HAQ TIPS

HAQ TIPS DIGITAL VIDEO CREATOR

10/08/2023

গল্প,,💗💗প্রেগন্যান্সী কেয়ারিং💗💗

লেখকঃ নামহীন লেখক

বাইরে থেকে এসেই দেখি সানজিদা কাপড় ধুচ্ছে। অথচ সে গর্ভবতী। ওয়াশরুমের সামনে দাড়িয়ে ডাক দিলাম,
-সানজিদা তোমাকে কেউ কি বলছে কাপড় ধুইতে? তুমি তো জানো এখন প্রেগন্যান্ট, সিরিয়াস মোমেন্টে আছো। কাপড় ধোয়ার জন্য আমি আছি, মা আছে।

-বসে আছি তো তাই করছিলাম।

তাকে এভাবে কাজে দেখে রাগ উঠে গেল। বললাম,
-চুপ তুমি রেস্ট করো বিছানায়। ভারী কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের বলবে। কাপড় ধোয়াটা একটা চাপ। তাছাড়া পা পিছলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনায় তো বেশি।

আম্মা ভেতর থেকে আওয়াজ দিলো,
-রায়হান কি হয়েছে, বউকে ধমকাচ্ছিস কেনো? বউ প্রেগন্যান্ট তো! সুন্দর করে কথা বল।

-না আম্মা কিছু না ও কাজ করতে গিয়েছে বলছিলাম রেস্ট নিতে। অযথা হঠাৎ বিপদ হলে তখন কি হবে ভাবতে হবে তো। আমরা তো অসভ্য না যে তাকে কাজ করাচ্ছি, মারছি করতে বলছি। শুধু শুধু চাপ নিবে কেনো।

আম্মা এসে সানজিদাকে বললো,
-বউ মা কি হয়েছে? আমরা থাকতে তুমি কেনো কাজ করতে যাও, আমাদের জানাবা তো? আমরা তো মরে যায়নি। সব বুঝি তো। আসো বিছানায় বসো এই সময় কেয়ারফুলি চলার উচিত কেননা তুমি মা হতে চলেছো, বলো এখন কি কিছু খেতে মন চাই তোমার?

- না আম্মা।

-আরে বলো তো? লজ্জা পাচ্ছো মনে হচ্ছে?

- না আম্মা তা নয়। তবে মাঝেমধ্যে টক খেতে মন চাই আর কিছু না।

-এই রায়হান শুনছিস বউয়ের জন্য ১কেজি তেঁতুল নিয়ে আয় ভালো দেখে। বৈয়াম ভরে রাখলে বউমা খাবে যখন মন চাই।

-জ্বি আম্মা যাচ্ছি।

-শোনো বউমা ভারী কিছু লাগলে আমাদের বলবে ডাক দিয়ে। এখানে ভয়ের কিছু নেই, তুমি এমন কাজে হাত দিয়ো না যাতে ক্ষতি হয়। সবকিছুতে আমাদের জানাবা।

-জ্বি আম্মা ঠিক আছে, যা বলবেন তাই করবো।

২ঘন্টা পরে...

-শোনো বউ, সবসময় খালি তেঁতুল খেলে চলবে না। আমি জানি মেয়েদের টক খাওয়া অভ্যাস প্রচুর। টক জিনিস ঘনঘন খাওয়া ভালো নয় শরীরের জন্য। সো মাঝেমাঝে খাও, সবসময় না। বাইরে থেকে কিছু খেতে মন চাইলে রায়হানকে জানাও এনে দিবে।

-আচ্ছা।

আম্মা আমাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
-রায়হান বউমা খাওয়ার জন্য কিছু চাইলে এনে দিস।

-ঠিক আছে আম্মা তোমার এত চিন্তা করতে হবে না। আমি তো আছি তার পাশে।

আম্মা রুম থেকে চলে গেলে দরজা বন্ধ করে সানজিদার পাশে গিয়ে বসলাম। খুব ছোট করেই বললাম,
-দেখি পেটে একটু কান পেতে শুনি। আমাদের বেবি আর কতদূর।

বউয়ের উঁচু পেটে কান পেতে দিলাম। খুব ভালো লাগছে। মজা করে বললাম,

-এই তো বাবু খুব তাড়াতাড়ি তুমি চলে আসবা। ডাক্তার বলে দিয়েছে। খুব তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে নতুন অতিথি হয়ে আসবে।

সানজিদা লজ্জা পেয়ে বললো,
-হয়েছে, মাথা সরাও।

-এই তো সরাচ্ছি আরেকটু বলি।

-হয়েছে, বলছো তো, বাবুও শুনছে। আর বলতে হবে না।

-ওকে বললাম না।

এই সময় আমার চাচা বিদেশ থেকে ফোন দিলো ডুবাই তে থাকে, ফোন রিসিভ করলাম,
-হ্যালো চাচা আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছো চাচা?

-ওয়ালাইকুমুস সালাম, ভালো আছি রায়হান তুই কেমন আছিস?

-এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভালো চাচা।

-বউমা কই? বউমা কে ফোন দে একটু কথা বলি।

-এই তো পাশেই আছে।

সানজিদাকে দিলাম মোবাইলটা,
-হ্যালো ছোট আব্বা আসসালামু আলাইকুম, কেমন আছেন?

