20/09/2024
আপনি কি মনে করেন, যদি কারো বন্ধুর সংখ্যা খুব কম হয়, সেটি তার স্মার্ট বা বুদ্ধিদীপ্ত হওয়ার পরিচায়ক? কেন এমনটা হতে পারে?
ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ গড় বুদ্ধিমত্তার নিচে অবস্থান করে। স্মার্ট বা জিনিয়াস মানুষদের সংখ্যা খুবই কম—মাত্র ১% এর আশেপাশে। কারণ, স্মার্ট হওয়ার জন্য যে প্রচেষ্টা, অধ্যবসায়, এবং গভীর মননশীলতা প্রয়োজন, তা খুব কম মানুষই অর্জন করতে পারে।
এখন যদি ইতিহাসের বিখ্যাত কিছু প্রতিভাবান ব্যক্তির দিকে তাকাই, যেমন নিকোলা টেসলা, আলবার্ট আইনস্টাইন, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক, কিংবা জন ন্যাশ, আমরা দেখতে পাবো যে এরা প্রত্যেকে তাদের ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ অবদান রেখেছেন। কিন্তু পেশাগত জীবনে সফল হলেও, ব্যক্তিগত জীবনে তারা বেশিরভাগই একাকীত্বে ভুগেছেন। উদাহরণস্বরূপ, নোবেলজয়ী কেমিস্ট ফ্রিটজ হেবারের স্ত্রী, তার সাথে মানিয়ে চলতে না পেরে আত্মহত্যা করেছিলেন।
আমি অনেক দিন ধরে চিন্তা করেছি, কেন এমন অনেক জিনিয়াস ব্যক্তি সামাজিক জীবনে ব্যর্থ হন বা একাকী থাকেন। কিছু কারণ নিচে উল্লেখ করছি:
১. একাকীত্বের গুরুত্ব
নিকোলা টেসলা একবার বলেছিলেন, "একাকীত্ব আবিষ্কারের গোপন সূত্র, একা থাকাকালীনই মানুষ পৃথিবী বদলে দেওয়ার আইডিয়া পায়।"
আমি মনে করি, অনেক বুদ্ধিমান মানুষ তাদের সেরা আইডিয়াগুলো তখনই পেয়েছেন, যখন তারা একা ছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, স্যার আইজাক নিউটন একা বসে থাকাকালীন আপেল গাছের নিচে বসে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ধারণা পান। আর আর্কিমিডিস বাথটাবে স্নান করার সময় আর্কিমিডিসের সূত্রের আইডিয়া পান। এরকম অসংখ্য উদাহরণ ইতিহাসে পাওয়া যায়।
২. অন্যদের সাথে তাল মেলাতে অসুবিধা
বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা সাধারণত সাধারণ মানুষদের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেন না। কারণ, তারা সাধারণ আলাপচারিতায় সময় নষ্ট করতে চান না, বরং জটিল সমস্যার সমাধান নিয়ে ভাবতে পছন্দ করেন। যখন বেশিরভাগ মানুষ পরনিন্দা করতে ব্যস্ত থাকে, তখন এ ধরনের মানুষরা হয়তো কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে ভাবছেন। স্বাভাবিকভাবেই, এরকম একজন মানুষের সাথে বেশিরভাগ মানুষ বন্ধুত্ব করতে আগ্রহী হয় না, কারণ তারা ওই ধরনের আলোচনায় আগ্রহী নয়।
উপসংহার
যারা মানুষের সাথে সহজে মিশতে পারেন, তাদেরও একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক গুণ থাকে—যোগাযোগ দক্ষতা। সাধারণত এরা এক্সট্রোভার্ট হয়ে থাকেন, এবং মানুষকে সহজে আকৃষ্ট করতে পারেন। যদিও তারা হয়তো বিজ্ঞানী হবেন না, তবে তারা হতে পারেন রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, কিংবা সামরিক কর্মকর্তা। এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এরা স্মার্ট। তবে, বুদ্ধিমত্তার পিরামিডের চূড়ায় বিজ্ঞানী কিংবা গণিতবিদদের অবস্থান থাকে।