01/07/2025
নেওয়ামত না হোক ফাঁদ, বরং হোক হেদায়াতের সেতু
আমরা অনেকেই জীবনের এক কঠিন সময় পার করি—চাকরির অভাবে, ভিসা না পেয়ে, অসুস্থতায় বা সম্পর্কের টানাপড়েনে। তখন আমরা আল্লাহর দরবারে কান্না করি, চোখের পানি ফেলি, মসজিদের কোণায় বসে দীর্ঘ দোয়া করি।
❝ আল্লাহ, একটা চাকরি দিন… একটা সুযোগ দিন… সুস্থ করে দিন… সন্তান দিন… ❞
কিন্তু যখন সেই নেয়ামত মিলে যায়?
একসময় যে মানুষটা দিনের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মধ্য দিয়ে আল্লাহর সামনে নিজেদের ব্যর্থতা মেলে ধরতো, চাকরি পাওয়ার পর সে হয়তো নামাজই ভুলে যায়—মিটিং, প্রেজেন্টেশন আর ‘টাইম ম্যানেজমেন্ট’-এর চাপে।
যে নারী চোখের পানি ফেলে ভিসার জন্য দোয়া করেছিল, সে-ই ভিসা পেয়ে বিদেশে গিয়ে এমন সব লাইফস্টাইল আঁকড়ে ধরে, যা দেশে থাকলে কল্পনাও করতো না।
কেন এমন হয়?
কারণ আমরা শুধুই নেওয়ামত চাই, কিন্তু তার সাথে হেদায়াত চাই না।
আমরা বলি—
“হে আল্লাহ, আমাকে রিজিক দাও...”
কিন্তু বলি না—
“হে আল্লাহ, সেই রিজিক যেন আমাকে তোমার কাছে আরও বেশি টেনে নেয়।”
🔍 এইটাই আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল।
আল্লাহ যখন কোনো নেয়ামত দেন, তা দুই রকম হয়—
🔹 একটি পুরস্কার,
🔹 অন্যটি পরীক্ষা।
যদি হেদায়াত না থাকে, তাহলে নেয়ামতই হয়ে ওঠে গুনাহর দরজা।
চাকরি হতে পারে নামাজ ছাড়ার শুরু, ভালোবাসা হতে পারে হারাম সম্পর্কের ফাঁদ, আর সুস্থতা হতে পারে ঈমান হারানোর মোহ।
কিন্তু যেদিন আমরা দোয়া করব—
❝ হে আল্লাহ, আমাকে যা দিচ্ছ, তা যেন তোমাকে ভুলিয়ে না দেয়। সেই নেয়ামতের মাঝেই যেন তোমার ছায়া খুঁজে পাই। ❞
সেদিন সেই নেয়ামত হবে বরকতময়, হবে জান্নাতের পথচলা।
💎 হেদায়াত ছাড়া নেয়ামত—শয়তানের ফাঁদ।
আর হেদায়াতসহ নেয়ামত—রহমতের চাবিকাঠি।
তাই দোয়া হোক এভাবে—
❝ হে প্রভু, দাও, তবে এমনভাবে দাও যেন পাওয়ার পরও আমি তোমাকেই বেশি মনে রাখি। ❞
শেষ কথা:
যারা কেবল দুনিয়ার চাহিদা নিয়ে দোয়া করে, তারা সাময়িক সুখ খোঁজে।
আর যারা হেদায়াতসহ নেয়ামত চায়, তারা আল্লাহর সান্নিধ্য চায়—চায় আখিরাত, চায় শান্তি, চায় চিরস্থায়ী মুক্তি।