R.R media

R.R media Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from R.R media, Digital creator, Fulbaria.

হৃদয় জয়ে প্রয়োজন সুন্দর আচরণ,,, R.R media তার একটি জ্বলন্ত উদাহরণ,,, আপনাদের গল্প ও বিনোদন, সাংস্কৃতিক তে মাতিয়ে রাখার দায়িত্ব আমাদের
ধন্যবাদান্তে
নাসিম উদ্দিন রিফাত
পরিচালক R.R media

 #মায়ার_সংসার  #পর্বঃ৪রেজওয়ানা_আসিফাসুমন মিষ্টির কথা বলতেই মায়ার মনে পরলো কালকের কথা।ভাবতে ভাবতে বললো,-হ্যা..... মনে পরে...
13/07/2025

#মায়ার_সংসার #পর্বঃ৪
রেজওয়ানা_আসিফা
সুমন মিষ্টির কথা বলতেই মায়ার মনে পরলো কালকের কথা।
ভাবতে ভাবতে বললো,
-হ্যা..... মনে পরেছে। কিন্তু ওই মিষ্টি কীসের ছিলো? তুমি বাড়ি আসার আগে তো কিছু জানতে না আর জানলেও ওই বাড়িতে ওই সময় মিষ্টি আনার প্রশ্নই উঠে না।
-হ্যা। ওই মিষ্টি নিয়েছিলাম কারণ আমি নতুন একটা চাকরি পাই।
নতুন চাকরির কথা শুনে মায়ার চোখ জল জল করে উঠলো। চোখের কোনে পানিও এসেছে।
-কীভাবে পেলে? কোথায় পেলে কিসের কাজ? বলোনা।
-আগে শান্ত হও তারপর বলছি।
-আমি শান্তই আছি। তুমি বলোতো।
-কীভাবে পেলাম সেটা পরে বলি। আগে তোমার একটা বিচার আছে।
-কী বিচার?
-আমার মেয়েটা এক টুকরো মাংস ভাগে পেতোনা সেই কথা তুমি আমাকে জানালে না? কীভাবে পারলা? টেবিলে সবাই মাংস খায়। আর আমার মেয়ের প্লেটে এক টুকরো মুরগির গিলা পরে ছিলো। এইজন্য আমি বাড়ি থেকে বের হলে তুমি ওকে খাবার দিতে?
আমি চুপ করে আছি। কী জবাব দিবো? ছোট থেকেই ঝগড়া ঝাটি একদম পছন্দ না আমার। পছন্দ না বলতে এসবে ভয় পাই আমি। কখনো কেউ একটু জোরে কথা বললেও কেদেঁ দিতাম। এইজন্য কখনো কারো সাথে লাগতাম না। আমার মা সব সময় আমার কাছে কাছে থাকতো। বড়ো বাড়ির মেয়ে ছিলাম খুবি আদরের কষ্ট কী চোখে দেখিনাই। কখনো কারো সাথে ঝগড়া করার প্রয়োজনও হয় নি। তাই টেবিলে সবাই খেতে বসলে আমি মেয়েকে পরে খেতে দিতাম। ও মাংস চাইবে, মাছ চাইবে। ওর বাবা দেখলে কষ্ট পাবে ঝগড়া হবে। ওই প্রেশার টা আবার আমার আর আমার মেয়ের উপর পরতো এইজন্য কখনো ওকে বলিনি কিচ্ছু।
-তুমি কোনো কথা বলছো না কেনো মায়া?
-সে পুরানো কথা বাদ দাও না। বলোনা কী চাকরি হয়েছে? আর কোথায়?
-শোনো মায়া কথা ঘুরাইয়োনা। তুমি আমার নিষ্পাপ মেয়েটাকে যেই কষ্ট দিছো তা বলার মতোনা।
-আচ্ছা মাফ করো। তোমার মেয়েকে আর কষ্ট দিবোনা।
-এবার বলো কী চাকরি হয়েছে
-তোমার মনে আছে? একবার বলেছিলাম একজন অনেক বড়লোক কাস্টমার এসেছিলো। তার স্ত্রীর দাতে সমস্যা হইছিলো তাকে নিয়ে।আমি চিকিৎসা দেওয়ার পর তার স্ত্রী সুস্থ হয়। তারপর আমাকে ৫ হাজার টাকা দিয়েছিলো খুশি হয়ে। তোমার মনে আছে?
-হ্যা মনে আছে। ওই টাকা দিয়ে মেয়ের জন্য দুধ এনেছিলে। তা নিয়ে মা কতো ঝামেলা করেছিলো। ভুলবো কীভাবে। আমার মেয়ের কপালে সেই দুধ টুকুও জুটতে দেয়নি।।
- তারপর আবার একবার দোকানে আসে। আমার সব কথা জিগ্যেস করে। আমিও পরিস্থিতি খুলে বলি। বলার পর বলে,
-আমাকে আগে বলবে তো?
আমি বললাম,
আপনার ঠিকানা তো নেই আমার কাছে।
একটা কার্ড দিয়ে বললো,
-কালকে তোমার সি ভি নিয়ে এখানে এসো।
-তোমাকে না বলেই আমি ওইদিন ওখানে গিয়েছিলাম। প্রায় এক সপ্তাহ আগের কথা এটা। ওখানে যাওয়ার পর ম্যানেজারের চাকরি টা আমাকে দেয়। বেতন ধরে ৩০ হাজার টাকা।
-কিন্ত এক বারে দেখাতেই এতো টাকা বেতন ধরে ম্যানেজার পদের চাকরি, ব্যপার টা সুবিধার লাগছে না আমার। এই অফিস কোথায়?
-একদিনের না। ওনার স্ত্রীর অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় ওনি খুব ভয় পেয়ে ছিলেন। ৮ বছরের প্রেমে বিয়ে হয়। নিজের প্রিয়তমা কে খুব ভালোবাসে। আমার চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার কারণে খুবই খুশি হয়। এর পর থেকে মাঝে মাঝেই এখানে আসতো। গল্প করতো। তারপর ওইদিন আমার কথাও জিগ্যেস করলো। এর পরেই সব হলো।
-কিন্ত এই কথা যদি বাড়ির লোক জানে তাহলে কী বলবে জানো? বলবে এই চাকরি হয়েছে। সংসারে টাকা দিতে হবে তাই চলে এসেছি।
-বললে বলুক যা বলার বলুক। বিশ্বাস করো মায়া ওই বাড়ির প্রতি একটু মায়া নেই আর আমার। বাবা মার প্রতি সন্তানের যেই ভালোবাসা থাকে ওই ভালোবাসা যে নেই আমার মধ্যে।
ওই চাকরির জন্যই মিষ্টি নিয়ে গেছিলাম কাল। কিন্তু যখন মা তোমার কথা বললো খুব খুশি লাগছিলো। পরে যখন খাওয়াবো কী পরাবো কী বলে অনেক খোটা দিচ্ছিলো খুব কষ্ট হচ্ছিলো। ওইদিনি মনে মনে বলি চলে যাবো এই বাড়ি থেকে। সকালে যখন মেয়ের সাথে বড়ো ভাবীর ওই রকম ব্যবহার দেখছিলাম তখন নিজেকে ঠিক রাখতে পারছিলাম না। দোকানে গিয়েও মেয়ের সেই কথাটা কানে বাজছিলো "আমাকে মাংস দেও মা" তাই বাধ্য হয়ে বিকেলেই চলে আসলাম বাসায়।
-যা হয় ভালোর জন্য হয়। সৃষ্টিকর্তা সব কিছু ভালোর জন্যই করে। (পেছন থেকে বললো রিফাত)
-এখন চল খেয়ে নিবি। আয়শা যা রান্না করে তা খাওয়ার উপযোগী হয় না। বাইরে থেকে তাই খাবার এনেছি। মৌ(মায়ার মেয়ে) খেয়ে ঘুমিয়েছে।
-এ মা এতো কথা বলতে বলতে আমার মেয়ের কথা ভুলেই গেছি।
-আমি মৌকে ঘুম পারিয়ে দিয়েছি ভাবি। আপনারা এখন খেয়ে নিন।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে সুমন একবার দোকানের দিকে গেলো সেখানে যেতেই তাদের বাড়ির খুব কাছের একজনের সাথে দেখা কথা হলো। কথায় কথায় সে বললো,
-সুমন ভাই আপনি নাকি ভাবি আর মৌরে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেছেন?
-হ্যা ভাই। কী করবো বলো। ওই মেয়েটাও তো একটা মানুষ। দুনিয়ার সব কাজ ওরে দিয়ে করায়। তারপর একটু ভালো মন্দ খাবার মাসেও খেতে পারে না। কীভাবে নিজের স্ত্রীর উপর এতো অনাচার সহ্য করি বলো?
-সে ঠিক আছে কিন্তু ভাবির সাথে তো সব সময়ই এমন করতো যখন থেকে এনেছেন। তবে হঠাৎ নেওয়ার কারণ টা বুঝলাম না।
- কী খাবো কোথায় যাবো। কোথায় থাকবো এই সব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তোমার ভাবির উপর ওরা যেই আনাচার অত্যাচার করেছে। এই শাস্তি যদি সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেয়। আমি তো জ্বলে পুরে ছারক্ষার হয়ে যাবো।
-যা করেছেন ভালোই করেছেন। ওই বাড়িতে তো এখন মহা ঝামেলা শুরু হয়েছে। মা আমাকে আপনাকে আরো আগেই ফোনে জানাতে বলেছিলো, আপনার নাম্বার টা আমি হারাই ফেলছি তাই বলতে পারিনি।
-কী ঝামেলা শুরু হয়েছে?
-বাড়ির কাজ কে করবে এই নিয়ে। বড়ো ভাবি মেঝো ভাবিকে বলে মেঝো ভাবি সেঝো ভাবিকে বলো। সেঝো ভাবি আবার খালাকে বলে। সব কাজ পরে আছে। সবাই বাইরে থেকে খাবার এনে খায়। কারো হাতের নখ নষ্ট হয়ে যাবে। কারো হাত দেখতে খারাপ হয়ে যাবে। কারো স্বামী সংসারে টাকা বেশি দেয় তাই সে কাজ করবেনা। আবার খালার কোমড়ে ব্যাথা।
সব মিলিয়ে সবাই পরেছে বিপদে। আবার সেঝো ভাবিতো বলেই ফেলেছে যে, ছোট ভাবির সাথে এতো খারাপ ব্যবহার করা ঠিক হয় নি। তাদের জন্য নাকি চলে গেছে ছোট ভাবি।

-বুঝোক এখন। কেউ থাকলে আমরা তার মূল্য দিতে জানিনা। এখন যাতে ঠেলা সামলায়। কি হতো ওর হাতে হাতে একটু সাহায্য করলে। তাহলে তো আর আজ এইদিন দেখতে হতোনা।
-এখন ভাইয়া দোকান কী করবেন?
-এইতো আস্তে আস্তে সব নিয়ে যাবো দুই একদিনের মধ্যে। মাল পত্র গুলোই নিতে একটু কষ্ট হবে। ঔষধ তেমন নেই। কারণ দুই মাস ধরে দোকানে ঔষধ উঠাইনি।
-ঠিক আছে সাহায্যের দরকার হলে বলবেন। আর আপনার নাম্বার টা একটা মেছেজ করে পাঠাই দিয়েন ওইদিকের খবর জানাতে পারবো।
-আসলে ভাই ওই দিকের খবর জানার কোনো ইচ্ছে নেই আমার। তারপরও নাম্বার পাঠাবোনে আমি। আজকে আসি তাহলে। ভালো থেকো ভাই।
-আপনিও ভালো থাকবেন। মিস করবো সুমন ভাই।
সুমন মুচকি হেসে চলে আসলো।

এই গল্পের সব গুলো পর্বের লিংক নিচে কমেন্ট বক্সে দেওয়া আছে পড়ে নিবেন পাঠক মহল

চলবে...,........................................

