মামুন বিন মুখলেছ ঢাকা

মামুন বিন মুখলেছ ঢাকা খতীব বাইতুল হুদা জামে মসজিদ কামরাঙ্গীরচর ঢাকা । মুহাদ্দিস-জামিয়া আরাবিয়া রবিউল উলূম ঢাকা
আলাপন -whatsapp Number 01833 512653
(1)

19/06/2025
_খুলুকিন আযীম : নবীজিকে ভালবাসার বিনম্র প্রয়াস_১. আমাদের পেয়ারা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বকালের সর্বশ্রে...
13/06/2025

_খুলুকিন আযীম : নবীজিকে ভালবাসার বিনম্র প্রয়াস_
১. আমাদের পেয়ারা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ।
২. নবীজির উসীলায় আমরা সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত।
৩. আল্লাহ তাআলা আমাদের ‘খাইরা উম্মাহ’ (خَيْرَأُمَّةٍ) বা সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত বলে আখ্যায়িত করেছেন।
৪. সর্বশ্রেষ্ঠ নবীজির আদর্শই সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ।
৫. নবীজির আদর্শকে সুন্নাহ বলে।
৬. নবীজির সুন্নাহকে ধারণ করে আমরা হতে পারি খাইরা উম্মাহ।
৭. নবীজির সুন্নাহ দুনিয়াতে আমাকে দিবে প্রশান্তিময় জীবন।
৮. নবীজির সুন্নাহ আমাকে আখেরাতে দিবে চিরসুখের জান্নাত।
৯. নবীজির সুন্নাহ আমাকে এনে দেবে কেয়ামতের দিন নবীজির সুপারিশ।
১০. নবীজির সুন্নাহ আমাকে এনে দেবে কাওসারের অমিয়সুধা।
১১. খরায় ফেটে চৌচির হয়ে যাওয়া উষর নিরস ধূসর জমি, বৃষ্টির শান্তিধারায় সবুজ লকলকে হয়ে ওঠে। নবীজির সুন্নাহও আমার জীবনকে এমন বসন্ত-শ্যামল সুশোভিত করে তুলবে।
১২. দিগন্তবিস্তৃত মরুতে পথ হারিয়ে ফেলা মুসাফির আকাশের ঝিকিমিকি তারা দেখে পথের হদিস খুঁজে পায়। নবীজির প্রতিটি সুন্নাহও আমার জন্য মুক্তির কম্পাস।

১৩. উত্তাল সাগরে দিকভ্রান্ত নাবিক, জ্বলজ্বলে তারা দেখে পরম নিশ্চিন্তে গতিপথ খুঁজে পায়। পাপসমুদ্রে হাবুডুবু খেতে থাকা আমিও নবীজির সুন্নাহ আঁকড়ে ধরে পৌঁছে যেতে পারব মুক্তির সোনালী বন্দর জান্নাতে।

১৪. কুরআন কারীমে আল্লাহ তাআলা নবীজিকে সম্বোধন করে বলেছেন,
وَإِنَّكَ لَعَلَىٰ خُلُقٍ عَظِیْمٍ
এবং নিশ্চয়ই আপনি চরিত্রের সর্বোচ্চ স্তরে অধিষ্ঠিত আছেন। (সূরাতুল কালাম ৪)

১৫. কুরআনবর্ণিত এই খুলুকিন আযীম মানে মহোত্তম চরিত্রই ‘নবীজির সুন্নাহ’। খুলুকিন আযীম বইটিতে, সাগর সেঁচে মুক্তো আহরণের মতো, তারকাসদৃশ সুন্নাহগুলো পরম যত্নে কোঁচড় ভরে তুলে আনা হয়েছে সাবলীল ভাষায়।

১৬. ৬৪০ পৃষ্ঠার এই বইয়ে প্রায় (২৩০) দুইশ ত্রিশটি শিরোনামে অসংখ্য সুন্নাহর কথা আলোচিত হয়েছে। নিত্যদিনের প্রতিটি মুহূর্তকে সুন্নাহর রঙে রঙিন করে তুলতে, বইটি।
১৭. নবীজির প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে ‘খুলুকিন আযীম’ হতে পারে আমার অনিবার্য পাথেয়।

