
31/07/2025
মাউন্ট এভারেস্ট শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয়, এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ কব/র/স্থানও। এখানে এমন কিছু করুণ ইতিহাস জমাট বেঁধে আছে, যা শুনলে অবাক হতে হয়। আজ জানবো এমনই দুটি হাড় হিম করা সত্য ঘটনা।
১. হ্যানালোরা শ্মাৎজ (Hannelore Schmatz):
১৯৭৯ সাল। জার্মান পর্বতারোহী হ্যানালোরা শ্মাৎজ এভারেস্ট জয় করে ফেরার পথে প্রচণ্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েন। আবহাওয়াও খারাপ হতে শুরু করে। ক্যাম্প থেকে মাত্র ৩০০ ফুট দূরে তিনি অবসাদের কারণে বসে পড়েন এবং তার সঙ্গীদের বলেন, “আমি আর পারছি না।” সেই যে তিনি বসলেন, আর ওঠেননি। তীব্র ঠান্ডা আর অক্সিজেনের অভাবে সেখানেই তিনি মা/রা/ যান।
সবচেয়ে অদ্ভুত এবং করুণ ব্যাপার হলো, তার
মৃ/তদে/হটি বছরের পর বছর ধরে ঠিক সেভাবেই বসে ছিল। খোলা চোখ, বাতাসে উড়ন্ত চুল—যেন তিনি এভারেস্টের এক অনন্ত প্রহরী। পরবর্তী আরোহীরা তার পাশ দিয়েই যেতেন।
বিজ্ঞান কী বলে?
এভারেস্টের ৮,০০০ মিটারের উপরের অংশকে
“ডে/থ জোন” বা “মৃ/ত্যু অঞ্চল” বলা হয়। এখানকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে ($-30°C$ থেকে $-60°C$) এবং বাতাসে অক্সিজেন প্রায় থাকেই না। এই পরিবেশে শরীর পচনের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া কাজ করতে পারে না। ফলে শ/রীর প/চে যাওয়ার বদলে প্রাকৃতিকভাবেই মমি হয়ে যায়, অর্থাৎ শুকিয়ে সংরক্ষিত থাকে। হ্যানালোরার শরীরও ঠিক এভাবেই সংরক্ষিত ছিল। পরে এক ঝড়ে তার দেহটি স্থানচ্যুত হয়।
২. জর্জ ম্যালরি (George Mallory):
জর্জ ম্যালরি ছিলেন একজন কিংবদন্তী ব্রিটিশ পর্বতারোহী। ১৯২৪ সালে সঙ্গী অ্যান্ড্রু আরভিনকে নিয়ে এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে হারিয়ে যান তিনি। রহস্য ছিল একটাই—তারা কি চূড়ায় পৌঁছাতে পেরেছিলেন? পারলে তারাই হতেন প্রথম এভারেস্ট বিজয়ী, এডমন্ড হিলারি নন।
এর ঠিক ৭৫ বছর পর, ১৯৯৯ সালে, পর্বতারোহী কনরাড অ্যাঙ্কার ম্যালরির হিমায়িত মৃ/ত/দেহ খুঁজে পান। তীব্র ঠান্ডায় শরীর প্রায় অবিকৃত ছিল।
ম্যালরির শরীর পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার একটি পা মারাত্মকভাবে ভাঙা ছিল এবং কোমরে দড়ির আঘাতের চিহ্ন ছিল, যা পতনের প্রমাণ দেয়। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, ম্যালরির অক্ষত পা'টি তার ভাঙা পায়ের ওপর আড়াআড়ি করে রাখা ছিল। যা থেকে ধারণা করা হয়, তিনি পড়ার পরেও বেশ কিছুক্ষণ জীবিত এবং সচেতন ছিলেন। কিন্তু তার ক্যামেরাটি খুঁজে পাওয়া যায়নি, যা হয়তো পারত ৭৫ বছরের পুরোনো রহস্যের সমাধান করতে।
মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি আর প্রকৃতির নির্মমতার মধ্যে ব্যবধান কতটুকু। এভারেস্টের চূড়া ছোঁয়ার গৌরব যেমন আছে, তেমনি আছে মৃ/ত্যু/র হিমশীতল বাস্তবতা।