কেমন আছেন সবাই। পর্ব ছোট। এর পরের পর্ব ইনশাআল্লাহ বড়ো করে দিবো। ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

 #বেহালার সুর  #শারমিন আঁচল নিপা #পর্ব- ২৪আয়েশার মুখের এক পাশে জ্বলুনি শুরু হলো। ল্যাবের সবাই হতচকিয়ে আয়েশার দিকে তাকাল।...
12/07/2025

#বেহালার সুর #শারমিন আঁচল নিপা
#পর্ব- ২৪
আয়েশার মুখের এক পাশে জ্বলুনি শুরু হলো। ল্যাবের সবাই হতচকিয়ে আয়েশার দিকে তাকাল। সাথে সাথে শিক্ষকরা আসলো ল্যাবে। আয়েশার অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেল। আয়েশা ব্যাথায় যন্ত্রণায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে।

এদিকে আরাব একটা ফুলের ব্যুকে নিয়ে আয়েশার জন্য অপেক্ষা করছে। আয়েশাকে আজকে একটা সারপ্রাইজ দিবে সে। আজকে তাদের বিবাহের দুটো বছর পূর্ণ হয়েছে। দেখতে দেখতে কীভাবে দুটো বছর পার হয়ে গেল সেটাই সে ভাবছে। সুখ, দুঃখ মিলিয়ে তাদের এ সংসার। আয়েশার প্রতি তার ভালোবাসা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আয়েশা হয়তো আজকের সারপ্রাইজটায় সবচেয়ে বেশি খুশি হবে।

আরাবের ফোনে কল বেজে উঠল। আরাব কল ধরতেই আয়েশার মিস সাবরিন বলে উঠল

"আরাব সাহেব কষ্ট করে একটু হাসপাতালে আসুন। আয়েশার অবস্থা ভালো না। বিস্তারিত পরে বলব।"

আরাবের বুকটা ধুক করে উঠল। দ্রূত পরিপাটি হয়ে বের হলো সে। আরাবের সাথে তীব্র আর লতাও এসেছে। কারণ আরাবকে একা ছাড়া বিপদজনক।

পুরো রাস্তা আরাবের অস্থিরতায় কাটল। কয়েকদিন পর আয়েশার ফাইনাল পরীক্ষা। এ সময় কী এমন হলো যে আয়েশাকে হাসপাতালে নিতে হলো সেটাই ভাবছে সে। সকালে পুরোপুরি সুস্থ ছিল। এখন কী এমন হলো এসব ভাবনা তার মাথা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই আরাব হাসপাতালে পৌঁছালো। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারলো আয়েশার মুখে সালফিউরিক এসিড মারা হয়েছে। আয়েশাকে ইমারজেন্সি সার্জারি করা হয়েছে। তবে মুখের এক পাশ ঝলসে গেছে। ভাগ্য ভালো সেজন্য এক পাশের চোখের কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে গালের এক পাশ পুড়ে গেছে। সেটা এখন রিকোবার করা সম্ভব না। অনেকগুলো নার্ভ আছে সেখানে সেজন্য ভবিষ্যতে এটা ঠিক করা যায় কি'না বলা যাচ্ছে না।

আরাব কথাটা শুনে চুপসে গেল। শরীরটা তার কাঁপছে। এমন একটা দিনে এত বড়ো দুঃসংবাদ শুনবে সে ভাবতেই পারছে না। নিজেকে যতই সামলানোর চেষ্টা করছে ততই সে তলিয়ে যাচ্ছে। কলিজা মোচড় দিচ্ছে তার। তবুও নিজের মনে সাহস জুগিয়ে আয়েশার কাছে গেল। আয়েশাকে বেডে দেওয়া হয়েছে।

আরাব আয়েশার দিকে তাকিয়ে লক্ষ্য করলো আয়েশার মুখের অর্ধেক অংশ ব্যান্ডেজ করা। আজকে আরাব নিজের চোখের দৃষ্টি ফিরে পেয়েছে। তাই চেয়েছিল আয়েশাকে এটা বলে বড়ো সারপ্রাইজ দিবে। তবে জীবনের মোড় সব গুড়িয়ে দিল। আজকে আয়েশার এ কষ্টের দিনে আরাবের দৃষ্টি ফিরে পাওয়ার কথা বললে আয়েশা আরও কষ্ট পাবে। কারণ কোনো মেয়েই চায়বে তার স্বামী তার বিভৎস রূপ দেখুক। যদিও আরাব আয়েশাকে ভালোবাসে তার ত্যাগ, বিচক্ষণতা আর বুদ্ধিমত্তা দেখে তবুও আয়েশাকে দৃষ্টি ফেরার কথা বললে সে একটা অনিশ্চয়তায় ভুগবে। আরাবকে দেখে আয়েশা বেড থেকে উঠে আরাবের দিকে তাকিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল

"আমার সব শেষ হয়ে গিয়েছে। নিজেকে একদম ছন্ন ছাড়া লাগছে। আমি আপনাকে এ মুখ কীভাবে দেখাব? আমার গাল যে পুড়ে গেছে। আয়ান নামক জানোয়ারটা আমার জীবন শেষ করে দিল। আমি এখন কী করব? কীভাবে বাঁচব?"

আরাব আয়েশার হাতটা ধরে বলল

"আয়েশা বাঁচতে হয় রূপ দিয়ে নয় বুদ্ধিমত্তা আর বিচক্ষণতা দিয়ে৷ আর বাকি রইল আমাকে মুখ দেখাবে কী করে। আমি তো চোখেই দেখি না। আমার চোখে আগের আয়েশায় তুমি। কল্পনায় তোমায় যেভাবে এঁকেছি তুমি সেভাবেই থাকবে আয়েশা। আর যে তোমার এ হাল করেছে তাকে আমি ছাড়ব না। আয়েশা ভেঙে পড়ো না। নিজের জীবনের সাথে স্ট্রাগল করেই বাঁচতে হয়। তোমার, হাত আছে পা আছে, চেহারাও আছে। শুধু চেহারার একটা দাগ পড়েছে। তুমি শুকরিয়া আদায় করো আর তাদের দিকে তাকাও যাদের হাত নেই, পা নেই। আমার দিকে তাকাও আমার চোখের দৃষ্টি নেই। আমি চাইলেই দুনিয়ার রঙ দেখতে পারি না। সামনে পরীক্ষা তোমার । সে চিন্তা মথায় রেখে মনোবল নিয়ে দ্রূত সুস্থ হওয়ার চেষ্টা করো। নিজের বাবার স্বপ্নের কথা ভুলে যেও না। আর আমি তোমাকে একটা সময় পর বিদেশে নিয়ে মুখে প্লাস্টিক সার্জারি করে হলেও ঠিক করিয়ে দিব।"

আরাবের কথায় আয়েশার একটু হালকা লাগল। সত্যিই তো আরাব চোখে দেখতে পারে না৷ আর তার সকল সৌন্দর্য প্রদর্শনের একমাত্র মানুষ হলো আরাব। বাকি সবাই তো তার সৌন্দর্য উপভোগের অধিকার রাখে না। আর চেহারা দিয়ে তো বিশ্ব জয় করা যায় না। একমাত্র বুদ্ধিমত্তা দিয়েই বিশ্ব জয় করা যায়। আয়েশা আরাবের হাতটা শক্ত করে ধরে বলল

"আমি এ সামান্য আঘাতে পিছিয়ে যাব না। আমি আমার বাবার স্বপ্ন পূরণ করব। আপনার মুখ আলোকিত করব। আমার সন্তান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন আমাকে নিয়ে গর্ব করে সেভাবেই নিজেকে গড়ে তুলব। আপনি কখনও আমাকে ছেড়ে যাইয়েন না। কখনও যদি দৃষ্টি ফিরে পেয়ে আমার এ কুৎসিত চেহারাটা দেখেন তখনও এভাবে ভালোবেসে পাশে থাইকেন। এভাবে আগলে রাইখেন।"

আয়েশার কথা শুনে আরাবের চোখ থেকে টুপ করে অশ্রু ফোঁটা আয়েশার হাতে পড়ল। আরাব কাঁদতে কাঁদতে উত্তর দিল

"হে রমণী কতটা ভালোবাসি অন্তর থেকে যদি বুঝতে তাহলে এ অনিশ্চয়তার কথা বলতে না। সূর্যের আলোয় যেমন পৃথিবী শক্তি পায় তেমনি তোমার কণ্ঠের সুর আমার শক্তি জোগায়। তুমি আমার একমাত্র অবলম্বন যাকে নিয়ে আমার শেষ বয়সটা পারি দিতে চাই। অন্ধকার গহীন পথ পারি দিয়ে তোমাকে নিয়েই আমি দু চোখ ভরে আলো দেখতে চাই। তোমার জন্য সহস্র বছর আমি বাঁচতে চাই। তোমাকে পেয়ে আমার অপূর্ণ জীবন পূর্ণ। কালো অতীত নিশ্চিন্হ করে তোমাকে নিয়ে আলোকিত ভবিষ্যতে গড়তে চাই। তুমি আমার চাওয়া, তুমি আমার পাওয়া, তুমিই পূর্ণতা তুমি আমার শুধু অর্ধাঙ্গিনী নও তুমি আমার বাঁচার অবলম্বন।"

আরাবের কথা শুনে আয়েশা কেঁদে দিয়েও নিজেকে সামলে নিল। আয়াশাকে রিলিজ দিবে সাতদিন পর। আরাব আয়েশার কেবিন থেকে বের হলো। কেবিনে লতাকে রেখে গেল। লতার দিকে আয়েশা তাকিয়ে বলল

"আমাকে দেখলে তোর অস্বস্থি হবে না?"

লতা কপাল কুচকে বলল

"অস্বস্থি কেন হবে?"