-ওয়ালাইকুমুস সালাম, ভালো আছি বউ মা, তুমি কেমন আছো?

-এই তো ছোট আব্বা ভালো আছি।

-তা কি অবস্থা সুস্থ আছো তো আল্লাহর রহমতে, কোনো সমস্যা তো নেই?

-জ্বি নাহ ছোট আব্বা, ভালো আছি।

-শুকরিয়া, আচ্ছা আমি তো এক মাস পর আসতেছি, তোমার জন্য কি আনবো বলো?

-জ্বি, কিছু লাগবে না, আপনি সুস্থভাবে ফিরে আসুন এটাই কামনা করি।

-জানি তুমি বলবে না, যাই হোক আসার আগে রায়হানের থেকে জেনে নেবো কি লাগবে। রায়হানকে ফোনটা দাও।

মোবাইল আমার দিকে এগিয়ে দিলো,
-হ্যালো চাচা বলো।

-রায়হান, তাহলে আমি এখন রাখি আরেকদিন কথা হবে। বউয়ের দিকে খেয়াল রাখিস, আল্লাহ হাফেজ।

-হ্যা চাচা অবশ্যই, আল্লাহ হাফেজ।

সানজিদা আমার বউ, বিয়ে করেছি পারিবারিকভাবে দেড় বছর হলো। সানজিদা প্রেগন্যান্ট, ডাক্তারের ভাষ্যমতে আমরা দুজনই আর মাত্র দুইদিন পর বাবা মা হবো, যদি আল্লাহ চান। আমি একটা ব্যাংকে জব করি। সাত দিনের ছুটি মঞ্জুর করেছি সানজিদার পাশে থাকার জন্য। কারন এসময়টা একজন স্বামী হিসেবে স্ত্রীর পাশে থেকে সাপোর্ট করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যা আমি চেষ্টা করছিলাম। সানজিদা কিন্তু মনের মতো শশুর-শাশুড়ী পেয়েছে। বাবা মায়ের এক ছেলে আমি, তাই বউয়ের প্রতি যত্নের শেষ নাই সবার যেন। রাত হয়েছে, আব্বা দোকান শেষ করে আসলো বাসায়,
-রায়হান বউমার কি অবস্থা। কোনো সমস্যা হয়নি তো?

-না আব্বা।

বাবা মা সবাই মিলে রাতের খাওয়া শেষ করলাম।
নিজেই কিনে আনা ফলমূল কাটছিলাম সবার জন্য।
কাটার শেষ পর্যায়ে অসতর্কতাবশত হাত একটু কেটে গেল। আমি জোরে 'উফ' করে উঠলাম। এদিকে আব্বা-আম্মা তা শোনে দৌড়ে এসে জিজ্ঞেস করে,
-কি হয়েছে, বউমার কি হয়েছে?

সানজিদা জবাব দেয়,
-আমার কিছু হয়নি তো আপনার ছেলের হাত একটু কেটে গেছে।

আম্মা বললো,
-ওওওও ভয় পেয়েছিলাম। আমি ভাবছি তোমার কিছু হয়েছে।

আমার পাশ থেকে ফল গুলো নিয়ে সানজিদাকে খাইয়ে দিচ্ছে। আব্বা একপাশে দূরত্ব বজায় রেখে আম্মা এক পাশে বসে খাইয়ে দিচ্ছে। কেটে গেল দুইদিন..

সানজিদা আমার দিকে তাকিয়ে আছে বেডে শোয়া অবস্থায়। নার্স এসে বললো,

-কনগ্রেচুলেশন মিঃ রায়হান আপনার মেয়ে হয়েছে।

এদিকে আব্বা-আম্মা বসা থেকে দৌড় দিল সানজিদা ও নাতনীকে দেখতে।

আব্বা বললো,
-কই, আমার নাতনীটা দেখি ওলে রে কাঁদে না।

আমি কাছে গেলাম সানজিদার। দীর্ঘক্ষন থাকার পর বিকালে রিলিজ দিলে বাসায় গাড়ি করে নিয়ে আসলাম সানজিদাকে। বাকিটা বাহুডোরে করে ধরে হাঁটিয়ে ঘরে আনলাম।

রাত হয়ে এসেছে, হঠাৎ দেখি বউ কাঁদছে আর চোখের পানি মুছছে। কেনোই বা কাঁদছে বুঝতে পারলাম না,
-সানজিদা কি হলো হঠাৎ, কাঁদছো কেনো?

-আমি এমন ফ্যামিলি পেয়েছি ভাবতেও পারিনি প্রেগন্যান্সিকালীন এত আদর, যত্ন করবে শশুর-শাশুড়ী, তুমি ছোট বাবা এক একটা যেন আমার রক্তের মতো। আর তোমার কথা থাক। বর্তমানে এমন পরিবার আছে ভাবা যায় না। সত্যি বলতে প্রেগন্যান্ট এর ব্যাথা, প্রসব বেদনা আমিই ফিলই করিনি। কাঁদছি এই জন্য যে এরকম ফ্যামিলি যদি খুব তাড়াতাড়ি হারিয়ে ফেলি তাহলে কি হবে?

