11/10/2023
পরিপূর্ণ মানব জীবনের জন্য চার জন বন্ধুর (নিউরোট্রান্সমিটার) অতীব প্রয়োজন। জীবন ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই এই চার বন্ধুকে গুরুত্ব দিন।
1. Endorphins
2. Dopamine
3. Serotonin
4. Oxytocin
#প্রথম_বন্ধুটির_নাম_হলো_এন্ডোরফিনস।
জীবনের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বন্ধু হলো এটি।
হাসপাতালের বিছানায় একাকী শুয়ে না থাকা পর্যন্ত অনুধাবন করা যায় না সুস্বাস্থ্য জীবনে কত দরকার। সুস্বাস্থ্যের জন্য দিনে চব্বিশ ঘন্টায় কমপক্ষে আধঘন্টা সময় এই বন্ধুর জন্য ব্যয় করতে হয়।
👉🏻ব্যয়াম করলে শরীর এন্ডোরফিনস ডিসচার্জ করে।
👉🏻ভালো একটা বই পড়লে, ভালো মানুষের সাথে সুসম্পর্ক রাখলেও শরীরে জন্য অতি প্রয়োজনীয় এই বন্ধুটির সাক্ষাৎ পাওয়া যায়।
এই বন্ধুটিকে প্রতিদিনই দরকার। মন খারাপ থাকলে, তারপর প্রিয়জন কাছে আসলে যেমন মন ভালো হয়ে যায়। ঠিক তেমনি, মন যখন খারাপ একটু দৌঁড়ে আসুন, হেঁটে আসুন। এই এন্ডোরফিনস নামক বন্ধুটি তখন আপনার ভরসা হয়ে সাথে থাকবে।
#দ্বিতীয়_বন্ধুটির_নাম_হলো_ডোপামিন।
প্রথম বন্ধু আপনার শরীরকে লাইনে রাখে। কিন্তু শরীর শুধু লাইনে রাখলে হয়না। পাশাপাশি আপনাকে সৎ একটা জীবন-যাপনও করতে হয়।
কোটি কোটি টাকা থাকলেও অসৎ মানুষের চেহারা দেখলে বুঝবেন, কি যেন একটা অশান্তি ওদের মাঝে বিরাজ করে। কিন্তু সৎ মানুষের চেহারায় দেখবেন একটা অন্য রকমের দীপ্তি ছড়িয়ে আছে।
👉🏻যখনই সৎভাবে কোনো একটা কাজ আপনি করবেন তখন শরীরে ডোপামিন তৈরি হয়।
👉🏻আপনি পরিকল্পনা করলেন আজকে ঠিক সময়ে অফিসে যাবেন। অফিসের সব কাজ ভালোভাবে শেষ করবেন। এক টাকাও ঘুষ খাবেন না। ফাইল আটকে রাখবেন না। কোনো রকমের চিটিং করবেন না। কাউকে ফাঁকি দিবেন না। প্রতিদিন যখন এই টার্গেট আপনি পূর্ণ করবেন শরীরে ডোপামিনের আগমন ঘটবে।
👉🏻ফুলে যেমন প্রজাপতির আগমণ ঘটে। কারো ভালো কাজে অনুপ্রেরণা দিলেও শরীরে ডোপামিন আসে।
👉🏻স্ত্রী যখন স্বামীর পরিশ্রমকে উৎসাহ দেয়, স্বামী যখন ঘরে গিয়ে দিনের যাবতীয় নানা কাজের জন্য স্ত্রীর প্রশংসা করে, দেখবেন স্ত্রীর চেহারায় একটা লাবণ্য আসে।
👉🏻আপনার কাজ যখন বস এ্যপ্রিশিয়েট করে কিংবা নিজের ছেলে-মেয়েকে কোনো কিছু ভালোভাবে শেষ করার জন্য আপনি সাবাশ বলেন, তখন একটা বাড়তি আনন্দ ও উৎসাহ তৈরি হয়।
এর সবগুলোই হলো শরীরের অকৃত্রিম বন্ধু ডোপামিনের কাজ-কারবার। ভালো কিছু অর্জন করুন, ভালো কাজে একজন আরেক জনকে উৎসাহ দিন। আর শরীরের ডোপামিনের কলোনি গড়ে তুলুন।
#তৃতীয়_বন্ধুটি_হলো_সেরোটোনিন।
এই বন্ধুটি হলো কামিনী রায়ের কবিতার এই দুই লাইন-
"আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে, আসে নাই কেহ অবনী পরে।
সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে মোরা পরের তরে।"
👉🏻কারো কল্যাণের জন্য যাই করিনা কেন, তাতে সেরোটোনিন নামক এই অদৃশ্য বন্ধুটির সাক্ষাৎ পাওয়া যায়। পথের মাঝ থেকে একটা কাঁটা ফেলে দিলেন, কাউকে সুপরামর্শ দিলেন। বৃদ্ধ, মহিলা, রোগী , দূর্বল কাউকে বাসের সীটটা ছেড়ে দিলেন। দেখবেন মনে সুখ পাচ্ছেন। শরীরে এই সুখ এনে দেয় সেরোটোনিন নামক এই অদেখা বন্ধুটি।
👉🏻একাগ্রচিত্তে ধ্যান করলেও শরীরে প্রশান্তি আসে। লোক দেখানো না বরং আধ্যাত্মিক সম্পৃক্ততার তাগিদে কেউ যদি কারো ধর্ম বিশুদ্ধ পালন করে, তাহলে মনে প্রশান্তি আসে। এই প্রশান্তির যোগান দেয় বন্ধু সেরোটোনিন।
#আমাদের_শেষ_বন্ধুটি_হলো_অক্সিটোসিন।
প্রিয়জনের সান্নিধ্যে আসলে, কিংবা কোনো সুন্দর জায়গা ভ্রমন করলে শরীরে একটা সুখ আসে।
👉🏻কোলাকুলি করলে, কারো সাথে করমর্দন করলে, অদেখা বন্ধুকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরলে, বাবা-মায়ের পাশে বসে থাকলে। এমনকি আপনজনের কন্ঠস্বর শুনলে, পরিবারের সবাইকে ভালোবাসায় জড়িয়ে রাখলে দেহ মনে একটা আনন্দের ভাব আসে।
👉🏻কেউ যখন খুব কষ্টে থাকে তখন কোনো প্রিয়জন যদি বুকের সাথে শুধু জড়িয়ে ধরে, তখন মনটা অনেক হালকা হয়ে আসে।
মনকে হালকা করে দেয়া এই আনন্দময়ী বন্ধুটি হলো অক্সিটোসিন।
➡️ এন্ডোরফিনস নামক বন্ধুকে পেতে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন।
➡️ ডোপামিনকে পেতে প্রতিদিন সৎভাবে জীবনযাপন করে ছোট ছোট কাজ সম্পাদনা করুন।
➡️ সেরোটোনিন কে পেতে পরোপকার করুন। বিশুদ্ধ মনে নিজ নিজ ধর্ম পালন করুন।
➡️ আর অক্সিটোসিন নামক অকৃত্তিম বন্ধুকে পেতে শিশুদের আদর-সোহাগ করুন। সুযোগ পেলেই বাবা-মায়ের পাশে বসে থাকুন এবং আপনজনের সাথে সময় কাটান।
প্রতিটি পরিবারেরই উচিত শিশুরা যেন এই চারবন্ধুকে সাথে নিয়ে বড় হতে পারে সেটা খেয়াল রাখা।
একাডেমিক পড়ালেখার চেয়ে শিশুদের আরো বেশী দরকার এই চার বন্ধুর।