"এই যে আমার মুখটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাই।"

"আপা কী বলেন এসব? আপনার চেহারা দেখে কী আপনাকে সম্মান করি? সম্মান ব্যাবহারে হয় চেহারায় না আপু। এসব বলবেন না। আপনি আমার কাছে আগে যা ছিলেন এখনও তাই।"

আয়েশা দীর্ঘ শ্বাস ফেলল। এদিকে আরাব কেবিন থেকে বের হয়ে তীব্রকে বলল

"যতটা সম্ভব আয়ানের বিরুদ্ধে স্টেপ নাও। নিজের হাতে কিছু করবে না৷ আয়েশাকে আমি কথা দিয়েছিলাম জীবনে কখনও আর নিজ হাতে অন্যায় করব না। তাই যা করার আইনী প্রসেসে করো। ওকে গ্রেফতার করাও। আর উকিল দিয়ে এমনভাবে ধরাও যাতে করে জেলের বাইরে বের হতে না পারে।"

তীব্র হালকা গলায় বলল

"স্যার আপনি বলার আগেই তাকে পুলিশ ধরেছে। বাকি যা করা লাগে আমি করছি।"

সাতটা দিন দেখতে দেখতে কেটে গেল। আজকে আয়েশার মুখের ব্যান্ডেজ খোলা হয়েছে। আয়েশার চেহারাটা দেখে আরাবের ভেতরটা কেঁপে উঠল।।তবুও নিজেকে স্বাভাবিক রেখে বুঝাল সে কিছুই দেখছে না। তাই কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে না সে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আয়েশাকে নিয়ে সরাসরি বাসায় চলে এসেছে সে।

বাসার সকল আয়না গুলো আগেই আরাব ঢেকে রেখেছিল৷ যাতে করে আয়েশা তার মুখ দেখতে না পারে। তবে আয়েশা ওয়াশ রুমে গিয়ে মুখ ধুতে গিয়ে আয়নার কাপড়টা সরিয়ে নিজেকে দেখে জোরে চিৎকার দিয়ে বেঁহুশ হয়ে পড়ে গেল।

ফেসবুকে পরিচয় হওয়া এমন কাউরে দেখান যার সাথে বসে ১কাপ চা খাওয়ার তিব্র ইচ্ছে!💙🌸
12/07/2025

ফেসবুকে পরিচয় হওয়া এমন কাউরে দেখান যার সাথে বসে ১কাপ চা খাওয়ার তিব্র ইচ্ছে!💙🌸

 #তুই_আমার_নিঃস্বাশে_বাঁধা _রিয়া_আফরোজ ্ব ১৯   'আজ সারাদিন কেটে গেলো কেয়াকে দেখা যায়নি। তিহানের মনটা কেমন করছে। তিহান ভা...
12/07/2025

#তুই_আমার_নিঃস্বাশে_বাঁধা _রিয়া_আফরোজ
্ব ১৯


'আজ সারাদিন কেটে গেলো কেয়াকে দেখা যায়নি। তিহানের মনটা কেমন করছে। তিহান ভাবছে কেয়ার রুমে যাবে সেই সকালে কেয়াকে এক পলক দেখেছিল তাও কেমন অদ্ভুত লাগছিল ওকে। এখন কি একবার যাবো কেয়ার রুমে? না থাক রাত হয়েছে এখন যাওয়াটা ঠিক হবে না হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে।

'তাও তিহানের মন মানছে না অবশেষে তিহান কেয়ার রুমের উদ্দেশ্য বের হয়। একটু সামনে গিয়ে দেখে কেয়ার রুমের দরজা খোলা। এতো রাতে দরজা খোলা ব্যাপার কি? তিহান আস্তে আস্তে কেয়ার রুমে প্রবেশ করে। কেয়া কোথাও নেই বাথরুমেও প্রবেশ করে দেখে সেখানেও নেই। কোথাও কেয়ার দেখা মেলে না। তিহান এইবার চিন্তিত। এতো রাতে মেয়েটা কোথায় গেলো। তিহান পাগলের মতো সব জায়গায় খুঁজছে। কারণ গ্রামে ২ দিন ধরে প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তিহান এইবার পুরো বাসা খুঁজে নিচে যায় কিছুদূর গিয়ে দেখে একটা মেয়ে কেয়ার মতো মেরুন কালারের থ্রিপিস পড়া বাগানের কাছে পুকুর পাড় পড়ে আছে। তিহান দৌড়ে যায়।কাছে গিয়ে কেয়াকে তুলে তার কোলে মাথা রেখে শুয়ায়। কেয়া, কেয়া কি হয়েছে তোর? এই পাগলি চোখ খুল কি হয়েছে তোর? কিছুক্ষণ পর কেয়া মিটিমিটি তাকিয়ে বলে ছুঁবেন না আমায় আপনি। দূরে যান আমার থেকে।

'কি বলছিস তুই এইসব। কি হয়েছে তোর। বাসা থেকে এখানে এলি কীভাবে।

'ঝি,,,ঝিমি নিয়ে এসেছে। আপনি ঝিমির সাথে প্রেম করেন তাই না?নোংরা পুরুষ একটা ছুঁবেন না আমায়।সকালেও দেখলাম আপনি জিসার সাথে হেঁসে কথা বলছেন।আর ঝিমির সাথে প্রেমও করেন। আর কতো মেয়ে লাগে আপনার। লজ্জা করে না। তিহান এইবার চর বসিয়ে দেয় কেয়ার গালে।কি বলছিস তুই এইসব?তোর মাথা ঠিক নেই কেয়া কি আবোল তাবোল বকছিস। আর ঝিমি তোকে বাহিরে নিয়ে এসেছে তাই না কি খাইয়েছে তোকে।

'কেয়া হাউমাউ করে কান্না করে বলে সরে যান আপনি ছুঁবেন না আমায়।

'কেয়া পাগলামি করিসনা। তোকে ওই মেয়েটা কি খাইয়েছে তুই নিজের মাঝে নেই।

'ঝিমি বলেছে আপনি ঝিমিকে ভালোবাসেন অথচ আমার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিল বলে আপনি সেইদিন রাতেই দেশ ছাড়েন। কেন এমন করলেন? ওইসব মেয়েদের মাঝে কি আছে যা আমার মাঝে নেই। আপনি আসলেই একটা নোংরা পুরুষ চরিত্রহীন পুরুষ একটা।

'কেয়া,,,,,,,,,,,,,,,,

'হ্যাঁ থামলেন কেন মারুন ,মারুন আমায়।

'কেয়া তুই নিজের মাঝে নেই বাসায় চল।

'না যাবো না আমি।

'তিহান এইবার জোড় করে কেয়াকে কোলে তুলে নেয়। তারপর বাসায় এনে কেয়ার রুমে এসে বিছানায় শুয়ে দেয়।কপালে হাত দিয়ে দেখে জ্বর ও এসেছে কেয়ার গায়ে। তবে ভেজা কাপড়টা চেঞ্জ করবে কীভাবে? এতো রাতে সবাইকে ডাকটা কি ঠিক হবে। এমনি এতো বড় কান্ড ঘটে গেছে। তিহান কেয়াকে হাতে ধরে হালকা ঝাঁকায়।কেয়ার কোনো শব্দ নেই। তারপর তিহান বাধ্য হয়ে কেয়ার উরনাটা নিজের চোখে বেঁধে নেয়।তারপর কেয়ার উদেশ্য বলে ক্ষমা করে দিস আমায় মায়াপরী। তোর যে ঠান্ডা লেগে যাবে। এমনি গায়ে এতো জ্বর। তারপর তিহান কেয়ার কাপড় চেঞ্জ করে নতুন একটা থ্রিপিস পরিয়ে দেয়।এরপর কেয়াকে কাঁথা মুড়ি দিয়ে তিহান ঝিমির উদ্দেশ্য রওয়ানা দেয়।

'ঝিমির রুমের দরজায় এক লাথি দিতেই খুলে যায়। তিহানের এইভাবে আগমন দেখে ঝিমি ভয় পেয়ে যায়। এই মেয়ে কি খাইয়েছো তুমি কেয়া কে?

'আ,,,,আপনি? আসুন না বসুন এখানে।

'আমি বসতে আসিনি কি খাইয়েছে তুমি?

'ক,,,কই কাকে কি খাইয়েছি!

'নাটক আমার একদম পছন্দ না। সোজাসুজি বলো নয়তো তোমার আজ কি হবে তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।

'আমি কিছু করিনী। বিশ্বাস করুন।

'তিহান এইবার রেগে চোখ লাল করে ঝিমির উদ্দেশ্য এগিয়ে যায়।

'বলছি বলছি। তারপর একটা মেডিসিনের বোতল দেখিয়ে বলে এইটা খাইয়েছি। তিহান ঝিমির গালে এক থাপ্পড় বসিয়ে বলে কি উদ্দেশ্য তোমার? একটা মেয়ের ক্ষতি করতে লজ্জা করলো না তোমার?

'ঝিমি কান্না করে বলে আমি এতোসব বুঝিনা আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনি সারাক্ষণ ওই মেয়ের পিছু পিছু থাকেন যা আমার সহ্য হয় না।

'তিহান এইবার হাত উপরে করতেই ঝিমি চোখ খিঁচে ফেলে।

'বেঁচে গেলে আজ মেয়ে বলে। পুরুষ হলে আজ যে তোমার কি অবস্থা করতাম আমি। আরে তুমি জানো আজকে কি হয়ে যেতো। একটা মেয়ে রাস্তায় পরে ছিল। গ্রামের এই অজানা জায়গায়।যদি কিছু হয়ে যেতো?

'আমি কিছু জানিনা আমি আপনাকে খুব ভালোবাসি।

'ভালোবাসো? আরে ভালোবাসার মানে বুঝো তুমি। একজনের এইভাবে ক্ষতি করে তুমি নিজের ভালোবাসা দেখাও।তোমার মতো মেয়ে এই তিহান খানের যোগ্য নয়। এই আজাদুল খান তিহানের স্ত্রী হওয়ার যোগ্য একমাত্র "তানহা সাবরিন খান কেয়া" যার নখেও ও যোগ্য নও তুমি। পারলে সৎ হয়ে কোনো ছেলেকে ভালোবেসো নয়তো কোনো ছেলে জুটবে না তোমার কপালে।

'প্লিজ শুনুন আমি আপনাকে ভালোবাসি। প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাবেন না আমার ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি কেয়ার কাছে ক্ষমা ছেয়ে নিবো।

'আমার হাত ছাড়ো মেয়ে নয়তো ভালো হবে না।
না ছাড়বো না বলেন আমায় ভালোবাসেন?
তিহান এক ঝাকি দিয়ে হাত সরিয়ে নেয় ঝিমির থেকে।

'শুনো মেয়ে "তানহা সাবরিন খান কেয়া "আজাদুল খান তিহান এর প্রতিটা নিঃশ্বাসে মিশে আছে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা ব্যতিত তাদের আলাদা করার মতো কারো জন্ম হয়নি বলেই তিহন বেড়িয়ে যায়।

'শুনুন আরে শুনুন না বলে ঝিমি কান্না করতে করতে মেঝেতে বসে পরে।

'এইদিকে কেয়ার গায়ে প্রচন্ড জ্বর এসেছে। তিহান সারা রাত ধরে পাশে বসা। তুই ঠিকই বলেছিস মায়পরী।আমি নোংরা পুরুষ তোর যোগ্য নয়। যদি পারিস আমাকে ক্ষমা করিস। তোর এই দিনের জন্য আমি দায়ি। তোর কিছু হলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না মায়াপরী।

,,,,,,,
'সকালের আলো পর্দা ভেদ করে কেয়ার চোখে পরতেই কেয়ার ঘুম ভাঙ্গে। পাশে চোখ যেতেই দেখে তিহান একটা চেয়ারে বসে এক দৃষ্টিতে কেয়ার পানে তাকিয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে কেয়া উঠে বসে।

'তি,,তিহান ভাই আপনি?
হ্যাঁ ঘুম ভেঙ্গেছে তাহলে আপনার? তা শরীর এখন কেমন আছে?কেয়া নিজের পানে তাকিয়ে বলে কি হয়েছিল আমার?তিহান বলে কিছু হয়নি আপনার যা হয়েছে সব আমার হয়েছে। কেয়া বোকার মতো তিহানের পানে তাকিয়ে আছে দেখে তিহান বলে,হয়েছে হয়েছে এইভাবে আর তাকাতে হবে না। যা বাঁশ দেওয়ার রাতেই দিয়ে দিয়েছেন এখন আর বোকার মতো না তাকিয়ে বলেন শরীর ঠিক আছে কি না। নয়তো আম্মু আব্বু দাদু সবার কাছে আমার আরও বাঁশ খাওয়াটা বাকী থাকবে।

'আমি তো ঠিক আছি তিহান ভাই।

'তাই? আল্লাহ মনে হয় এইবার মুখ তুলে তাকিয়েছেন আমার দিকে নয়তো আরেকটা বাঁশ খাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হতো আমার। তিহান কেয়ার কপালে হাত ছুঁয়ে বলে তা ম্যাডাম আপনার জ্বর হাওয়া হয়ে গিয়েছে তো নাকী এইবার আমাকে হাওয়া করে দিবে?

