08/06/2025
‘তাণ্ডব’— রিভিউ
এটা কি সত্যিই আমাদের দেশের সিনেমা? পর্দায় চোখ রাখতেই এমন প্রশ্ন বারবার জেগেছে মনে। ‘তাণ্ডব’ শুধু বিনোদন নয়, এক ধাক্কা— রাষ্ট্রযন্ত্রের বুকে।
শুরুতেই আসে মুখোশধারী এক চরিত্র— গরিলার মতো ভয়ংকর মুখোশে ঢাকা, যেন জাতিসংঘের কোনো গোপন সভা থেকে উঠে এসেছে। লাইভে এসে বলে, “ওয়েলকাম টু মাই শো!” সে খোলে ‘নির্বাচন চাই গ্রুপ ইনক.’— এবং মুখোশের আড়ালে থাকা মানুষটি আর কেউ নন, শাকিব খান। এখানে তিনি কেবল নায়ক নন, বরং ভোটাধিকারহীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এক প্রতীক।
অন্যদিকে, গোলাপি কামিজে লিচু বাগানে বসে থাকা সাবিলা নূরের সংলাপ যেন গণতন্ত্রের বিজ্ঞাপন-সংস্করণের প্রতিধ্বনি। তার বলা— “মানুষ আর চাঁদাবাজদের কাছে ফিরতে চায় না…” —এতটাই নাটকীয় যে শাকিবের প্রতিক্রিয়াও হয়ে ওঠে প্রেমময় ও বিদ্রোহী। এই প্রেম নিছক রোমান্স নয়, এক রাষ্ট্রীয় ‘অপরাধ’।
নিশো প্রবেশ করেন কালবৈশাখির মতো, চোখে আগুন, হাতে ইভিএম— এবং বলেন, “মহাজনের বিকল্প নাই!” আর তখন থেকেই শাকিব বনাম নিশো দ্বন্দ্বে নামে দেশব্যাপী ‘অপারেশন’।
সিয়াম আহমেদ, একচোখা রহস্যময় চরিত্রে, যেন দক্ষিণী ‘রোলেক্স’-এর ছায়া হয়ে হাজির। তার সংলাপ— “এক চোখ রাষ্ট্রীয় মিডিয়াকে ডোনেট করেছি”— সিনেমার সবচেয়ে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গগুলোর একটি।
সবশেষে, লিচু বাগান, প্রেম, বিয়ে, চেয়ারের ভাগবাটোয়ারা, এবং জয়া আহসানের আগমনে গল্প নেয় নতুন মোড়। সোয়াত ইউনিট, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ, ঈদের নামাজে গোপন মিশন— এসব মিলিয়ে ‘তাণ্ডব’ হয়ে দাঁড়ায় এক কাব্যিক, বিদ্রুপে মোড়া রাজনৈতিক ট্র্যাজেডি।
স্পয়লার আর নয়। জানার জন্য যেতে হবে সিনেমা হলে। কারণ ‘তাণ্ডব’ শুধু সিনেমা নয়, এটা এক রাজনৈতিক স্যাটায়ার, যা গণতন্ত্রকেও রূপ দিয়েছে থ্রিলারে।
সম্ভবত খুব শীঘ্রই আসছে— ‘তাণ্ডব ২: মহাজন রিটার্নস’।
#তাণ্ডব