
20/07/2025
বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগী আত্মহত্যার চেষ্টা।
দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হলেও ভুক্তভোগীরা পুলিশের থেকে কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছে না।
ঢাকা সাভার থানার এক ভুক্তভোগী নারী নাজমা বেগম সন্ত্রাসীদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হলে ঢাকা জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাভার থানার ওসিকে। ওসি সাহেব এস আই শামীম কে তদন্তের দায়িত্ব দেন। মামলাটি তদন্ত চলা অবস্থায় গত ২১/৬/২০২৫ ইংরেজি তারিখ আসামীরা নাজমা বেগম ও তার ছোট বোন সেলিনা বেগম কে অমানবিক নির্যাতন করেন, ১২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যান, ডাকাতি করে বাড়ির সব মালামাল নিয়ে যান, আড়াই কোটি টাকার বাড়ি লিখে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ৫০০ টাকার ৮ টি স্টাম্পে সিগনেচার নিয়ে নেন।
ঘটনার পর পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম কে অবগত করেন এবং শামীম সহ বাদি থানায় গিয়ে ওসিকে বিস্তারিত বলেন এবং লেখিত অভিযোগ দায়ের করেন কিন্তু এখন পর্যন্ত ওসি সাহেব কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেননি। এস আই শামীম আন্তরিক হলেও ওসির অসহযোগীতার কারণে কিছুই করতে পারছে না।
গত ৭/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখ ভুক্তভোগী ডিজিটাল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান মোঃ আতিকুর রহমান এর সাথে যোগাযোগ করেন। ভুক্তভোগীর সমস্যা সমাধানে আতিকুর রহমান সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
ইতোমধ্যে একাধিক পত্রিকা ও চ্যানেলে নিউজ করাইছেন আতিকুর রহমান । খুব খারাপ আবহাওয়ার মধ্যেই নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা এসে ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আতিকুর রহমান। বিষয়টি ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার, ঢাকা জেলার এসপি, সাভার সার্কেল এসপি ও সাভার থানার ওসিকে অবগত করেন। তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শামীম ও ওসি এর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।
ভুক্তভোগীর সমস্যা শোনার পর পরই সাভার থানার ওসির সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেন আতিকুর রহমান কিন্তু কোন রেফারেন্স নেই । গত ১০/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখ পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে কনফারেন্স করে ওসির সাথে কথা বলেন আতিকুর রহমান । সে আতিকুর রহমান এর একাধিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। এরপর ওসির হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয় এবং ভুক্তভোগীর অভিযোগের কপি ও অন্যান্য ডকুমেন্ট দেন আতিকুর রহমান। কিন্তু ওসি এখন পর্যন্ত কোন ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেননি। ইতোমধ্যে সাভার সার্কেল এসপির সাথে একাধিকবার কথা বলেন আতিকুর রহমান । গত ১৪/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখ রোজ সোমবার সার্কেল এসপির সাথে ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকারের ব্যাবস্থা করেন আতিকুর রহমান।
গতকাল ১৯/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখ ভুক্তভোগী হাসপাতাল থেকে আতিকুর রহমান কে ফোন করে কান্না কন্ঠে আত্মহত্যার হুমকি দেন। এমন পরিস্থিতিতে আতিকুর রহমান সাথে সাথে সাভার সার্কেল এসপি ও ওসিকে বিষয়টি অবগত করেন। ওসির সাথে কথা বলে আতিকুর রহমান এর মনে হয়েছে ভুক্তভোগী নাজমার বিষয়টি তার কাছে কোন বিষয় না। এরপর আতিকুর রহমান ভুক্তভোগীর সব ডকুমেন্ট ওসির হোয়াটসঅ্যাপে আবার নতুন করে দেন এবং অতি শীঘ্রই মামলা গ্রহণ করে আসামীদের গ্রেফতারের অনুরোধ করেন। ওসির হোয়াটসঅ্যাপে আতিকুর রহমান এর ম্যাসেজটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
ভাই ভুক্তভোগী নাজমা খুবই অসুস্থ। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে আছে।
ঘটনার পর সে গত ২২/৬/২০২৫ ইংরেজি তারিখ তার পূর্বের মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শামীম সাথে নিয়ে আপনার সাথে দেখা করে লেখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং মৌখিকভাবে সবকিছু বলেছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনি আইনগত কোন ধরনের ব্যবস্থা নেননি। এই বিষয়ে আমি এস আই শামীম এর সাথে কথা বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। এছাড়াও এই ঘটনার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট আমার কাছে আছে।
এখানে আপনার দায়িত্বে অবহেলা আছে। আশাকরি শীঘ্রই আপনি অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে আসামী গ্রেফতার করবেন।
ইতোমধ্যে এই বিষয়ে সাভার সার্কেল এসপির সাথে আমার একাধিকবার কথা হয়েছে। আপনি ভুক্তভোগীর সমস্যা সমাধান না করলে আমি ভুক্তভোগীকে নিয়ে পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করবো। প্রয়োজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করবো। আমি সব সময় ভুক্তভোগীর পক্ষে। শীঘ্রই আপডেট আমাকে জানান।