'কেয়া তিহানের পানে এখনো অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে তিহান ভাই কি হয়েছিল আমার?

'বললাম না আপনার কিছু হয়নি যা হয়েছে আমার হয়েছে। অজান্তেই কি বাঁশটাই না দিলেন। থাক এখন সুস্থ আছেন এইটাই অনেক।

'মোতালেব খানের আদরের বড় নাতনি। আজিজুল খানের আদরের বড় মেয়ে। আমজাদ খানের আদরের বড় ভাতিজি আর বাকিদের কথা তো বাদই দিলাম। কিছু হলে আমি তিহানের অস্থিত থাকবে না।

'এইবার নিচে আসুন সকাল হয়ে গিয়েছে আমি একটু রুমে জাবো। সারা রাত ঘুম হয়নি। আপনার পাশে বসে পাহারা দিতে হয়েছে।

তিহান ভাই আমার কাপড় কে চেঞ্জ করলো?

ভুতে।

ভু,,ভু,,,ভুতে?

হ্যাঁ।

তার মানে কালকে রাতে আমার রুমে ভুত এসেছিল?

হ্যাঁ!তিহান কেয়ার ভয় পাওয়া দেখে মুচকি মুচকি হাঁসছে।

আপনি কি সেই ভুতকে দেখেছেন তিহান ভাই?

হ্যাঁ।

কিহ??

হ্যাঁ আমি আর সেই ভুত মিলে কালকে রাতে তোর রুমে পাঠি দিয়েছিলাম। কেয়া এইবার ভয়ে চিল্লি দিতে যাবে তিহান কেয়ার মুখ চেপে ধরে বলে আস্তে বাড়ির সবাই ঘুমোচ্ছে।

তিহান ভাই আপনি ভুতকে তাড়ালেন না কেন? তিহান একটা দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে,তাড়ালে আমার সাথে পার্টি দিতো কে? তুই তো সেই পরে পরে ঘুমোচ্ছিলি।

"সবাকিছু কেয়ার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। দেখে তিহান ভ্রু কুচকে অন্য দিকে মুখ ফিরে হাঁসছে।

' তারপর তিহান যাওয়ার আগে বলে, মেডাম রেডি হয়ে নিবেন আজ আমরা শহরে ফিরছি গ্রামে আর থাকবো না।

'কেন তিহান ভাই।

'এতো কেন কেন না করে নিচে আসেন খাওয়া দাওয়া করতে। তারপর রেডি হবেন বুঝলেন?

চলবে,,,,,,

"আমি আপনাদের জন্য ২ টা পার্ট লিখে রেখেছিলাম। কারন আমার পেইজ নষ্ট হওয়ায় মাঝখানে গ্যাপ গেছে তাই একটা বেশী লিখে রাখছিলাম। আপনাদের আগের মতো ভালোবাসা পেলে আমি এইটা নিয়মিত চালিয়ে যাবো। আর অবাধ্য নিঃশ্বাস তুমি আমার ওই গল্প টা একটা পার্ট দিয়েছিলাম আমার আগের পেইজটা যেহেতো নাই তাই আমি ওইটার পার্ট টা আবার এই পেইজে দিয়ে রাখবো। ইডিট করে কিছু জায়গা আবার পরিবর্তন হতে পারে কারণ যখন পইটা ধরবো নেক্সট পর্বগুলোর সাথে যেনো মিলে।

 #হৃদয়_মাঝে_হঠাৎ_তুমি সানা_শেখ  #পর্ব_29কল রিসিভ করে মহিদ। ওপাশ থেকে ভেসে আসে আলভীর গলার স্বর।"কিরে সমন্ধী কোথায় তুই?"...
12/07/2025

#হৃদয়_মাঝে_হঠাৎ_তুমি সানা_শেখ
#পর্ব_29
কল রিসিভ করে মহিদ। ওপাশ থেকে ভেসে আসে আলভীর গলার স্বর।

"কিরে সমন্ধী কোথায় তুই?"

"রাস্তায়?"

"রাস্তায় কি করছিস? মলের ভেতরে আয়।"

"ভাইয়ার সাথে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি আমি। তুমি মায়া কে নিয়ে খেয়ে বাকি সব কিছু কিনে তার পর আসো।"

"ড্রাইভার পাঠাতে হবে না তাহলে।"

"ফিরবে কিভাবে?"

"যেভাবেই ফিরি সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। রাখলাম তাহলে।"

কল কে টে আলভী মায়ার দিকে তাকায়। মায়া বলে,

"তিন জনেই চলে গেছে?"

"হ্যাঁ, এখন রেস্টুরেন্টে চলো, খেয়ে তারপর বাকি কেনাকা'টা করা যাবে।"
,
,
আলভী মায়া কে নিয়ে একটা লেকের সামনে চলে আসে। গাছের ছায়া, শীতল বাতাস, নিরিবিলি জায়গা এক কথায় অসাধারণ একটি পরিবেশ। খুব একটা মানুষ জন নেই, অল্প সংখ্যক মানুষ গাছের ছায়ায় বসে গা শীতল করছে বা প্রিয় মানুষের কাধে মাথা রেখে কথা বলছে।

পাশের ছোট একটা দোকান থেকে সিগারেট, লাইটার, একটা পানির বোতল আর কয়েক টা চুইংগাম কিনে নেয় আলভী। তারপর মায়ার হাত ধরে লেকের পাড়ে তৈরি করা কংক্রিট বেঞ্চ এর উপর বসে।
মায়া আলভীর হাতে থাকা সিগারেটের দিকে তাকিয়ে বলে,

"সিগারেট কেনো খাও?"

"অভ্যাসের জন্য খাই।"

"এই বিষাক্ত ধোঁয়া উড়িয়ে কি শান্তি পাও?"

"অভ্যাস হয়ে গেছে, চাইলেও এখন খাওয়া বাদ দিতে পারি না।"

"খাবে না তুমি এই সব ছাইপাশ। গন্ধে বমি আসে আমার।"

"এই ঠোঁটে রোজ নিয়ম করে চুমু খাবে তাহলে আর সিগারেট খাব না।"

"হাত থেকে ফ্যালো সিগারেট।"

"তাহলে চুমু খাও।"

"পাগল হয়েছো নাকি?"

"হয় চুমু নয়তো সিগারেট দুটোর যে কোনো একটা লাগবেই এখন।"

"সিগারেট ই খাও তাহলে।"

"যাও বিয়ের পর থেকে আর খাব না।"

"মনে থাকে যেন।"

আলভী সিগারেট টা ঠোঁট দিয়ে চেপে ধরে আগুন ধরায়। মায়া নাক মুখ কুচকে অন্য দিকে তাকিয়ে থাকে। আলভী বসা থেকে উঠে একটু দূরে সরে দাঁড়ায়। মায়া বসে থেকেই আলভীর দিকে তাকিয়ে থাকে। আলভী নিজেও মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে।

পর পর দুটো সিগারেট শেষ করে এগিয়ে এসে মায়ার পাশে বসে। কুলি করে দুটো চুইংগাম মুখে দেয়। একটা ছিঁড়ে মায়ার মুখে পুরে দেয়।
দুজনের মাঝখানের দূরত্ব কমায় আলভী। মায়ার শরীরের সাথে নিজের শরীর লাগিয়ে বসে। ডান হাত টা পেছনে দিয়ে মায়ার মাথা নিজের বুকের বাম পাশে ঠেকায়। মায়া মুখ তুলে আলভীর মুখের দিকে তাকায়। আলভী মৃদু হেসে বলে,

"তোমাকে সাথে এভাবে বসতে ইচ্ছে করছে।"

"আশে পাশে মানুষ জন আছে তো।"

"আমি কি অন্যের বউ নিয়ে বসে আছি নাকি? আমি আমার বউ নিয়ে বসে আছি।"

"মানুষ তাঁকিয়ে তাঁকিয়ে দেখছে তো।"

"দেখুক আলভী তার মায়া পরী কে কতটা ভালোবাসে।"

"বলি একটা বোঝে আরেক টা।"

"তুমি কি বলেছো বুঝতে পেরেছি আমি। অন্যের কামাই খাই যে তাদের দেখে লজ্জা পেতে হবে! নাকি আমি এখানে অশ্লীল কার্যকলাপ করছি! কিছুই করছি না জাস্ট বউ কে নিয়ে হাওয়া খাচ্ছি।"

মায়া কপাল কুঁচকে তাকিয়ে রইলো। আলভী মায়ার চোখ দেখেই বুঝতে পারছে মায়া মনে মনে কি ভাবছে।

"আমাকে বকাবকি না করে দুটো মিষ্টি মিষ্টি কথা বলো। তোমার মুখ দিয়ে তো মিষ্টি মিষ্টি কথা বের হতেই চায় না। সব সময় করলার মতন তেতো তেতো কথা বের করো।"

মায়া তেঁতে উঠে বলে,

"আমি করলার মতন তেতো তেতো কথা বলি?"

"এই যে এখনই তো বলছো। যেমন তেতো তেমন ঝাঁঝ। ইস্ কেমন যে লাগে অন্তরের ভেতর।"

"নাটক কম করো।"

"ভুল বললে।"

"মানে?"

"বলতে হবে নাটক কম করো পিও।"

"আমাকে এখানে নিয়ে আসলে কেন?"

"তোমার সাথে প্রেম করার জন্য। বাড়িতে তো দুই টা সেকেন্ড কাছে পাই না তাই এখানে নিয়ে এসেছি।"

"হেব্বি চালক তো তুমি।"

"চালাক না হলে এই দুনিয়ায় চলা কঠিন।"

"ঘুম পাচ্ছে বাড়িতে যাব।"

"বুক টা পেতে রেখেছি কার জন্য? এখানে মাথা রেখে ঘুমিয়ে যাও।"

"সত্যি সত্যিই ঘুম পেয়েছে আমার।"

"আমিও সিরিসলিই বলেছি।"

একটু চুপ থেকে বলে,

"আমার মীরজাফর চাচা শশুর টা কি করছে এখন? আমার কাছ থেকে আমার বউ কে দূরে সরাতে চেয়েছিল না, আমাকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। এখন আমি তো তার রাতের ঘুমই হারাম করে দিয়েছি। আর আমি তো আমার বউ কেই নিয়েই বসে, কিন্তু।"

"কিন্তু কি?"

"কিন্তু কিছু না, আসো প্রেম করি।"

"কিভাবে?"

"আসলেই তো, মানুষ প্রেম করে কিভাবে? প্রেম করতে গেলে কি কি করতে হয় বলতে হয়?"

"আমি প্রেম করেছি নাকি যে জানবো?"

"তাও ঠিক। আচ্ছা যারা প্রেম করে আমি তাদের জিজ্ঞেস করে আসি কিভাবে প্রেম করতে হয়।"

"মাথার তার ছিঁড়ে গেছে?"

"ছিঁড়েছে তো আগেই এখন জোড়া লাগানোর চেষ্টায় আছি।"

"ছাড়ো আমাকে?"

"ছাড়ার জন্য ধরেছি নাকি?"

"তো কিসের জন্য ধরেছো?"