১৮. নবীজিকে ভালবাসতে ‘খুলুকিন আযীম’ বইটি হতে পারে আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী। আমার ‘শিয়রসঙ্গী’। আমার সফরসঙ্গী। আমার পাঠসঙ্গী।

১৯. বইটি জন্মলগ্ন থেকে প্রকাশের চৌকাঠ পাড়ি দেয়া পর্যন্ত অসংখ্য আল্লাহর বান্দার যত্ন, মহব্বত, মেহনত পেয়েছে। রাব্বে কারীম সবাইকে কবুল করে নিন। সবার দুনিয়া-আখেরাত হাসানাপূর্ণ করে দিন। প্রকাশক, লেখক ও পাঠককেও দুনিয়া-আখেরাতে হাসানা দান করুন।
সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
রাদিয়াল্লাহু আনহুম ওয়া রাদূ আনহু।
#এসোইসলামেরপথেচলে★

12/06/2025

_আপনি কি ফোনের ক্রীতদাস..?_

প্রতিবার রিং হলেই সবসময় আপনার ফোনটি তুলবেন না; আপনার ফোনটি আপনার সুবিধার জন্য ব্যবহৃত হয়; যারা আপনাকে কল করে তাদের জন্য নয়। আপনি যা করছেন তা চালিয়ে যাওয়ার স্বাধীনতা দিন এবং অন্যকে বলুন যেন আপনাকে SMS প্রেরণ করে। পড়তে খারাপ লাগছে ? কিছু দিন আগেও ফোন ধরতে না পারলে, আমি খুব উদ্বিগ্ন হয়ে থাকতাম। আমি ভাবতাম, আমি কিছু মিস করেছি। আমার একজন শিক্ষক এই সম্পর্কে অনেক ব্যতিক্রমী ছিলেন। তিনি নির্দিষ্ট কিছু সময়ে ফোনের উত্তর দিতেন। আমি কাজটি পছন্দ করতে শুরু করি এবং আমার টিচারের মতো মানসিকতাকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করি এবং নিজেকে বলি, "আমি মরে গেলেও দুনিয়ার সবকিছুই চলবে।"

আমার কথায় আমাকে 'স্বার্থপর' মনে হচ্ছে ? দেখুন আপনি যদি আপনার ফোনের দাস হয়ে যান তাহলে জীবনে ভালো কিছুই করতে পারবেন না।

ফোন আমাদের ফোকাস এবং সময় নষ্ট করে দেয়। তাই আপনার নিজের প্রয়োজনে ফোন ব্যবহার করুন। আপনার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মানুষদেরকে বলে রাখুন যে আপনি কী নিয়মে ফোন ব্যবহার করে থাকেন। আপনি ফোন কল কম রিসিভ করলে আপনাকে মানুষ কম ফোন করবে। আর আপনার অনেক সময় বেঁচে যাবে।

আপনি যেভাবে মানুষকে অভ্যাস করাবেন তারা সেভাবেই আপনার সঙ্গে আচরণ করবে।

আপনি বলতে পারেন যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কল হতে পারে, সেটিও রিসিভ করব না ? অবশ্যই রিসিভ করবেন। বুঝবেন কীভাবে ?

খুব গুরুত্বপূর্ণ হলে একই ব্যক্তি একই সময়ে ৫-৬ বার কল করবে। আর সাধারণ প্রয়োজন হলে বারবার কল করা থেকে বিরত থাকবে। সাধারণত এমনটাই ঘটে তাই না ? একটু বুঝেশুনে মানিয়ে নিন। নিজেকে অতিরিক্ত ফোন ব্যবহার করা থেকে বাঁচান।

যদি সত্যিই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কল হয়,তবে কলকারী হাল ছেড়ে দেবে না। আপনি তা অবশ্যই বুঝতে পারবেন।

মোবাইল ফোনের ব্যবহার বর্তমান বিশ্বকে সবার হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। মানুষ এখন ঘরে বসেই দেশ বিদেশের যে কোনো খবর জানতে পারছে। শুধু খবরই নয় বরং মোবাইল ফোনের কারণে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ, ব্যবসায়, বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি সব বিষয়েই কাজ করা সম্ভব হয়েছে। মোবাইল আমাদের যেমন উপকার করে, তেমনি মোবাইল আমাদের ক্ষতিও করে।