-হয়েছে চুপ! এরকম কথা বলতে নেই। আল্লাহ যতদিন চাই আমরা আছি থাকবো পাশে একে অপরের।

সানজিদার কান্না দেখে জড়িয়ে ধরলাম সেও আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।

বিয়ের পর একটা মেয়ের স্বামীর বাড়ি ছাড়া আছেই বা কি? বর্তমান, ভবিষ্যৎ তো আমরাই। যে মেয়ে নিজের জন্মদাতা বাবা মাকে হুট করে ছেড়ে চলে আসে তার প্রতি অবহেলা নয়, আশা, ভরসা, ভালোবাসা থাকা উচিত সবসময় তাই মনে করি। অবশ্য এমনটা হয়না বেশিরভাগ পরিবারই অত্যাচার করে। তবে চাইলেই হয়।

#সমাপ্ত
HAQ TIPS Robin Khan Bonolota Media Bonolota Media BD MEDIA

10/08/2023
02/08/2023

New Bengoli Short Film

28/04/2023

ব্রিকসের মুদ্রায় বিনাশ ডলারের!! রিজার্ভ মুদ্রার মর্যাদা হারাচ্ছে ডলার!!!

মার্কেট থেকে ফিরেই আম্মার ঘরে গেলাম। দুটো শপিং ব্যাগ আম্মার হাতে দিয়ে বললাম,'দুই ব্যাগে দুটো শাড়ি। তোমার জন্য কফি কালা...
27/04/2023