"সারা জীবন ধরে রাখার জন্য ধরেছি। আর একটা কথা, তুমি কি খেয়াল করেছো? তুমি কিন্তু আমাকে তুমি বলে সম্বোধন করো এখন।"

মায়া আলভীর চোখে চোখ রেখে বলে,

"ছোট বেলায়ও তো তুমি বলেই সম্বোধন করতাম। বড় হয়ে কল্পনার তুমির সাথেও তো তুমি সম্বোধন করেই কথা বলতাম। ওই কয়েক দিন তো রাগের কারণে আপনি বলে সম্বোধন করেছি।"

"কল্পনায় তুমি আমার সাথে কথা বলতে?"

চোখ নামিয়ে নেয় মায়া। আলভীর বুকের সাথে গাল ঠেকিয়ে মৃদু স্বরে বলে,

"অসংখ্য বার, শত শত রাত জেগে, দিনের বেলায় গভীর ভাবনায় মগ্ন হয়ে, ঘুমের দেশে পাড়ি জমিয়ে।"

"তাহলে তো আমাকে তোমার কুচিকুচি করে কে টে ফেলা উচিত।"

"এত অপেক্ষার পর পেয়েছি তোমাকে, কুচিকুচি করে যদি কে'টেই ফেলি তাহলে আবার পাব কোথায়? আমার অপেক্ষারা যে অনন্ত হয়ে যাবে তখন।"

আর একটা কথাও বলে না আলভী। বাম হাতে শুধু মায়া কে পেঁচিয়ে ধরে বসে রইলো। এই কথা গুলোর মধ্যে যেন কি ছিল!
,
,
মাগরিবের পর মায়া কে নিয়ে বাড়িতে ফিরে আসে আলভী। দুপুরের পর থেকে এই সন্ধ্যা অব্দি মায়া কে নিয়ে ঘুরে বেরিয়েছে শুধু। কসমেটিকস্ কেনার কথা থাকলেও কেনেনি। আগামী কাল নয়তো আগামী পরশু যাবে আবার।

দুজন কে খালি হাতে ফিরতে দেখে মাহিদ বলে,

"কসমেটিকস্ কোথায়?"

"কসমেটিকস্ আগামী কাল কিনবো।"

" তাহলে সারা দিন কোথায় ছিলে দুজন?"

"গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি।"

মায়া সিঁড়ির দিকে পা বাড়ায়। আলতাফ মাহমুদ সোফার দিকে এগিয়ে আসছেন নিজের রুম থেকে বেরিয়ে। আলভী ওনাকে দেখে বলে,

"আব্বু ও

কথা শেষ করার আগেই আলভী কে থামিয়ে দেন আলতাফ মাহমুদ।
অবাক হওয়ার ভান ধরে বলেন,

"এই কে আপনি? আমাকে আব্বু ডাকছেন কেন?
পা গ ল হয়েছেন নাকি? এই বাড়িতে কিভাবে প্রবেশ করলেন? বাড়ি কোথায় আপনার? যান নিজের বাড়িতে যান।"

সোফায় বসে থাকা সকলে অবাক হয়ে দুই বাপ ছেলের দিকে তাকাতাকি করছে। মায়াও দাঁড়িয়ে গেছে।
আলভী স্বাভাবিক ভাবেই বলে,

"সরি চাচা শশুর মশাই। আপনাকে দেখতে হুবহু আমার মীরজাফর বাপের মতন, তাই ভুল করে আব্বু ডেকে ফেলেছি। আমার মীরজাফর বাপের সাথে যদি আপনার দেখা হয় তাহলে তাকে বলবেন আমার কথা আছে তার সাথে। এখন আসছি বাই।"

বলেই শিস বাজাতে বাজাতে নিজের রুমের দিকে এগিয়ে যায়। আলতাফ মাহমুদ হা করে তাকিয়ে আছেন সিঁড়ির দিকে।
বাকি সবাই হতভম্ভ হয়ে তাঁকিয়ে আছে আলভীর যাওয়ার পথে। কেউ বুঝতে পারছে না দুই বাপ ব্যাটা এমন অদ্ভুত ভাবে অদ্ভুত কথা বললো কেন!
ঐশী রহমান অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে হাসছেন।
যেমন বাপ তেমন ছেলে। হয়েছে না এবার, বাপ কে চাচা শশুর বানিয়ে দিয়েছে।
আলতাফ মাহমুদ এর মুখ দেখেই ফিক করে হেসে ওঠেন ঐশী রহমান। কোনো ভাবেই আর হাসি চেপে রাখতে পারছেন না আলতাফ মাহমুদ এর রিয়াকশন দেখে। সবাই ঐশী রহমান এর দিকে তাকায়। ঐশী রহমান সোফা ছেড়ে উঠে দ্রুত কিচেনে চলে আসেন।
হাসি কন্ট্রোল করতে না পেরে হা হা করে হেসে ওঠেন।

বাড়ির সবাই হা হয়ে তাকিয়ে রইলো কিচেনের দিকে।
______________________

আলভী দের বাড়ি টা কাঁচা ফুল আর বাহারি রঙের লাইট দিয়ে সাঁজানো হয়েছে। বাড়িতে গমগমে পরিবেশ, মানুষের হৈ চৈ। বিয়ে উপলক্ষে অনেক আত্মীয় স্বজন চলে এসেছে গত কাল সকালেই। বাকিরা আগামী কাল সকালে আসবে।

আগামী কাল শুক্র বার আলভী আর মায়ার আবার বিয়ে। মাঝখানের এই কয়েক দিন আলভী কে নিজের ধারে কাছেও ঘেঁষতে দেয়নি মায়া। আলভী মায়া কে কাছ থেকে দেখলেও ছুঁতে পারেনি আর। বেচারার আফসোসের শেষ নেই।

মেহেন্দী আর হলুদের অনুষ্ঠান আলভী করতে দেবে না।
আলভীর কথা, এগুলোতে কেনো অনুষ্ঠান করতে হবে? এগুলো করার কোনো নিয়ম আছে নাকি? শুধু মায়া কে মেহেদী দিলেই হবে আলভী নিজে মেহেদী দেবে না।
আর হলুদের অনুষ্ঠান তো একে বারেই করতে দেবে না সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছে।

ওর জেদের সাথে কেউ পারছে না গত দুদিন ধরে।

এখন বেলা এগারোটা বাজে। মায়া কে মেহেদী দিয়ে দেওয়ার জন্য পার্লার থেকে দুজন মেয়ে এসেছে।
মায়া কে মায়ার রুম থেকে বের হতেই দিচ্ছে না আলভী। বাড়িতে অনেক ছেলে পেলে এসেছে তাদের সামনে আসতে দেবে না কিছুতেই।
মায়ার মামাতো বোন জিজ্ঞেস করেছিল কেনো নিচে যাবে না । তখন সকলের সামনে আলভী বলেছিল,

"নিচে গেলে বোরকা হিজাব পড়ে তারপর যাবে নয়তো যাবে না।"

পরবর্তীতে আর কেউ টু শব্দ অব্দি করেনি।

মেয়ে দুজন কে মায়ার রুমে নিয়ে আসে আলভী আর মাহিদ। রুমে মায়ার কাজিন বোনরা ভিড় জমিয়ে রেখেছে। মাহিদ ভিড় কমিয়ে দেয়।

মেয়ে দুজন আলভী আর মায়া কে মেহেদী ডিজাইন দেখিয়ে বলে,

"কোন ডিজাইন টা দেব চুজ করুন আপনারা।"

মায়া আলভীর মুখের দিকে তাকায়। মায়া চোখ দিয়ে বোঝায় আলভী কে চুজ করার জন্য।
আলভী হাত আর পায়ের জন্য ডিজাইন সিলেক্ট করে দেয়।
একজন মেয়ে মায়ার দিকে তাকিয়ে বলে,

"ম্যাম আপনি হাত পা ধুয়ে ফ্রেস হয়ে এসে বসুন একে বারে।"

মায়া ফ্রেস হওয়ার জন্য ওয়াশরুমে প্রবেশ করে।
মাহিরের ডাক শুনে রুম থেকে বেরিয়ে যায় মাহিদ। আলভী আগের মতোই দাঁড়িয়ে আছে।

মায়া ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। হাত পা মুছে বেডে উঠে বসে। মেয়ে দুজন মায়ার দুই হাতে একসাথে মেহেদী পড়িয়ে দেওয়ার জন্য উদ্যত হয়।

আলভী দুজন কে থামিয়ে দিয়ে বলে,

"এক মিনিট।"

তিন জনেই আলভীর দিকে তাকায়। আলভী হাত পেতে একটা মেহেদী চায়।
তারপর মেয়ে দুজন কে মায়ার সামনে থেকে সরে বসতে বলে। মেয়ে দুজন সরে যেতেই আলভী মায়ার সামনে বসে। মেহেদী টা মায়ার হাতে দিয়ে নিজের ডান হাত টা মায়ার সামনে বালিশের উপর রাখে। তারপর বলে,

"মেহেদী দিয়ে দাও।"

"তুমি না বললে দেবে না।"

"আমার বিয়ে এখন আমি মেহেদী না দিলে বোঝা যাবে নাকি আমি যে বর? সুন্দর করে এখানে লেখো মায়া পরীর বর।"

মায়া ঘাড় ঘুরিয়ে মেয়ে দুজন আর ওর কাজিন বোন দের দিকে তাকায়। সবাই ওদের দুজনের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসছে।

"কি হলো লেখো।"

মায়া ডান হাতের তালুতে সুন্দর করে লিখে দেয়
"মায়া পরীর বর"।

লেখা শেষ হতেই উঠে দাঁড়ায় আলভী। মেয়ে দুজনের দিকে তাকিয়ে বলে,

"ওর হাতে সুন্দর করে লিখে দেবেন আলভীর বউ।"

মেয়ে দুজন মাথা নাড়ায়।

"ডোর টা ভেতর থেকে লক করে দাও শীতল। কেউ এসে যেন ডিস্টার্ব করতে না পারে।"

আলভী রুম থেকে বেরিয়ে যায়। মায়ার মামাতো বোন শীতল ডোর লক করে দেয় ভেতর থেকে।

বিয়েতে লিরা বাদে আলভীর নানার বাড়ির সবাই এসেছে আজ ভোরে। আলভীর নানি সামসুন্নাহার বেগম এবার একদম চুপ হয়ে আছেন। ভুলেও আলভীর সামনে বা মায়ার সামনে যাচ্ছেন না।

আলভী নিচে নেমে আসতেই আলভীর আর মায়ার সব কাজিন বোনরা আলভী কে ঘেরাও করে ধরে।
সকলের একটাই দাবি হলুদের অনুষ্ঠান করতে দিতে হবে। ছোটদের সাথে বেশ কয়েক জন বড়রাও যুক্ত হয়েছে এই দাবি তে।

আলভী সকলের দিকে নজর বুলায়। ওর বাপ চাচা সবাই আছে এখানেই। ওনাদের কেও ডেকে নিয়ে এসেছে আলভী কে বোঝানোর জন্য।
আলভী স্বাভাবিক স্বরে বলে,

"হলুদের অনুষ্ঠান করতেই হবে এমন কোনো নিয়ম রীতি আছে? তাহলে এই অনুষ্ঠান নিয়ে এত দাবি কেনো সকলের? হলুদের অনুষ্ঠান না করলে কি কিছু হবে?"