মোবাইলের ক্ষতিকর অনেক দিক রয়েছে। মোবাইল ফোনের প্রভাবে মানুষ এখন নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তাই চলুন জেনে নেই মোবাইল ফোনের ক্ষতিকর দিকগুলো:

মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে শারীরিক সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে চোখ জ্বালা করা, ঘাড় ব্যথা করা, কানে সমস্যা, মাথা ব্যথা করা, চোখে ঝাপসা দেখা, অতিরিক্ত ক্লান্তি, জীবাণুর আক্রমণ, চোখের জ্যোতি কমে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া, চিন্তাশক্তি কমে যাওয়া, পর্নো আসক্তি, শ্রবণ শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি।

(লেখা-বই-মনের শক্তি, লেখক সাবিত রায়হান)

08/06/2025

আপনার ঘরে কুর-বানির গোশত থাকলে এই পয়েন্টগুলো অবশ্যই মাথায় রাখুন।১.যে কাপড়/ টিস্যুতে হাতে লেগে থাকা গোশতের চর্বি মোছা হয়,...
08/06/2025

আপনার ঘরে কুর-বানির গোশত থাকলে এই পয়েন্টগুলো অবশ্যই মাথায় রাখুন।

১.যে কাপড়/ টিস্যুতে হাতে লেগে থাকা গোশতের চর্বি মোছা হয়, এগুলো বাহিরের জীন শয়তানকে ঘরের প্রতি আকর্ষিত করে ও টেনে আনে৷ তাই এসব বস্তুকে ঘরে না রাখা বা ফেলে দেয়া। আর অবশ্যই হাতকে ভালোমতো হ্যান্ডওয়াশ/ সাবানের সাহায্যে পরিষ্কার করা।

২.হাদীসে এসেছে, "তাদের (জ্বীনদের) খাবারের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত একটি হচ্ছে, সেটা হলো ‘আদম’, ‘হাড়’, ‘হাড্ডি’। "

হাড়জাতীয় জিনিস তাঁরা খাবার হিসেবে গ্রহণ করে থাকে।তাই গোশত খাওয়াদ পর খাবার টেবিলে টেবিলে হাড়গোড় উন্মুক্ত অবস্থায় ফেলে না রাখা। আর ঘরে থাকা ডাস্টবিনে ফেললে পলিথিনে মুড়িয়ে ঢাকনা অবস্থায় রাখুন।

৩.খাবার গ্রহণের সময় বিসমিল্লাহ না পড়া হলে, সেই খাবারে শয়তান অংশগ্রহণ করে, ফলে সেই খাবার থেকে বরকত উঠে যায়। তাই গোশত খাওয়ার সময় অবশ্যই বিসমিল্লাহ বলা। ©

31/05/2025

একবার শুনেই অনেকের জীবনের পরিবর্তন হয়েছে

29/05/2025

আত্নার সপ্তম ময়লা:
দুনিয়ার মহব্বত
‘দুনিয়া’ শুধু ধন-সম্পদ ও সম্মান পাওয়ার ইচ্ছাকে বলা হয় না; বরং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত প্রত্যেক অবস্থায়ই দুনিয়ার অর্ন্তভুক্ত। দুনিয়ার মায়াই সকল গুনাহের মূল। দুনিয়ার কাজ-কারবার, স্ত্রী-পুত্র, বন্ধু-বান্ধব, জীব-জন্তু ইত্যাদি যে কোন বস্তুর সঙ্গে দিলকে আবদ্ধ করার নাম- “হুব্বে দুনিয়া” বা দুনিয়ার মহব্বত। আর ইলম, মা‘রেফাত এবং যাবতীয় নেক কাজ দুনিয়ার মধ্যে সংঘটিত হলেও আখিরাতের উদ্দেশ্যে করে বিধায় এক দুনিয়ার মহাব্বত বলে না। একে আখিরাতে মহাব্বত বলে।

আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “লোকদেরকে পরীক্ষার জন্য জাগতিক পদার্থকে পৃথিবীর সৌন্দর্যোপকরণরূপে সৃষ্টি করেছি; পরীক্ষা হবে, কারা এগুলির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পরকালকে বিনষ্ট করে আর কারা দুনিয়া হতে সামান্য পাথেয় সংগ্রহ করে পরকালের যাত্রাপথে গমন করে।”

