14/07/2025
দুই ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক করে অন্তঃসত্ত্বা হয় মায়া অতঃপর যা হল
*
মায়া, এক তরুণী, জীবনের এক অদ্ভুত খেলায় মেতেছিল। প্রতিদিন তার দিন কাটত দুই ভিন্ন মানুষের সাথে – জয় আর রনির সঙ্গে। জয়ের কাছ থেকে নেওয়া টাকা দিয়ে সে রনির আবদার মেটাতো, আবার রনির দেওয়া উপহার দিয়ে জয়কে খুশি রাখত। দিনে জয়ের সাথে শহরের ক্যাফেতে আড্ডা হলে, রাতে রনির হাত ধরে সিনেমা হলে কাটাতো। এক জটিল জালে জড়িয়ে পড়েছিল মায়া, যেখানে আবেগ নয়, যেন এক ধরণের চতুর খেলাই ছিল আসল উদ্দেশ্য।
একদিন সকালে, মায়ার পৃথিবীটা যেন থমকে গেল। সে জানতে পারল, সে অন্তঃসত্ত্বা। খবরটা শুনে তার হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে গেল। পেটের ভেতরে বাড়তে থাকা প্রাণের অস্তিত্ব তাকে এক চরম অনিশ্চয়তার মুখে দাঁড় করিয়ে দিল। কে এই সন্তানের বাবা? জয় না রনি? এমন এক প্রশ্নের উত্তর সে নিজেও জানত না।
ভয়ে জড়সড় মায়া প্রথমে জয়ের কাছে গেল। কাঁপতে কাঁপতে বলল, "আমি তোমার সন্তানের মা হতে চলেছি।" জয় মুহূর্তেই চোখ কপালে তুলে অস্বীকার করল, "এসব কী বলছ? এটা আমার সন্তান হতে পারে না!" হতাশ মায়া এরপর রনির কাছে গেল, একই কথা বলল। রনিও নির্দ্বিধায় জবাব দিল, "আমার সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই।"
দু'জনের কাছ থেকে একই প্রত্যাখ্যান শুনে মায়া যেন দিশেহারা হয়ে পড়ল। তার সব চতুরতা, সব কৌশল এক মুহূর্তে অর্থহীন মনে হলো। সে বুঝতে পারল, কত বড় ভুল সে করেছে। যদি সে একটিমাত্র সম্পর্কে সৎ থাকত, তাহলে আজ এই অসহায় পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এই সন্তান এখন কার? কী করবে সে? এক গভীর হতাশা তাকে গ্রাস করল। জীবন তার কাছে অর্থহীন মনে হতে লাগল। একসময় সে চরম সিদ্ধান্ত নিতে মনস্থির করল – আত্মহত্যার পথ বেছে নেবে।
কিন্তু ভাগ্য হয়তো মায়াকে আরেকটা সুযোগ দিতে চেয়েছিল। ডাক্তারী পরীক্ষায় ধরা পড়ল, মায়া আসলে অন্তঃসত্ত্বা নয়। এটি ছিল একটি ভ্রান্ত ধারণা বা অন্য কোনো শারীরিক জটিলতা। এই খবরটা মায়ার জন্য ছিল দ্বিতীয় জীবনের বার্তা। পাথর চাপা ভার যেন তার বুক থেকে নেমে গেল।
সেদিন মায়া নতুন করে জীবনকে দেখল। সে তার ভুল বুঝতে পারল। মিথ্যা আর ছলনার সম্পর্কগুলো তাকে কোথায় ঠেলে দিচ্ছিল, তা সে পরিষ্কার দেখতে পেল। জয় আর রনি – দু'জনের সঙ্গেই সে সব সম্পর্ক ছিন্ন করল। এরপর সে তার পরিবারের কাছে ফিরে এল, নিজের ভুলের কথা স্বীকার করল এবং তাদের সাহায্যে সে পারিবারিকভাবেই বিয়ে করে নতুন জীবন শুরু করল।
আজ মায়া একজন শান্ত ও সুখী মানুষ। অতীতের সেই দিনগুলো তার কাছে শুধুই এক দুঃস্বপ্ন। সে বুঝতে পেরেছে, জীবনের সবচেয়ে বড় শান্তি লুকিয়ে আছে সততা, বিশ্বাস আর একটি স্থিতিশীল সম্পর্কের মধ্যে। মায়ার গল্পটা হয়তো অনেকের কাছেই এক কঠিন শিক্ষা, যে জীবনকে খেলার ছলে না নিয়ে, মূল্যবোধের সাথে বাঁচলে তার সৌন্দর্যটাই হয় অন্যরকম।