সকলের মধ্যে থেকে একজন বলে,

"নিয়ম রীতি নেই। হলুদের অনুষ্ঠান শুধু মাত্র আনন্দের জন্য করা হবে।"

"অন্য ভাবেও তো আনন্দ করা যাবে।"

"হলুদের অনুষ্ঠান নিয়ে এত আপত্তি কেনো তোমার?"

"হলুদের অনুষ্ঠানে হলুদ দেওয়ার নামে ছেলে মেয়ে উভয়েই হুড়োহুড়ি করে মায়া কে হলুদ লাগবে যা আমি কিছুতেই হতে দেব না। আর হলুদের অনুষ্ঠানের নাম করে এই মেয়ে ওই ছেলে কে হলুদ লাগাবে, ওই ছেলে আবার আরেক মেয়ে কে লাগাবে। এ ওকে, সে তাকে , এ ওর ঘাড়ে, সে তার পেটে এভাবে নোং/রামি শুরু হয়ে যাবে।"

"এমন কথা বলছো কেন? এরকম কিছুই হবে না।"

"এরকম টাই হয়। তিন দিন আগে যে আমার কলেজ লাইফের বন্ধুর বোনের বিয়েতে গিয়েছিলাম আমি, সেখানে এসবই হয়েছিল। আচরণ সীমার বাইরে চলে যায়, অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। হলুদের নাম করে নোং/রামি শুরু হয়। কেউ ইচ্ছে করেই করে, আবার কারো সাথে অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে হয়ে যায়।"

"এখানে এরকম কিছুই হবে না। কোনো ছেলে হলুদ লাগাবে না কোনো মেয়েকে, শুধু মেয়েরাই মেয়েদের লাগাবে। কোনো ছেলে কে ওখানে যেতেই দেব না। শুধু মেয়েরাই থাকবে ছাদে। তুমি প্লীজ আর না করো না।"

বাড়ির সবাই আলভী কে বোঝায় সাথে এটাও বলে কোনো ছেলে ছাদের উপর যাবে না হলুদ লাগানোর সময়। আলভী কেও কোনো মেয়ে হলুদ লাগাবে না। আলভী কে ছেলেরা লাগাবে আর মায়া কে মেয়েরা লাগাবে।
অনেক বোঝানোর পর অবশেষে আলভী রাজি হয়ে যায়।

মুহূর্তেই আবার হৈ হৈ শুরু হয়ে যায়। মাহিদ আলভী কে টেনে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে ইমারজেন্সি কথা বলার জন্য।

চলবে..............

বোনের প্রেমিককে 'কবুল' বলতে যতটা কষ্ট সাধ্য হওয়ার কথা ভেবেছিলাম, ততটা কষ্ট হলো না শেষমেশ। তিন সেকেন্ডেরও কম সময়ে তিন কবু...
12/07/2025

বোনের প্রেমিককে 'কবুল' বলতে যতটা কষ্ট সাধ্য হওয়ার কথা ভেবেছিলাম, ততটা কষ্ট হলো না শেষমেশ। তিন সেকেন্ডেরও কম সময়ে তিন কবুলে নিভ্র ভাইকে নিজের স্বামী রূপে গ্রহণ করে নিলাম আমি। পাশ থেকে ছোট চাচী টিপ্পনী কে'টে বলল, "ব্যাপার কি রে, এই তো বললি কিছু নেই, অথচ বিয়ে করতে এত অস্থির!"

আমি চোখ মুখ শক্ত করে বসে রইলাম সে কথার জবাবে। কাউকে কিচ্ছু বলব না। কিচ্ছু না। আমাকে বলার সুযোগই যখন দেওয়া হয়নি তখন, এখন সাফাই গেয়ে হবে টা কি? আমার স্বপ্ন, ইচ্ছে, শখ— সেসব কি ভাঙাচোরা রূপ থেকে ফিরে জোড়া লেগে যাবে আবারও? নাকি মিথ্যে হয়ে যাবে বিয়েটা? যে বন্দীত্বের শেকল দু'টি মানুষের পায়ে জোরপূর্বক পড়িয়ে দিলো সকলে, সেই সম্পর্কের ভার বইতে গিয়ে কতখানি হৃদপীড়ণ সইতে হবে বুকের যন্ত্রটায়, সে কথা কি একবারও ভেবেছে কেউ? না তো! বরং এত আর্তনাদ, এত চিৎকার, এত বিশ্লেষণ শেষেও আমাদের পরিণতি হলো তাই, যা চাওয়ার ছিল না কখনোই। তেজী, চঞ্চল এবং দাপুটে এই আমিটার নামের পাশে যার পরিচয় যুক্ত হলো, তিনি বরাবরই আমার বিপরীত। একটুখানি চপলতা আর অনেকখানি গম্ভীরতা সমেত গুণে গুণে বারো বছরের বড় বয়সী তাঁর সঙ্গে আমি কেমন করে মানিয়ে নেবো, সে হিসেবটা আমার জানা নেই... অদৃষ্টের এই বিচিত্র পরিকল্পনায় সৃষ্টি হলো এক নতুন গল্পের রচনা, এক মহিমান্বিত প্রেমের এবং হৃদয় হরণকারী অনুভূতির— যাতে বন্দী হয়ে পড়লাম আমি...নাজমীন পায়রা!

_____________________
(ঘন্টা কয়েক পূর্বে)

রাত থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ঝড়ছে। অগ্রহায়ণ শেষ হয়েছে তিন দিবস পূর্বে। আজ পৌষের তৃতীয় দিন। যদিও প্রকৃতিতে এখনো শীত দাঁত কামড়ে বসতে শুরু করেনি। সেই শুরুর পরিকল্পনাতেই বোধহয় এই অঘোষিত বৃষ্টির আগমন। আবহাওয়ায় বলছে, আগামী তিন দিন এরকম টিপটিপানি বৃষ্টি পড়বে অবিরাম ধারায়। বৃষ্টির ফোঁটায় ভর করে শৈত্য রাণী নেমে আসবে ধরণীর বুকে। তখন মাটির বুক শুকিয়ে যাবে। গাছের পাতা ঝরে পড়বে। চারদিকে শুধুই বিরাজমান শূন্যতা থাকবে। যেন শৈত্য রাণীর সবটুকু বিষাদ ঢেলে দেওয়া হবে ভূমিতে। তার ক্রোধের শীতলতায় হু হু করে কাঁপবে পৃথিবীতে বসবাসরত প্রতিটি প্রাণীকূল! তারপর একসময় আক্রোশ মিটে গেলে যেভাবে গোপনে এসেছিল মাটির বুকে, সেভাবেই চুপিসারে বিদায় জানাবে সে।

মৌমিতার সকাল থেকেই মন খারাপ। আজ তার আকদের অনুষ্ঠান। ছাদে শামিয়ানা টানিয়ে সেখানেই সমস্ত আয়োজন করা হয়েছে। সবাই বাড়িতে সাজতে বললেও, মৌমিতা জেদ করেই পার্লার থেকে লোক আনিয়ে দারুণ সাজে নিজেকে সাজিয়েছে। ছাদের এক কোণে ছবি তোলার জন্য সুন্দর করে ফ্রেম ও সাজিয়েছে বড় ভাইয়া। অথচ বৃষ্টির তোড়ে চারদিক ভেসে যাচ্ছে এখন। মৌমিতা এক ঘন্টা যাবত অপেক্ষা করছে। বৃষ্টি কমছে না। বৃষ্টিবিলাসী মেয়েটির তাই আজ বৃষ্টির উপর অভিমানে নাকের পাটা একটু পর পর কেঁপে কেঁপে উঠছে।

সেই সময়ে ঘরের ভেতর প্রবেশ করল পায়রা। ওর মেজো চাচার মেয়ে। নীল গাউনে তাকে দেখাচ্ছে স্বর্গের অপ্সরা! দু'হাতে গাউন সামলাতে তাকে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে, তা চেহারায় স্পষ্ট ফুঁটে উঠেছে। মৌমিতা ভ্রু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে রইল।

পায়রা নরম বিছানাটার উপর ধপ করে বসে পড়ল। শরীরের সবটুকু ভার ছেড়ে দিলো। দু'হাত পেছনে ভর করে মুখটাকে সিলিংয়ের দিকে করল। ঘন ঘন কয়েকটি নিঃশ্বাস ফেলে বলল, "ডাকছিলে আপা?"

মৌমিতা গম্ভীর স্বরে উত্তর দিলো, "হুঁ।"

"আমি তখন ব্যস্ত ছিলাম, বলো, কিছু লাগবে?"

মৌমিতা এক দণ্ড সময় নিয়ে ভাবল। যে কাজটা করে দিতে হবে, সেটা এই মুহূর্তে পায়রা ছাড়া অন্য কেউ করতে পারবে না। পায়রার উপর শতভাগ ভরসা রাখা যায়। মেয়েটা বয়সে ছোট হলেও বিশ্বস্ত! এ যাবত মৌমিতার কত কান্ড দেখেছে, শুনেছে, কোনোদিন কাউকে কিচ্ছুটি বলেনি।

মৌমিতা গলার স্বর চেপে বলল, "আমার একটা কাজ করে দিবি পাখি? অনেক ইম্পর্ট্যান্ট, এন্ড সিক্রেট!"

পায়রা আধশোয়া অবস্থা থেকে সোজা হয়ে বসল তড়িঘড়ি। চোখের পাতায় রাজ্যের বিস্ময়। সেই সঙ্গে আগ্রহ নাড়াচাড়া দিয়ে উঠছে মনের উঠোন জুড়ে। সেও মৌমিতার মতোই গলার স্বর চেপে রেখে বলল, "কি আপা? কি হইছে?"

মৌমিতা বার দুয়েক ঢোক গিলে শুষ্ক গলাটা ভেজানোর ঈষৎ চেষ্টা করল, পূর্বের চেয়েও চাপা গলায় বলল, "নিভ্রকে একটু স্টোর রুমে নিয়ে আসতে হবে। পেছন গেইট দিয়ে। কেউ যেন না দেখে।"

এহেন কথায় বেশ হকচকিয়ে গেল পায়রা। সেই সঙ্গে জেগে ওঠা আগ্রহ ও চাপা পড়ল সঙ্গে সঙ্গে। ভেবেছিল দারুণ এডভেঞ্চারাস কিছু, কিন্তু এ আর এমন কি কাজ! নিভ্র ভাইয়াকে এ বাড়িতে অনেকেই চেনে তো। কতবার এসেছে! আপার বন্ধু মানুষ। রাস্তায় কতবার পায়রার সঙ্গে দেখা হয়েছে। পায়রার বিনুনি করা চুল টেনে জিজ্ঞেস করেছে, কিরে ব্লু বার্ড, খবর কি? পড়াশোনা করছিস না শুধু প্রেম? হুঁ?

কিন্তু একটা ব্যাপার মাথায় ঢুকল না। তাকে এমন লুকিয়ে চুকিয়ে চোরের মতোন এ বাড়ির স্টোর রুমে আনা কেন? চাইলে সদর দরজা দিয়েই তো আসতে পারে। কে মানা করবে?

পায়রা কিছু একটা বলতে যাবে, তন্মধ্যে মৌমিতা পুনরায় বলে উঠল, "কেউ যেন না দেখে, আই রিপিট, নো ওয়ান! জাস্ট তুই আর আমি জানবো ব্যাপারটা। ডু ইউ আন্ডারস্ট্যান্ড? ইটস ভেরি ভেরি ভেরি সিক্রেট! প্লিজ পাখি, কাজটা করে দে। আই কান্ট ট্রাস্ট এনিওয়ান..." আপার কণ্ঠে আকুতি।

পায়রা ভ্রু কুঁচকালো, "কিন্তু এত লুকোচুরি কেন? ব্যাপার কি আপা? সামথিং রং?"

