান করেন।"
- অন্য ব্যক্তি নিবেদন করলে ভক্তির ধারা বিচ্ছিন্ন হয়, তাই প্রসাদ "**নিষ্প্রাণ**" হয়ে যায়।

📌৩.অবমাননা কেন নয়?

✅ "প্রসাদ তো শুদ্ধ, তাহলে প্রত্যাখ্যান কেন?"

নিবেদন প্রক্রিয়াই অসম্পূর্ণ। নারদ পঞ্চরাত্র -এ বলা হয়েছে: "অনর্পিতচিত্তেন"(অশুদ্ধচিত্তে নিবেদন) প্রসাদ বিনষ্ট করে। |

✅"অন্য ব্যক্তির ভক্তি কি গণ্য নয়?"

ভক্তি সম্মানযোগ্য, কিন্তু নিয়ম ভঙ্গ অগ্রহণযোগ্য। যেমন: শ্রীচৈতন্য **কাশীর শাক ভক্ষণ** (মধ্যলীলা ১৫.১৪৫) প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কারণ তা অন্য দেবতার নিবেদনকারী দিয়েছিল। |

✅"এতে কি দাতার মনে কষ্ট হয় না?"

| বৈষ্ণবরা **সসম্মানে ব্যাখ্যা** করে (হরিভক্তিবিলাস ১১.৬৮২): "আমার শাস্ত্র আমাকে শুধু নিজে নিবেদিত প্রসাদ গ্রহণের অনুমতি দেয়|

📌৪.গৌড়ীয় বৈষ্ণব প্রমাণ: চৈতন্য মহাপ্রভুর নির্দেশ।
- চৈতন্য চরিতামৃত (মধ্যলীলা ৩.৭৮)-এ উল্লেখ:

"আপনি হস্তে করি' ভোগ লাগাইব শ্রীহরিতে।
অন্যে দিলেও নিবেদন করিবে স্বহস্তে॥"
("নিজ হাতে ভোগ নিবেদন করবে। অন্যে দিলেও তা **পুনরায় নিজ হাতে** নিবেদন করবে।")

📑📜 - অর্থাৎ, অন্য কেউ নিবেদন করলেও শুদ্ধ ভক্ত পুনরায় মন্ত্র পড়ে নিবেদন করেন। কিন্তু সাধারণত তা সম্ভব নয় বলে গ্রহণ করা হয় না।

📍📍📍৫. ব্যতিক্রম: কখন গ্রহণ করা যায়?

১. মহাপ্রসাদ (জগন্নাথধাম): যেকোনো হাতে নিবেদিত হলেও গ্রহণযোগ্য, কারণ তা **সর্বশুদ্ধ** (স্কন্দ পুরাণ)।

২. আপৎকাল : যদি শুদ্ধ ভক্ত উপস্থিত না থাকেন, তবে **অন্তরে কৃষ্ণকে স্মরণ** করে গ্রহণ করা যায় (ভাগবত পুরাণ ১১.২৭.৫২)।

৩.গুরু/বৃদ্ধ ভক্তের আদেশ : তারা নির্দেশ দিলে তা **আধ্যাত্মিক অনুশাসন** গণ্য হয় (চৈতন্য চরিতামৃত, অন্ত্যলীলা ৬.৩১৩)।

📚📚 উপসংহার: অবমাননা নয়, শুদ্ধি-সচেতনতা
বৈষ্ণবদের এই আচরণের মূলে আছে দুটি শাস্ত্রীয় আদর্শ :
- "স্বয়ং নিবেদনম্" (নিজে নিবেদন)-হরিভক্তিবিলাস ১৬.১৪১,
- "প্রসাদে ভগবদ্দত্তা"(প্রসাদ ভগবানের দান) – নারদ পঞ্চরাত্র ১৫.৪৯।

রাজদরবারে নিজ হাতে উপহার দিলে তা **সম্মানের প্রতীক**অন্যকে দিয়ে পাঠালে তা **নিয়মলঙ্ঘন**। তেমনি, ভগবানের প্রসাদে নিবেদনকারীর ভক্তি-স্বাক্ষর আবশ্যক।
এটি অন্যের প্রতি অবজ্ঞা নয় বরং ভগবানের সাথে সম্পর্কের শুদ্ধতা রক্ষার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা।

📕এগুলি শুধু কৃষ্ণ ভক্তদের জন্য অন্য কোন মতের অমিল থাকতে পারে।তাই ক্ষমা চাইছি।

জীবন মজুমদার
১৪.০৮.২০২৫

সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্তুতে🙏🙏
04/02/2025

সরস্বতী মহাভাগে বিদ্যে কমললোচনে বিশ্বরূপে বিশালাক্ষী বিদ্যংদেহী নমোহস্তুতে🙏🙏

Address

Chattogram
Feni
3940

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when জয় শ্রী কৃষ্ণ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to জয় শ্রী কৃষ্ণ:

Share

Category