মানুষের মধ্যে টাকা-পয়সার পাশাপাশি বিভিন্ন আসবাব আর জিনিসের সাথে মহাব্বত হয়ে থাকে। বাড়ী-ঘর, ক্ষেত-খামার, জমি-জমা, ফল-মূল, গাছ-পালা, পশু-পাখি, খনিজ পদার্থের প্রতিও মহাব্বত হয়ে থাকে। এমনকি মানুষের প্রতিও মানুষ আকৃষ্ট হয়। এসবকিছু মনের খায়েশ মিটানোর জন্য হয়। এ বিষয়ে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “যারা প্রবৃত্তিকে দমন করতে পেরেছে, বেহেশতই তাদের বাসস্থান।”

দুনিয়ার মহাব্বতের কারণে অহঙ্কার, শত্রুতা, শঠতা প্রভৃতি আত্নার রোগসমূহ উৎপন্ন হয়ে থাকে। দুনিয়ার মতো এমন স্বপ্নরাজ্যের গোলকধাঁধায় পরে মানুষ এমন আত্নহারা হয় যে, কোথা হতে এসেছে এবং কোথায় যেতে হবে, একথার খেয়াল তার মোটেই থাকে না। এমন কি অন্তর-বাহির সমস্তই দুনিয়ার জন্য উৎসর্গ করতেও দ্বিধাবোধ করে না। প্রকৃতপ্রস্তাবে কিন্তু দুনিয়া পরকালের পথের পাথেয় মাত্র। যেন মানুষ এই সম্বলের উপর নির্ভর করে পরকালের পথে মহাযাত্রা করতে সক্ষম হয়, এই উদ্দেশ্যেই দুনিয়া সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু দু:খের বিষয়, নির্বোধ লোকগণ দুনিয়াকেই চরম উদ্দেশ্য ভেবে আখেরাতের কথা সম্পূর্ণভাবে ভুলে গেছে।

পরোপারের যাত্রী

পরকালের যাত্রীদের অবস্থার মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে একটি উদাহরণ দিলে আশা করি বুঝে আসবে।

মনে করি, কতকগুলি লোক একটি জাহাজে আরোহণ করে কোথাও যাত্রা করলো। জাহাজটি দ্বীপের নিকট এসে কিছুক্ষণের জন্য থামলো। জাহাজের কাপ্তান যাত্রিদেরকে বললেন, “আপনারা দ্বীপে নেমে নিজেদের দরকারী কাজ সেরে নিতে পারেন। কিন্তু কাজ সেরে দ্রুত চলে আসবেন; শীঘ্রই জাহাজ ছেড়ে দেওয়া হবে।”

যাত্রিরা দ্বীপে নেমে নিজেদের কাজে কয়েক শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে গেল। এক শ্রেণীর বুদ্ধিমান লোক নিজেদের দরকারী কাজগুলি তৎপরতার সাথে সমাধা করেই জাহাজে ফিরে এলো। জাহাজ তখনও সম্পূর্ণ খালি থাকায় নিজেদের পছন্দ মতো ভালো প্রসস্থ আসন দখল করে বসলো। বলাবাহুল্য, এই সৌভাগ্যবান যাত্রীদের ভ্রমণপথ অতিশয় আরামের সাথে অতিবাহিত হলো।

অপর একদল দ্বীপের সুশীতল বায়ু সেবন, সুমধুর গান শ্রবণ এবং সুমিষ্ট ফল-মূল খাওয়ায় মত্ত হয়ে পড়লো। কিছুক্ষণ পরেই তাদের জ্ঞান হলো, হযতো জাহাজ ছাড়ার সময় হয়েছে। তখন তাড়াতাড়ি জাহাজের দিকে ছুটে এসে দেখলো, ভালো কোর আসন আর নেই কোন উপায় না পেয়ে নিকৃষ্ট ও সঙ্কীণ যায়গায় বসে পড়লো। তাদের ভ্রমণ-পথ যে অতি কষ্টে কাটবে তাতে সন্দেহের অবকাশ নাই।