মার্কেট থেকে ফিরেই আম্মার ঘরে গেলাম। দুটো শপিং ব্যাগ আম্মার হাতে দিয়ে বললাম,'দুই ব্যাগে দুটো শাড়ি। তোমার জন্য কফি কালারেরটা।আর আমার শাশুড়ির জন্য খয়েরি কালারের টা।'
আম্মা আমার শাশুড়ির নাম শুনেই ছ্যাঁৎ করে জ্বলে উঠলেন। শপিং ব্যাগ দুটো দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বললেন,'এইসব ঢং আমার পছন্দ না! শুধু শাড়ি কিনছস কেন শাশুড়ির জন্য।একসেট সোনার গয়না তৈয়ার করে গিফট করতি! '
আমি একটু সামনে গিয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা ব্যাগ দুটো হাতে তুলে নিতে নিতে বললাম,'কী হয়েছে মা? একটা শাড়িই তো উনাকে দিচ্ছি। তোমাকে দিতে পারলে তাকে দিতে পারবো না কেন? তুমি যেমন আমার মা,তিনিও তো আমার মা!'
মা রাগের গলায় বললেন,'এইসব মেয়েলিপনা আলাপ এসে আমার কাছে করবি না। এইসব আমি একদম পছন্দ করি না! শশুর বাড়ির মুরিদ হয়ছস!যা এখন থেকে ওইখানে বসবাস করা শুরু কর গিয়ে। বেতন ভাতা যা পাস তাদেরকেই দিয়ে দে সব।'
আমি কিছুই বুঝতে পারিনি মা কেন এমন করছে।
রোজার বিকেল ছিল ।ভেবেছি মার বোধহয় রোজাটা ধরেছে। কষ্ট হচ্ছে।তাই একটু এমন করছে।
আমার ঘরে আসতেই দেখি জবা কাঁদছে চুপিচুপি।নিঃশ্বব্দে।তার চোখ থেকে শুধু জল গড়িয়ে পড়ছে গালের উপর।
আমি ওর পাশে বসে বললাম,'কী হয়েছে? কাঁদছো কেন জবা? মা এসব বলেছে বলে তাই না?'
জবা এবার হাউমাউ করে কেঁদে উঠে। কিছু বলতে পারে না।আমি ব্যাগ দুটো খাটের দিকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরি শক্ত করে।জবা আমার বুকের ভেতর মিলিয়ে যেতে যেতে যে কথাগুলো আমায় বললো তা আমার ভেতরটা পুড়িয়ে দিচ্ছিলো লজ্জার আগুনে।সে বললো,'কেন কিনতে গেলে দুটো শাড়ি? আমার মায়ের কী শাড়ি নেই? দেখো গিয়ে আমার চার ভাই মায়ের জন্য কম করে হলেও চার জোড়া শাড়ি কিনে দিয়েছে। আমার তিন‌ বোন জামাই কিনে দিয়েছে। তুমি কেন কিনতে গেলে? আমার মাকে অপমান করবার খুব শখ হয়েছিল তোমার তাই না?'
আমি জবার এই কথাগুলোর জবাবে একটি কথাও বলতে পারিনি তখন। শুধু নিরব থেকে এটা ভেবেছি যে,এই পৃথিবীর মেরুদন্ডহীন পুরুষগুলোর একজন আমি।
'
রোজার আটাশ।ঈদ আগামীকাল হবে নাকি এরপর দিন হবে এ নিয়ে বিরাট আলোচনা চলছে।
জবার মন একটু ভালো হয়েছে।আমি ওকে বুঝিয়ে সুজিয়ে ম্যানেজ করেছি। কিন্তু ওই শাড়িটা আর আমার শাশুড়িকে দিতে দেয়নি।সে বলেছে, এই শাড়ি আমার মাকে দিলে এটা হবে আমার মাকে অপমান করার শামিল। তুমি যদি আমার মাকে অপমান করতে পছন্দ করো তবে শাড়ি দিয়ে আসো গিয়ে।আমি আর কিছু বলবো না।জবার এমন কথার পর আর যাই হোক শাশুড়ি মায়ের জন্য শাড়িটা পাঠানো যায় না।শেষে মাকেই দিলাম দুটো শাড়ি।মা নিয়ে কোন কিছু বলেনি আমায়।তার হাব ভাব দেখে বোঝা গেছে মা আমার প্রতি খুবই বিরক্ত। আমাকে এখনও তার নিজের অযোগ্য সন্তানই মনে করছেন তিনি।
রাতের খাবার খাচ্ছি। অনেকক্ষণ আগে জবার কাছে ডাল চেয়েছি।ও নিয়ে আসছে না।রাগ লাগছে আমার।
জবা দেরি করে ডাল নিয়ে ফিরতেই রাগ দেখিয়ে বললাম,'কখন বলেছি ডাল আনতে? এতোক্ষণ লাগে কেন? কী করেছিলে এতোক্ষণ তুমি?'
জবা ওড়না টেনে কপালের ঘাম মুছে বললো ,'দুলাভাই এসেছেন। শরবত করে দিয়েছি। তরমুজ কেটেছি।'
আমি তার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। কেন দুলাভাই এসেছে তা জানতে।
জবা বলার আগেই মা ডাকতে শুরু করলেন আমায়।
'রুহান,দেখে যা এক্ষুনি।তোর মেজো দুলাভাই এসেছে রে । এক্ষুনি আয়।'
আমি মার কথা শুনে তাড়াহুড়ো করলাম না খাবারে।আস্তে ধীরেই খেলাম। খাবার শেষ করে মার ঘরে গিয়ে দেখি দুলাভাই চেয়ারে বসে আছে।তার মুখে পান। তার মানে জবা আমার সামনে ডাল দিয়ে এসে দুলাভাইকে সুপুরি কেটেও দিয়েছে।এই মেয়েটা কী যে পরিশ্রম করে! রোজা রেখে আমি একটু কিছু করলেও কেমন হাঁপিয়ে উঠি।কেউ কিছু বলতেই চেত করে জ্বলে উঠি।গলা কর্কশ করে কথা বলি। কিন্তু ওর কিছুতেই কিছু হয় না। সবকিছুই সে ঠিকঠাক ভাবে করে।ও যেন একটা কাজের মেশিন। ওই যে সন্ধ্যা বেলায় একটা খেজুর খেলো।এক গ্লাস পানি খেলো।আর আমি জোর করে আধ গ্লাস শরবত খাওয়ালাম,ওটুকুই। এরপর আর কিছু খায়নি। খাওয়ার সময়ই তো পায়নি। ঘরের কতো যে কাজ!
'