গত ১০/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখ পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর মাধ্যমে আতিকুর রহমান ওসির সাথে কথা বলার পরে তার কানে পানি যায়। এর আগে এই ভুক্তভোগীকে নিয়ে তার কোন ধরনের মাথা ব্যাথা ছিল না। ভুক্তভোগীর অভিযোগ আসামীদের সাথে ওসির সখ্যতা আছে। ভুক্তভোগী আরো বলেন, আসামী পক্ষের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা খেয়ে ওসি এগুলো করছে।
দেশের সব ধরনের অপকর্ম বন্ধ করার জন্যই আমাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। পুলিশের সেবা এরকম হলে ভুক্তভোগীরা যাবে কোথায়? স্বৈরাচারী মাইন্ডের পুলিশ দিয়ে সঠিক সেবা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রতিটি পুলিশকে সেবামূলক মাইন্ডের হতে হবে।
সাভারে গৃহবধূ ও তাঁর বোনকে অপহরণ নির্যাতন ধর্ষণ চেষ্টা ও বাড়ি ডাকাতি:
আড়াই কোটি টাকার বাড়ি লিখে নেওয়ার উদ্দেশ্যে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ।
রিপোর্ট করেছেন: আজগর আলি মানিক
প্রধান সম্পাদক, সিটিজি নিউজ
সাভার, ৮ জুলাই ২০২৫:
সাভারের ইমান্দিপুর এক গৃহবধূ ও তাঁর ছোট বোনকে অপহরণ, অমানবিক নির্যাতন করে ৫০০ টাকার ৮টি সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর, বাড়ি ডাকাতি করে নগদ ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ১০ লক্ষ টাকার মালামাল লুট ও ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের বিরুদ্ধে। বিষয়টি সাভার থানা ও সাভার সেনাবাহিনী ক্যাম্পে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন ভুক্তভোগী নাজমা বেগম।
অভিযোগকারীর বক্তব্য অনুযায়ী, গত ২১ জুন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযুক্তরা তাঁর বাড়িতে জোর করে প্রবেশ করে অমানবিক নির্যাতন শুরু করেন । পুলিশ পরিচয়ে দরজা খুলতে বললে তাঁর ছোট বোন সেলিনা বেগম দরজা খুলে দেয়। এরপরই অভিযুক্ত মোঃ সেলিম শেখ (৩২), সুমন শেখ (৩০), মোঃ মাহবুব রহমান (৪৫), মামুন (৩৫) ও রিয়তমা সহ আরও ১৪/১৫ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি ঘরে প্রবেশ করে।
প্রবেশ করেই তারা সেলিনা বেগমকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে, ঘর থেকে তিনটি স্মার্টফোন (Oppo, Samsung, Symphony), একটি বাটন ফোন এবং নগদ ১২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা ও ১০ লাখ টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। এরপর বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে ঘরের সব রুমে তালা লাগিয়ে দুই বোনকে হাত-মুখ বেঁধে জোরপূর্বক একটি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায় জালাইকান এলাকায়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সেখানে নিয়ে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র প্রদর্শন করে ৫০০ টাকার ৮টি সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও টিপসই নেয়া হয়। ভুক্তভোগী নাজমা বেগম স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা তাঁকে ও তাঁর বোনকে নির্মমভাবে মারধর করেন এবং ধর্ষণ ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়। কয়েক ঘণ্টা অমানবিক নির্যাতনের পর রাত ১১টার দিকে আবার তাঁদের নিজ বাসায় এনে তালাবদ্ধ করে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। পরদিন স্থানীয় ভাড়াটিয়া আমিনুর পুলিশের সহায়তায় তালা ভেঙে দুই বোনকে উদ্ধার করেন। এসময় পুলিশ অভিযুক্তদের কাছ থেকে তিনটি স্মার্টফোন ও একটি বাটন ফোন উদ্ধার করে। আহত নাজমা বেগম ও তাঁর বোন ২২ জুন সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন।
নাজমা বেগম আরও অভিযোগ করেন, ২৯ জুন দুপুর ২টার দিকে অভিযুক্তরা পুনরায় তাঁর বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
তিনি বলেন, "আমি এবং আমার ছোট বোন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এই চক্র যে কোনো সময় আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। ঘটনার পর পরই আমি সেনাবাহিনী ক্যাম্প ও থানায় এসে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত আমার মামলা গ্রহণ করে আসামী গ্রেফতার করেনি। নিয়মিত প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে সন্ত্রাসীরা।নিরাপত্তাহীনতার কারণে বর্তমানে ভুক্তভোগীরা বাড়ি থাকতে পারছে না।
উল্লেখ্য যে, অভিযুক্ত সন্ত্রাসীরা প্রথম নির্যাতনের পর ভুক্তভোগী ঢাকা জজ কোর্টে মামলা দায়ের করেন। ঐ মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাভার থানার ওসিকে। এছাড়াও ঘটনার পূর্বে ভুক্তভোগী সাভার থানায় একাধিক জিডি করেছেন। মামলা চলাকালীন অবস্থায় সন্ত্রাসীরা এরকম অমানবিক ঘটনা ঘটায়। আইন আদালত থানা পুলিশের প্রতি কোন ধরনের শ্রদ্ধা নেই অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের।
অতি শীঘ্রই মামলা গ্রহণ করে দোষীদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছে সরকার ও প্রশাসনের কাছে ভুক্তভোগী পরিবার। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত অভিযুক্তদের কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে কি না, সে বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।