আর এক শ্রেণীর লোক দ্বীপের বসন্তসুলভ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মোহে আকৃষ্ট হয়ে সেখানেই বিচরণ করতে লাগলো আর ফল-ফুল, মূল্যবান পাথর আর দামী-দামী জিনিস সংগ্রহে করতে লাগলো। ফলে জাহাজে ফিরতে দেরী হয়ে গেল। জাহাজে এসে দেখলো, নিজেদের সাথে থাকা সামান-পত্র রাখা তো দূরের বিষয় নিজেদের বসার আসন নাই। অবস্থা দেখে চিন্তায় পরে গেল। একদিকে পছন্দের জিনিস ফেলে দিতে মন চাইছে না আবার রাখার ও জায়গা নেই। ফলে খুব কষ্টে জাহাজের এক কর্ণারে অতি সঙ্কীণ ও নিকৃষ্টতম জায়গায় নিজের সাথে থাকা জিনিস মাথায় নিয়ে কোনমতে দাঁড়ালো। এখন অনুমান করা সহজ যে, তাদের সময় কি রকম কষ্টে কাটবে। মাথায় ভারি বোঝা, অথচ বসার যায়গা নাই। অতএব, নিশ্চয়ই তাদের কষ্টের পরিসীমা থাকবে না।

এই তিন শ্রেণীর লোক সুখে হোক বা কষ্টে, এরা অবশ্যই গন্তব্য স্থানে পৌঁছাবে এবং অবশ্যই একদিন তাদের ভ্রমণ-কষ্টের অবসানও হবে। কিন্তু আর এক শ্রেণীর লোক, দ্বীপের সৌন্দর্যে এমনিভাবে মত্ত ছিল যে, জাহাজের কথা, কাপ্তানের সাবধাবাণী এবং গন্তব্যস্থানের কথা আদৌ মনে রইলো না। বহুক্ষণ পরে অনিচ্ছা সত্ত্বেও জাহাজের নিকট এসে দেখে তিলমাত্র স্থানও খালি নাই। কিছুক্ষণ পরে জাহাজ ছুটে চললো, আর ঐ হতভাগারা আফসোসের সাথে সাথীদের দিকে তাকিয়ে রইলো। ফলে সন্ধ্যা হতেই দ্বীপের হিংস্র জন্তুরা এসে কোমল ও সুন্দর দেহগুলি খন্ড-বিখন্ড করে খেয়ে ফেললো।

দুনিয়ার লোকগুলির অবস্থাও এমন কয়েক ভাগে বিভক্ত। এখন নিজের বিচার করে দেখতে হবে, কে কোন শ্রেণীর।

দুনিয়ার মায়া ও এর অপকারিতা

যে ব্যক্তি আল্লাহকে চিনতে পেরেছে এবং দুনিয়ারও মূল কথা বুঝতে পেরেছে, সে ভালভাবে জানতে পেরেছে যে, আল্লাহর মহব্বত ছাড়া পরকালের স্থায়ী নেয়ামত লাভ হবে না। সে একথাও বুঝতে পেরেছে যে, আগুন ও পানি যেমন এক পাত্রে রাখা সম্ভব না, আল্লাহর মহব্বতের সাথে তেমনি দুনিয়ার মহব্বত এক হবে না।

আরো বুঝেছে, যখন দুনিয়াকে পিঠ দেখিয়ে প্রয়োজন মতো আসবাবের উপর খুশী থেকে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকে তখন আল্লাহর আসল ভালোবাসা পাওয়া যায়।

এমন বুঝ যার মধ্যে এসেছে আলহামদুলিল্লাহ। নতুবা শরী‘আতের দিকে দেখলে দেখা যায় কুরআনের প্রায় এক তৃতীয়াংশে দুনিয়ার মহব্বতের কুৎসা এবং এর অপকারিতার কথাই বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, “যারা আদেশ লঙ্ঘন করেছে এবং আখিরাতের চেয়ে দুনিয়াকে বেশী ভালোবেসেছে, তাদের স্থান জাহান্নাম।”

রাসূলে মকবুল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যারা পরকালের জীবনকে সত্য বলে ‍বিশ্বাস করা সত্ত্বেও ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়, তাদের অবস্থা দেখে বাস্তবিকই আর্শ্চয বোধ হয়।”

যারা দুনিয়াকে আসল-মকসুদ মনে করে উহা লাভ করতে চেষ্টা করে, তারা সর্বদাই অশান্তি ভোগ করতে থাকে। তাদের চিন্তার সীমা নাই। আকাঙ্ক্ষার সীমা নাই; অনুতাপেরও উপশম নাই।