মা ওয়াশরুমে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে এসে হাসি হাসি মুখে খাটের একপাশ থেকে তিনটি শপিং ব্যাগ বের করে আমার হাতে দিয়ে বললেন,'এই দেখ জামাই কী এনেছে! আমার জন্য শাড়ি।তোর জন্য পাঞ্জাবি।বউমার জন্য ত্রিপিস।'
আমি কাপড়গুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। অনেকক্ষণ ধরে। তারপর বললাম,'সুন্দর। অনেক সুন্দর। পছন্দ হয়েছে।'
তারপর টেবিলের উপর ব্যাগ গুলো রেখে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। এখানে ওখানে উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরাফেরা করে ঘরে ফিরলাম অনেক পরে। ততোক্ষণে দুলাভাই চলে গেছেন।মা বসে আছেন।তসবির দানা ধরে ধরে দোয়া জপছেন।
আমি মার পাশে বসলাম তখন। চুপচাপ বসে রইলাম।
মা বুঝলেন কিছু বলতে চাই আমি।তাই তসবি পড়া দ্রুত শেষ করে তসবির শেষ দানায় চুমু খেয়ে বললেন,'কিছু বলবি রে বাবা?'
আমি আরো খানিকটা সময় চুপচাপ বসে থেকে বললাম,'মা, দুলাভাই কী কাজটা ঠিক করেছেন?'
মা অবাক হয়ে বললেন,'কোন কাজটা?'
'ওই যে তোমার জন্য, আমার জন্য আর জবার জন্য, আমাদের ঘরের সবার জন্য ঈদের গিফট দিয়ে গেলো। এটা কী ঠিক হয়েছে? জামাইদের পক্ষ থেকে শশুর বাড়িতে কোন গিফট দেয়া কী ভালো কাজ মা?'
মা আমার এই কথা শুনে হঠাৎ কেমন চুপ হয়ে গেলেন।চুপ বলতে একেবারে চুপ। একটি কথাও আর বললেন না।আমি অনেকক্ষণ মার পাশে বসে রইলাম তার জবাবের অপেক্ষায়।মা কোন জবাব দিলেন না।শেষে রাত বাড়ছে বলে মার ঘর থেকে আমার ঘরে গেলাম।জবা তখনও জেগে আছে।পড়ছে। হুমায়ূন আহমেদের 'অপেক্ষা' বইটা তার ভীষণ রকম পছন্দের।এই বই পড়ে সে কাঁদতে কাঁদতে চোখে নদী বইয়ে দেয় একেবারে।
এখনও এই বইটিই পড়ছে।
আমাকে রুমে ঢুকতে দেখেই সে একটা পাতা ভেঙে বইটা খাটের পাশে টেবিলের উপর রাখলো। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বললো,'কাজটা মোটেও ভালো করোনি তুমি!'
আমি বললাম,'কোন কাজটা?'
জবা বললো,'মা বৃদ্ধ মানুষ। সেদিন না হয় মা এরকম একটা আচরণ করেছেন তোমার সাথে।বুঝতে পারেননি! তাই বলে তুমিও আজ তার সাথে এমন করবে? মা তোমার এই আচরণে খুব কষ্ট পেয়েছেন! তুমি এভাবে না বললেই ভালো হতো! কাজটা অনেক খারাপ হয়েছে রুহান!'
আমি শুধু বললাম,'জবা,মা হোক আর যেই হোক তার ভুলটা ধরিয়ে দেবার প্রয়োজন আছে। ভুল না ধরিয়ে দিলে একটা মানুষ বুঝবে কী করে তাকে সঠিক পথে আসতে হবে? আমরা মানুষ। মানুষ হলো আশরাফুল মাখলুকাত। আশরাফুল মাখলুকাত ভুল করে,অন্য একজন তার ভুল ধরিয়ে দেয়, তারপর ভুলকারী আবার সঠিক পথে ফিরে আসে।এটাই তো বিউটি।'
জবা এ নিয়ে আর কিছু বলেনি। বিছানা ঝেড়ে দিয়ে শুধু বললো ,'শুয়ে পড়ো। অনেক রাত হয়েছে।'
আমি বললাম,'আচ্ছা।'
'
পরদিন দুপুর বেলা মা হুট করে জবাকে বললেন,'বউমা রেডি হও। মার্কেটে যাবো।'
জবা মার কথা নিয়ে তেমন ঘাঁটে না।সে জানে মার রাগ বেশি।
সে বরং রেডি হয়ে মার সাথে গেলো।
তারা বাসায় ফিরলো ইফতারের আগে আগে।
বাসায় ফিরেই মা আমায় ডাকলেন।
'রুহান, এইদিকে আসো বাবা।'
আমি খিঁচুড়ি রান্না করছিলাম। ওদের ফিরতে দেরি হচ্ছে দেখে নিজেই ইফতারির রান্না করতে শুরু করলাম। ভাবলাম জবা ক্লান্ত হয়ে ফিরবে, এরপর আবার রাঁধতে গেলে ওর উপর জুলুম হবে।তাই নিজের এক্সপেরিমেন্ট কাজে লাগালাম।
মা ডাকলেও কিচেন থেকে মার কাছে গেলাম না। এদিকে আবার কখন পাতিলের তলায় খিচুড়ি বসে যায়!
আমি যাইনি বলে মা নিজেই আমার কাছে এলেন। তার হাতে পাঁচটি ব্যাগ।মা আমার হাতে ব্যাগ গুলো ধরিয়ে দিয়ে বললেন,'একটা তোর শাশুড়ির,আর বাকী চারটা বউমার চার ভাইয়ের জন্য।আজ রাতেই তুই যাবি। দিয়ে আসবি গিয়ে।'
আমি এবারেও কোন কথা বললাম না।চুপ করে রইলাম।
মা আমায় চুপ করে থাকতে দেখে বললেন,'বাবা,আমি যে সেদিন কাজটা করেছি এটা নিতান্তই গর্হিত কাজ। শাশুড়ি মায়ের মতই। তাকে উপহার দেয়া আর নিজের মাকে উপহার দেয়া তো সমান কথাই। আমি ভুল করেছিলাম সেদিন বাবা। এরপর আর এরকম ভুল হবে না।'
আমি মৃদু হাসলাম। মায়ের এই কাজটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।কেউ যদি তার নিজের ভুল বুঝতে পারে এবং এই ভুল থেকে সে সঠিক পথে ফিরে আসে এটা তো আনন্দেরই কথা।



