18/06/2025
🩸🩸🩸আছিয়া এখনো ছোট, অবুঝ। তার পৃথিবীটা রঙিন, ভালোবাসায় ভরা। মা-বাবার কোলে ঘুমিয়ে পড়া, ভাইয়ার সাথে খেলাধুলা, আর বোনের কাছে গিয়ে আদর খাওয়াই তার জীবনের সবচেয়ে বড় আনন্দ।
সেদিন সে প্রথমবার বড় বোনের বাড়ি গেল। নতুন পরিবেশ, নতুন মানুষ—সবকিছুই তার কাছে মজার লেগেছিল। বোনের স্বামী, যিনি বাবার বয়সী, আর বোনের শ্বশুর, যিনি দাদার বয়সী, সবাই তো পরিবারেরই মানুষ! তাদের নিয়ে খা**রাপ কিছু ভাবার মতো কিছুই শিখেনি সে। কেন শিখবে? তার ছোট্ট মনে তো পৃথিবীর সব মানুষই ভালো।
কিন্তু সেই রাত…
একটা ঘর, একটা নীরবতা, একটা দুঃস্বপ্ন।
তার ছোট্ট শরীরটা যন্ত্র**ণায় ছটফট করছিল, চোখের জল গাল বেয়ে পড়ছিল, কিন্তু কণ্ঠরোধ করা হয়েছিল ভয় দিয়ে। দাদার বয়সী মানুষটা যখন তাকে পি*ষে দিল, বাবার বয়সী মানুষটা যখন তার নিষ্পাপ শরীরটা ছিঁ**ড়ে ফেলল, তখন সে বুঝল, পৃথিবীটা তার জানা পৃথিবী নয়।
সকালে সে কথা বলল না। মুখ বন্ধ করে রাখল, যেমন তারা বলেছিল। “বললে মা-বাবা ম*রে যাবে,” এই কথাটা কানে গেঁথে ছিল তার। সে তো মা-বাবাকে হারাতে চায় না!
দিন গড়ালো। বিচার চাইতে গেল তার পরিবার। কিন্তু বিচার? কিসের বিচার ? সবাই সব জানলেও , স্বীকার করলেও বিচার হচ্ছিল না !
পুলিশ টাকা খেয়ে বলল, “ডি*এন*এ লাগবে, মেডিকেল লাগবে, প্রমাণ লাগবে।”
উকিল টাকা খেয়ে বলল, “কেস লড়তে টাকা লাগবে।”
নেতারা টাকা খেয়ে বলল, “এটা ষড়**যন্ত্র, পরিবারকে হেয় করার চেষ্টা!”
সাংবাদিকরা টাকা খেয়ে বলল, “নতুন ইস্যু এসেছে, এই ঘটনা এখন পুরনো।”
একটা নিষ্পাপ শিশুর ধ্বংস হয়ে যাওয়া জীবনের মূল্য কি কিছুই না?
সমাজ কিছুদিন গর্জে উঠল, তারপর এক মাস , দুই মাস , তিন মাস পর সব ভুলে গেল। বিচার হল না, কিছুই হল না।
আছিয়া বড় হলো, কিন্তু শৈশব হারিয়ে গেল সেই রাতে। প্রতিটা রাত আছিয়া স্বপ্ন দেখে সেই রাতকে , কোন রাত তার ঘুম হয় না । সবাই আছিয়ার গল্প জানে , কেউ ভাল চোখে দেখে না আছিয়াকে । কিন্তু কেন ? এর উত্তর অজানা এ সুশীল সমাজের , এ শিক্ষিত সমাজের , এ স*ভ্য সমাজের !
এমন আরও অনেক আছিয়া জন্ম নেবে, বেড়ে উঠবে বিশ্বাস নিয়ে, তারপর একদিন তাদেরও কোনো এক রাতে সব ছিনিয়ে নেওয়া হবে।
এই সমাজ বদলাবে না। কারণ যারা বদলানোর কথা বলে, তারাও সুবিধা পেলে চুপ হয়ে যায়।
তবুও, একটা প্রশ্ন থেকে যায়—একটা মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়াটা কি এত বড় অপ**রাধ ?