অন্য এক হাদীসে আছে, একবার হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সাথী আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহুকে ডেকে নিয়ে একটি আবর্জনাময় যায়গায় গেলেন। সেখানে অসংখ্য মানুষের কঙ্কাল, ময়লা, পুরাতন কাপড় ইত্যাদি পরেছিল। হুজুর ﷺ বললেন, “আবু হুরায়রা, দেখো, দুনিয়ার পরিণাম-দশা দেখো! এই যে মাথার খুলিগুলি পরে আছে, এক সময় এগুলোতে কত রকমের উচ্চাকাঙ্ক্ষার ঢেউ খেলতো, কত প্রকার বুদ্ধি ঘুরপাক খেতো। আর এখন কেমন দুরবস্থায় পরে আছে। দুইদিন পর এদের কোন নিশানাই খুঁজে পাবে না; মাটির জিনিস মাটিতে বিলীন হয়ে যাবে। এই যে ময়লার স্তূপ দেখছো, সেগুলি কি বলতে চায়? মানুষ যে সুস্বাদু খাদ্যের জন্য সময় ব্যায় করেছে; ঐগুলি সেই লোভনীয় খাদ্যদ্রব্যেরই অবস্থা। কাল এর কত আদর ছিল কিন্তু আজ এর নাম নিতেও ঘৃণা হয়। এই যে পরিত্যক্ত পুরাতন কাপড়খন্ডগুলি বাতাসের সাথে উড়ছে এগুলিই একদিন মানুষের সখের ও আদরের পোশাক ছিল। এখন এইগুলো কি দুরবস্থা হয়েছে, স্বচোখেই দেখছো। আর এই কঙ্কালগুলি এক সময় তোমাদের পালিত পশুদের দেহ ছিল। তোমরা কত আদর করেই না পশুগুলি পালন করতে, হয়ত প্রাণের চেয়েও বেশী মমতা করতে। এখন এগুলো শোচনীয় পরিণামে উপস্থিত হয়েছে। হে আবু হুরায়রা! দুনিয়ার শোচনীয় পরিণাম দশার নমুনা দুনিয়াতেই তুমি দেখছো। এখন সহজেই অনুমান করতে পারো, পরকালে এর ফল কি হবে?! অতএব, পরিণাম চিন্তা করে এখনই তোমার কান্না করা উচিত।”

একদিন হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম দেখতে পেলেন পথে এক কুৎসিত বৃদ্ধা বসে আছে। বৃদ্ধাটি দুনিয়ার প্রতিকৃতি ছিল। হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তাকে চিনতে পেরে জিজ্ঞাসা করলেন, “হে বৃদ্ধা! তুমি এই বয়সে কয়জন স্বামী বরণ করেছো?” বৃদ্ধারূপিনী দুনিয়া উত্তর করলো, “অসংখ্য মানুষের সাথে আমার বিবাহ হয়েছে।” তিনি পুনরায় প্রশ্ন করলেন, “ তোমার স্বামীদের অবস্থা কি হয়েছে? তারা কি সকলেই মরে গেছে, না তোমাকে তালাক দিয়েছে?” বৃদ্ধা বললো, “আমাকে তালাক দিবার সাহস কারো কি হতে পারে? আমিই তাদেরকে জাহান্নামে পাঠিয়েছি।” হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এটা শুনে নিতান্ত দু:খিত হলেন এবং মুখ খুলে বললেন, “হে মায়াবিনী! তোমার বর্তমান স্বামীদের উপর শত ধিক্কার! তারা কি তোমার আগের স্বামীদের পরিণাম দেখেও শিক্ষা পাচ্ছে না?”

মুসলমানগণ! সাবধান, দুনিয়া নিতান্ত বিশ্বাঘাতক। তার চাটুকারিতা ও মায়ার কথা কখনো ভুলা যাবে না। ‘হারূত-মারূতে’র যাদু থেকেও দুনিয়ার যাদু ভয়ানক! যদি পুরাতন জীর্ণ কাপড় পরে এবং নিতান্ত নিম্মমানের খাবার খেয়ে জীবন কাটাতে হয় তবু একদিন মারা যেতে হবে, কিন্তু পরকালের অমূল্য রত্নগুলির একটি কণিকাও যদি হাতছাড়া হয়, তার জন্য অনুপাতের সীমা থাকবে না। সুতরাং যাতে পরকালের রত্ন লাভ হয়, সে বিষয়ে চেষ্টা করাই সর্বতোভাবে কর্তব্য।