#ভুল_ভাঙনের_গল্প
#অনন্য_শফিক

26/04/2023

মিতু টিউশনে গিয়েছে ঘামে ভেজা জবজবে শরীর নিয়ে। আনন্দ মোহনের সহকারী অধ্যাপক লাকি ম্যামের মেয়েকে পড়ায় সে। মিতু পড়াতে শুরু করেছে। অংক দেখিয়ে দিচ্ছে। এরিমধ্যে লাকি ম্যাম এলেন। এসে বললেন,' মিতু, তোমার আর টিউশনে আসার প্রয়োজন নাই।কাল থেকে এসো না তুমি।'
মুখ মলিন করে রাগের গলায় কথাটা বললেন ম্যাম। বলে নিজের ঘরে চলে গেলেন।
মিতুর এতো মন খারাপ হলো! সে বুঝতে পারছে না সে কী ভুল করেছে যার জন্য ম্যাম তাকে বাদ দিয়ে দিচ্ছেন। সে তো পড়াতে গিয়ে কোন ফাঁকিবাজি করছে না।ভালো পড়াচ্ছে। নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছে!সেরাটুকু দিয়েই পড়াচ্ছে। তবুও কেন এমন করলেন ম্যাম?
মিতুর চোখ জলে টলমল হয়ে উঠলো। খেয়ে না খেয়ে কতো কষ্ট করে দিনগুলো পাড় করে সে।গরীব ঘরের মেয়ে সে।বড় অভাবের সংসারে বড় হয়েছে।বাবা মা বড় কষ্ট করে এতো দূর এনেছেন। রোজার ঈদের তো আর খুব বেশিদিন নাই। বাবার পাঞ্জাবিটা পরার অযোগ্য হয়ে গেছে। মিতুর খুব খারাপ লাগে বাবাকে এই পাঞ্জাবি পরা অবস্থায় দেখলে! মিতু জানে বাবা কখনোই আরেকটা পাঞ্জাবি কিনবেন না। মা যদি বলেন কেনার কথা তবে বলবেন,'আর কদিন বাঁচবো? এই পাঞ্জাবি পুরনো হতে হতে তো আমিই মরে যাবো! নতুন পাঞ্জাবি কেনার কি দরকার বলো!'
মিতু এবার আগে ভাগেই ঠিক করে রেখেছে টিউশনের অর্ধেক টাকা দিয়ে এ মাসের খরচ চালাবে।বাকী অর্ধেক টাকা দিয়ে বাবার জন্য একটা পাঞ্জাবি কিনবে। অনলাইনে সে অনেক গুলো পাঞ্জাবি দেখেছে। একটা পাঞ্জাবি ঘিয়ে রঙা।বাবা ফর্সা মানুষ। তাকে ভীষণ সুন্দর দেখাবে এই পাঞ্জাবি পরলে!
মিতু এসব ভেবে রেখেছিলো। কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল!
মিতুর ইচ্ছে করছে শব্দ করে কাঁদতে। কিন্তু এখানে কি এক কারণে যেন কাঁদতে পারছে না।
এরিমধ্যে লাকি ম্যাম আবার এলেন। তার হাতে একটা খাম। মিতুর ভেতরটা কেমন ছটফট করে উঠলো। সে জানে এই খামের ভেতর যে কদিন পড়িয়েছে সে কদিনের টাকা।এই অল্প কিছু টাকা দিয়ে ম্যাম তাকে বিদায় করে দিবেন!
মিতু বোকার মতো বসে রইল।ম্যাম এসে তার সামনের চেয়ারে বসলেন। তারপর তার দিকে এগিয়ে খামটা দিলেন। বললেন,' এখন খুলবে না।বাসায় গিয়ে খুলবে।'
মিতু পড়ানো শেষ করে ছাত্রীকে আদর করলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো।বললো,' ভালো থেকো।'
তারপর বাসায় চলে এলো। আসার সময় চোখ মুছে মুছে এলো।
বাসায় ফিরে সবার আগে মিতু খাম খুললো।খামের ভেতর টাকা। মাত্র পনেরশো।মিতু যা ভেবেছিল ঠিক তাই।গুনে গুনে মাত্র এই কদিনের টাকাই দিয়েছেন ম্যাম। টাকা রেখে মিতু খামটা ফেলে দিতে চাইবে ঝুড়িতে এরিমধ্যে খামের ভেতর থাকা ছোট্ট চিরকুটটা তার চোখে পড়লো। সে সেই চিরকুট নিয়ে পড়লো।ম্যাম লিখেছেন,' রোজা রেখে এভাবে এতো দূর হেঁটে আসো কেন? কষ্ট হয় না? তোমার কষ্ট না হলেও আমার কষ্ট হয়।আর কোনদিন হেঁটে আসবা না খবরদার। এখানে পনেরশো টাকা আছে।এই টাকা গুলো তোমার এই মাসের রিক্সাভাড়া।প্রতি মাসে তোমাকে আমি রিক্সা ভাড়া বাবদ পনেরশো করে টাকা দিবো। কিন্তু খবরদার কখনো হেঁটে আসবা না।যদি আরেকদিন দেখি এভাবে কষ্ট করে করে হেঁটে আসছো তবে কিন্তু আমি নিজেই তোমার পা ভেঙে দিবো!'
মিতু এই চিরকুট দু হাতের মুঠোয় নিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। এই কান্নাটা নিশ্চয় কষ্টের নয়!
'
#প্রাপ্তি
অনন্য শফিক

