11/10/2025
মা,
তোমায় ছাড়া এই পৃথিবীটা যেন কিছুই পূর্ণ মনে হয় না। মানুষের ভিড়ে, তোমার মুখটা হঠাৎ চোখে ভেসে ওঠে। তখন মনে হয়, সবকিছু ফেলে যদি একবার শুধু তোমার পাশে বসতে পারতাম! তুমি যখন বলতে, খেয়েছিস? তখন হয়তো বিরক্ত লাগতো। প্রশ্নটার ভেতরে লুকিয়ে ছিল পুরো একটা পৃথিবীর মায়া। মনে আছে, ছোটবেলায় তুমি আমাকে কাঁধে তুলে স্কুলে নিয়ে যেতে। আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রাখতা, যেন আমি হারিয়ে না যাই। রাত জেগে আমার পড়া দেখাতে, আবার সকালে নিজে ঘুম না নিয়েই কাজ করতে যেতে। যখন আমি অসুস্থ হতাম, তুমি নিজের ওষুধ বন্ধ করে আমার ওষুধ কিনতে। তোমার ঘাম, তোমার ত্যাগ এসব আমি তখন বুঝিনি, কিন্তু এখন বুঝি প্রতিটা ফোঁটা ছিল নিঃস্বার্থ ভালোবাসার দান। আজ আমি বড় হয়েছি, কিন্তু যতই দূরে যাই, তোমার কোলে শোওয়ার সেই অনুভূতিটা যেন এখনো বুকের ভেতর গরম রোদের মতো জ্বলজ্বল করে। তুমি যে আমার জীবনের প্রথম আশ্রয়, তা কোনোদিন বদলাবে না। আমি এখানে প্রতিদিন লড়াই করি, তোমার শেখানো ধৈর্য নিয়ে। তুমি হয়তো ভাবো, আমি আগের মতোই হাসিখুশি আছি, কিন্তু মা এই প্রতিদিন বেঁচে থাকা মানেই তোমার স্মৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করা। মা তুমি জানো? আমি যখন ক্লান্ত হয়ে যাই, তখন তোমার মুখ মনে করি সেই মুখে কত দাগ, কিন্তু প্রতিটা দাগ যেন ভালোবাসার ইতিহাস। তুমি আমার জন্য যতটা কষ্ট সহ্য করেছো, পৃথিবীর কোনো ভাষায় তার নাম দেওয়া যায় না। আমি কেবল তোমার দেওয়া আশীর্বাদ নিয়েই বেঁচে আছি, তোমার শেখানো মানসিক শক্তিতেই টিকে আছি।
মা,
আমি প্রতিজ্ঞা করছি তোমার সব কষ্টের প্রতিদান আমি একদিন সফল হয়ে দেবো। আমি এমন একদিন তোমার সামনে দাঁড়াবো, যেন তুমি গর্ব করে বলতে পারো, এই আমার ছেলে রত্না, আমি তাকে মানুষ করতে পেরেছি। তুমি যেন তখন চোখে জল না রাখো, শুধু হাসো। তোমার সেই হাসিটাই আমার বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। আমার জন্য দোয়া করো, আমি যেন শক্ত থাকতে পারি। তোমার সৃতি, তোমার ভালোবাসাতেই আমার বেঁচে থাকা।
— তোমার ছেলে,
রত্না।