মৌমিতার চোখমুখ কালো হয়ে এলো। কি যেন একটা গোপন করার চেষ্টা করল সে। উঠে দাঁড়িয়ে ড্রেসিং টেবিলের সম্মুখে বসে কপালের টায়রাটা অযথাই ঠিক করার ভান করে বলল, "এত কথা না বলে প্লিজ যা। ও বাইরেই আছে। তুই ইশারা করলেই আসবে। মনে রাখবি, ইটস আ সিক্রেট! টপ সিক্রেট!"

নিভ্র আর মৌমিতার সম্পর্কটা একটু অন্যরকম। বছর চারেক ধরে একে অপরকে চেনে। তবে মুখ ফুঁটে ভালোবাসি শব্দটা কেউ কাউকে বলেনি। তবুও দু'জনের হৃদয়ই জানে, তারা দু'জন দু'জনকে পছন্দ করে বেশ! মৌমিতার ভার্সিটির লাস্ট ইয়ার চলছে। আর নিভ্র কাজ করে একটা আইটি ফার্মে। পরিচয়টা হয়েছিল অদ্ভুত ভাবে! একদিন মৌমিতা রাস্তা পার হতে গিয়ে ছিনতাইয়ের শিকার হলো। কাঁধ থেকে টেনে ব্যাগ নিয়ে দৌড়ে ছিল এক ছিঁচকে চোর! মৌমিতা হল্লা করে চিৎকার করে উঠল। আর তক্ষুনি দেখল, তাকে টপকে আরও একজন চোরের পেছন পেছন ধাওয়া করেছে। বেশ হাড্ডাহাড্ডি দৌড় চললো মিনিট পাঁচেক। কিন্তু ফলাফল শূন্য! ওসব ছেলেদের ধরা যায় নাকি! চোখের পলকে কোথায় হাওয়া হয়, কে জানে! এদের প্রচুর নেটওয়ার্ক!
নিভ্র হাঁপাতে হাঁপাতে এসে মৌমিতাকে বলল, "আপনার কাছে জল হবে? থাকলে দিন তো।"

মৌমিতা শক্ত গলায় বলল, "ব্যাগই তো নিয়ে গেল। বোতল পাব কোথায়?"

"ও আচ্ছা। সরি সরি। আসলে এত দৌড় দৌড়ালাম! বাপরে...শেষ বোধহয় কলেজ লাইফে এমন দৌড়েছিলাম বুঝলেন.." বলতে বলতে বেশ স্পষ্ট চোখেই মৌমিতার মুখের আদল মুখস্থ করে ফেলল লোকটা। ছোট্ট একটা মুখ, হালকা লম্বাটে, তবে বেশ মানিয়ে গেছে। চোখজোড়া জলে থৈ থৈ। ব্যাগে কি খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু ছিল? কাঁধের উপর ছোট করে কা'টা চুল, বাম হাতে রিস্টওয়াচ, সুতির সালওয়ার কামিজে বেশ গোছানো পরিপাটি একটি তরুণী...নিভ্র'র ভালো লাগল। সেই ভালো লাগা কখন যে ভালো বাসায় রূপান্তর হলো, নিভ্র জানে না। মন উজাড় করে দেওয়া ভালোবাসার সবটুকু সে ঢেলে দিলো মৌমিতার নাম করে। বিনিময়ে মৌমিতাও মুখ ফিরিয়ে নেয়নি। ভার্সিটি চত্বরে হেঁটে বেড়ানো, ফুচকা খাওয়ার প্রতিযোগিতা, হঠাৎ চায়ের আবদার, রাত জেগে গল্প রচনা করা, হুটহাট বৃষ্টিতে ভিজতে— সবকিছুতেই নিভ্রকে পাশে পাশে রেখেছে। নিভ্র ধরেই নিলো, মৌমিতার এই নীরব সম্মতিই তার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ। দু'জন কেউ কাউকে কথা না দিলেও তাদের হৃদয় যেন একে অপরকে কথা দিয়ে ফেলল, আমি তোমার, তুমি আমার!

সেই মানুষটির হঠাৎ বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। নিভ্র কতবার চেষ্টা করল, এ বাড়ির সবাইকে জানাতে তাদের ব্যাপার খানা। মৌমিতার বাবা কে ধরে বলতে। দরকার হলে তার পায়ে পড়বে সে। তবু মৌমিতাকে হারাতে দেবে না। মৌমিতা ওর ভালোবাসা! কিন্তু মৌমিতা কিছুতেই তার কথা না বাড়ির কাউকে বলল, আর না নিভ্রকে এ বাড়িতে আসার অনুমতি দিলো। একটা অজানা ভয় সরিসৃপের মতো করে একটু একটু করে জাপটে ধরল তার গোটা শরীর। মন বাড়ির বারান্দায় নামালো আতংকের ঝড়। বাবা ভীষণ রাগী মানুষ! জানতে পারলে খু-ন করে ফেলবে।

তবে শেষ বারের মতো একটিবার দেখা করার অনুরোধ মৌমিতা কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারল না। অনুমতি দিলো এ বাড়িতে আসার। তবে লোক সমাগমে জন সম্মুখে নয় বরং চোরের মতো চুপিচুপি। নিভ্র মেনে নিয়েছে। শুধু একবার দেখা হোক, এইটুকুই চাওয়া তার...

ছাদে প্রচুর কোলাহল। বৃষ্টির তোরজোর কমলেও তার ঝরে পড়া থেমে নেই। টিপটিপ, টিপটিপ.... পড়ছে তো পড়ছেই! বড় আব্বু, বাবা, ছোট চাচ্চু, বড় ভাইরা, সবাই এখানে। তারা সব সরঞ্জাম সরিয়ে গ্যারেজে নিচ্ছে। কিছুতেই ছাদে অনুষ্ঠান করা যাবে না। ঘরের ভেতরই আকদ পড়িয়ে, গ্যারেজে সবার খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে আপাতত। পায়রা ছাদে পা রাখতেই নোংরা কাদাপানিতে তার গাউনের অনেকখানি ভিজে গেল। সে বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে বলে উঠল, "ইশ!"

সামিউল ওকে দেখেই ধমকা ধমকি শুরু করল।

"তুই এখানে আসছিস ক্যান? এইখানে কি কাজ তোর? বৃষ্টির ভেতর এই ভোটকা জামা পড়ে... এখন একটা আছাড় খেয়ে পড়লে কে তুলবে তোকে? এই নাম, নাম বলছি।"

পায়রার বিরক্তির পারদ আরেকটু বাড়ল তাতে। কোঁচকানো কপালে বলল, "আমি পড়লে আমিই উঠব। আমাকে উঠানোর চিন্তায় তোমাকে ব্যস্ত হতে হবে না ভাইয়া। আমি আসছি আকাশের অবস্থা কি, তাই দেখতে। অকাজে তো আসিনি।"

"ওরি বাবা! আবহাওয়া অধিদপ্তরের বড় ম্যাডাম সাহেবা, আকাশের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে আসছেন। এই ছোটন, সর সর, ম্যাডাম কে এদিক আসতে দে। ম্যাডাম দেখুক, বৃষ্টিটা থামানো যায় নাকি।"

সামিউলের কণ্ঠে মশকরা। পায়রা কিছু বলল না। ছোটন কে একটা চ'ড় দিয়ে সামনে থেকে সরিয়ে দিয়ে গটগট পায়ে নিচে নেমে গেল। নামতে গিয়ে দু'বার হাই হিলের এলোমেলো পদক্ষেপে পড়তে পড়তে আবার সামলে নিলো। সামিউল উপর থেকে দেখল কিনা তাও একবার তীক্ষ্ণ নজরে পরখ করল। দেখলে পরে আবার কথার খোঁচা হজম করতে হবে!

বাড়ির ভেতরে রাজ্যের সব আত্মীয় স্বজন গিজগিজ করছে। সবার ভেতর বিয়েবাড়ির মতোন আমেজ,উল্লাস। ছোটরা ছোটাছুটি করছে এদিক ওদিক। বড়রা একেক ঘর দখলে নিয়ে গল্প করে যাচ্ছে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে। সবাই পুতুলের মতো সেজেগুজে আছে। কাজিনদের আড্ডা চলছে দোতলায়। পায়রার মনটা সেখানে যাবার জন্য ছটফট করলেও আপাতত বড় আপার কাজ করে দেওয়াই তার মূল লক্ষ্য!

এ বাড়িটা চার তলা। চার তলায় তিন ভাই মিলেমিশে থাকে। নিচ তলাটা একটা কোচিংয়ে ভাড়া দেওয়া। পায়রারা থাকে তিন তলায়। পায়রা সেখানে একবার উঁকি দিয়ে দেখল। ভেতরে ওর খালা মামুরা সব ছড়িয়ে ছিটিয়ে গল্প আড্ডায় ব্যস্ত। তাকে দেখতে পাবার আগেই সে সটকে পড়ল। দোতলায় উঁকি দিলো একই ভাবে। সবার গতিবিধি লক্ষ্য করে নেমে এলো নিচ তলায়। আজ কোচিং সেন্টারটা বন্ধ। বড় একটি তালা ঝুলছে সেখানে। পায়রা গ্যারেজে চোখ রাখল। এখানেও মানুষের গিজগিজ! টেবিল চেয়ার ফ্যান সব ফিটিং করা হচ্ছে। লাইট বসানো হচ্ছে। পায়রা সরে এলো। পেছনের দিকটা একদম ফাঁকা। একদম মানে একদম। পায়রার এতক্ষণ ধরে আঁটকে রাখা নিঃশ্বাসটা এবার বেরিয়ে এলো। তড়িঘড়ি করে পেছনের গেইট টেনে খুলতেই একটু দূড়ে কারেন্টের পোলের পাশেই দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল মানুষটিকে...

ছয় ফুট দুই ইঞ্চির লম্বা মানুষটির গায়ে ঢিলেঢালা সাদা পাঞ্জাবি, সাদা পায়জামা। পায়ের জুতো জোড়া হাতে নিয়ে বেশ উশখুশ ভঙ্গিতে এদিকেই তাকিয়ে আছে। পায়রাকে উঁকি দিতে দেখেই হাত নাড়লো। পায়রা 'থাম্বস আপ' সাইন দেখিয়ে দিতেই তিনি গটগট পায়ে এগিয়ে এসে গেইট দিয়ে ঢুকল।

"সোজা গিয়েই ডানে, দরজা খোলা আছে।" ব্যস্ত কণ্ঠে বলল পায়রা। নিভ্র কিছুমাত্র না বলে সেদিকে ছুটলো। ভয়, পাছে কেউ দেখে না ফেলে! পায়রা দরজার এদিক ওদিক ফের একবার সতর্ক দৃষ্টিবাণ ঘোরালো। বৃষ্টি ভেজা রাস্তাটা একেবারেই ফাঁকা। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পায়রা দরজা আঁটকে দিয়ে নিজেও স্টোর রুমের দিকে পা বাড়ালো।

প্রায় ঘন্টাখানেক সময় ধরে মানুষটি দাঁড়িয়ে ছিল। বৃষ্টিতে ভিজে গেছে একদম। পুরো পাঞ্জাবি শরীরের সাথে এঁটে পুরুষালি পেশী উন্মুক্ত হয়ে উঠেছে। চুলগুলো লম্বা, দাঁড়ানো, সেগুলো নুয়ে পড়েছে লাজুক লতার মতো। কপালের উপর ক'গাছি এঁটে আছে বিন্যস্ত ভঙ্গিতে। নিভ্র ভেজা হাতেই চুল গুলো সরালো। স্টোর রুমে পুরোনো সব জিনিসপত্রের বোঝাই, কয়েকটি পুরোনো খাট, একটা বড় ভাঙা দেয়াল সুকেজ, লম্বা ডিভান, সিঙ্গেল সোফা যার জায়গায় জায়গায় স্প্রিং বেরিয়ে পড়েছে, আরও নানান রকমের বাতিল সামগ্রি। নিভ্র ধূলোময়লা জড়ানো ডিভানটায় টান টান হয়ে বসে পড়ল। পা ধরে গেছে। শরীর শিরশির করছে। বৃষ্টিতে ভেজা তার কম্মো নয়। মৌমিতার জেদে পড়ে জীবনে বেশ কয়েকবার ভিজতে হয়েছে, এইটুকুই!