26/04/2023

আমাদের মেজো ভাবীর গর্ভাবস্থায় মেজো ভাইয়া নিজেই বাসার কাজ করতেন। ভাবীকে তেমন কিছুই করতে দিতেন না। কাপড় ধোয়া, রান্না- বান্না যতোটা পারা যায় তিনি করতেন।
ভাবীর মাঝেমধ্যে শরীর খারাপ হতো। ভাইয়া তাকে সঙ্গ দিতেন। অনেক সময় ভাবীর মন খারাপ থাকতো। ভাইয়াকে দেখতাম ভাবীর সঙ্গে বসে আছেন দীর্ঘ সময়।গল্প করছেন।মন ভালো করার চেষ্টা করছেন।
আমাদের বড় ভাবী একদিন মার কাছে এসে বললেন,' এসব কোন ধরনের ঢং মা? মেজো মিয়া কি সব শুরু করেছে? দোকান বন্ধ রাখে সকাল বিকাল।বউয়ের ডিউটি করা শুরু করে দিয়েছে।'
মা বললেন,' বসো তুমি মা।'
বড় ভাবী বসলেন।
মা বললেন,' মেজো বউয়ের ঘরের তো কাজ আছে।আছে না?'
বড় ভাবী বললেন,' আছে।'
' কি কি কাজ আছে?'
' কাপড় চোপড় ধোয়া, ঘর মুছা, পরিষ্কার করা, রান্নাবান্না।'
মা বললেন,' তো এইগুলো কে করবে? তুমি করে দিবা?'
মেজো ভাবী বললেন,'আমার নিজের কাজ আছে। আমার গুলো আমি করবো। তার কাজ সে করবে।'
মা বললেন,' বউ কীভাবে করবে? এমন শরীর নিয়ে কীভাবে কাজ করবে? '
বড় ভাবী বললেন,' দুনিয়ার সব মানুষই তো করে।'
মা বললেন,' সব মানুষ করলেও সে করবে না।কারণ তার একটা ভালো স্বামী আছে। এই স্বামী জানে স্ত্রীর গর্ভে শুধু একফোটা বীর্য দিলেই কেউ পিতা হয়ে যায় না।পিতা হবার জন্য অনেক দায় দায়িত্ব আছে।মা যে তার সন্তানকে পেটে ধারণ করে, মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে থাকে। সে জানে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে তার মৃত্যু হতে পারে। এতো কিছু করার পরেও ঘরের সব কাজ সে করবে? কেন? সন্তান কী তার একার? '
বড় ভাবী চুপ হয়ে গেলেন।
মা বললেন,' আমি আশা করি বোকার মতো কখনো এমন কথা তুমি বলবে না। নিজের তো সন্তান হয়েছে। তুমি জানো না এই সময়টা একটা মেয়ের কতো কষ্টের ভেতর দিয়ে যেতে হয়? জানো তো সব। তবুও কেন এরকম প্রশ্ন করো? আসলে আমাদের সমাজটাই উল্টো।আমরা সারা জীবন দেখে আসি সন্তান গর্ভে রাখা,পেলে পুষে বড় করা,হাগামুতা পরিষ্কার করা সব দায়িত্ব মায়েদের।হাঁড় কাঁপানো শীতের দিন। এই প্রচন্ড রকম শীতে সন্তান প্রশ্রাব করে মায়ের কাপড় ভিজিয়ে দেয়।মা আগে সন্তানকে পরিষ্কার করে। বিছানায় গরম কাপড় বিছিয়ে দেয়। তারপর নিজেকে পরিষ্কার করে। বাচ্চাকে পরিষ্কার করতে, কাপড় বদলাতে যদি বাচ্চার মা একবার সুইচ টিপে লাইট জ্বালায় এতেই বাচ্চার বাবা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করে। তার ঘুম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এরকম হবে কেন? এরকম কী হবার কথা আসলেই? দোষ আমাদের।আমরা দেখি আমাদের ছেলেরা আমাদের পুত্রবধূদের সঙ্গে অনাচার করছে।আমরা এতে আরো হাততালি দেই।বলি এটাই ঠিক।আরো বেশি করে অনাচার করো।আমরা ছেলেদের শাসাই না।শাসাই বউদের। এই জন্যই কোন কিছুর পরিবর্তন হয় না। আজীবন ভোগতে হয় আমাদের। মায়েদের। সন্তানের একটু ঠান্ডা লাগলে মায়ের দোষ।একটু পেট খারাপ হলে মায়ের দোষ।যেন অসুখ মা নিজেই তৈরি করে!
কোন সময় শুনেছো সন্তানের ঠান্ডা লেগেছে আর কেউ বলছে তার বাপের জন্য এমন হয়েছে? বাপ অযত্ন করেছে এর জন্য এরকম হয়েছে? বলে না কেউ।কারণ বাপ তো যত্নই করে না।সারাদিনে একবার কোলে তুলে দশ মিনিট আদর করা। কপালে চুমু খাওয়া।আব্বু আব্বু বলে ডাকলেই কি সব দায়িত্ব শেষ? কিন্তু অধিকার কে ফলায় আগে? বাবা।তো যে অধিকার ফলাবে সে তার সন্তানের জন্য পরিশ্রম করবে না? অবশ্যই করবে। শুধু কাপড় চোপড় আর ওষুধ দিলেই তো সব কিছুর সমাধান হয়ে যায় না।আরো অনেক দায়িত্ব থাকে। আমার মেজো যা করছে তাই ঠিক।তা সুন্দর।তা সত্য।এর উল্টো যেটা এটাকে বাদ দিতে হবে।এর পরিবর্তন আনতে হবে। তবেই সমাজ সুন্দর হবে। পুরুষও তখন বলতে পারবে,আমরা স্ত্রীর অধিকার ঠিক ভাবে পালন করি।
'
'
#মাতৃত্ব_এবং_পিতৃত্ব
#অনন্য_শফিক

