20/06/2025
জনাব আসিফ মাহমুদ আপনি শপথ নিয়েছেন, "সংবিধান রক্ষা করবেন, মেনে চলবেন"। কিন্তু আপনি কি এই ঘটনায় শপথ ভঙ্গ করেননি?
কেন এই প্রশ্ন আসলো, দেখুন....
আপনি এই সাক্ষাৎকার ও ১৬ জুন বিবৃতি দিয়েছেন,- "'বিচারাধীন বিষয় ছিল' বলে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারেননি।"
আর, বিচারাধীন বিষয় বলতে, "শপথ না পড়ানোর জন্য একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল" সেই বিষয় বোঝাতে চেয়েছেন।
এর আগেও, ১৯ মে আপনি আরেকবার একই বক্তব্য দিয়েছেন। তখন উল্লেখিত রিটটির শুনানি পর্যন্ত শুরু হয়নি। আদেশ না দেয়া বা শুনানি ই যখন শুরু হয়নি, তখন কিভাবে এটি বিচারাধীন বিষয় হয়?
এরপর ২১ ও ২২ মে শুনানি হয় এবং রিট খারিজ করেন হাইকোর্ট।
এরপর, ২৩ ও ২৪ মে ছুটি ছিল বলে হয়তো শপথের আয়োজন করতে পারেননি। কিন্তু ২৫ মে তো অফিস ছিল। সেদিন কেন শপথ আয়োজন করেনি?
আবার রিট খারিজের বিষয়ে আপিল করা হয় মাঝে একদিন বাদ দিয়ে, অর্থাৎ ২৬ মে।
আর নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপন এক মাস মেয়াদ যেহেতু ২৬ মে শেষ হওয়ার কথা, তাই রিট খারিজের বিষয়ে আপিল দায়ের করা হয়েছিল ২৬ মে।
যদিও শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট আপিল নিষ্পত্তি করে দেন। এতে আইনগতভাবে প্রমাণিত হয়, নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন সঠিক। ফলে, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল, আপিল ট্রাইব্যুনাল, হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ - সবগুলো আদালত ইশরাক হোসেনের পক্ষে রায় ও আদেশ দিয়েছেন। তাহলে আইন ও সংবিধান অনুযায়ী ইশরাক হোসেন ই বৈধ মেয়র এতে আপনার বা সরকারের কোনো আপত্তি থাকার কথা না?
আপিল বিভাগ নির্বাচন কমিশনের ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন, এবং নির্বাচন কমিশন পরে ব্রিফিং- এ জানিয়েছে, "তাদের আগের সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত"। তার মানে পরিস্কার, নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি সঠিক।
এবার আসুন মূল প্রশ্নে, নির্বাচন কমিশন ২৭ এপ্রিল ২০২৫ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ৩০ দিনের মধ্যে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করবে মন্ত্রণালয়। এটা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব বা কাজ। এর বাইরে কোন ব্যাখ্যা চাওয়ার এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের নেই। নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন জারি করার অর্থ হচ্ছে, তারা এই মামলার বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেই, গেজেট প্রকাশ করেছে।
তাহলে,
২৮ এপ্রিল ২০২৫ থেকে ২০ মে ২০২৫ এই তারিখ পর্যন্ত কেন শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করেননি?
যদি আপনার একমাত্র জোরালো যুক্তি হলো, "বিচারাধীন বিষয় ছিল" তাই নাকি শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারেননি। কিন্তু আপনার যুক্তি মেনে যদি নেই, তাহলে আপনার ঐ বিচারাধীন বিষয় বলতে " ২১ মে থেকে ২২ মে পর্যন্ত, এই ২ দিন বিচারাধীন বিষয় ছিল"।
বাকি দিনগুলোতে শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা না করে, আপনি আদালতের রায় অমান্য করেছেন। সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন, আপনি উপদেষ্টা হিসেবে শপথ ভঙ্গ করেছেন।
এটা আপনি কোন ভাবে পারেন কি না??
আপনি উদাহরণ সৃষ্টি করলেন যে, ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশন যে কোন জন প্রতিনিধির নামে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও, সরকার বা মন্ত্রণালয়ের পছন্দ হলে বা ইচ্ছা হলে শপথ পড়াবে, ইচ্ছা না হলে পড়াবে না!!
©