পায়রার একটুখানি খারাপ লাগল। লোকটা এত ভিজে গেছে! ক্রমাগত হাচ্চি দিচ্ছে। একটা গামছা বা এ জাতীয় কিছু দেওয়া যেতে পারলে ভালো হতো। কিন্তু এরকম কিছু এই মুহূর্তে আশেপাশে নেই। কি করবে সে!

পায়রা নরম গলায় বলল, "আপনি ঠিক আছেন ভাইয়া? বেশি ঠান্ডা লেগে গেল বুঝি?"

নিভ্র 'হ্যাচ্চোওওও' শব্দে বিকট আওয়াজ করে একটা হাঁচি দিয়ে অপরাধী ভঙ্গিতে হাসল। পায়রার চোখে চোখ রেখে বলল, "আমার ঠান্ডার ধাঁত আছে। আর অনেকক্ষণ ভিজেছিলাম বুঝলে.." তারপর আবারও নাকটা টেনে একটুখানি শান্ত হয়ে বলল, "তোমাকে কিন্তু দারুণ দেখাচ্ছে ব্লু বার্ড। আমার দেওয়া নামটা আজ স্বার্থকতা পেল!"

পায়রার ঠোঁটে মৃদু হাসি ছড়িয়ে পড়ল। প্রথম দিন থেকেই নিভ্র ভাইয়া তাকে ব্লু বার্ড নামে ডাকে। কেন ডাকে, কে জানে! কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি। ডাকুক না যার যা ভালো লাগে। এসব নামেও তো স্নেহ মিশে!

পায়রা বলল, "আপনি এখানে বসে থাকুন। আমি আপাকে গিয়ে বলি, আপনি এসেছেন যে।"

"না, বলতে হবে না। ও একটু পর এমনিতেই আসবে। বসো তুমি।"

পায়রা এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল, "কোথায় বসব?"

সেটা খেয়াল করে নিভ্র ও মাথা নেড়ে ওঠে তৎক্ষনাৎ, "ও,সবখানে তো ময়লা। গাউনে লেগে যাবে। আচ্ছা, দাঁড়িয়েই থাকো তবে।"

পায়রা মাথা কাত করে সম্মতি জানালো।
নিভ্র আবারও পরাপর দুটো হাঁচি দিয়ে নাক টেনে নিলো। নাসিকাপথ দিয়ে গলার কাছটা পর্যন্ত, জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে তার। আজ নির্ঘাত একশো ছাড়াবে জ্বর! অনেকদিন ভোগাবে! নিভ্র ছোট করে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পায়রার দিকে তাকাল। উৎসুক চোখের মেয়েটা ওকেই দেখছিল তখন, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে... নিভ্র তাকাতেই দৃষ্টি এলোমেলো করে হাসল। নিভ্রও হাসি ছুঁড়ে দিলো বিনিময়ে। বলল, "অবাক হচ্ছ আমাকে এভাবে চোরের মতো এখানে আসতে দেখে, তাই না?"

পায়রা তরল গলায় বলল, "একটু!"

"আমি সবার সামনে দিয়ে ভালোভাবেই আসতে চেয়েছিলাম। তোমার বোন দিলো না। তোমার বড় চাচা জানতে পারলে নাকি...অনেক বড় ঝামেলা হয়ে যাবে!"

"ঝামেলা? কিসের ঝামেলা? আপনি তো এর আগেও তিনবার এ বাড়িতে এলেন!"

নিভ্র হাসল, "তুমি ছোট মানুষ, বুঝবে না।"

পায়রার ভ্রু যুগল কুঁচকে গেল সঙ্গে সঙ্গে। এই একটি কথা শুনলে রাগে দুঃখে ক্ষোভে তার পিত্তি জ্বলে যায়। কিছুদিন আগেই এসএসসি শেষ করেছে সে। আর ক'দিন বাদেই কলেজ শুরু হবে। অথচ সে নাকি ছোট! সে নাকি কিছু বোঝে না! বোঝে সব উনারা.. একেকজন দামড়া হয়ে গেছে, হাহ! পায়রা দাঁত কিড়মিড় করে নিজের ক্ষোভটাকে আঁটকালো। রাগটা গিলে স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল, "আপনি বুঝিয়ে বললে অবশ্যই বুঝব ভাইয়া। দেখুন,আমি কিন্তু যথেষ্ট বিশ্বস্ত। নইলে আপা আমাকে পাঠাতো না!"

"হ্যাঁ, তা ঠিক, তুমি ভালো, লক্ষী একটা মেয়ে, আবার একটু পাজিও! তোমার আপা বলেছে।"

"আমি পাজি?" বিস্ময় চেপে বসল ওর দু'চোখের তারায়। তাই দেখে নিভ্র লম্বা হাসি ঠোঁটে টেনে আনলো, "মজা করছিলাম তবে লক্ষী যে, এ কথা মজা নয়। তুমি সত্যিই ভীষণ লক্ষী!"

পায়রা নরম হলো একটু। অল্পতেই মাথা গরম হয়ে ওঠা, স্বভাব ওর। তবে সামনে বসে থাকা ভিজে জবজবে গায়ের এই সুদর্শন পুরুষটি, বোকাসোকা হাবভাব যার, তার এই রাগ রাগ কথাগুলোতেই যুক্তিযুক্ত তর্কটা না করতে পারার একটা চাপা কষ্ট ওর অন্তরে ছেয়ে গেল। এ যদি ঘরের লোক হতো, এখনই এক হাত দেখে নেওয়া যেতো....হাহ!

পায়রা গম্ভীর গলায় বলল, "আপনি বসে থাকুন। কোথথাও বের হবেন না। উঁকিও দিতে যাবেন না। কেউ দেখলে কিন্তু... আমি আপাকে ডেকে আনছি।"

বাম হাতে লাগানো খয়েরি বেল্টের ঘড়িটায় তখনো সময়ের কা-টা ঘুরছে। সেদিকে একবার চোখ বুলিয়ে চিন্তিত হয়ে উঠল নিভ্র। এতক্ষণে মৌমিতার চলে আসবার কথা। কিন্তু এখনো এলো না। ও কি আঁটকে গেছে কোথাও নাকি সকলের নজর ফাঁকি দিতে পারছে না? ওকে বউ সাজে কেমন লাগছে দেখতে? নিভ্র'র মনটা হঠাৎ করেই বেদনার নীল রঙে ছেয়ে গেল। আজ যেভাবেই হোক, মৌমিতাকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে ওর বাবার সঙ্গে কথা বলতেই এসেছে নিভ্র। মৌমিতা ওর প্রেম, ওর গোপন ভালোবাসা — এত সহজে তা ছেড়ে দিতে রাজি নয় সে!

"কি হলো, কি ভাবছেন?"

পায়রার আকস্মিক গম্ভীর স্বরটা ভাবনার জগতকে কাঁচের টুকরোর মতো চূর্ণবিচূর্ণ করে দিলো হঠাৎ। নিভ্র ছিঁটকে বাস্তবে বেরিয়ে আসে। উপর-নীচ মাথা দুলিয়ে বলে, "না, কিছু না। তুমি যাও। তোমার আপাকে নিয়ে জলদি এসো। আমার হাতে সময় খুব কম।"

পায়রা নিচের ঠোঁট কামড়ে কিছু একটা ভাবল। বুঝে গেল। ঠোঁটের কোণে হাসি নয় বরং কপালে বেশ কয়েকটি ভাঁজ সৃষ্টি হলো তার। নিভ্র ভাইয়া আর মৌমিতা আপুর সম্পর্কের নামটা হঠাৎ করেই পায়রার মন বাগানে উঁকি দিয়েছে। যদি ওর ধারণা সত্যি হয়, তবে সামনে বেশ দুর্বিষহ সময়! বড় চাচা প্রেম-পিরিতি, ভালোবাসা— এসবের খেলাফে! দৃঢ় চিত্তে দাঁড়িয়ে সে মেয়ে কোরবানি করে দেবে তবু মেনে নেবেন না... তারচেয়েও চিন্তার বিষয়, যদি জানতে পারেন, নিভ্র ভাইয়াকে এখানে আনবার পেছনে ওর হাত রয়েছে...তবে...তবে...

পায়রা আর ভাবতে পারল না। চিন্তার গতিপথে লাগাম টেনে বার দুয়েক ঢোক গিললো। বুকটা শুকিয়ে উঠছে। একটা ফণা তোলা সাপের মতোন আতংক মন বাগিচার উঠোন বসে হিঁসহিঁস শব্দ তুলছে। এই বুঝি কিছু একটা হলো...

সে পড়িমরি করে চাপিয়ে রাখা দরজার দিকে পা বাড়ালো এবং হাই হিলের তাল হারিয়ে কাত হয়ে ওখানেই বসে পড়ল। পা টা পড়ল ভীষণ বেকায়দায়, একেবারে ফ্রাকচার... পায়রার ঠোঁট চিঁড়ে বেরিয়ে এলো চাপা স্বরের আর্ত চিৎকার, "ও...মা..."

নিভ্র ভয় পেয়ে ডিভান ছেড়ে উঠে এসে দৌড়ে ওর পাশে নিচু হয়ে বসে পড়ে। এক হাতে পায়রার কাঁধ আঁকড়ে তাকে ব্যালেন্স করবার চেষ্টা করে। কপালে চিন্তার ভাঁজ, কণ্ঠে উদ্বিগ্নতা, "ব্লু বার্ড...ব্লু বার্ড, আর ইউ ওকে?"

জবাবটা দিতে পারল না পায়রা। তার আগেই ভেজানো দরজাটা সটান খুলে গেল। করিডোরের উজ্জ্বল আলোর খানিকটা ছঁটা এসে পড়ল পায়রার চোখেমুখে। চোখজোড়া সঙ্গে সঙ্গে মুঁদে নিয়ে আবারও মেলে তাকাল এবং ভয়ের শিহরণে হৃদযন্ত্র ও ঠান্ডা হয়ে গেল। দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি আর কেউ নন... তার শ্রদ্ধেয়, গুরুগম্ভীর, বিক্ষুব্ধ বড় চাচা...

(চলবে)

#প্রেমবন্দী_পায়রা
#পর্ব_১
#মৃধা_মৌনি

(এইটা নিয়মিত দেওয়া হবে। তবে পর্ব গুলো একটু ছোট হবে, আগেই বলে দিচ্ছি। যারা পড়বেন দয়া করে লাইক কমেন্ট করবেন প্লিজ। আইডির রিচ তলানিতে...)

Address

Fulbaria

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when R.R media posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share