26/04/2023

ভাইয়ার বিয়ের সময় ছোটো ফুফু আসতে পারেননি। তার শ্বশুরের বেশি অসুখ ছিল। মরণাপন্ন অবস্থা। বিয়ের দু'দিন পর তার শশুর মারাও যায়। এই জন্য তিনি আমাদের বাড়িতে এলেন বিয়ের অনেক দিন পর। তিনি এসে ভাবিকে দেখে হতাশ হলেন। মাকে ডেকে বললেন,' ভাবি, তুমি এইটা কোন ধরনের কাজ করলা? সোনার টুকরার মতো ছেলের জন্য কী বিয়ে করে আনলা? জগতে কি সুন্দরী মেয়ের অভাব পড়ছিলো নাকি যে কালো মেয়েকে ঘরের বউ করে আনতে হলো? আমারে বলতা,দেখতা কয়েক হাজার আলাপ নিয়ে আসতাম!'
মা বললেন,' আচ্ছা এখন এইসব কথা বাদ দেও তো বোন।পরে এইসব নিয়ে কথা বলবো। এখন আসছো জার্নি করে। আগে হাত মুখ ধোও। রেস্ট নেও।'
ছোট ফুফু মুখ বেজার করেই বোরখা খুললেন। হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে এসে বিছানায় বসতেই ভাবি শরবত করে দিলেন।ফুফু শরবত হাতে নিয়ে খানিক সময় বসে রইলেন। তাকে দেখেই বোঝা যায় তিনি দ্বিধা- দ্বন্দ্বে ভোগছেন। খাবেন কি খাবেন না বুঝতে পারছেন না ‌।মা পাশেই ছিলেন। তিনি বললেন,' খাও।শরবত খেলে উপকার হবে। এই গরমে এতো কষ্ট করে আসছো।'
ফুফু শরবত খেয়ে মনে হয় তৃপ্তি পেয়েছেন। তার চেহারার কঠোরতা কেমন কেটে গেছে।
ফুফুকে নাশতা দেয়া হলো। ফুফু নাশতা করলেন।চা দেয়া হলো।চা খেয়ে ফুফু বললেন,' আমি এরকম সুস্বাদু চা আর কখনো খাইনি! কে করেছে এই চা?'
মা হাসলেন। বললেন,' বউমা করেছে। শরবতও বউমা করেছিল। শরবত কেমন হয়েছিল?'
ফুফু বললেন,' প্রশংসা করার ভাষা আমার নাই। অনেক ভালো।'
মা ভাবিকে ডাকলেন।ভাবি এলে বললেন,' জুই,গান গাও তো। একটা রবীন্দ্র সংগীত গাও।'
ভাবি গান ধরলেন।

'আমার নিশিত রাতের বাদল ধারা।
এসো হে
গোপনে।'

ভাবির গলার স্বর মোহনীয়। তার গান শুনলে মনে হয় এরকম স্বর আর কখনো শুনিনি। এতো মায়া তার গলায়! তার গান শুনতে শুনতে চোখ ভিজে উঠে।ফুফুকেও দেখলাম গান শোনার এক পর্যায়ে চোখে হাত দিতে। তার চোখ কেমন ভেজা ভেজা।
ভাবির গান শেষ হলে মা বললেন,' জুই বড় মেধাবী মেয়ে।এ বছর প্রাইমারির প্রিলিতে টিকেছে।ভাইবায় ডেকেছে।ভাইবাতেও টিকবে ইনশাআল্লাহ! '
ছোট ফুফু তখন আর কথাই বলতে পারলেন না।মা কথা বললেন। বললেন,' ছোট, গায়ের রং খোদা প্রদত্ত জিনিস। এটা নিয়ে গর্ব করার অথবা দুঃখ করার কিছুই নাই।আসল জিনিস হলো মানুষের ভেতর। মানুষের আচার -আচরণ কেমন। চরিত্র কেমন। তার জ্ঞান কেমন। দক্ষতা কেমন। এইগুলো। আমার জুইয়ের মধ্যে আল্লাহর রহমতে এই সবগুলো গুণই আছে। তাকে ছোট করে দেখার কোন সুযোগই নাই। একটা মানুষ অনেক ফর্সা, কিন্তু তার ভেতর কোন ভালো গুণাগুণ নাই, তবে ওর কোন মূল্যই নেই। সে কুৎসিত। সে কদর্য।অথর্ব!
'
'
#রং
#অনন্য_শফিক

26/04/2023

Active আছি
আজকে টার্গেট 500
Follow দিন Follow বুঝে নিন!

25/04/2023

ডলার রির্জাভ মুদ্রার মর্যাদা হারাচ্ছে

Address

Fulbaria

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when HAQ TIPS posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to HAQ TIPS:

Share