শয়তানের একটি ফাঁদ

কোন কোন লোক এমন ধোঁকায় আছে যে, আমাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দুনিয়ার কাজে মগ্ন থাকলেও আত্না কখনও দুনিয়ায় লিপ্ত হয় না। সর্বদা আল্লাহর দিকেই আমাদের মন থাকে। এটাও শয়তানের একটি ফাঁদ।

পানিতে চলতে গেলে পা ভিজবেই। কেউ যদি একবার দুনিয়ার পিছু নেই তার আর রক্ষা নাই। প্রয়োজন অতিরিক্ত দুনিয়া লাভ করতে গেলেই নানা কাজে ব্যস্ত হতে হবে তখনই নিজের দীনের ক্ষতি হবে। সমুদ্রের লবণাক্ত পানি পান করলে যেমন উত্তরোত্তর পিপাসা বেড়েই চলে; দুনিয়ার মায়ায় ঠিক সেই রকম। দুনিয়ার ধনসম্পদ যতই লাভ হয়, ততই আকাঙ্ক্ষা বাড়তে থাকে। মাদক দ্রব্যের নেশার মতো দুনিয়ার নেশা। দিন দিন বেড়েই চলে। দুনিয়া বিষধর কাল সাপের মতো। সাপের বাহিরের স্পর্শ খুবই কোমল এবং দেখতেও মনোরম, কিন্তু এর ভিতর এমন তীব্র বিষ লুকিয়ে আছে, যা মুহূর্তে প্রাণনাশে করতে পারে। দুনিয়ার অবস্থাও ঠিক এমন।

দুনিয়া প্রবাসের ঘর

একদিন দুনিয়াকে ছেড়ে যেতেই হবে; সুতরাং এটা আয়ত্তে আসলে খুশি হওয়া আর না আসলে চিন্তিত হওয়া নিতান্ত বোকামি। দুনিয়ার ধনদৌলতকে শান্তির উপকরণ বলে মনে করাও নির্বুদ্ধিতা। দুই দিনের মধ্যে যে যায়গা ছেড়ে যেতে হবে, সেখানে কি কখনও শান্তি হতে পারে?

যেমন, কোন এক অতিথিপরায়ণ ব্যক্তি বাড়ী-ঘর ভাল মতো সাজিয়ে মেহমানদেরকে দাওয়াত করে আনলো। তাদেরকে আদর-যত্ন সহকারে বসিয়ে তাদের সামনে আতর-দান, ফুলের ডালা এবং আরও নানাপ্রকার সুগন্ধি দ্রব্য রাখলো যেন সবাই সেখান থেকে সুগন্ধ নিয়ে ভোগ করতে পারে। কিন্তু কোন মেহমান যদি ঐ জিনিসগুলো নিজের হাদিয়া মনে করে ব্যাগে ভরতে থাকে তবে নিশ্চয়ই তার কান্ড দেখে উপস্থিত সবাই হাসবে। এতেও যদি মূর্খ লোকটির বুঝ না আসে, তবে মেজবান শক্তি প্রয়োগ করে জিনিসগুলো তার নিকট থেকে কেড়ে নিয়ে সবাইকে ব্যবহার করতে দিবে। তখন তার লজ্জায় মাথা কাটা যাবে।

ঠিক তেমনি দুনিয়া হলো আল্লাহর ঘর। দুনিয়ার সমস্ত লোক আল্লাহর মেহমান। দুনিয়া কারো স্থায়ী সম্পত্তি না; এটা আল্লাহ তা‘আলা কাউকে হাদিয়াও দেন নি। এখানের বস্তুসমূহ মেহমানের মতো ভোগ করতে দেয়া হয়েছে। মুসাফিরের মতো সাময়িক সময়ের জন্য দুনিয়া নামক মুসাফিরখানার আসবাব ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। নিজের জিনিস মনে করলে মালিক শক্তি প্রয়োগ করে বের করে দিবেন।

কিতাব: ইসলাহী সবক

29/05/2025

মৃত্যু আসবে যখন তখন...
প্রস্তুতি নিব কখন...?
সজাগ যদি না হয় এখন...?

Address

Fulbaria

Telephone

+8801833512653

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মামুন বিন মুখলেছ ঢাকা posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share